মাটি থেকে সাড়ে চার হাত ওপরে ট্রান্সফরমার
সিলেট সদর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের রাস্তা ঘেঁষে একটি বড়সড় ট্রান্সফরমার। এটি মাটি থেকে প্রায় সাড়ে চার হাত ওপরে। পাশেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই বছর ধরে ট্রান্সফরমারটি অরক্ষিত অবস্থায় এভাবেই পড়ে রয়েছে। ফলে এই রাস্তা দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থীসহ ২৫ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। অনন্তপুর গ্রামের ছয়জন বাসিন্দা জানান, সদর উপজেলার অনন্তপুর, বাদেয়ালি, তাজপুর, পশ্চিম দর্শা, খানুয়া, মাসুকগঞ্জ বাজার, মেদেনীমহল, বাছিরপুর, সুজাতপুর, মীরেগাঁও, উজানপাড়াসহ অন্তত ২৫টি গ্রামের মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। এ ছাড়া রাস্তার পাশের অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬৬ খুদে শিক্ষার্থীরও চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। শুরুতে ট্রান্সফরমারটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপরের দিকে ছিল। দুই বছর আগে এটি বিকল হয়ে পড়লে বিদ্যুৎ বিভাগ তা মেরামত করে খুঁটির নিচের দিকে পুনঃস্থাপন করে। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্বর্ণা ইসলাম বলে, ‘ইটার (ট্রান্সফরমার) লাগি স্কুল-অ আইতে ডর লাগে।’ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রিংকু রানী দাশ বলেন, ‘মাটি থেকে ট্রান্সফরমারটি খুব কম উঁচুতে হওয়ায় আমরা সারাক্ষণ ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে থাকি। আমাদের আশঙ্কা হয়,
এই বুঝি কোনো শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার শিকার হলো! এ কারণে টিফিন পিরিয়ড ও ছুটির সময়ে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও বাড়িতে যাওয়ার বিষয়টি আমরা খুব নজরদারিতে রাখি।’ বাদেয়ালি গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দিনের পর দিন অরক্ষিত অবস্থায় ট্রান্সফরমারটি পড়ে আছে। অথচ শিক্ষার্থী কিংবা পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রান্সফরমারটি কোনো ধরনের বেষ্টনীর মধ্যেও আটকে রাখা হয়নি। পথ চলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত যে কেউ ট্রান্সফরমারের মধ্যে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে পারে।’ গত বছর ঝড়ের কবলে পড়ে এক ব্যক্তি এই ট্রান্সফরমারের খুঁটির কাছে পড়ে গেলেও অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন বলে স্থানীয় কয়েকজন নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী রতন কুমার বিশ্বাস ট্রান্সফরমারটি এত কম উঁচুতে থাকার বিষয়টি জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন। ট্রান্সফরমারটি কত ভোল্টেজের, সেটিও তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী কারণে এটি এত কম উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে, সেটি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি এটি যাতে দ্রুততার সঙ্গে খুঁটির আরও ওপরের দিকে তুলে নেওয়া হয়, সে জন্য অবশ্যই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
No comments