৩৬ দিনেও খোঁজ মেলেনি ভাইস চেয়ারম্যান মারজানের by সরকার মাজহারুল মান্নান
গত
শুক্রবার বিকেল বেলা। মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের ডিসির মোড়ে মহাসড়ক লাগোয়া
চিথলী দক্ষিণপাড়ায় নিখোঁজ মারজানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল হৃদয় বিদারক
দৃশ্য। ৮-৯ বছরের শিশু চোখের পানি মুছছে আর একজন মধ্যবয়সী নারীর বুকে দুই
হাত দিয়ে মারছে। থেমে থেমে বলছে আব্বু কেন আসছে না। আব্বুকে এনে দাও। কেন
ওরা আব্বুকে ছেড়ে দিচ্ছে না। আমি আব্বুর কাছে যাবো। মধ্যবয়সী ওই নারী
শিশুটিকে বারবার বুকে জাপটে ধরছে আর বলছে ‘তোমার আব্বু আসবে বাবা। ধৈর্য
ধর। আল্লাহর কাছে চাও। আল্লাহই তাকে এনে দেবেন। হে আল্লাহ এই শিশুটিকে আমি
এখন কি দিয়ে সান্ত্বনা দেবো। কাছে গিয়ে জানলাম শিশুটির নাম হাসিন। চতুর্থ
শ্রেণীতে পড়ে। মাঝ বয়সী নারীর নাম রোকাইয়া খানম লুকি। তারা মিঠাপুকুর
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাছেত মারজানের ছেলে ও স্ত্রী। সাংবাদিক
পরিচয় পেয়ে তারা বলতে থাকলেন মারজানের নিখোঁজ হওয়ার নানা কথা। এখনো খোঁজ
মেলেনি রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আবদুল
বাসেত মারজানের। ডিবি পরিচয়ে গ্রেফতর হওয়ার পর থেকে ৩৬ দিন ধরে নিখোঁজ
রয়েছেন তিনি। তার স্বজনেরা বাছেতকে ফিরিয়ে দিতে দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের ডিসির মোড় চিথলী দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিঠাপুকুরের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আব্দুল বারী (৯৪) ও মরহুমা আমিনা খাতুনের ছেলে আবদুল আব্দুল বাছেত মারজান। বর্তমানে তিনি মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের যুব ইউনিটের সভাপতি। কর্মজীবনে তিনি ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট। নিজ বাড়িসংলগ্ন ‘বার্ড ইলেকট্রনিক্স’ নামে একটি টিভি ফ্রিজের শোরুমের স্বত্বাধিকারী তিনি। দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মৃত আবদুল হাকিম মণ্ডলের সর্ব কনিষ্ঠ মেয়ে রোকাইয়া খানম লুকির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার একমাত্র কন্যা ইসমাত ওয়ারা সাবিহা (১৩) মিঠাপুকুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণী এবং ছেলে হাসিন তাজমিন (৯) অর্কিড মাল্টিমিডিয়ার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে পরাজিত করে এক লাখ ছয় হাজার ভোটে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে শপথ নিতে এসে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে তাকে পুলিশ দ্বিতীয় দফা গ্রেফতার করে। জেলখানা থেকেই শপথ নিয়েই পরে কারামুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২৯ জুন আবারো আদালতে হাজিরা দিতে এসে জেলহাজতে যান। মুক্ত হয়ে আবারো উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। আবারো ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে মিছিল থেকে গ্রেফতার হন তিনি। পরে কারামুক্ত হয়ে উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ উপজেলা পরিষদের কাজে ঢাকা গিয়ে তিনি নিখোঁজ হন।
আবদুল বাছেদ মারজানের স্ত্রী রোকাইয়া খানম লুকি নয়া দিগন্তকে জানান, আমার স্বামী উপজেলা পরিষদের কাজে ঢাকায় যান। সেখানে গিয়ে আমাদের নিকটাত্মীয় মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের তাজুল ভাইয়ের বাড়িতে ওঠেন। কাজ শেষ করে তিনি বাড়ি আসার কথা। ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ভোর রাত আনুমানিক সাড়ে ৫টা থেকে ৫টা ৪০ মিনিটের মধ্যে আমি ফোন পাই, সাদা পোশাকের কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক তাকে আটক করে নিয়ে গেছে। তারা উপস্থিত লোকজনদের পরিচয় দিয়েছেন ডিবির লোক।
প্রত্যক্ষদর্শী বাসার মালিক তাজুল ইসলামের স্ত্রী লিউজি বেগম জানান, ৩১ জানুয়ারি ভোরে বাড়ির দারোয়ানকে সাথে নিয়ে পাঁচ-ছয়জন লোক প্রথমে আমার বাসায় নক করে। আমার স্বামী দরজা খুলে দিলে তারা বলে, ‘ আমরা ডিবি পুলিশের লোক। আপনার মেহমান কোথায়? তার নামে মামলা আছে। এরপর তারা মারজানকে তুলে নিয়ে যায়।’
মারজানের স্ত্রী রোকাইয়া খান লুকি নয়া দিগন্তকে আরো জানান, আমার স্বামীকে ডিবি পরিচয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আমি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে গিয়ে আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়া কিংবা আদালতে সোপর্দ করার দাবি জানাই। একই দাবিতে আমি ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমার স্বামীকে আদালতে সোপর্দ করার দাবি জানাই। কিন্তু আজ ৩৬ দিন গত হয়ে গেল। আমি প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো খোঁজ পাইনি। তিনি কোথায় আছেন। কেমন আছেন। বেঁচে আছেন। নাকি জীবিত আছেন। তাও জানি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়ে লুকি বলেন, ‘ আমি চাই, অবুঝ সন্তান দু’টির দিকে তাকিয়ে, আমার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মারজানকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেবেন।
মারজানের বাবা মাওলানা আবদুল বারির বয়স এখন ৯৪। বুক চাপড়িয়ে কেঁদে বলতে থাকলেন, ‘আমার ছেলেকে যে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তাকে কি আর ফিরিয়ে দেবে না। ওকে কি আমি আর দেখতে পাবো না।
এ দিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাছেত মারজানের এই নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে মিঠাপুকুর থানা, রংপুর ডিবি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো পক্ষের কাছেই কোনো তথ্য নেই। তারা এই বিষয়টি অবহিতও নন। এ কারণে তারা কোনো বক্তব্য দিতেও রাজি হননি।
জানা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলা সদরের ডিসির মোড় চিথলী দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিঠাপুকুরের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আব্দুল বারী (৯৪) ও মরহুমা আমিনা খাতুনের ছেলে আবদুল আব্দুল বাছেত মারজান। বর্তমানে তিনি মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের যুব ইউনিটের সভাপতি। কর্মজীবনে তিনি ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট। নিজ বাড়িসংলগ্ন ‘বার্ড ইলেকট্রনিক্স’ নামে একটি টিভি ফ্রিজের শোরুমের স্বত্বাধিকারী তিনি। দুর্গাপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মৃত আবদুল হাকিম মণ্ডলের সর্ব কনিষ্ঠ মেয়ে রোকাইয়া খানম লুকির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার একমাত্র কন্যা ইসমাত ওয়ারা সাবিহা (১৩) মিঠাপুকুর হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণী এবং ছেলে হাসিন তাজমিন (৯) অর্কিড মাল্টিমিডিয়ার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে পরাজিত করে এক লাখ ছয় হাজার ভোটে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২৭ মার্চ ২০১৪ তারিখে শপথ নিতে এসে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে তাকে পুলিশ দ্বিতীয় দফা গ্রেফতার করে। জেলখানা থেকেই শপথ নিয়েই পরে কারামুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এরপর ২০১৪ সালের ২৯ জুন আবারো আদালতে হাজিরা দিতে এসে জেলহাজতে যান। মুক্ত হয়ে আবারো উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। আবারো ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে মিছিল থেকে গ্রেফতার হন তিনি। পরে কারামুক্ত হয়ে উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ উপজেলা পরিষদের কাজে ঢাকা গিয়ে তিনি নিখোঁজ হন।
আবদুল বাছেদ মারজানের স্ত্রী রোকাইয়া খানম লুকি নয়া দিগন্তকে জানান, আমার স্বামী উপজেলা পরিষদের কাজে ঢাকায় যান। সেখানে গিয়ে আমাদের নিকটাত্মীয় মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের তাজুল ভাইয়ের বাড়িতে ওঠেন। কাজ শেষ করে তিনি বাড়ি আসার কথা। ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ভোর রাত আনুমানিক সাড়ে ৫টা থেকে ৫টা ৪০ মিনিটের মধ্যে আমি ফোন পাই, সাদা পোশাকের কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক তাকে আটক করে নিয়ে গেছে। তারা উপস্থিত লোকজনদের পরিচয় দিয়েছেন ডিবির লোক।
প্রত্যক্ষদর্শী বাসার মালিক তাজুল ইসলামের স্ত্রী লিউজি বেগম জানান, ৩১ জানুয়ারি ভোরে বাড়ির দারোয়ানকে সাথে নিয়ে পাঁচ-ছয়জন লোক প্রথমে আমার বাসায় নক করে। আমার স্বামী দরজা খুলে দিলে তারা বলে, ‘ আমরা ডিবি পুলিশের লোক। আপনার মেহমান কোথায়? তার নামে মামলা আছে। এরপর তারা মারজানকে তুলে নিয়ে যায়।’
মারজানের স্ত্রী রোকাইয়া খান লুকি নয়া দিগন্তকে আরো জানান, আমার স্বামীকে ডিবি পরিচয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আমি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে গিয়ে আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেয়া কিংবা আদালতে সোপর্দ করার দাবি জানাই। একই দাবিতে আমি ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমার স্বামীকে আদালতে সোপর্দ করার দাবি জানাই। কিন্তু আজ ৩৬ দিন গত হয়ে গেল। আমি প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো খোঁজ পাইনি। তিনি কোথায় আছেন। কেমন আছেন। বেঁচে আছেন। নাকি জীবিত আছেন। তাও জানি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়ে লুকি বলেন, ‘ আমি চাই, অবুঝ সন্তান দু’টির দিকে তাকিয়ে, আমার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মারজানকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেবেন।
মারজানের বাবা মাওলানা আবদুল বারির বয়স এখন ৯৪। বুক চাপড়িয়ে কেঁদে বলতে থাকলেন, ‘আমার ছেলেকে যে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। তাকে কি আর ফিরিয়ে দেবে না। ওকে কি আমি আর দেখতে পাবো না।
এ দিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাছেত মারজানের এই নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে মিঠাপুকুর থানা, রংপুর ডিবি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো পক্ষের কাছেই কোনো তথ্য নেই। তারা এই বিষয়টি অবহিতও নন। এ কারণে তারা কোনো বক্তব্য দিতেও রাজি হননি।
No comments