‘অব্যবস্থাপনাই মূল কারণ’ by সিরাজুস সালেকিন
বিদ্যুৎ খাতে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অদক্ষতাকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ মনে করছেন দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। গত শনিবার সঞ্চালন লাইনের ত্রুটির কারণে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়। ফলে একে একে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। একযোগে সারা দেশ বিদুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি লাইনে ট্রিপ করার কারণে পুরো দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে এ বিপর্যয় জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সুনির্দিষ্ট কারিগরি কারণ থাকতে পারে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করে তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার প্রবণতা, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতার দিকে মনোযোগী না হওয়া বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। এই খাতে সরকারের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনার বিষয়েও জাতীয় মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে। পুরো বিষয়টিতে ভারতের একক কর্তৃত্ব দিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এ বিভাগের কর্মকর্তাদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। আমরা বহুদিন থেকে বলে আসছি বিষয়টিতে কৌশলগত গুরুত্ব দেয়ার জন্য। কিন্তু সরকার অত্যন্ত দুর্বল ভূমিকা পালন করছে। সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃত্ব ও জাতীয় দক্ষতা বৃদ্ধির নজর নেই। অন্যদিকে বিদ্যুৎকে বাজারের পণ্য বানানোর চেষ্টা চলছে। টুকরো টুকরো করার নীতিমালা করছে সরকার। এভাবে চলতে থাকলে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। কারণ এর সঙ্গে দেশের অর্থনীতি জড়িত। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী বিডি রহমতউল্লাহ জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের জন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেন। প্রথমত, তিনি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে দায়ী করে বলেন, কারিগরি অদক্ষতা, ব্যাপক দুর্নীতি প্রবণতা এ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই খাতে নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগিতা চলে। দ্বিতীয়ত, সাব-স্টেশনে ফল্ট লেভেল সঠিকভাবে নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও যে সার্কিট ব্রেকার লাগানো হয়েছিল তা অত্যন্ত নিম্নমানের হয়ে থাকতে পারে। সেই সঙ্গে পুরাতন এ সব সাব-স্টেশনের ডিজাইনে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল সংযোগের সমালোচনা করেন তিনি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এত বড় ঘটনার পর সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। তা না করে তারা লোকদেখানো সংবাদ সম্মেলন করছেন। জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে এমন বিপর্যয় আসতো না বলেও মন্তব্য করেন এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ।
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ খুব নিম্নমানের। এ ক্ষেত্রে আগেই মনোযোগ দেয়া উচিত ছিল। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। আমাদের আগে থেকে শঙ্কা ছিল জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিন্তু এটা যথাযথভাবে মনিটরিং হয়নি। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনবল তৈরি হয়নি। যারা আছেন তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। যে কারণে কোন কোন জায়গায় জেনারেটর বসে গেছে। ফলে পুরো গ্রিড বসে গেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আধুনিকায়নের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শুধু উৎপাদন বাড়ালে হবে না। সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকায়নে মনোযোগী হওয়া দরকার। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের এগোতে হবে। এ ঘটনায় সবচেয়ে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সে বিষয়টি নজরে এনে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যে কোন দেশে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েও অনেক সময় এ বিপর্যয় রোধ করা যায় না। অনেক উন্নত দেশ পারেনি। বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। না হলে বিপর্যয়ের পরিমাণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী বিডি রহমতউল্লাহ জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের জন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেন। প্রথমত, তিনি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে দায়ী করে বলেন, কারিগরি অদক্ষতা, ব্যাপক দুর্নীতি প্রবণতা এ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই খাতে নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগিতা চলে। দ্বিতীয়ত, সাব-স্টেশনে ফল্ট লেভেল সঠিকভাবে নির্ধারণ করে সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও যে সার্কিট ব্রেকার লাগানো হয়েছিল তা অত্যন্ত নিম্নমানের হয়ে থাকতে পারে। সেই সঙ্গে পুরাতন এ সব সাব-স্টেশনের ডিজাইনে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল সংযোগের সমালোচনা করেন তিনি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এত বড় ঘটনার পর সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। তা না করে তারা লোকদেখানো সংবাদ সম্মেলন করছেন। জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে এমন বিপর্যয় আসতো না বলেও মন্তব্য করেন এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ।
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ খুব নিম্নমানের। এ ক্ষেত্রে আগেই মনোযোগ দেয়া উচিত ছিল। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। আমাদের আগে থেকে শঙ্কা ছিল জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিন্তু এটা যথাযথভাবে মনিটরিং হয়নি। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনবল তৈরি হয়নি। যারা আছেন তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। যে কারণে কোন কোন জায়গায় জেনারেটর বসে গেছে। ফলে পুরো গ্রিড বসে গেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আধুনিকায়নের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের শুধু উৎপাদন বাড়ালে হবে না। সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ ও আধুনিকায়নে মনোযোগী হওয়া দরকার। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে তার ওপর ভিত্তি করে আমাদের এগোতে হবে। এ ঘটনায় সবচেয়ে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সে বিষয়টি নজরে এনে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যে কোন দেশে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েও অনেক সময় এ বিপর্যয় রোধ করা যায় না। অনেক উন্নত দেশ পারেনি। বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। না হলে বিপর্যয়ের পরিমাণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
No comments