নেতাদের সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী, দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ চলবে: বিএনপি
চলমান
রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের নেতাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দলের আন্দোলনের বিপরীতে নিজ
নিজ এলাকায় সতর্ক থাকার পাশাপাশি দল গোছানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল
রাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে অনির্ধারিত বৈঠক করেন। বৈঠকে চলমান
পরিস্থিতি ও সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, বিরোধী
দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জানিয়েছেন, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন না
হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ নন উল্লেখ
করে তিনি বলেন, তিনি চাইলেই বাসায় ফিরতে পারেন। তা না করে তিনি নাটক করছেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দলের নেতাদের জানিয়েছেন, আন্দোলনের নামে বিরোধী জোট
যাতে মাঠ দখল করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে পূর্ব নির্ধারিত ১০ই জানুয়ারির সমাবেশের তারিখ
পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা হয়। আগামী ১২ই জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি নেয়ার
সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। বৈঠক সূত্র জানায়, বিশ্ব ইজতেমায় ঢাকায় ব্যাপক লোক
সমাগম হওয়ায় জনসভার তারিখ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া এখন থেকে
ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে সাংগঠনিকভাবে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক
সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ সাজেদা চৌধুরী,
উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য
মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফর উল্লাহ, নূহ-উল-আলম লেনিন, যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ
নেন।
দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ চলবে: বিএনপি
নির্দলীয়
সরকারের অধীনে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন না দেয়া পর্যন্ত ২০ দলের ডাকা সারা
দেশে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির দপ্তরের
দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। গতকাল দুপুরে রাজধানীর একটি
বাসায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। বিশ্ব ইজতেমা চলাকালীন অবরোধ
প্রত্যাহার বা শিথিল করা হবে কিনা- এ বিষয়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করে
রিজভী আহমেদ বলেন, সারা দেশে সরকারের দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। গতকালও তিনজন
নেতাকর্মীকে হত্যা হয়েছে। প্রতিদিন তাদের নিষ্ঠুর নির্যাতনে সারা দেশে
বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা আহত হচ্ছেন। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা স্পষ্টভাষায়
বলে দিতে চাই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করা না হবে, যতক্ষণ
পর্যন্ত আমাদের সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে না দেয়া হবে,
যতক্ষণ পর্যন্ত নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি মেনে
না নেয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। রিজভী
আহমেদ অভিযোগ করেন, ৫ই জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে পূর্বঘোষিত
সমাবেশে যেতে চাইলে পেপার সেপ্র দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকে হত্যার চেষ্টা
করেছে সরকার। অবিলম্বে গুলশানের কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ সরিয়ে নিয়ে
বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। অবরোধে
পুলিশের বাধা দেয়ার অভিযোগ করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার
বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। দমননীতির মাধ্যমে তারা
আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। হরতাল-অবরোধ এসব গণতান্ত্রিক
কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিচ্ছে।
No comments