কর্তৃপক্ষ কি ঘুমিয়ে ছিল?
(গ্রন্থাগারের এসি ভাংচুর)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যা্যলয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ছাদে বসানো ৩০টি শীতাতপ
নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বা এসি ভাংচুর করার ঘটনায় যতখানি না ক্ষোভ, ততখানিই
বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়। প্রথম বিস্ময় হচ্ছে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
গ্রন্থাগারের এসির তার ছিঁড়ে ও পাখা ভেঙে এর হোতারা আসলে কী অর্জন করতে
চেয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। আমরা জানি, চলমান রাজনৈতিক সংকটে বিরোধীদলীয় জোট
দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা মাত্রায় নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। যাত্রীভর্তি
যানবাহন থেকে শিক্ষালয়_ কিছুই বোমাবাজি, অগি্নসংযোগ বা ভাংচুর থেকে রেহাই
পাচ্ছে না। এ ধরনের নাশকতার একটি লক্ষ্য হচ্ছে জনমানসে আতঙ্ক তৈরি করা।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের এসি ভাংচুরের মধ্য
দিয়ে তেমন কোনো লক্ষ্য যে পূরণ হবে না, বলাই বাহুল্য। দ্বিতীয় বিস্ময়
হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একেবারে কিছু জানে না বলে জানিয়েছে। অথচ
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রন্থাগারের ভেতর দিয়ে ছাড়া ছাদে যাওয়ার
আর কোনো স্বাভাবিক পথ নেই। তাহলে গ্রন্থাগার-সংশ্লিষ্ট কারও কি যোগসাজশ
রয়েছে? তাতে লাভই-বা কী? কেউ যদি নজরদারি এড়িয়ে ছাদে যায়ও-বা বাইরে থেকে মই
বা অন্য কিছু বেয়ে ওঠেও; ৩০টি এসি ভাংচুর করতে যে বিপুল সময় ক্ষেপণ হয়েছে_
সন্দেহ নেই। এই সময় কর্মকর্তা-কর্মচারী বা নিরাপত্তা প্রহরীরা কি ঘুমিয়ে
ছিল? কারণ যাই হোক না কেন, এসি ভাংচুরের ঘটনার দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে
এড়িয়ে যেতে পারে না। এর দায় তাদেরই নিতে হবে এবং ভাংচুরের সঙ্গে জড়িতদের
শনাক্ত, আটক ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে এই অঘটনকে আমরা
'ওয়েকআপ কল' হিসেবে দেখতে চাই। এভাবে যদি এসি ভাংচুর করা সম্ভব হয়, তাহলে
গ্রন্থাগারটিতে আরও বড় নাশকতা চালানোও কঠিন নয়। ক্ষতিগ্রস্ত এসির যন্ত্রাংশ
মেরামতে পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন বলে জানা গেছে। যে অঙ্কেরই হোক, কতিপয়
কর্মকর্তা-কর্মচারীর গাফিলতির খেসারত দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থদণ্ড
হবে কেন_ ভেবে দেখা দরকার। অর্থ না হয় পাওয়া যাবে, কিন্তু অমূল্য সব গ্রন্থ
এবং মেধাবী শিক্ষার্থীরা এভাবে ঝুঁকির মুখে থাকবে কেন? গ্রন্থাগার ঘিরে
সম্ভাব্য নাশকতা নিয়ে শঙ্কা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি কর্তৃপক্ষের রয়েছে?
আমরা জানতে চাই।
No comments