এ শোক ভোলার নয় by কেয়া চৌধুরী
আজ ৩রা নভেম্বর। জেল হত্যা দিবস। এ দিনটি শোকাবহ। ১৯৭৫ সালের এই দিন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমদ, এম. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে।
বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে জাতীয় এ চার নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর, ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার মতো নিরাপদ জায়গায় হত্যা করে খুনিরা।
১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির বিজয়ের আনন্দকে যারা মেনে নিতে পারেনি তারাই ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ড ঘটার পর, আমাদের স্বাধীনতার ভেতর দিয়ে অর্জিত রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনসহ মহান সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে। সুমহান আদর্শের ভিতর দিয়ে, দেশপ্রেমের তারণায় জাগ্রত হয়ে বাংলার গণমানুষ যখন বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখনই অর্জিত হয়েছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে জাতীয় চার নেতা, বঙ্গবন্ধু’র অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলায় ফিরে আসার পর সোনার বাংলা গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার জন্য, বঙ্গবন্ধু এবং চার নেতার কোন বিকল্প ছিল না। এটিই ছিল তাদেরকে হত্যা করার কারণ।
১৯৭৫ সালে ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতো না, যদি শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ না হয়ে উঠতেন। যদি সাধারণ মানুষের সঙ্গে না মিশতেন। জনগণের আকুতি, জনগণের ভালবাসাকে বঙ্গবন্ধু মূল্য না দিতেন। তিনি যদি, স্বাধীনতার ডাক দিয়ে স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক না হয়ে ওঠতেন। তাতে, বঙ্গবন্ধু আদর্শিক দৃষ্টিতে প্রতিপক্ষের শত্রু হয়ে উঠতেন না। জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতা গতানুগতিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সমগ্র ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান করে নিয়েছিলেন। কারণ, তারা জাতির সমগ্র আশা এবং সমস্ত আকাঙ্ক্ষাকে ছোঁতে পেরেছিলেন। আর তাই, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ও একই বছরের ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, তার নিজ গৃহে সপরিবারে। আর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল, কারাগারের মধ্যে গুলি করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গুলি করার পরও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়! কলঙ্কের তিলক পরে গোটা জাতির ললাটে।
বঙ্গবন্ধু ও তার অনুসারী জাতীয় চার নেতার পবিত্র রক্ত, আমাদের লাল সবুজ পতাকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। বাংলার জমিনে তাদের রক্ত জাতি হিসেবে, আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে। বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মোশতাক-জিয়া চক্র, বাংলাদেশকে বারবার ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছিল। সেই ষড়যন্ত্র এখনও বিদ্যমান। মোশতাক-জিয়ার উত্তর সূরিরা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করেছে, সংগ্রাম সাফল্য ও গৌরবের ৬৫তম বছরের প্রাচীন রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগকে ভাঙন ও দুর্বল করতে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার রক্তে ভেজা বাংলার মাটিতে তা কখনও, হবার নয়। বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, দলটির ভিত অনেক গভীরে। এখনও বাংলাদেশেতো বটেই, উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের” ইতিহাস কেবল মহান মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দেয়ার ইতিহাসই নয়। বাংলাদেশের মূলনীতিসহ গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে এ দলের ইতিহাস বিশ্বে বিরল। বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য! মোশতাক-জিয়া- ও খালেদার মতো দেশবিরোধী মানুষের জন্ম হয়েছে এদেশের মাটিতে। যারা নিজ স্বার্থে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে কষ্ট পায় না! এই দেশ-শত্রুদের কারণে হারিয়েছি আমরা জাতির পিতাসহ চার নেতাকে। যদি আজ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকতেন, ২০০০ সালের আগেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আজকের বাংলাদেশ মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো দেশকে ছাড়িয়ে যেতে পারতো। কিন্তু মোশতাক-জিয়া তা হতে দেয়নি। তারা হত্যার পথ বেছে নিল। রাজনীতিকে কলুষিত করলো।
আমরা ১৫ই আগস্টের মতো জাতীয় প্রতীককে আর হত্যা করতে দেবো না। রঞ্জিত করতে দেবো না, ৩রা নভেম্বরের রক্তাক্ত অধ্যায়। আমরা নতুন প্রজন্ম, সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা সুস্থ রাজনীতি করতে চাই। আমরা চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরাপদ জীবন। যে জীবন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশকে ধারণ করবে। আমাদেরকে দেখাবে, সেই পথ যে পথ দেখিয়েছিলেন আমাদের জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতা, তাদের জীবনের বিনিময়ে।
লেখক : সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত), সমাজকর্মী
বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে জাতীয় এ চার নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর, ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার মতো নিরাপদ জায়গায় হত্যা করে খুনিরা।
১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির বিজয়ের আনন্দকে যারা মেনে নিতে পারেনি তারাই ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ড ঘটার পর, আমাদের স্বাধীনতার ভেতর দিয়ে অর্জিত রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পরিবর্তনসহ মহান সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে। সুমহান আদর্শের ভিতর দিয়ে, দেশপ্রেমের তারণায় জাগ্রত হয়ে বাংলার গণমানুষ যখন বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখনই অর্জিত হয়েছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে জাতীয় চার নেতা, বঙ্গবন্ধু’র অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলায় ফিরে আসার পর সোনার বাংলা গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার জন্য, বঙ্গবন্ধু এবং চার নেতার কোন বিকল্প ছিল না। এটিই ছিল তাদেরকে হত্যা করার কারণ।
১৯৭৫ সালে ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতো না, যদি শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ না হয়ে উঠতেন। যদি সাধারণ মানুষের সঙ্গে না মিশতেন। জনগণের আকুতি, জনগণের ভালবাসাকে বঙ্গবন্ধু মূল্য না দিতেন। তিনি যদি, স্বাধীনতার ডাক দিয়ে স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক না হয়ে ওঠতেন। তাতে, বঙ্গবন্ধু আদর্শিক দৃষ্টিতে প্রতিপক্ষের শত্রু হয়ে উঠতেন না। জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতা গতানুগতিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সমগ্র ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান করে নিয়েছিলেন। কারণ, তারা জাতির সমগ্র আশা এবং সমস্ত আকাঙ্ক্ষাকে ছোঁতে পেরেছিলেন। আর তাই, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ও একই বছরের ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, তার নিজ গৃহে সপরিবারে। আর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল, কারাগারের মধ্যে গুলি করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গুলি করার পরও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়! কলঙ্কের তিলক পরে গোটা জাতির ললাটে।
বঙ্গবন্ধু ও তার অনুসারী জাতীয় চার নেতার পবিত্র রক্ত, আমাদের লাল সবুজ পতাকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। বাংলার জমিনে তাদের রক্ত জাতি হিসেবে, আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে। বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মোশতাক-জিয়া চক্র, বাংলাদেশকে বারবার ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছিল। সেই ষড়যন্ত্র এখনও বিদ্যমান। মোশতাক-জিয়ার উত্তর সূরিরা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করেছে, সংগ্রাম সাফল্য ও গৌরবের ৬৫তম বছরের প্রাচীন রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগকে ভাঙন ও দুর্বল করতে। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার রক্তে ভেজা বাংলার মাটিতে তা কখনও, হবার নয়। বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, দলটির ভিত অনেক গভীরে। এখনও বাংলাদেশেতো বটেই, উপমহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের” ইতিহাস কেবল মহান মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দেয়ার ইতিহাসই নয়। বাংলাদেশের মূলনীতিসহ গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে এ দলের ইতিহাস বিশ্বে বিরল। বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য! মোশতাক-জিয়া- ও খালেদার মতো দেশবিরোধী মানুষের জন্ম হয়েছে এদেশের মাটিতে। যারা নিজ স্বার্থে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে কষ্ট পায় না! এই দেশ-শত্রুদের কারণে হারিয়েছি আমরা জাতির পিতাসহ চার নেতাকে। যদি আজ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকতেন, ২০০০ সালের আগেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আজকের বাংলাদেশ মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো দেশকে ছাড়িয়ে যেতে পারতো। কিন্তু মোশতাক-জিয়া তা হতে দেয়নি। তারা হত্যার পথ বেছে নিল। রাজনীতিকে কলুষিত করলো।
আমরা ১৫ই আগস্টের মতো জাতীয় প্রতীককে আর হত্যা করতে দেবো না। রঞ্জিত করতে দেবো না, ৩রা নভেম্বরের রক্তাক্ত অধ্যায়। আমরা নতুন প্রজন্ম, সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা সুস্থ রাজনীতি করতে চাই। আমরা চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিরাপদ জীবন। যে জীবন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশকে ধারণ করবে। আমাদেরকে দেখাবে, সেই পথ যে পথ দেখিয়েছিলেন আমাদের জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতা, তাদের জীবনের বিনিময়ে।
লেখক : সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত), সমাজকর্মী
No comments