তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এ বছরেই- কাল আসছেন মমতা by রাশেদ মেহেদী ও রক্তিম দাশ
তিস্তা
চুক্তি সম্পাদনে রাজি হওয়ার শুভ বার্তা নিয়েই আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা
আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র
জানায়, আগামী শুক্রবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পরই তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের
সময় সম্পর্কে ঘোষণা আসতে পারে। চূড়ান্ত চুক্তি সম্পাদনও হতে পারে এ বছরের
মধ্যেই। এ ছাড়া স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে মমতা আরও আগেই
ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। স্থল সীমান্ত চুক্তি লোকসভায় অনুমোদন
হওয়ার পর ছিটমহল বিনিময়ের ব্যাপারটিও ঢাকা ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সূত্র
জানায়, মমতার সফরের পর ঢাকায় আসবেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্কর।
তার সফরে চুক্তির ব্যাপারে দু'দেশের দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতার বিষয়টি চূড়ান্ত
হবে। বাংলাদেশের প্রস্তাব অনুযায়ী সমহারে তিস্তার পানি ভাগাভাগির বিষয়টি
চূড়ান্ত হচ্ছে বলে সূত্র জানায়। অন্যদিকে বাংলাদেশের কাছ থেকে মমতা
পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পেতে চান। পশ্চিমবঙ্গে
বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের ও বাংলাদেশে পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ
এবং বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ চলচ্চিত্র বাজার গড়ে তোলার বিষয়টিও মমতার
এজেন্ডায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। আলোচ্যসূচিতে থাকবে সীমান্ত
ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা সংকটের প্রসঙ্গও।
এদিকে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ দু'দেশের বিশ্লেষকরাই মমতার ঢাকা সফরকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান সমকালকে বলেন, স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এটা নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই। কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পর্কে তিনি বাংলাদেশকে শুভ বার্তা দিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা। সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা রাজ্য। এ কারণে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসার মধ্য দিয়ে অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধান ত্বরান্বিত হবে, এ আশাই থাকবে বাংলাদেশের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ গুহ সমকালকে বলেন, 'প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজি করিয়ে গঙ্গার জল বণ্টন চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে একটা বড় সুযোগ তিস্তা ও স্থল সীমান্ত চুক্তি নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরা। যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। লক্ষণে মনে হচ্ছে ঢাকা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এ সুযোগটি কাজে লাগাবেন।'
এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ঢাকা সফরে আসার কথা ছিল মমতার। তবে সে সময় তিনি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মমতা ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায় ঢাকা পেঁৗছবেন। সফরসূচিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এবং চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ২০ ফেব্রুয়ারি তার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তিনি। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষাশহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন এবং অমর একুশের একাধিক অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেবেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সারা দিন তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ২১ তারিখ রাতেই তিনি কলকাতা ফিরে যাবেন।
মমতার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরাদ হাকিম, পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা অভিনয়শিল্পী মুনমুন সেন, টালিউড সুপারস্টার ও সাংসদ দেব, সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন, চলচ্চিত্র প্রযোজক শ্রীকান্ত মেহেতা, কবি সুবোধ সরকার এবং শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ পেলেও সঙ্গীতশিল্পী কবির সুমন ও সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার সফরসঙ্গী হচ্ছেন না বলে জানা গেছে। টালিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রসেনজিতেরও আসার কথা রয়েছে। তবে তার আসার বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া দৈনিক এই সময়ের সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায়সহ ২০ সদস্যের একটি সাংবাদিক প্রতিনিধি দলও থাকছে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত।
এদিকে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ দু'দেশের বিশ্লেষকরাই মমতার ঢাকা সফরকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান সমকালকে বলেন, স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এটা নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই। কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পর্কে তিনি বাংলাদেশকে শুভ বার্তা দিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা। সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা রাজ্য। এ কারণে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসার মধ্য দিয়ে অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধান ত্বরান্বিত হবে, এ আশাই থাকবে বাংলাদেশের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ গুহ সমকালকে বলেন, 'প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজি করিয়ে গঙ্গার জল বণ্টন চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে একটা বড় সুযোগ তিস্তা ও স্থল সীমান্ত চুক্তি নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরা। যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। লক্ষণে মনে হচ্ছে ঢাকা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এ সুযোগটি কাজে লাগাবেন।'
এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ঢাকা সফরে আসার কথা ছিল মমতার। তবে সে সময় তিনি তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মমতা ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায় ঢাকা পেঁৗছবেন। সফরসূচিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এবং চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ২০ ফেব্রুয়ারি তার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তিনি। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষাশহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন এবং অমর একুশের একাধিক অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেবেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সারা দিন তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ২১ তারিখ রাতেই তিনি কলকাতা ফিরে যাবেন।
মমতার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরাদ হাকিম, পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা অভিনয়শিল্পী মুনমুন সেন, টালিউড সুপারস্টার ও সাংসদ দেব, সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন, চলচ্চিত্র প্রযোজক শ্রীকান্ত মেহেতা, কবি সুবোধ সরকার এবং শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ পেলেও সঙ্গীতশিল্পী কবির সুমন ও সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার সফরসঙ্গী হচ্ছেন না বলে জানা গেছে। টালিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রসেনজিতেরও আসার কথা রয়েছে। তবে তার আসার বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া দৈনিক এই সময়ের সম্পাদক সুমন চট্টোপাধ্যায়সহ ২০ সদস্যের একটি সাংবাদিক প্রতিনিধি দলও থাকছে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত।
No comments