লাইফ সাপোর্টে চাষী নজরুল ইসলাম
একুশে
পদকপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তাকে
ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। বুধবার রাতে তাকে
হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডাক্তাররা লাইফ সাপোর্টে রাখেন। জীবন মৃত্যুর
সন্ধিক্ষণে থাকা এই বরেণ্য পরিচালকের জন্য তার পরিবার সবার কাছে দোয়া
চেয়েছেন। চাষী নজরুল ইসলাম লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদন ধরে
অসুস্থ। তার শারীরিক অবস্থার অবনতির সংবাদে সমগ্র চলচ্চিত্র শিল্পে বিষাদের
ছায়া নেমে আসে। চলচ্চিত্রের নিবেদিত প্রাণ, সদা হাস্যোজ্জল, প্রাণবন্ত,
উদার মনমানসিকতার মানুষ চাষী নজরুল ইসলামের ফিরে আসার প্রার্থনা এখন সবার
মুখে মুখে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই কামনা-চাষী নজরুল ইসলাম আবারও
ফিরে আসুক সবার মাঝে, তার প্রিয় চলচ্চিত্র শিল্পে। উল্লেখ্য, দেশীয়
চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র চাষী নজরুল ইসলাম। একজন দক্ষ নির্মাতা
হিসেবে এ অঙ্গনে যার বিচরণ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। চলচ্চিত্র পরিচালনা
প্রধান ক্ষেত্র হলেও প্রযোজনা ও অভিনয়েও রয়েছে তার উল্লেখযোগ্য পদচারণা।
প্রয়াত পরিচালক ফতেহ লোহানীর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে
১৯৬২ সালে চাষী নজরুল ইসলামের চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৩ সালে
তিনি কাজ করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ওবায়দুল হকের সঙ্গে।
মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ওরা
১১ জন’-এর নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম। এ পর্যন্ত নির্মাণ করেছেন ২২টি
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর মধ্যে ‘ওরা ১১ জন’ ছাড়াও রয়েছে ‘সংগ্রাম’,
‘দেবদাস’, ‘ভাল মানুষ’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘বেহুলা লক্ষ্মীন্দর’,
‘দাঙ্গা-ফ্যাসাদ’, ‘বিরহ ব্যথা’, ‘লেডি স্মাগলার’, ‘বাসনা’, ‘পদ্মা মেঘনা
যমুনা’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’, ‘দুই পুরুষ’, ‘শিল্পী’,
‘হাছনরাজা’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘ধ্রুবতারা’, রঙিন দেবদাস’ উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে তিনি নির্মাণ করছেন ‘ভুল যদি হয়’ ও ‘অন্তরঙ্গ’। এছাড়াও দুই
প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ মওলানা ভাসানী ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং শহীদ
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর তিনটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম
নির্মাণ করেছেন তিনি।
No comments