বদলে গেল ৩০ গ্রামের মানুষের ভাগ্য
একটি
বাঁধের কারণে ৩০ গ্রামের ১০ হাজার কৃষকের ভাগ্যের চাকা বদলে গেছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও বরগুনার আমতলী, তালতলী উপজেলার কোলঘেষা আন্দারমানিক
এবং দোন নদীর সংযোগস্থল শারিকখালীর গ্রাম। এ বাঁধের কারণে উপকৃত হয়েছে
বেশি। সত্তর দশকে সাগরের লোনা পানির হাত থেকে কৃষিজমি রক্ষায় বেড়িবাঁধসহ
ক্লোজার নির্মাণ করা হয়। নব্বই দশকে আমতলী উপজেলা পরিষদ থেকে নামমাত্র টাকা
দিয়ে মাছ চাষের জন্য চাকামইয়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান
লিজ নেন। পরে দোন নদীসহ ক্লোজার দখল করে মাছ চাষ করে। ইজারাদার দোন নদীতে
সাগরের লোনা পানি ওঠানামায় স্বেচ্ছাচারী ভূমিকা পালন করে। ফলে সাগরের লোনা
পানি ওঠায় কৃষিজমি ধ্বংস হতে শুরু করে। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আমতলী, তালতলী ও
কলাপাড়ার সাধারণ কৃষক। এতে ইজারাদারের সঙ্গে স্থানীয় কৃষকের মাঝে বহুবার
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। ২০০৬ সালে স্থানীয় মানুষ একজোট হয়ে ইজারাদারের
ক্লোজারের মুখে দেয়া বাঁধ কেটে দেয়। ফলে সাগর ও নদীর লোনা-পানিতে কৃষিজমি
লবণাক্ত হতে শুরু করে। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ২০০৯ সালে আইলায়
বেড়িবাঁধসহ ক্লোজার লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এর পরে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি
বৃদ্ধি পেলে পশ্চিম চাকামইয়া, কড়াইবাড়িয়া, তারিকাটা, কচুপাত্রা, শারিকখালী,
বাদুরগাছা, বলইবুনিয়া, চাউলাপাড়া, বেহেলা, উত্তর চাকামইয়া, আলীর বন্দর,
উত্তর ঝাড়াখালী, দক্ষিণ ঝাড়াখালী, কলারঙ, আঙ্গারপাড়া, হেলেঞ্চাবাড়িয়া,
হাড়িপাড়া, নলবুনিয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও দক্ষিণ চাউলাপাড়াসহ ৩০ গ্রাম লোনা
পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। ১৫ হাজার একর জমি লোনাপানিতে তলিয়ে থাকায় কৃষি কাজ
পাঁচ বছর বন্ধ থাকে। ২০১১ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ৩ কোটি
৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ করে। ৫ বছর ৩০ গ্রামের ১০ হাজার কৃষক
কৃষি কাজ করতে না পেরে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। বাঁধ নির্মাণের ফলে এলাকার
কৃষক পুনরায় কৃষিকাজ শুরু করে। চার বছর পরে কৃষকরা এ বছর বাম্পার ফলন
পেয়েছেন। চাকামইয়া গ্রামের কৃষক মোতালেব খান জানান, বাঁধের কারণে এ বছর
ফলন ভাল হয়েছে। লবণাক্ততার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। তিনি আরও জানান, এই ৩০
গ্রামের মধ্যে খালগুলো সংস্কার ও আঙ্গারপাড়ায় একটি ক্লোজার নির্মাণ করা
প্রয়োজন।
তারিকাটা গ্রামের কৃষক জয়নাল জানান, ‘মোগো রক্ষা অইছে। নুনা পান্তে মোরা শেষ অইয়্যা গ্যাছেলাম। এ বচ্চর মোরা ভাল ধান পাইছি।’ তালতলীর কচুপাত্রা গ্রামের কৃষক শহীদ জানান, পাঁচ বছর ধরে আমরা কোন ধান পাইনি। দোন নদীর বাঁধের কারণে গত চার বছর লবণাক্ততা কমে গেছে।
আড়পাঙ্গাশিয়ার গ্রামের কৃষক নয়ন মিয়া জানান, জমির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় ভাল ফলন হয়েছে।
শারিকখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বাবলু জানান, দোন নদীর বাঁধ নির্মাণের কারণে কড়াইবাড়িয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও পচাকোড়ালিয়াসহ সাত ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার কৃষকের জমি চাষাবাদের উপযোগী হয়েছে। লবণাক্ততার কারণে গত পাঁচ বছর এ এলাকায় কোন ফসল ফলত না।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম বদরুল আলম জানান, এ ৩০টি গ্রামে লবণ সহিষ্ণু ধান, সূর্যমুখী ও মুগ ডাল চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে কাজ করছি।
তারিকাটা গ্রামের কৃষক জয়নাল জানান, ‘মোগো রক্ষা অইছে। নুনা পান্তে মোরা শেষ অইয়্যা গ্যাছেলাম। এ বচ্চর মোরা ভাল ধান পাইছি।’ তালতলীর কচুপাত্রা গ্রামের কৃষক শহীদ জানান, পাঁচ বছর ধরে আমরা কোন ধান পাইনি। দোন নদীর বাঁধের কারণে গত চার বছর লবণাক্ততা কমে গেছে।
আড়পাঙ্গাশিয়ার গ্রামের কৃষক নয়ন মিয়া জানান, জমির লবণাক্ততা কমে যাওয়ায় ভাল ফলন হয়েছে।
শারিকখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বাবলু জানান, দোন নদীর বাঁধ নির্মাণের কারণে কড়াইবাড়িয়া, আড়পাঙ্গাশিয়া ও পচাকোড়ালিয়াসহ সাত ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার কৃষকের জমি চাষাবাদের উপযোগী হয়েছে। লবণাক্ততার কারণে গত পাঁচ বছর এ এলাকায় কোন ফসল ফলত না।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার এস এম বদরুল আলম জানান, এ ৩০টি গ্রামে লবণ সহিষ্ণু ধান, সূর্যমুখী ও মুগ ডাল চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে কাজ করছি।
No comments