চট্টগ্রামের চার আসন নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন by সারোয়ার সুমন
চট্টগ্রাম
নগরী থেকে বাঁশখালীর দূরত্ব ৫৪ কিলোমিটার। দুর্গম এ এলাকায় ইউনিয়ন আছে
১৫টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগদলীয় ইউপি চেয়ারম্যান আছেন মাত্র দু'জন। বাকি ১৩
ইউনিয়নে জামায়াত ও বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান থাকায় এ আসন থেকে টানা তিনবার
এমপি হয়েছেন বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর কবির
চৌধুরীও বিএনপি সমর্থিত। এমন জনসমর্থনের সুযোগে এ আসনে নির্বাচন ভণ্ডুল
করতে মরিয়া জামায়াত-শিবির। ভোট উৎসবের আবহ তৈরি করতে গিয়ে তাই গলদঘর্ম হতে
হচ্ছে প্রশাসনকে। ভোটারদের আশ্বস্ত করতে মঙ্গলবার বিএনপি-জামায়াতের এ
ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে ৮০ সদস্যের র্যাবের আগাম টিম।
শুধু বাঁশখালী নয়, লোহাগাড়া-সাতকানিয়া (আংশিক), সীতাকুণ্ড ও ফটিকছড়ি নিয়েও টেনশনে আছে প্রশাসন। চট্টগ্রামে ৯টি আসনে নির্বাচন হলেও জামায়াত-বিএনপির এসব ঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বেশি নজর দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সীতাকুণ্ডে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন আছে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির প্রায় ৭০০ সদস্য। সাতকানিয়াতে নিরাপত্তা জোরদার করতে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মঙ্গলবার যোগ দিয়েছে র্যাবের ১০০ জনের একটি বিশেষ দল। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফটিকছড়িতেও ভোটারদের আশ্বস্ত করতে পাঠানো হবে বাড়তি ফোর্স। দু-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে ফটিকছড়ির নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবদুল মান্নান বলেন, '৯টি আসনে নির্বাচন হলেও কয়েকটি আসনকে আলাদাভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।'
দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়াতে গত চার দিনে ৯১ জনকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান অভিযানে সাতকানিয়াতে ৪৪ জন ও লোহাগাড়াতে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে ৪৭ জনকে। সাতকানিয়ার যে অংশে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে জামায়াত-বিএনপি ও এলডিপি সমর্থিত জনপ্রতিনিধি বেশি। সাতকানিয়ার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সোনাকানিয়া, মাদার্শা, কাঞ্চনা, কালিমাইশ ও পুরানগড় ইউনিয়নে রয়েছে ১৮ দলীয় জোটের জনপ্রতিনিধি। আবার লোহাগাড়ার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে চরম্বা, পুটিভিলা, কলাউজান, বড় হাতিয়া ও পদুয়াতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জামায়াত কিংবা এলডিপির। এ কারণে প্রার্থীরা গণসংযোগে নামলেও মনে থাকে অজানা আতঙ্ক।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী বলেন, 'জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত হওয়ায় এ এলাকার ভোটাররা আতঙ্কে আছেন। তাদের ভয় দূর করতে প্রতিটি পাড়ায় গঠন করে দিচ্ছি কমিটি। তারা ভোটারদের ভয় দূর করার পাশাপাশি ভোটের দিন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করবেন।' সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নদভীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএফের জয়নাল আবেদিন কাদেরী। তিনিও জামায়াত-শিবিরের ভয়কে জয় করে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করছেন।
বাঁশখালীতে দুই প্রার্থী গণসংযোগ শুরু করলেও জামায়াত-শিবিরের নির্বাচন ভণ্ডুলের অপতৎপরতায় শঙ্কিত তারাও। এ আসনে জামায়াত-বিএনপির জনপ্রতিনিধি সংখ্যাগরিষ্ঠ। আবার আওয়ামী লীগে রয়েছে দলীয় কোন্দল। তাই বাঁশখালীকে ঘিরে নাশকতার ছক আছে জামায়াত-শিবিরের।
বাঁশখালী প্রতিনিধি আবদুল মতলব কালু জানান, বাঁশখালীর ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে কাথারিয়া ও শিলকূপ ছাড়া ১৩টি ইউনিয়নেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে আছেন জামায়াত ও বিএনপি সমর্থিতরা। এখানকার এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানও বিএনপি সমর্থিত। ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নূর হোসেন আওয়ামী লীগদলীয় হলেও একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। বাঁশখালীতে এখন ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগ। এখানে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতেও ভয় পাচ্ছেন আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় পার্টির (জেপি) অ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী।
প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'জামায়াত-বিএনপি চক্র নির্বাচনের আগে ভোটারদের ভয় দেখাতে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। জেপির অ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী বলেন, 'গণসংযোগের সময় ভোট দেওয়ার চেয়ে কেন্দ্রে যাওয়া নিয়েই শঙ্কা প্রকাশ করছেন ভোটাররা।'
চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে লাগোয়া উপজেলা সীতাকুণ্ড। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানে সেনাসদস্যদের পাশাপাশি আছে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারের ৭০০ সদস্য। আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী দিদারুল আলম বলেন, 'পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকায় জামায়াত-বিএনপির নাশকতাকারীদের অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তারপরও নির্বাচনের সময় গুপ্ত হামলার আশঙ্কা করছেন ভোটাররা।' দিদারুল আলমের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় ইতিমধ্যে দু'দফা ককটেল হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। হামলা হয়েছে জাসদ সমর্থিত অপর প্রার্থী আ ফ ম মফিজুর রহমানের ওপরও।
ফটিকছড়ির বর্তমান চিত্র শান্ত থাকলেও শঙ্কা জাগাচ্ছে অতীত। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর এ আসনে চলতি বছরই পিটিয়ে মারা হয়েছে আওয়ামী লীগের তিন কর্মীকে। এখানে আছে হেফাজতে ইসলাম নিয়ন্ত্রিত অর্ধ ডজন কওমি মাদ্রাসাও। গতকাল বুধবার তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ আসনের মতো ফটিকছড়িতেও ৮০ সদস্যের বিশেষ ফোর্স পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতা উল ইসলাম।
শুধু বাঁশখালী নয়, লোহাগাড়া-সাতকানিয়া (আংশিক), সীতাকুণ্ড ও ফটিকছড়ি নিয়েও টেনশনে আছে প্রশাসন। চট্টগ্রামে ৯টি আসনে নির্বাচন হলেও জামায়াত-বিএনপির এসব ঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বেশি নজর দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সীতাকুণ্ডে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন আছে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির প্রায় ৭০০ সদস্য। সাতকানিয়াতে নিরাপত্তা জোরদার করতে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মঙ্গলবার যোগ দিয়েছে র্যাবের ১০০ জনের একটি বিশেষ দল। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফটিকছড়িতেও ভোটারদের আশ্বস্ত করতে পাঠানো হবে বাড়তি ফোর্স। দু-একদিনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে ফটিকছড়ির নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবদুল মান্নান বলেন, '৯টি আসনে নির্বাচন হলেও কয়েকটি আসনকে আলাদাভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।'
দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে লোহাগাড়া ও সাতকানিয়াতে গত চার দিনে ৯১ জনকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান অভিযানে সাতকানিয়াতে ৪৪ জন ও লোহাগাড়াতে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে ৪৭ জনকে। সাতকানিয়ার যে অংশে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে জামায়াত-বিএনপি ও এলডিপি সমর্থিত জনপ্রতিনিধি বেশি। সাতকানিয়ার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে সোনাকানিয়া, মাদার্শা, কাঞ্চনা, কালিমাইশ ও পুরানগড় ইউনিয়নে রয়েছে ১৮ দলীয় জোটের জনপ্রতিনিধি। আবার লোহাগাড়ার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে চরম্বা, পুটিভিলা, কলাউজান, বড় হাতিয়া ও পদুয়াতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জামায়াত কিংবা এলডিপির। এ কারণে প্রার্থীরা গণসংযোগে নামলেও মনে থাকে অজানা আতঙ্ক।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী বলেন, 'জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত হওয়ায় এ এলাকার ভোটাররা আতঙ্কে আছেন। তাদের ভয় দূর করতে প্রতিটি পাড়ায় গঠন করে দিচ্ছি কমিটি। তারা ভোটারদের ভয় দূর করার পাশাপাশি ভোটের দিন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করবেন।' সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নদভীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএফের জয়নাল আবেদিন কাদেরী। তিনিও জামায়াত-শিবিরের ভয়কে জয় করে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করছেন।
বাঁশখালীতে দুই প্রার্থী গণসংযোগ শুরু করলেও জামায়াত-শিবিরের নির্বাচন ভণ্ডুলের অপতৎপরতায় শঙ্কিত তারাও। এ আসনে জামায়াত-বিএনপির জনপ্রতিনিধি সংখ্যাগরিষ্ঠ। আবার আওয়ামী লীগে রয়েছে দলীয় কোন্দল। তাই বাঁশখালীকে ঘিরে নাশকতার ছক আছে জামায়াত-শিবিরের।
বাঁশখালী প্রতিনিধি আবদুল মতলব কালু জানান, বাঁশখালীর ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে কাথারিয়া ও শিলকূপ ছাড়া ১৩টি ইউনিয়নেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে আছেন জামায়াত ও বিএনপি সমর্থিতরা। এখানকার এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানও বিএনপি সমর্থিত। ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নূর হোসেন আওয়ামী লীগদলীয় হলেও একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। বাঁশখালীতে এখন ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগ। এখানে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতেও ভয় পাচ্ছেন আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় পার্টির (জেপি) অ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী।
প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'জামায়াত-বিএনপি চক্র নির্বাচনের আগে ভোটারদের ভয় দেখাতে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি। জেপির অ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী বলেন, 'গণসংযোগের সময় ভোট দেওয়ার চেয়ে কেন্দ্রে যাওয়া নিয়েই শঙ্কা প্রকাশ করছেন ভোটাররা।'
চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে লাগোয়া উপজেলা সীতাকুণ্ড। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানে সেনাসদস্যদের পাশাপাশি আছে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারের ৭০০ সদস্য। আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী দিদারুল আলম বলেন, 'পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকায় জামায়াত-বিএনপির নাশকতাকারীদের অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তারপরও নির্বাচনের সময় গুপ্ত হামলার আশঙ্কা করছেন ভোটাররা।' দিদারুল আলমের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় ইতিমধ্যে দু'দফা ককটেল হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি। হামলা হয়েছে জাসদ সমর্থিত অপর প্রার্থী আ ফ ম মফিজুর রহমানের ওপরও।
ফটিকছড়ির বর্তমান চিত্র শান্ত থাকলেও শঙ্কা জাগাচ্ছে অতীত। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর এ আসনে চলতি বছরই পিটিয়ে মারা হয়েছে আওয়ামী লীগের তিন কর্মীকে। এখানে আছে হেফাজতে ইসলাম নিয়ন্ত্রিত অর্ধ ডজন কওমি মাদ্রাসাও। গতকাল বুধবার তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ আসনের মতো ফটিকছড়িতেও ৮০ সদস্যের বিশেষ ফোর্স পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতা উল ইসলাম।
No comments