সৌদিতে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন
সৌদি আরবে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে একটি শিশু শৈশবে কোন না কোনভাবে যৌন হয়রানির শিকার হয়। একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। দ্য অরফান কেয়ার ডিপার্টমেন্ট সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে সম্প্রতি পালক পিতামাতাদের জন্য একটি সভা আয়োজন করে। এতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার হাত থেকে সন্তানদের বাঁচানোর গুরুত্ব নিয়ে তাদের অবগত করা হয়। এখানে প্রায় ৭৫টি পালক পরিবার অংশ নেয়। এ ইস্যুতে নানা গবেষণা উপস্থাপন করা হয় সভায়। এর মধ্যে একটি গবেষণা ছিল কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ওয়াফা মাহমুদের। এ গবেষণায় দেখা গেছে, এক-চতুর্থাংশ শিশুই যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। মুনেরা আবদুল রহমানের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ৪৯.২৩ শতাংশ শিশুই ১৪ বা তার চেয়ে কম বয়সী। শেখ বিনতে ওউদা আল ওউদা নামের একজন সামাজিক ও শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শক বলেন, সৌদি আরবে ঠিক কত শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার তার সঠিক পরিসংখ্যান তুলে আনা বেশ দুরূহ। কেননা, সৌদি আরবে বিষয়টি বেশ সপর্শকাতর ও নিষিদ্ধ একটি বিষয়। অনেকে সামাজিক মান-মর্যাদার কারণে অনেক কিছু প্রকাশ করেন না। তিনি আরও বলেন, শিশু যৌন নির্যাতনের ঘটনা এমন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ পরিবার; বিশেষ করে মায়ের নীরবতা। তিনি বলেন, গাড়িচালক, গৃহকর্মীদের নজরদারি করার ক্ষেত্রে মায়েদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এছাড়া শিশুদের শালীন পোশাক পরার বিষয়টিও মায়েদের নিশ্চিত করতে হবে। অনেক মা শিশুদের বাসার নিকটে দোকানে পাঠানো বা কোন অত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কোথাও যেতে দিতে কিংবা মেয়ের পিতাসহ পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে তাদের ঘুমোতে দিতে কিছু মনে করেন না। আল ওউদা পরামর্শ দিয়েছেন, কোন যৌন নির্যাতনের ঘটনার পর আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা এবং এর জন্য শিশুদের দোষারোপ না করা। শিশুদের সাহায্য এবং তাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের ওপর দোষারোপ না করে পিতামাতার মাথায় রাখা উচিত দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এছাড়া শিশুদের কথা বিশ্বাস করার জন্য পিতামাতার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আল ওউদা বলেন, পিতামাতা শিশুদের কথা যত বেশি বিশ্বাস করবেন, তারা শিশুদের কাছ থেকে তত বেশি সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়াও তিনি বলেন, পিতামাতারা যদি মনে করেন তারা শিশুকে যথাযথ সহায়তা দিতে পারবেন না তাহলে তাদের বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। যৌন নির্যাতন এড়ানোর পন্থা হিসেবে তিনি শিশুদের পবিত্র কোরানের আয়াত পাঠের চর্চা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। আল ওউদা বিদ্যালয়গুলোকেও এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান।
No comments