হরফ নিয়ে সাঁওতালদের বিরোধ by রাজীব নূর
কোন
হরফে লেখা হবে সাঁওতালি ভাষা- রোমান, নাকি বাংলা? এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কে
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আদিবাসী জনগোষ্ঠী সাঁওতালরা মাতৃভাষায়
শিক্ষাদানের কর্মসূচির প্রথম দফার উদ্যোগ থেকে বাদ পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সব
পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সাঁওতালরা এ ব্যাপারে
এখনও ঐকমত্যে পেঁৗছাতে পারেনি। অবশ্য এরই মধ্যে রোমান ও বাংলা হরফের
পরিবর্তে সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা অলচিকিতে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নেরও
আলোচনা উঠেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে সাঁওতালদের সংখ্যা
এক লাখ ৪৩ হাজার। ১৯৯১ সালের আদমশুমারিতে বাংলাদেশে সাঁওতালদের সংখ্যা ছিল
দুই লাখ দুই হাজার ১৬২। তবে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক
মানিক সরেনের দাবি, এ সংখ্যা সঠিক নয়। তিনি বলেন, সাঁওতালদের জনসংখ্যা নিয়ে
বাংলাদেশ সরকারের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য আছে, যেমন- চতুর্থ শ্রেণীর
'বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়' বইয়ের তৃতীয় অধ্যায়ের ১৫ ও ১৬ পৃষ্ঠায় সাঁওতালদের
সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখের বেশি সাঁওতাল বাস করে।
ষষ্ঠ শ্রেণীর 'ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি' বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় 'বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিচিতি'তে বলা হচ্ছে, বর্তমানে প্রায় আড়াই লাখ সাঁওতাল বাংলাদেশে বসবাস করে। মানিক সরেন জানান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সাঁওতালদের সংখ্যা চার লাখের বেশি হবে। সবচেয়ে বেশি সাঁওতাল আছে রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায় সাঁওতালরা বাস করে। সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন চা বাগানে কিছু সাঁওতাল পরিবার রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলায় কয়েকটি এবং রাঙামাটি সদরে দুটি সাঁওতাল পরিবার আছে। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল মিলিয়ে পৃথিবীতে প্রায় নব্বই লাখ মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলে।
সাঁওতালি ভাষা অস্ট্রো-এশীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচ্য শাখার অন্তর্ভুক্ত। সাঁওতালি ভাষার উপভাষা দুটি হলো নাহিলি ও করকু। সাঁওতালি ভাষার ইতিহাস অতি প্রাচীন হলেও দীর্ঘদিন এ ভাষার কোনো বর্ণমালা ছিল না। এ ভাষার প্রথম লিখিত রূপ তৈরি করা হয় খ্রিস্টান মিশনারিদের উদ্যোগে, রোমান হরফে। ১৮৬৯ সালে ভারতের সাঁওতাল পরগনার লুথারিয়ান মিশনে স্থাপিত একটি ছাপাখানা থেকে সাঁওতালি ভাষার প্রথম ব্যাকরণ প্রকাশিত হয় বলে জানা যায়। পরে পণ্ডিত রঘুনাথ মুরমুু 'অলচিকি' বা 'ওলচিকি' নামে সাঁওতালি লিপি উদ্ভাবন করেন।
গবেষক পাভেল পার্থের লেখা থেকে জানা যায়, সাঁওতালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য রঘুনাথ মুরমুু সূচনা করেন এক সংগ্রামী অধ্যায়। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'আদিবাসী সোসিও-এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন' বা অ্যাসেকা। ১৯৭০-৭১ সালে রোমান লিপিতে সাঁওতালি ভাষা লেখার রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অ্যাসেকা কলকাতায় হাজার হাজার সাঁওতাল জনগণের মিছিল সংগঠিত করে। ১৯৭৯ সালে ভারতে সাঁওতালি ভাষার একমাত্র লিপি হিসেবে অলচিকিকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে সাঁওতালি ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ২০০০ সালের ১ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তাই বাংলা, না রোমান- হরফ নিয়ে এ বিতর্কের অবসানে অলচিকি বর্ণমালা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত শিশুর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের পরিচালক মেহেরুন্নাহার স্বপ্না বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেনসহ অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে গঠিত এমএলই (মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন) ফোরামের উদ্যোগে বিষয়টির একটি সমাধান বের করে আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের অধ্যাপক সৌরভ সিকদার ও আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রংকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা রবীন্দ্রনাথ সরেন, আলবার্ট সরেনসহ সাঁওতালদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে এর কোনো সুরাহা করতে পারেননি।
অধ্যাপক সৌরভ সিকদার বলেন, ২০১০ সালে যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল, সেখানে এ দেশের আদিবাসী তথা সরকারি ভাষায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের শুরুতেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হয় প্রাক্-প্রাথমিক পর্যায়ে আদিবাসীদের জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির। এ বিষয়ে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গঠিত হয় একটি জাতীয় কমিটি।
সেই কমিটির সুপারিশে প্রাথমিকভাবে চাকমা, মারমা, ককবরক, মান্দি, সাঁওতালি ও সাদরি এ ছয়টি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সাঁওতালি ভাষার হরফ নিয়ে বিতর্কে আপাতত এই ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরির কাজ স্থগিত রয়েছে। সাঁওতালরা তাদের ভাষায় রোমান লিপি ব্যবহার করে আসছে ১০০ বছরের অধিক সময় ধরে। বাংলাদেশে অবশ্য তাদের অনেকেই বাংলা লিপিও ব্যবহার করে থাকে। মন্ত্রণালয়ে গঠিত আদিবাসীদের মাতৃভাষা বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি লিপির প্রশ্নে সাঁওতালিদের মধ্যে বিভক্তি থাকায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাঁওতালদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়।
অধ্যাপক সৌরভ সিকদার এ কমিটির একজন সদস্য। একই সঙ্গে তিনি এমএলই (মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন) ফোরামেরও সদস্য। দাবি করা হয়, এমএলই ফোরামের অ্যাডভোকেসির ফলেই বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সাঁওতালদের শীর্ষ দুই নেতা রবীন্দ্রনাথ সরেন ও আলবার্ট সরেনের সঙ্গে আলাপে জানা গেল, হরফ নিয়ে বিতর্কে তারা এখনও যার যার অবস্থানে অনড়। তবে এ সমস্যা সমাধানে বিশিষ্ট আদিবাসী গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, যতদিন পর্যন্ত হরফ নিয়ে একমত হতে না পারবে, ততদিন পর্যন্ত একই সঙ্গে রোমান ও বাংলা হরফে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্তে পেঁৗছা প্রয়োজন। তিনি ২০০৪ ও ২০০৫ সালের দিকে মাঠপর্যায়ে তার নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণার উল্লেখ করে বলেন, 'তখন আমরা দেখেছি, সাঁওতালদের ৪৫ শতাংশ বাংলা ও ৫৫ শতাংশ রোমান হরফের পক্ষে মত দিয়েছেন।'
ষষ্ঠ শ্রেণীর 'ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি' বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় 'বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিচিতি'তে বলা হচ্ছে, বর্তমানে প্রায় আড়াই লাখ সাঁওতাল বাংলাদেশে বসবাস করে। মানিক সরেন জানান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সাঁওতালদের সংখ্যা চার লাখের বেশি হবে। সবচেয়ে বেশি সাঁওতাল আছে রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়া, রংপুর, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায় সাঁওতালরা বাস করে। সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন চা বাগানে কিছু সাঁওতাল পরিবার রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলায় কয়েকটি এবং রাঙামাটি সদরে দুটি সাঁওতাল পরিবার আছে। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল মিলিয়ে পৃথিবীতে প্রায় নব্বই লাখ মানুষ সাঁওতালি ভাষায় কথা বলে।
সাঁওতালি ভাষা অস্ট্রো-এশীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচ্য শাখার অন্তর্ভুক্ত। সাঁওতালি ভাষার উপভাষা দুটি হলো নাহিলি ও করকু। সাঁওতালি ভাষার ইতিহাস অতি প্রাচীন হলেও দীর্ঘদিন এ ভাষার কোনো বর্ণমালা ছিল না। এ ভাষার প্রথম লিখিত রূপ তৈরি করা হয় খ্রিস্টান মিশনারিদের উদ্যোগে, রোমান হরফে। ১৮৬৯ সালে ভারতের সাঁওতাল পরগনার লুথারিয়ান মিশনে স্থাপিত একটি ছাপাখানা থেকে সাঁওতালি ভাষার প্রথম ব্যাকরণ প্রকাশিত হয় বলে জানা যায়। পরে পণ্ডিত রঘুনাথ মুরমুু 'অলচিকি' বা 'ওলচিকি' নামে সাঁওতালি লিপি উদ্ভাবন করেন।
গবেষক পাভেল পার্থের লেখা থেকে জানা যায়, সাঁওতালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য রঘুনাথ মুরমুু সূচনা করেন এক সংগ্রামী অধ্যায়। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'আদিবাসী সোসিও-এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন' বা অ্যাসেকা। ১৯৭০-৭১ সালে রোমান লিপিতে সাঁওতালি ভাষা লেখার রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে অ্যাসেকা কলকাতায় হাজার হাজার সাঁওতাল জনগণের মিছিল সংগঠিত করে। ১৯৭৯ সালে ভারতে সাঁওতালি ভাষার একমাত্র লিপি হিসেবে অলচিকিকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে সাঁওতালি ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ২০০০ সালের ১ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তাই বাংলা, না রোমান- হরফ নিয়ে এ বিতর্কের অবসানে অলচিকি বর্ণমালা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত শিশুর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের পরিচালক মেহেরুন্নাহার স্বপ্না বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেনসহ অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে গঠিত এমএলই (মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন) ফোরামের উদ্যোগে বিষয়টির একটি সমাধান বের করে আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের অধ্যাপক সৌরভ সিকদার ও আদিবাসী নেতা সঞ্জীব দ্রংকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা রবীন্দ্রনাথ সরেন, আলবার্ট সরেনসহ সাঁওতালদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে এর কোনো সুরাহা করতে পারেননি।
অধ্যাপক সৌরভ সিকদার বলেন, ২০১০ সালে যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল, সেখানে এ দেশের আদিবাসী তথা সরকারি ভাষায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের শুরুতেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হয় প্রাক্-প্রাথমিক পর্যায়ে আদিবাসীদের জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির। এ বিষয়ে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গঠিত হয় একটি জাতীয় কমিটি।
সেই কমিটির সুপারিশে প্রাথমিকভাবে চাকমা, মারমা, ককবরক, মান্দি, সাঁওতালি ও সাদরি এ ছয়টি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সাঁওতালি ভাষার হরফ নিয়ে বিতর্কে আপাতত এই ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরির কাজ স্থগিত রয়েছে। সাঁওতালরা তাদের ভাষায় রোমান লিপি ব্যবহার করে আসছে ১০০ বছরের অধিক সময় ধরে। বাংলাদেশে অবশ্য তাদের অনেকেই বাংলা লিপিও ব্যবহার করে থাকে। মন্ত্রণালয়ে গঠিত আদিবাসীদের মাতৃভাষা বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি লিপির প্রশ্নে সাঁওতালিদের মধ্যে বিভক্তি থাকায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাঁওতালদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়।
অধ্যাপক সৌরভ সিকদার এ কমিটির একজন সদস্য। একই সঙ্গে তিনি এমএলই (মাল্টিলিঙ্গুয়াল এডুকেশন) ফোরামেরও সদস্য। দাবি করা হয়, এমএলই ফোরামের অ্যাডভোকেসির ফলেই বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সাঁওতালদের শীর্ষ দুই নেতা রবীন্দ্রনাথ সরেন ও আলবার্ট সরেনের সঙ্গে আলাপে জানা গেল, হরফ নিয়ে বিতর্কে তারা এখনও যার যার অবস্থানে অনড়। তবে এ সমস্যা সমাধানে বিশিষ্ট আদিবাসী গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, যতদিন পর্যন্ত হরফ নিয়ে একমত হতে না পারবে, ততদিন পর্যন্ত একই সঙ্গে রোমান ও বাংলা হরফে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সিদ্ধান্তে পেঁৗছা প্রয়োজন। তিনি ২০০৪ ও ২০০৫ সালের দিকে মাঠপর্যায়ে তার নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণার উল্লেখ করে বলেন, 'তখন আমরা দেখেছি, সাঁওতালদের ৪৫ শতাংশ বাংলা ও ৫৫ শতাংশ রোমান হরফের পক্ষে মত দিয়েছেন।'
No comments