বিদ্যুৎহীন দিন-রাত্রি
জাতীয় গ্রিডে সমস্যা দেখা দেয়ায় শনিবার সকাল থেকে বিদুৎহীন হয়ে পড়ে সারা দেশ। সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়ে দেশের মানুষ। পাশাপাশি অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে শিল্পাঞ্চলগুলোয় এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে ১২ ঘণ্টার অবর্ণনীয় দুর্ভোগ শেষে দেশের অধিকাংশ এলাকার আঁধার কাটলেও বিদ্যুতের অভাবে পণ্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় একদিনে প্রায় ৪শ কোটি টাকা ক্ষতির আশংকা করছেন উদ্যোক্তারা। চাঁদাবাজি, হরতাল, দুর্নীতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে নানা ধরনের বিধিনিষেধের কারণে এমনিতেই উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। এ অবস্থায় টানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তাদের আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে- এ কথা বলাইবাহুল্য। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে রফতানিমুখী অন্যান্য শিল্প খাতও। এ অবস্থায় টানা হরতালের দামামা বেজে উঠেছে। হরতালে স্বাভাবিকভাইে পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। এর ফলে ক্রেতা হারানোর প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের রফতানি খাত, যা দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। অন্যদিকে জেনারেটর ও আইপিএস সাধারণ মানুষের ভরসা হলেও এক সময় সেগুলোও ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে। ফলে সন্ধ্যার পর অন্ধকার গ্রাস করে পুরো দেশ। অন্ধকারের সঙ্গে পানি ও গ্যাস সংকট যোগ হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দেশে বড় ধরনের কোনো অঘটন বা নাশকতা না ঘটলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক নেমে আসে। বিঘ্নিত হয় চিকিৎসা ব্যবস্থা, পড়াশোনা এবং কেনাকাটাসহ সবধরনের ব্যবসায়িক লেনদেন, যা মানুষকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
হঠাৎ এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ভারত থেকে আমদানিকৃত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের সরবরাহজনিত ত্র“টিকে দায়ী করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অবশ্য একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্তে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রকৃত কারণ হয়তো উদঘাটিত হবে, তবে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের হিসাব মেলানো সম্ভব হবে কি? এদিন দুপুরে বিকল্প ব্যবস্থায় রাজধানীতে ১শ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ এনে গুরুত্বপূর্ণ ভবন, কূটনৈতিক জোন প্রভৃতি স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে ঘণ্টাখানেক চলার পর সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে আবারও ট্রিপ করে সঞ্চালন লাইন। দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বিদু্যুৎ উৎপাদন হলেও জরাজীর্ণ বিতরণ লাইনের কারণে তার সুফল থেকে গ্রাহকদের বঞ্চিত হওয়ার সংবাদ হতাশাজনক। জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ বিতরণ লাইনের অবস্থা জরাজীর্ণ ও বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ না হওয়ায় পুরনো লাইন ওভারলোডেড হয়ে ঘন ঘন ট্রান্সফরমার জ্বলে যাওয়ার পাশাপাশি লাইন পুড়ে ও ছিঁড়ে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব মতে, দেশে মোট ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন রয়েছে। এর অন্তত ৪০ শতাংশই জরাজীর্ণ। সরকারি হিসাব মতে, বিগত সাড়ে চার বছরে মাত্র ১০ শতাংশ বিতরণ লাইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অথচ এ সময়কালে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে, তাতে বিতরণ লাইন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রয়োজন থাকলেও তা করা হয়নি। দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে বিদ্যুতের চাহিদা ও বিতরণ ব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত- এ নিয়ে দেশে আজ পর্যন্ত কোনো সমীক্ষা হয়নি। দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা ও বিতরণ ব্যবস্থার কলা-কৌশল সম্পর্কে সরকারের সঠিক কোনো ধারণা না থাকায় বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণ গ্রাহক চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হচ্ছে না। বাস্তবসম্মত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে সরকার এসব সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হবে- এটাই প্রত্যাশা।
হঠাৎ এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ভারত থেকে আমদানিকৃত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের সরবরাহজনিত ত্র“টিকে দায়ী করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অবশ্য একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির তদন্তে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রকৃত কারণ হয়তো উদঘাটিত হবে, তবে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের হিসাব মেলানো সম্ভব হবে কি? এদিন দুপুরে বিকল্প ব্যবস্থায় রাজধানীতে ১শ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ এনে গুরুত্বপূর্ণ ভবন, কূটনৈতিক জোন প্রভৃতি স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে ঘণ্টাখানেক চলার পর সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে আবারও ট্রিপ করে সঞ্চালন লাইন। দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বিদু্যুৎ উৎপাদন হলেও জরাজীর্ণ বিতরণ লাইনের কারণে তার সুফল থেকে গ্রাহকদের বঞ্চিত হওয়ার সংবাদ হতাশাজনক। জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ বিতরণ লাইনের অবস্থা জরাজীর্ণ ও বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ না হওয়ায় পুরনো লাইন ওভারলোডেড হয়ে ঘন ঘন ট্রান্সফরমার জ্বলে যাওয়ার পাশাপাশি লাইন পুড়ে ও ছিঁড়ে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব মতে, দেশে মোট ২ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন রয়েছে। এর অন্তত ৪০ শতাংশই জরাজীর্ণ। সরকারি হিসাব মতে, বিগত সাড়ে চার বছরে মাত্র ১০ শতাংশ বিতরণ লাইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অথচ এ সময়কালে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে, তাতে বিতরণ লাইন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রয়োজন থাকলেও তা করা হয়নি। দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে বিদ্যুতের চাহিদা ও বিতরণ ব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত- এ নিয়ে দেশে আজ পর্যন্ত কোনো সমীক্ষা হয়নি। দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা ও বিতরণ ব্যবস্থার কলা-কৌশল সম্পর্কে সরকারের সঠিক কোনো ধারণা না থাকায় বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণ গ্রাহক চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ হচ্ছে না। বাস্তবসম্মত পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে সরকার এসব সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হবে- এটাই প্রত্যাশা।
No comments