পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে বাড়ি ফিরলেন হাত-পা খুইয়ে
কাজ করতে করতে মাঝেমধ্যেই হাঁপিয়ে উঠছিলেন মিশিগানের বাসিন্দা কেভিন ব্রিন। পেটের ভিতরে একটা মারাত্মক যন্ত্রণা তাঁকে কাবু করে ফেলত। প্রথম দিকে তেমন গুরুত্ব দেননি কেভিন। স্ত্রী জুলিকেও বিষয়টা বলেছিলেন। তিনিও ভেবেছিলেন অত্যধিক কাজের চাপের জন্যই হয়তো এমনটা হচ্ছে।
মাঝেমধ্যেই ব্যথা হতে লাগল। এক দিন খুব বাড়াবাড়ি হওয়ায় কেভিনকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী ডাক্তারখানায় গেলেন। চিকিত্সক কেভিনকে পরীক্ষা করে পেনকিলার ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন। সেই ওষুধেও কাজ হল না। উল্টে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। পেটে এত ব্যথা শুরু হল যে, কেভিনের হাঁটাচলা প্রায় বন্ধই হয়ে যায়।
এ রকম অবস্থা দেখে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নানা রকম পরীক্ষা করার পর চিকিত্সকরা চমকে যান।
কী হয়েছিল কেভিনের?
চিকিত্সকরা জানান, কেভিনের গলায় একটা ঘায়ের মতো হয়েছিল। অনেকটা ফ্যারিঞ্জাইটিসের মতো। চিকিত্সাবিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘স্ট্রেপ থ্রোট’ বলা হয়। সেই স্ট্রেপ থ্রোটের ব্যাকটিরিয়া কেভিনের সারা শরীরে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। চিকিত্সকরা দেখেন, পেটের ডান দিকে উঁচু মত কিছু একটা রয়েছে। অস্ত্রোপচার করার পর চিকিত্সকরাও ভাবতে পারেননি এমনটা হয়! এক চিকিত্সক জানান, কেভিনের পেটের ভিতরে প্রায় দেড় লিটার পুঁজ জমে ছিল। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন পেটের ভিতরের কোনও অঙ্গ কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এমনটা হয়েছে।
কিন্ত না। চিকিত্সকরা পরে আবিষ্কার করেন, কেভিনের এক সন্তানের স্ট্রেপ থ্রোট হয়েছিল। কোনও ভাবে তার সংস্পর্শে এসে যায় কেভিন। সেখান থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।
স্ট্রেপ থ্রোটের ব্যাকটিরিয়া কেভিনের গলা থেকে ধীরে ধীরে পেটে চলে যায়। আর সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বিকল করে দিতে শুরু করে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেভিনকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা হয়। তাঁর দুটো পা, বাঁ হাত এবং ডান হাতের আঙুল বাদ দিতে হয়।
-সুত্র: আনন্দবাজার
No comments