মামলা তুলে নিতে নানা প্রলোভন by কাজী আনিছ
(ছবি
হাতে জিহাদের কথা বলছেন শোকাতুর মা খাদিজা বেগম। পাশে জিহাদের ভাই জিসান ও
চোখ মুছতে থাকা বাবা নাসির ফকির। গতকাল শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির বাসা
থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো ) রাজধানীর
শাহজাহানপুরে পাইপে পড়ে শিশু মো. জিহাদের মৃত্যুর ঘটনার মামলা তুলে নিতে
পরিবারকে অনবরত প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একজন আসামির
পক্ষে কয়েকজন মামলা তুলে মীমাংসায় আসার জন্য পরিবারকে রাজি করাতে উঠেপড়ে
লেগেছেন। এ জন্য ভুক্তভোগী পরিবার যা দাবি করবে, তাও পূরণ করা হবে বলে
আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর শাহজাহানপুরে
রেলওয়ে কলোনি এলাকায় বাসার পাশেই খেলতে গিয়ে রেলওয়ে পানির পাম্পের একটি
গভীর নলকূপে পড়ে মারা যায় জিহাদ। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য পানির
পাম্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসআর হাউসের মালিক আবদুস সালাম ওরফে শফিকুল
ইসলাম ও রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে
মামলা করা হয়। এ ঘটনায় করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার হাইকোর্ট
শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে
চেয়ে রুল জারি করেন। জিহাদের মা খাদিজা বেগম হাইকোর্টের রুল শোনার পর
বলেন, ‘আমাদের খোঁজ এখন কেউ আর রাখে না। ঘরভর্তি টাকা দিলেও আমার বাচ্চা
তো আর আইব না।’
মীমাংসার প্রস্তাব: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার এক নম্বর আসামির পক্ষে মোজাম্মেল হোসেন ওরফে হেলাল নামের তাঁর এক বন্ধু জিহাদের পরিবারের কাছে মামলা তুলে মীমাংসায় আসার জন্য অনবরত প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জিহাদের বাবার কাছে গিয়ে এ বিষয়ে কথাও বলেছেন। বেশ কয়েকবার ফোন করে জিহাদের মামা মনির মোল্লাকে দ্রুত মীমাংসায় আসার তাগাদা দিয়েছেন। বিনিময়ে যা দাবি করা হবে, তা দেওয়া হবে বলে পরিবারকে আশ্বাসও দেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০০৩ সালে ওই পাইপ বসিয়েছিল আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সালের দিকে ওই কাজটি পেয়েছেন আবদুস সালাম। তাই তিনি নির্দোষ। তাই নির্দোষের পক্ষে যেকোনো ধরনের সুরাহা আপনিও চাইবেন। তবে কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না।’
পুলিশের অবহেলার অভিযোগ: জিহাদের বাবা নাসির ফকির বলেন, আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ শুরু থেকেই অবহেলা করেছে। আর এ সুযোগেই এক আসামি জামিন নিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু জাফর বলেন, হরতাল-অবরোধের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলাটির জন্য সময় দিতে পারেননি।
জামিন স্থগিত: আদালত প্রতিবেদক জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান মামলার আসামি আবদুস সালাম। তবে এর বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ একটি আবেদন করে। গতকাল সোমবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রাষ্ট্রপক্ষের করা এ আবেদনের শুনানি নিয়ে আবদুস সালামের জামিন তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। আবদুস সালামকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
কেউ খোঁজ রাখে না: জিহাদের মা খাদিজা বেগম এখনো অসুস্থ। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই বলছিলেন, বাচ্চা পাইপে নাই। আমার স্বামীরে পুলিশ আটকাইল। আমার ভাইটারে পুলিশ মারল। বাচ্চার লাশ পাওয়ার পর মামলা করলাম। এখন শুনতেছি, আসামি জামিন নিছে। এখন এই ৩০ লাখ টাকা পামু কি না তারও কোনো নিশ্চয়তা নাই।’
খাদিজা বলেন, ‘আমার বাবা জিহাদ প্রায় সময় আইসক্রিম বা অন্য কিছু খাওয়ার জন্য ভাংতি টাকা চাইত। ভাংতি বলতে সে বুঝত পাঁচ টাকা। তাই আমি তার জন্য প্রতিদিন পাঁচ টাকাই রাখতাম। এখন লাখ লাখ টাকা পাইয়া হাজারবার ডাকলেও তো আমার বাবা আর আইব না।’ জিহাদের বাবা নাসির জানান, ‘ঘটনার পর অনেকেই অনেক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল। রেলওয়েতে চাকরি দেবেও বলেছিল। ওই পাইপের জায়গায় জিহাদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ করার আশা দিছিল। তাদের কেউ এখন আর ফোনও ধরে না।’
মীমাংসার প্রস্তাব: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার এক নম্বর আসামির পক্ষে মোজাম্মেল হোসেন ওরফে হেলাল নামের তাঁর এক বন্ধু জিহাদের পরিবারের কাছে মামলা তুলে মীমাংসায় আসার জন্য অনবরত প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জিহাদের বাবার কাছে গিয়ে এ বিষয়ে কথাও বলেছেন। বেশ কয়েকবার ফোন করে জিহাদের মামা মনির মোল্লাকে দ্রুত মীমাংসায় আসার তাগাদা দিয়েছেন। বিনিময়ে যা দাবি করা হবে, তা দেওয়া হবে বলে পরিবারকে আশ্বাসও দেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০০৩ সালে ওই পাইপ বসিয়েছিল আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সালের দিকে ওই কাজটি পেয়েছেন আবদুস সালাম। তাই তিনি নির্দোষ। তাই নির্দোষের পক্ষে যেকোনো ধরনের সুরাহা আপনিও চাইবেন। তবে কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না।’
পুলিশের অবহেলার অভিযোগ: জিহাদের বাবা নাসির ফকির বলেন, আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ শুরু থেকেই অবহেলা করেছে। আর এ সুযোগেই এক আসামি জামিন নিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু জাফর বলেন, হরতাল-অবরোধের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলাটির জন্য সময় দিতে পারেননি।
জামিন স্থগিত: আদালত প্রতিবেদক জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান মামলার আসামি আবদুস সালাম। তবে এর বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ একটি আবেদন করে। গতকাল সোমবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রাষ্ট্রপক্ষের করা এ আবেদনের শুনানি নিয়ে আবদুস সালামের জামিন তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। আবদুস সালামকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
কেউ খোঁজ রাখে না: জিহাদের মা খাদিজা বেগম এখনো অসুস্থ। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই বলছিলেন, বাচ্চা পাইপে নাই। আমার স্বামীরে পুলিশ আটকাইল। আমার ভাইটারে পুলিশ মারল। বাচ্চার লাশ পাওয়ার পর মামলা করলাম। এখন শুনতেছি, আসামি জামিন নিছে। এখন এই ৩০ লাখ টাকা পামু কি না তারও কোনো নিশ্চয়তা নাই।’
খাদিজা বলেন, ‘আমার বাবা জিহাদ প্রায় সময় আইসক্রিম বা অন্য কিছু খাওয়ার জন্য ভাংতি টাকা চাইত। ভাংতি বলতে সে বুঝত পাঁচ টাকা। তাই আমি তার জন্য প্রতিদিন পাঁচ টাকাই রাখতাম। এখন লাখ লাখ টাকা পাইয়া হাজারবার ডাকলেও তো আমার বাবা আর আইব না।’ জিহাদের বাবা নাসির জানান, ‘ঘটনার পর অনেকেই অনেক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল। রেলওয়েতে চাকরি দেবেও বলেছিল। ওই পাইপের জায়গায় জিহাদের জন্য স্মৃতিস্তম্ভ করার আশা দিছিল। তাদের কেউ এখন আর ফোনও ধরে না।’
No comments