প্রায় দেড় হাজার ভরি স্বর্ণ উদ্ধার
আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের পাঁচ সদস্যকে ১,৩৪০ ভরি স্বর্ণসহ বুধবার গ্রেফতার করা হয় |
(বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ৫ চোরাকারবারি গ্রেফতার)
আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হযরত শাহজালাল
বিমানবন্দরের জুনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও প্রকৌশল বিভাগের ক্লিনিং
সুপারভাইজারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উত্তরা, মগবাজার
ও বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময়
চোরাকারবারি চক্রের অন্যতম সদস্য হোসাইন আসকর লাবুর মগবাজারের বাসা থেকে ৫
কোটি ১৪ লাখ টাকা মূল্যের এক হাজার ৩৪০ ভরি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
র্যাব বলছে, মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় এক নাগরিকের মাধ্যমে হংকং থেকে আসা
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে এ চোরাই স্বর্ণের বারগুলো শাহজালালে আসে।
এরপর বিমানের দুই কর্মীর সহায়তায় স্বর্ণের বারগুলো আরও কয়েকজন চোরাকারবারির
হাত হয়ে লাবুর কাছে পেঁৗছে। আগে থেকে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ
চক্রকে শনাক্ত করে র্যাব। এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমস ও এপিবিএন
দু'দিনে যৌথ অভিযান চালিয়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ, মেডিসিনসহ
চোরাচালানি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার রাতে র্যাবের
অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলেন বিমানবন্দরের জুনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা একেএম
কামরুল হাসান বিপু (৪৪), ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্লিনিং সুপারভাইজার আবু
জাফর, আলী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)
মোহাম্মদ আলী (৫৬), মোবাইল আমদানিকারক 'জি ফোন' নামে একটি কোম্পানির
পরিচালক (ফিন্যান্স) হোসেন আসকর লাবু (৩৬) ও ভারতীয় নাগরিক আহমেদ জামিল
ওরফে ইরফান টুকি (৩৫)।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সমকালকে জানান, মোহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানি চক্রের মূল হোতা। গত ১৫-২০ বছর ধরে তিনি হংকং, দুবাই, সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছিলেন। পরে এসব স্বর্ণ সড়কপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করা হতো। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বারগুলো মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০০৯১ ফ্লাইটে হংকং থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে আনা হয়। বারগুলো বহন করেছিল ভারতীয় নাগরিক জামিল। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি জামিল স্বর্ণের বারসহ গ্রেফতার হন।
গতকাল বুধবার রাতে র্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান জানান, হংকং থেকে স্বর্ণের একটি চালান আসছে_ এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বিমানবন্দরের সব বহির্গমন গেটে র্যাব নজরদারি বাড়ায়। চোরাচালানি চক্র র্যাবের নজরদারি এড়িয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে চালানটি বের করে উত্তরার একটি বাসায় নিয়ে যায়। র্যাব এ তথ্য জানতে পেরে স্বর্ণ চোরাচালানি চক্রের মূল হোতা মোহাম্মদ আলীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের ৩/ই রোডের ৯ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই বাড়ি থেকে আলীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, স্বর্ণের বারগুলো তার সহযোগী লাবু মগবাজারের বাসায় নিয়ে গেছে। রাতেই লাবুর বাসা থেকে স্বর্ণের বারগুলো উদ্ধার এবং লাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে কামরুল, জামিল ও জাফরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বর্ণ চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও র্যাব জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বর্ণের বারগুলো হংকং থেকে আসা ফ্লাইটের টয়লেটের ভেতরে একটি ডাস্টবিনে রাখা ছিল। জামিল বিমানবন্দরে পেঁৗছে নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুলকে এ তথ্য জানান। রাত ১১টার দিকে কামরুল এসব স্বর্ণের বার আলীর কাছে নিরাপদে পেঁৗছে দিতে জাফরকে নির্দেশ দেন। পরে রাত ১২টার দিকে জাফর কৌশলে হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে স্বর্ণের বারগুলো বের করে বাইরে অপেক্ষমাণ আলী ও লাবুর কাছে পেঁৗছে দেন।
তৃতীয় শ্রেণী পাস মোহাম্মদ আলী 'আলী এন্টারপ্রাইজ' নামে একটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তিনি প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় সাত লাখ টাকা বেতন দেন। ২০১১ সালে ভারতীয় নাগরিক আহমেদ জামিল ওরফে ইরফান টুকির সঙ্গে প্রথম হংকংয়ে তার পরিচয়। এরপর ২০০৬ সালে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুলের সঙ্গে তার সখ্য হয়। ২০১৩ সালে আলী আসকর লাবুর সঙ্গে পরিচয় হয় মোহাম্মদ আলীর। ভারতীয় নাগরিক টুকির সহযোগিতায় স্বর্ণের বার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশেও এ চক্র পাচার করছে। বিভিন্ন সময় তারা নৌপথ ও স্থলপথও ব্যবহার করেছেন। উত্তরার মোহাম্মদ আলীর বিলাসবহুল বাড়ি আছে। কেএম কামরুল হাসান বিপু ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বিমানের জুনিয়র সিকিউরিটি অফিসার পদে নিযুক্ত হন। তিনি 'জি ফোন' নামে একটি মোবাইল ফোন সেট আমদারিকারক প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্স ডিরেক্টর। নিরাপদে স্বর্ণের বার পেঁৗছে দিতে বারপ্রতি এক হাজার টাকা পেতেন লাবু। কামরুলের হাত ধরে মোহাম্মদ আলী ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের ক্লিনিং সুপারভাইজার জাফরের সঙ্গে পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন ধরে তারা তিনজন মিলে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক চোরাচালানের একটি বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলে।
শাহজালালে তিন কোটি টাকার স্বর্ণ, সিগারেট ও মেডিসিন উদ্ধার :শাহজালাল বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ, সিগারেট ও মেডিসিন উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, গত দু'দিন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমস ও এপিবিএন পুলিশ সদস্যরা এসব পণ্য আটক করেন। এ সময় স্বর্ণ ও সিগারেট পাচারে জড়িত অভিযোগে জহির উদ্দিন ও আলী শেখ নামের দু'জনকে আটক করা হয়েছে।
চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত জে হোসাইন নামের অপর এক ব্যক্তি পলাতক। কর্মকর্তারা বলেন, আটক পণ্যের মূল্য তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টায় কাস্টমস গ্রিন চ্যানেল গেট দিয়ে পাচার করা প্রায় আধা কেজি স্বর্ণ ও আমদানি নিষিদ্ধ ৬৩৬ কার্টন সিগারেটসহ যাত্রী জহির উদ্দিন ও আলী শেখকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে অবৈধ পণ্য বহন করে বিমানবন্দরে অবতরণ করে আটক ব্যক্তিরা।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সমকালকে জানান, মোহাম্মদ আলী আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানি চক্রের মূল হোতা। গত ১৫-২০ বছর ধরে তিনি হংকং, দুবাই, সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছিলেন। পরে এসব স্বর্ণ সড়কপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করা হতো। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বারগুলো মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০০৯১ ফ্লাইটে হংকং থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে আনা হয়। বারগুলো বহন করেছিল ভারতীয় নাগরিক জামিল। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি জামিল স্বর্ণের বারসহ গ্রেফতার হন।
গতকাল বুধবার রাতে র্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান জানান, হংকং থেকে স্বর্ণের একটি চালান আসছে_ এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বিমানবন্দরের সব বহির্গমন গেটে র্যাব নজরদারি বাড়ায়। চোরাচালানি চক্র র্যাবের নজরদারি এড়িয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে চালানটি বের করে উত্তরার একটি বাসায় নিয়ে যায়। র্যাব এ তথ্য জানতে পেরে স্বর্ণ চোরাচালানি চক্রের মূল হোতা মোহাম্মদ আলীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের ৩/ই রোডের ৯ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই বাড়ি থেকে আলীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, স্বর্ণের বারগুলো তার সহযোগী লাবু মগবাজারের বাসায় নিয়ে গেছে। রাতেই লাবুর বাসা থেকে স্বর্ণের বারগুলো উদ্ধার এবং লাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে কামরুল, জামিল ও জাফরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বর্ণ চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও র্যাব জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বর্ণের বারগুলো হংকং থেকে আসা ফ্লাইটের টয়লেটের ভেতরে একটি ডাস্টবিনে রাখা ছিল। জামিল বিমানবন্দরে পেঁৗছে নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুলকে এ তথ্য জানান। রাত ১১টার দিকে কামরুল এসব স্বর্ণের বার আলীর কাছে নিরাপদে পেঁৗছে দিতে জাফরকে নির্দেশ দেন। পরে রাত ১২টার দিকে জাফর কৌশলে হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে স্বর্ণের বারগুলো বের করে বাইরে অপেক্ষমাণ আলী ও লাবুর কাছে পেঁৗছে দেন।
তৃতীয় শ্রেণী পাস মোহাম্মদ আলী 'আলী এন্টারপ্রাইজ' নামে একটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তিনি প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় সাত লাখ টাকা বেতন দেন। ২০১১ সালে ভারতীয় নাগরিক আহমেদ জামিল ওরফে ইরফান টুকির সঙ্গে প্রথম হংকংয়ে তার পরিচয়। এরপর ২০০৬ সালে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুলের সঙ্গে তার সখ্য হয়। ২০১৩ সালে আলী আসকর লাবুর সঙ্গে পরিচয় হয় মোহাম্মদ আলীর। ভারতীয় নাগরিক টুকির সহযোগিতায় স্বর্ণের বার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশেও এ চক্র পাচার করছে। বিভিন্ন সময় তারা নৌপথ ও স্থলপথও ব্যবহার করেছেন। উত্তরার মোহাম্মদ আলীর বিলাসবহুল বাড়ি আছে। কেএম কামরুল হাসান বিপু ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বিমানের জুনিয়র সিকিউরিটি অফিসার পদে নিযুক্ত হন। তিনি 'জি ফোন' নামে একটি মোবাইল ফোন সেট আমদারিকারক প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্স ডিরেক্টর। নিরাপদে স্বর্ণের বার পেঁৗছে দিতে বারপ্রতি এক হাজার টাকা পেতেন লাবু। কামরুলের হাত ধরে মোহাম্মদ আলী ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের ক্লিনিং সুপারভাইজার জাফরের সঙ্গে পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন ধরে তারা তিনজন মিলে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক চোরাচালানের একটি বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলে।
শাহজালালে তিন কোটি টাকার স্বর্ণ, সিগারেট ও মেডিসিন উদ্ধার :শাহজালাল বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ, সিগারেট ও মেডিসিন উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, গত দু'দিন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমস ও এপিবিএন পুলিশ সদস্যরা এসব পণ্য আটক করেন। এ সময় স্বর্ণ ও সিগারেট পাচারে জড়িত অভিযোগে জহির উদ্দিন ও আলী শেখ নামের দু'জনকে আটক করা হয়েছে।
চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত জে হোসাইন নামের অপর এক ব্যক্তি পলাতক। কর্মকর্তারা বলেন, আটক পণ্যের মূল্য তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টায় কাস্টমস গ্রিন চ্যানেল গেট দিয়ে পাচার করা প্রায় আধা কেজি স্বর্ণ ও আমদানি নিষিদ্ধ ৬৩৬ কার্টন সিগারেটসহ যাত্রী জহির উদ্দিন ও আলী শেখকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে অবৈধ পণ্য বহন করে বিমানবন্দরে অবতরণ করে আটক ব্যক্তিরা।
No comments