সেই সব দিনের কথা by নূরুজ্জামান
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। যে খেলাগুলো শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের মেধা বিকাশ, শারীরিক ও মানসিক প্রসার ঘটানোর সেসব খেলা আজ বিলুপ্তির পথে। পুরনো দিনের খেলার মধ্যে রয়েছে বৌছি, গোল্লাছুট, কানামাছি, হাডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, ছি-কুত কুত, সাতচাড়া, ডাংগুলি, এক্কাদোক্কা, নৌকা বাইচ, ঘুড়ি ওড়ানোসহ হরেক রকম খেলার প্রতিযোগিতা। শৈশব সময়ের এসব খেলা এখন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। স্কুলজীবনে শৈশব সময়ের খেলাগুলো নিয়ে চলতো তুমুল প্রতিযোগিতা। এসব খেলায় একটি পুরস্কার নিয়ে এলে পাড়া-মহল্লার সব মানুষ ভিড় জমাতো। আর খেলা উপলক্ষে চলতো বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন। আগে থেকেই কাজকর্ম গুছিয়ে গ্রামের নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে শিশু-কিশোর এমনকি বৃদ্ধরাও খেলা দেখতে মাঠে ভিড় জমাতেন।
সোনারগাঁ বৈদ্যেরবাজার এলাকার হাডুডু খেলোয়াড় ইসমাইল মেম্বার বলেন, নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় হাডুডু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম। বিজয়ী হয়ে প্রথম পুরস্কারটি এলাকায় নিয়ে এলে খুব আনন্দ পেতাম। এ উপলক্ষে চলতো বিভিন্ন ধরনের উৎসব। বয়সের ভারে এখন আর খেলতে পারি না। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমরা খেলে ছেড়ে দেয়ার পর এখন আর এই খেলাগুলো আজ সাধারণত চোখে পড়ে না।
বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের কামতাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, দাড়িয়া বান্ধা, হাডুড, গোল্লাছুট, কানামাছি এসব খেলা এখন সাধারণত আর ছেলেমেয়েদের খেলতে দেখা যায় না। ঐতিহ্য এখন অনেকটা হারিয়ে গেছে। এক সময় এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামেগঞ্জে উৎসবের আমেজ থাকতো। এখন সেই সব সময়ের কথা মনে হলে অতীতের কথা মনে পড়ে যায়। ওই সময়ের ছেলেমেয়েরা এসব খেলা খেলতো। এখন ছেলেমেয়েদের দেখা যায় মোবাইলে ভিডিও গেমস খেলতে। তারপরও কোন এলাকায় এই ঐতিহ্যবাহী খেলার কথা শুনলে আমি ঠিক থাকতে পারি না। ছুটে যাই খেলা দেখতে। আসলে এখন খেলাধুলার জন্য নেই কোন মাঠ। নেই সেসব আমেজ। আমি মনে করি খেলার মাঠ না থাকার কারণেও এ যুগের ছেলেমেয়েরা খুব একটা খেলাধুলার সুযোগও পাচ্ছে না।
কথা হয় একই গ্রামের ৯০ বছর বয়সের বৃদ্ধা কদবানুর সঙ্গে। বলেন, ছি-কুত কুত, কানা মাছি, সাতচাড়া খেলা নিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে কতই না মজা করতাম। বান্ধবীদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে থাকতাম। অসময়ে খেলতাম বলে মা মারতো। এখন গ্রামের মেয়েরা এ ধরনের খেলা খেলে না।
ওই গ্রামের পার্শ্বের মালিভিটা গ্রামের কামতাল হালুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ মাস্টার বলেন, গোল্লাছুট আমার অত্যন্ত প্রিয় খেলা ছিল। স্কুল ছুটি বা বিরতির সময় সহপাঠীদের নিয়ে এ খেলায় ব্যস্ত থাকতাম। এখন এ খেলা আর দেখা যায় না।
ল্যারি ওয়াড মডেল স্কুলের পিটি শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের মেধা বিকাশ, শারীরিক ও মানসিক প্রসার ঘটানো সে খেলাগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। সবার প্রচেষ্টায় এখনও সে খেলাগুলো ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পুরনো সময়ের খেলাধুলাগুলোতে মেধা বিকাশ হওয়ার মতো অনেক খেলা রয়েছে। খেলাধুলা একটি শারীরিক একটি ব্যয়াম। পুরনো দিনের খেলাধুলাগুলোর প্রচলন রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলারও প্রয়োজন রয়েছে।
কদমরসুল বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহাতাবউদ্দিন বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পুরনো সেসব খেলাধুলার কারণে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের মেধার বিকাশ বাড়তো। অন্যায় কর্মকাণ্ড ও বাজে আড্ডা থেকে রক্ষা পেতো। এছাড়া এসব খেলাধুলার প্রচলন থাকলে যুব সমাজ আজ মাদকের হাত থেকেও রক্ষা পেতো।
প্রত্যেক অভিভাবকের দায়িত্ব ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখা। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার বিকল্প কিছু নেই।
সোনারগাঁ বৈদ্যেরবাজার এলাকার হাডুডু খেলোয়াড় ইসমাইল মেম্বার বলেন, নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় হাডুডু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম। বিজয়ী হয়ে প্রথম পুরস্কারটি এলাকায় নিয়ে এলে খুব আনন্দ পেতাম। এ উপলক্ষে চলতো বিভিন্ন ধরনের উৎসব। বয়সের ভারে এখন আর খেলতে পারি না। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমরা খেলে ছেড়ে দেয়ার পর এখন আর এই খেলাগুলো আজ সাধারণত চোখে পড়ে না।
বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের কামতাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, দাড়িয়া বান্ধা, হাডুড, গোল্লাছুট, কানামাছি এসব খেলা এখন সাধারণত আর ছেলেমেয়েদের খেলতে দেখা যায় না। ঐতিহ্য এখন অনেকটা হারিয়ে গেছে। এক সময় এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামেগঞ্জে উৎসবের আমেজ থাকতো। এখন সেই সব সময়ের কথা মনে হলে অতীতের কথা মনে পড়ে যায়। ওই সময়ের ছেলেমেয়েরা এসব খেলা খেলতো। এখন ছেলেমেয়েদের দেখা যায় মোবাইলে ভিডিও গেমস খেলতে। তারপরও কোন এলাকায় এই ঐতিহ্যবাহী খেলার কথা শুনলে আমি ঠিক থাকতে পারি না। ছুটে যাই খেলা দেখতে। আসলে এখন খেলাধুলার জন্য নেই কোন মাঠ। নেই সেসব আমেজ। আমি মনে করি খেলার মাঠ না থাকার কারণেও এ যুগের ছেলেমেয়েরা খুব একটা খেলাধুলার সুযোগও পাচ্ছে না।
কথা হয় একই গ্রামের ৯০ বছর বয়সের বৃদ্ধা কদবানুর সঙ্গে। বলেন, ছি-কুত কুত, কানা মাছি, সাতচাড়া খেলা নিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে কতই না মজা করতাম। বান্ধবীদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতে থাকতাম। অসময়ে খেলতাম বলে মা মারতো। এখন গ্রামের মেয়েরা এ ধরনের খেলা খেলে না।
ওই গ্রামের পার্শ্বের মালিভিটা গ্রামের কামতাল হালুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ মাস্টার বলেন, গোল্লাছুট আমার অত্যন্ত প্রিয় খেলা ছিল। স্কুল ছুটি বা বিরতির সময় সহপাঠীদের নিয়ে এ খেলায় ব্যস্ত থাকতাম। এখন এ খেলা আর দেখা যায় না।
ল্যারি ওয়াড মডেল স্কুলের পিটি শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের মেধা বিকাশ, শারীরিক ও মানসিক প্রসার ঘটানো সে খেলাগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। সবার প্রচেষ্টায় এখনও সে খেলাগুলো ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পুরনো সময়ের খেলাধুলাগুলোতে মেধা বিকাশ হওয়ার মতো অনেক খেলা রয়েছে। খেলাধুলা একটি শারীরিক একটি ব্যয়াম। পুরনো দিনের খেলাধুলাগুলোর প্রচলন রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলারও প্রয়োজন রয়েছে।
কদমরসুল বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহাতাবউদ্দিন বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পুরনো সেসব খেলাধুলার কারণে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের মেধার বিকাশ বাড়তো। অন্যায় কর্মকাণ্ড ও বাজে আড্ডা থেকে রক্ষা পেতো। এছাড়া এসব খেলাধুলার প্রচলন থাকলে যুব সমাজ আজ মাদকের হাত থেকেও রক্ষা পেতো।
প্রত্যেক অভিভাবকের দায়িত্ব ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় ব্যস্ত রাখা। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার বিকল্প কিছু নেই।
No comments