খালেদা অবরুদ্ধ নন -ডিএমপি, ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা, আটক ১০
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি বলে দাবি করেছে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এছাড়া পুলিশের দাবি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল
কবির রিজভীকে আটক করা হয়নি, তাকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেছে চিকিৎসার জন্য।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এক প্রেস
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।
মনিরুল বলেন, “খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে শুধু তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। শুধু খালেদা জিয়া নয়, বিএনপির কোনো নেতাকেই অবরুদ্ধ করা হয়নি।”
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজবীকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, “রিজভীকে আটক করা হয়নি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। এ অবস্থা পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
৫ তারিখে যেকোনো ধরনের সংহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান মনিরুল।
মনিরুল বলেন, “খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে শুধু তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। শুধু খালেদা জিয়া নয়, বিএনপির কোনো নেতাকেই অবরুদ্ধ করা হয়নি।”
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজবীকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, “রিজভীকে আটক করা হয়নি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। এ অবস্থা পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
৫ তারিখে যেকোনো ধরনের সংহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশের সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান মনিরুল।
ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগ
বিএনপি
ও আওয়ামী লীগের আগামীকালের মুখোমুখি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন
স্থান থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি। নাশকতার
আশঙ্কায় রোববার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বলে জানান মালিকরা।
বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন
সাধারণ যাত্রীরা। অনেকে আগে থেকে টিকিট কেটে রাখলেও সকালে বাসস্ট্যান্ডে
এসে বাস চলাচল বন্ধ দেখে দুর্ভোগে পড়েন। এজন্য সাধারণ যাত্রীদের ক্ষোভ
প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। আমাদের রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী থেকে ঢাকার
সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাশকতার আশঙ্কায় রোববার সকাল থেকে
বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিকরা। রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ
সম্পাদক মঞ্জুর রহমান পিটার জানান, ভোরে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুই
থেকে তিনটি বাস ছেড়ে যায়। এরপরেই বাস মালিকরা সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী থেকে
ঢাকাগামী বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়ার। রাস্তায় নাশকতা ঘটতে পারে এমন
আশঙ্কায় বাস মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেয়। রংপুর ব্যুরো জানায়, ৫ জানুয়ারি
বিএনপির ঢাকায় কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে নাকশকতা হতে পারে এ
আশঙ্কায় রংপুরে ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মোটর বাস
মালিক সমিতি। শনিবার রাত ১২টার পর থেকে অঘোষিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া
হয়। এতে চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকাগামী যাত্রীরা। এব্যাপারে জেলা মোটর বাস
মালিক সমিতির কোনো নেতা মুখ খুলতে রাজি হননি। আমাদের পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জানান, ৫ জানুয়ারি সোমবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মুখোমুখি কর্মসূচিকে
কেন্দ্র করে পটুয়াখালী থেকে দূরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া
হয়েছে। রোববার সকাল ৭টা থেকে জেলার বাসস্টান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস
ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চলচল বন্ধ করে দেয়ায়
বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণ অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা
প্রায়
আধা ঘণ্টা তল্লাশি শেষে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান
ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে পুলিশ। শনিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে কার্যালয়ে ঢুকে
পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। রাত পৌনে ১টার দিকে কার্যালয়ে থাকা আটজনকে বের
করে তালা দিয়ে পুলিশ চাবি নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে কার্যালয়ে থাকা
কর্মচারীরা। এর আগে রাত ১২টার দিকে কার্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে দলের যুগ্ম
মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা। তারা
বলেছেন, চিকিৎসার জন্য অসুস্থ রিজভীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে
রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের রাজনৈতিক
কার্যালয় থেকে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আসতে গেলে তার পথ আটকায় পুলিশ।
কার্যালয়ের ফটকের সামনে একটি ট্রাক আড়াআড়িভাবে রেখে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা
হয়। এর ১৫ মিনিট পর খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য ব্যারিকেড
সরাতে বললে তা না হওয়ায় কিছুক্ষণ গাড়িতে অপেক্ষা করে আবার কার্যালয়ে ফিরে
যান। রাতে সেখানেই অবস্থান করেন তিনি।
খালেদার কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষ, আটক ১০
বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিএনপির
নেতাকর্মীদের একটি মিছিল লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময়
পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের হালকা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রোববার দুপুর ১২টার
দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১০ জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি মিছিল
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হতে
থাকলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। পুলিশ প্রথমে তাদের গতিরোধ করে, পরে
লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক
করেছে বলে জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আটকদের নাম জানা যায়নি। এদিকে বেগম
খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে।
কার্যালয়ের ভেতরে কোনো নেতাকর্মীকে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। সাবেক
রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীও পুলিশি বাধার মুখে ফিরে
আসেন।
No comments