মনোবল ও আস্থা রক্ষার লড়াইয়ে আ. লীগ-বিএনপি by তানভীর সোহেল
নিজ
দলের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়ানো আর প্রতিপক্ষের মনোবলে চিড় ধরানোর
লড়াইয়ে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। পাশাপাশি দুই বড় দলেরই
এখন লক্ষ্য সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন ও ধরে রাখা। ৫ জানুয়ারি নিয়ে দুই
দলের অনড় অবস্থানের এটাই কারণ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির
বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা। এ জন্য দুই পক্ষই ন্যূনতম ছাড় না
দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই দলের দায়িত্বশীল নেতারা প্রথম আলোকে
বলেছেন, ৫ জানুয়ারি নিয়ে সৃষ্ট অবস্থা থেকে যে পক্ষ সর্বোচ্চ রাজনৈতিক
সুবিধা নিতে পারবে আগামী দিনের রাজনীতির চালিকাশক্তিতে তারাই এগিয়ে থাকবে।
দু দলের নেতারা মনে করেন, ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে এই আন্দোলনের ফলে
তাত্ক্ষণিকভাবে সরকার পতন হবে না। কিন্তু সরকারের অবস্থান কতটা শক্ত বা নরম
হবে, বিএনপির আগামী দিনের আন্দোলন জোরালো হবে কি না তা নির্ধারণে এই
সময়ের আন্দোলন ভূমিকা রাখবে।
২০১৪ সালে কয়েকবার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে বিএনপি। তবে এবারের আন্দোলনে নিজেদের শক্তি পরীক্ষার পেছনে আরও একটি কারণকে প্রাধান্য দিতে হচ্ছে বিএনপির। রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির শক্তি প্রদর্শনের ওপর নির্ভর করছে রাজনীতিতে দলটির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামের কর্মকাণ্ড। জামায়াতের মধ্যম পর্যায়ের দুই জন নেতা বলেছেন, এককভাবে জামায়াতের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে থাকলে জামায়াতও সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে। এজন্য ৫ জানুয়ারি তারা আলাদা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির এই মুখোমুখি অবস্থানের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত হয়ে পড়েছে। সড়ক ও নৌ পথে পর্যাপ্ত গাড়ি ও লঞ্চ চলছে না। কোনো কোনো জেলা থেকে ঢাকায় আসার সব ধরনের পরিবহনই চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাজধানী ঢাকাতেও যান চলাচল অনেক কমে গেছে।
গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হওয়ায় সংসদের বাইরে চলে যায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় উত্সব’ হিসেবে আর বিএনপি দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকায় দু দলই নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞা মানার কথা বললেও বিএনপি এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কর্মীদের চাঙা ও মানুষের আস্থা অর্জনই বিএনপির লক্ষ্য: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘অবর’দ্ধ’ করার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা। এ ছাড়া খালেদা জিয়া ফোনেও দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন, এমন এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মসূচি থেকে সরে আসলে মাঠের নেতাকর্মীরা একেবারেই মানসিকভাবে ভেঙে (ডিমরালাইজড) পড়বে বলে মনে করেন দলীয় চেয়ারপারসন। এবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে নেতাকর্মীদের আবার মাঠে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। তাই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে যা পারার তাই করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়া যাবে না। ওই নেতা বলেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ব্যর্থ হওয়ার পর নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়ে।
সাধারণ মানুষও বিএনপির ক্ষমতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে। তা ছাড়া গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে কিছু করতে না পারায় দলটির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তাই এবার আর কোনো ঝুঁকি নেবে না বিএনপি। কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসবে না। ওই নেতা বলেন, চেয়ারপারসন মনে করেন, বিএনপি কর্মসূচিতে অটল থাকলে দলের শক্তির ওপর সাধারন মানুষের আস্থা বাড়বে আর নেতাকর্মীরা চাঙা হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু’ মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার পুলিশ দিয়ে শাসন ক্ষমতা রেখেছে। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে পুলিশ দিয়ে তা করার চেষ্টা করছে। এভাবে চলতে পারে না। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিএনপিকে পিছু হটানোর এই কর্মকাণ্ড সফল হতে দেওয়া যায় না। এ জন্য আজকের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সরকারকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে নামতে মুখিয়ে আছেন। সাধারণ মানুষও চায় বিএনপি তাদের পক্ষে মাঠে থাকুক। তাদের চাওয়াকে হতাশায় ভাসানোর কোনো সুযোগ বিএনপির নেই।
কর্মসূচি আলাদা তবে বিএনপির পাশে থাকবে জামায়াত: আজ বিকেলে টেলিফোনে আলাপকালে জামায়াতের দুই জন মধ্যম সারির নেতা প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি পালনে বিএনপি অনঢ় অবস্থান নিয়েছে। এ জন্য ওই আন্দোলনে জামায়াতও তার শক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে। একজন নেতা বলেন, পৃথক কর্মসূচি ঘোষণার চিন্তা তাঁরা করছেন। ঢাকায় তাঁরা নামবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন, বিষয়টি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। এর উত্তর কেবল কালকেই পাওয়া যাবে। আগে বলা সম্ভব নয়।
আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে জামায়াতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনালের শফিকুল ইসলাম ৫ জানুয়ারি সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করার ঘোষণা দেন।
বিএনপির আন্দোলন দমাতে চায় আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় আজ। ওই নেতাদের মতে, তুলনামূলক কম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে ও বড় দলের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে। এটা তাঁদের জন্য কিছুটা বিব্রতকর। তবে তাঁরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছে। দলটির পূর্ণ মেয়াদে থাকাটাও অনেকটা নিশ্চিত। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষ বিএনপিকে মাঠের রাজনীতিতে দুর্বল করতে পারলে তাদের সামনে তেমন কোনো সমস্যা থাকবে না। এ জন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এবারের আন্দোলন দমানোকেই তারা সবচেয়ে বেশি গুর’ত্ব দিচ্ছেন।
ওই নেতারা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে না পারার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়ে। সাধারণ মানুষেরও ধারণা তৈরি হয় বিএনপি আর আন্দোলন করতে পারবে না। নেতাকর্মীদের মনোবল গত এক বছরে খুব একটা বাড়ানি। পাশাপাশি বিএনপিকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মনোভাবে তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। আওয়ামী লীগ এটা ধরে রাখতে চায়। এ কারণে ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে ন্যূনতম রাজনৈতিক সুবিধা নিতে দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। তাই ওই নির্বাচনের সময় বিএনপিকে যেভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে এবারও সেভাবে মোকাবেলা করা হবে। বিএনপিকে আন্দোলনে ব্যর্থ প্রমাণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো সুযোগ সরকার দেবে না। তাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী। নির্বাচিত সরকারকে উত্খাতের আন্দোলনের চেষ্টা সফল করতে দেওয়া হবে না।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞার কারণে সভা-সমাবেশ করবে না। তবে তাদের দলের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবেন। প্রয়োজন হলে পুলিশকেও সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত থাকবেন।
২০১৪ সালে কয়েকবার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে বিএনপি। তবে এবারের আন্দোলনে নিজেদের শক্তি পরীক্ষার পেছনে আরও একটি কারণকে প্রাধান্য দিতে হচ্ছে বিএনপির। রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির শক্তি প্রদর্শনের ওপর নির্ভর করছে রাজনীতিতে দলটির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামের কর্মকাণ্ড। জামায়াতের মধ্যম পর্যায়ের দুই জন নেতা বলেছেন, এককভাবে জামায়াতের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে থাকলে জামায়াতও সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে। এজন্য ৫ জানুয়ারি তারা আলাদা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির এই মুখোমুখি অবস্থানের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত হয়ে পড়েছে। সড়ক ও নৌ পথে পর্যাপ্ত গাড়ি ও লঞ্চ চলছে না। কোনো কোনো জেলা থেকে ঢাকায় আসার সব ধরনের পরিবহনই চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাজধানী ঢাকাতেও যান চলাচল অনেক কমে গেছে।
গত বছর ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হওয়ায় সংসদের বাইরে চলে যায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় উত্সব’ হিসেবে আর বিএনপি দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকায় দু দলই নিজ নিজ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞা মানার কথা বললেও বিএনপি এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কর্মীদের চাঙা ও মানুষের আস্থা অর্জনই বিএনপির লক্ষ্য: গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘অবর’দ্ধ’ করার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা। এ ছাড়া খালেদা জিয়া ফোনেও দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন, এমন এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে কর্মসূচি থেকে সরে আসলে মাঠের নেতাকর্মীরা একেবারেই মানসিকভাবে ভেঙে (ডিমরালাইজড) পড়বে বলে মনে করেন দলীয় চেয়ারপারসন। এবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে নেতাকর্মীদের আবার মাঠে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। তাই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে যা পারার তাই করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়া যাবে না। ওই নেতা বলেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ব্যর্থ হওয়ার পর নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়ে।
সাধারণ মানুষও বিএনপির ক্ষমতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে। তা ছাড়া গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে কিছু করতে না পারায় দলটির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তাই এবার আর কোনো ঝুঁকি নেবে না বিএনপি। কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসবে না। ওই নেতা বলেন, চেয়ারপারসন মনে করেন, বিএনপি কর্মসূচিতে অটল থাকলে দলের শক্তির ওপর সাধারন মানুষের আস্থা বাড়বে আর নেতাকর্মীরা চাঙা হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু’ মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার পুলিশ দিয়ে শাসন ক্ষমতা রেখেছে। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে পুলিশ দিয়ে তা করার চেষ্টা করছে। এভাবে চলতে পারে না। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিএনপিকে পিছু হটানোর এই কর্মকাণ্ড সফল হতে দেওয়া যায় না। এ জন্য আজকের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সরকারকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে নামতে মুখিয়ে আছেন। সাধারণ মানুষও চায় বিএনপি তাদের পক্ষে মাঠে থাকুক। তাদের চাওয়াকে হতাশায় ভাসানোর কোনো সুযোগ বিএনপির নেই।
কর্মসূচি আলাদা তবে বিএনপির পাশে থাকবে জামায়াত: আজ বিকেলে টেলিফোনে আলাপকালে জামায়াতের দুই জন মধ্যম সারির নেতা প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি পালনে বিএনপি অনঢ় অবস্থান নিয়েছে। এ জন্য ওই আন্দোলনে জামায়াতও তার শক্তি দিয়ে মাঠে থাকবে। একজন নেতা বলেন, পৃথক কর্মসূচি ঘোষণার চিন্তা তাঁরা করছেন। ঢাকায় তাঁরা নামবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন, বিষয়টি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। এর উত্তর কেবল কালকেই পাওয়া যাবে। আগে বলা সম্ভব নয়।
আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে জামায়াতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনালের শফিকুল ইসলাম ৫ জানুয়ারি সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করার ঘোষণা দেন।
বিএনপির আন্দোলন দমাতে চায় আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় আজ। ওই নেতাদের মতে, তুলনামূলক কম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে ও বড় দলের অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছে। এটা তাঁদের জন্য কিছুটা বিব্রতকর। তবে তাঁরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছে। দলটির পূর্ণ মেয়াদে থাকাটাও অনেকটা নিশ্চিত। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষ বিএনপিকে মাঠের রাজনীতিতে দুর্বল করতে পারলে তাদের সামনে তেমন কোনো সমস্যা থাকবে না। এ জন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এবারের আন্দোলন দমানোকেই তারা সবচেয়ে বেশি গুর’ত্ব দিচ্ছেন।
ওই নেতারা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে না পারার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়ে। সাধারণ মানুষেরও ধারণা তৈরি হয় বিএনপি আর আন্দোলন করতে পারবে না। নেতাকর্মীদের মনোবল গত এক বছরে খুব একটা বাড়ানি। পাশাপাশি বিএনপিকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মনোভাবে তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। আওয়ামী লীগ এটা ধরে রাখতে চায়। এ কারণে ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিএনপিকে ন্যূনতম রাজনৈতিক সুবিধা নিতে দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। তাই ওই নির্বাচনের সময় বিএনপিকে যেভাবে মোকাবেলা করা হয়েছে এবারও সেভাবে মোকাবেলা করা হবে। বিএনপিকে আন্দোলনে ব্যর্থ প্রমাণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো সুযোগ সরকার দেবে না। তাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী। নির্বাচিত সরকারকে উত্খাতের আন্দোলনের চেষ্টা সফল করতে দেওয়া হবে না।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞার কারণে সভা-সমাবেশ করবে না। তবে তাদের দলের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবেন। প্রয়োজন হলে পুলিশকেও সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত থাকবেন।
No comments