মোদির গুজরাটে আবার বিতর্ক
অতি উৎসাহের ভুল, নাকি ইচ্ছাকৃত অবমাননা? গুজরাটের একাধিক শহরে সন্ত্রাসবিরোধী মহড়াকে কেন্দ্র করে এ প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। বিতর্ক এতটাই তীব্র যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলও স্বীকার করেছেন, ওটা ছিল নিছকই ভুল। অস্বস্তিকর বিষয়টি নজরে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়েরও। রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। চলতি মাসেই গুজরাটের রাজধানী গান্ধীনগরে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি প্রবাসী ভারতীয় দিবস, দ্বিতীয়টি ১১ থেকে ১৩ জানুয়ারি ‘ভাইব্রান্ট গুজরাট ইনভেস্টরর্স সামিট’। গুরুত্বপূর্ণ এ দুই সম্মেলনের আগে নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার পাশাপাশি রাজ্য পুলিশকে তৎপর রাখতে সন্ত্রাসবিরোধী ওই মহড়ার আয়োজন করা হয়। সুরাট ও নর্মদা—দুই জেলার মহড়াতেই ধারণ করা ভিডিওতে যা দেখা গেছে তা আপত্তিজনক। বিতর্ক তা নিয়েই। প্রথম ভিডিওটি সুরাটের। তাতে দেখা যায়, পুলিশকর্মী যাঁরা সন্ত্রাসীদের ভূমিকায় নেমেছেন, তাঁদের মাথায় মুসলিম টুপি (স্কাল ক্যাপ)। প্রশ্ন উঠতে থাকে সেই টুপি ঘিরে।
তা হলে কি এ ধারণার জন্ম দেওয়া হচ্ছে যে মুসলমান মানেই সন্ত্রাসী? কিংবা সন্ত্রাসী মানেই মুসলমান? বিতর্কটা থিতিয়েছে কি থিতোয়নি, বৃহস্পতিবার আরও ভিডিও এসে গেল। নর্মদা জেলায় একই ধরনের মহড়ায় দেখা গেল, সন্ত্রাসী বলে যাদের ধরা হয়েছে, তারা চিৎকার করে বলছে, ‘চাইলে আমাদের মেরে ফেলতে পারো। ইসলাম জিন্দাবাদ।’ প্রশ্ন উঠছে, কী করে একই ভুল একাধিক স্থানে ঘটতে পারে তা নিয়ে। নাকি মুসলিম সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসের সঙ্গে একাকার করে দেখানোর এটা একটা ইচ্ছাকৃত প্রয়াস? রাজ্য প্রশাসন অবশ্য বিতর্ককে জিইয়ে রাখতে একেবারেই আগ্রহী নয়। নর্মদার পুলিশ সুপার থেকে সুরাটের এসপি প্রত্যেকেই বলেছেন, কী করে এমন হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোনো গাফিলতি থেকে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জেলা প্রশাসনেই বিষয়টি থিতিয়ে যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেল রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। বুধবার তিনি বলেছেন, এটা নিঃসন্দেহে একটা ভুল। সন্ত্রাসীদের মাথায় মুসলিম টুপি পরানো ঠিক হয়নি।
No comments