কংগ্রেসের ত্রাতা হতে পারবেন রাহুল? by মাহফুজ রাহমান
ভারতের
কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী এখন একজন রূপান্তরিত মানুষ। গত দু'দিনে
কংগ্রেস নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে এক ডজনের বেশি বৈঠক করেছেন রাহুল গান্ধী। নয়
বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে যত সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তার চেয়ে
বেশি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে গত ১৫ দিনে। তিনি ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন,
আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার
টিকিট পেলেও দল হিসেবে কংগ্রেসের কাছ থেকে তেমন সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা
ক্ষীণ। বরং দলই উল্টো তাকে ত্রাতার আসনে বসিয়েছে। কংগ্রেস নেতারা আশা
করছেন, রাহুল দলে এমন কোনো পরিবর্তন নিয়ে আসবেন, যা কংগ্রেসকে যুদ্ধে
ফেরাবে। ২০১৩ সালে দিলি্লসহ ৫ প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে
কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয় দলটিতে পরিবর্তনের পথ ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করে
কংগ্রেসের একাংশ। সম্প্রতি সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে রাহুলও ইঙ্গিত
দিয়েছেন পরিবর্তনের। তিনি বলেন, 'সময়মতো দলে পরিবর্তন নিয়ে আসবে কংগ্রেস,
যা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।' ইতিমধ্যেই দলের শীর্ষ নেতা জনার্দন
দ্বিবেদি বলেছেন, রাহুলই আমাদের ভবিষ্যৎ নেতা। তাই দেরি না করে
প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা উচিত। অন্যদিকে লোকসভা
এমপি প্রিয়া দত্ত বলেন, আমি আশা করছি আগামী ১৭ জানুয়ারি কংগ্রেসের সম্মেলনে
রাহুলের নাম ঘোষণা করা হবে। এটা শুধু দলের তরুণ সদস্য নয় বরং কংগ্রেসের
সবার ইচ্ছা। দলের অনেক নেতাই মনে করছেন কংগ্রেসের এ দুরবস্থা রাহুলকে
বেকায়দায় ফেলবে না বরং সুবিধা দেবে। দলটির এক সহসম্পাদক বলেন, 'সম্প্রতি
নির্বাচনে দলের এই হার রাহুলের নেতৃত্বে তরুণদের যাত্রায় সুবিধা এনে দেবে।
দলের সংস্কারের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে এই পরাজয়।' সম্প্রতি ভারতজুড়ে চমক
সৃষ্টি করেছে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার বৈঠক। গুঞ্জন তৈরি হয়েছে
রাহুলের জন্য মঞ্চ যখন প্রস্তুত ঠিক তখন প্রিয়াঙ্কাকে দৃশ্যপটে এনে কিসের
ইঙ্গিত দিচ্ছে কংগ্রেস?
বিজেপি যখন রাহুলকে মূল প্রতিপক্ষ দাঁড় করিয়ে সব পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে ঠিক তখনই দৃশ্যপটে প্রিয়াঙ্কার আগমন দলটিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। গোটা বিজেপি শিবিরের নজর এখন ১০ জনপথে। কার নাম ঘোষণা করবেন সোনিয়া গান্ধী? যদি রাহুল হয় তবে তো চেনা অঙ্ক। কিন্তু যদি প্রিয়াঙ্কা আসেন দৃশ্যপটে তবে ছক বদল করতে হবে বিজেপিকে। ভারতের রাজনৈতিক মহল দৃশ্যপটে প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে আসা রাহুলের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা হিসেবে মনে করছেন। কংগ্রেসের জন্য স্বস্তি রয়েছে আরও। দু'মাস আগে দেশব্যাপী যে মোদি মোদি হাওয়া ছিল, সেই হাওয়াতে এখন ভাটার টান। আলোড়ন তুলেছেন কেজরিওয়াল। যদিও কেজরিওয়ালের উঠে আসাতে দিলি্লতে কপাল পুড়েছে কংগ্রেসেরই। তারপরও কংগ্রেসের জন্য হুমকি মোদি-ঝড় থামিয়েছেন তিনি। মোদিকে দুর্বল করার জন্যই আম আদমিকে ঘিরে আবেগ কংগ্রেস কাজে লাগাতে চাইছে। যে কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দলটির সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল। বিজেপি শুরু থেকেই এবারের লোকসভা ভোট মোদি বনাম রাহুলের লড়াইয়ে পরিণত করতে চাইছে। অপরপক্ষে কংগ্রেস এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা দেয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৭ তারিখ এআইসিসি অধিবেশনেও যদি তা না করা হয়, তাতেও বিজেপির লাভ। তারা প্রচার করতে পারবে, মোদির সঙ্গে টক্কর নেওয়ার ভয়ে রাহুলের নাম ঘোষণা থেকে পিছিয়ে এলো কংগ্রেস। যদি নাম ঘোষণা হয়ও, তাতে 'চেনা ছকে' রাহুলকে মোকাবেলা করা কঠিন হবে না বলে মনে করছে বিজেপি। কিন্তু এখন বিজেপির কাছে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, যদি রণক্ষেত্রে প্রিয়াঙ্কাকে সামনে এগিয়ে দেন রাহুল তবে? বরাবরই তাকে আস্তিনে লুকিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। স্বামী রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও প্রিয়াঙ্কা এখনও দূরে রয়েছেন যাবতীয় অভিযোগ থেকে। অনায়াসে মানুষের সঙ্গেও মিশে যেতে পারেন তিনি। অনেকেই তার মধ্যে দেখতে পান ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া। ফলে তিনি সামনে এলে বদলে যেতে পারে ছবিটাই। এ অবস্থায় রাহুল তথা কংগ্রেসের আশ্রয় সেই গান্ধী পরিবারের প্রতি ভারতবাসীর দুর্বলতা। যাকে 'গান্ধী রাজবংশ' বলে কটাক্ষ করে আসছে বিজেপি। ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীপরবর্তী সময়ে এই প্রথম বড় ধরনের দুর্যোগের সম্মুখীন কংগ্রেস। কিন্তু ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন দলটির ইতিহাস বলছে, যখনই তাদের নৌকা ডুবুডুবু ঠিক তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা। এবারও এমন ছক কষছেন রাহুল। গান্ধী পরিবারের দুই তরুণ সদস্য প্রিয়াঙ্কা আর রাহুল যৌথ পরিচালনায় কংগ্রেসে তারুণ্যের হাওয়া লাগাবেন। আর দলের পুরনো প্রহরীদের ভারসাম্য রক্ষা করবেন সোনিয়া গান্ধী। সব মিলিয়ে প্রভাবশালী নেহরু-গান্ধী বংশের বংশধররা সবচেয়ে বড় যুদ্ধের সম্মুখীন। যেখানে সেনাপতির ভূমিকায় রাহুল গান্ধী। এই নির্বাচনী বৈতরণী তিনি কতটা সফলতার সঙ্গে পার হতে পারবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। ইন্ডিয়া টুডে অবলম্বনে।
বিজেপি যখন রাহুলকে মূল প্রতিপক্ষ দাঁড় করিয়ে সব পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে ঠিক তখনই দৃশ্যপটে প্রিয়াঙ্কার আগমন দলটিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। গোটা বিজেপি শিবিরের নজর এখন ১০ জনপথে। কার নাম ঘোষণা করবেন সোনিয়া গান্ধী? যদি রাহুল হয় তবে তো চেনা অঙ্ক। কিন্তু যদি প্রিয়াঙ্কা আসেন দৃশ্যপটে তবে ছক বদল করতে হবে বিজেপিকে। ভারতের রাজনৈতিক মহল দৃশ্যপটে প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে আসা রাহুলের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা হিসেবে মনে করছেন। কংগ্রেসের জন্য স্বস্তি রয়েছে আরও। দু'মাস আগে দেশব্যাপী যে মোদি মোদি হাওয়া ছিল, সেই হাওয়াতে এখন ভাটার টান। আলোড়ন তুলেছেন কেজরিওয়াল। যদিও কেজরিওয়ালের উঠে আসাতে দিলি্লতে কপাল পুড়েছে কংগ্রেসেরই। তারপরও কংগ্রেসের জন্য হুমকি মোদি-ঝড় থামিয়েছেন তিনি। মোদিকে দুর্বল করার জন্যই আম আদমিকে ঘিরে আবেগ কংগ্রেস কাজে লাগাতে চাইছে। যে কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দলটির সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল। বিজেপি শুরু থেকেই এবারের লোকসভা ভোট মোদি বনাম রাহুলের লড়াইয়ে পরিণত করতে চাইছে। অপরপক্ষে কংগ্রেস এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা দেয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৭ তারিখ এআইসিসি অধিবেশনেও যদি তা না করা হয়, তাতেও বিজেপির লাভ। তারা প্রচার করতে পারবে, মোদির সঙ্গে টক্কর নেওয়ার ভয়ে রাহুলের নাম ঘোষণা থেকে পিছিয়ে এলো কংগ্রেস। যদি নাম ঘোষণা হয়ও, তাতে 'চেনা ছকে' রাহুলকে মোকাবেলা করা কঠিন হবে না বলে মনে করছে বিজেপি। কিন্তু এখন বিজেপির কাছে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, যদি রণক্ষেত্রে প্রিয়াঙ্কাকে সামনে এগিয়ে দেন রাহুল তবে? বরাবরই তাকে আস্তিনে লুকিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। স্বামী রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও প্রিয়াঙ্কা এখনও দূরে রয়েছেন যাবতীয় অভিযোগ থেকে। অনায়াসে মানুষের সঙ্গেও মিশে যেতে পারেন তিনি। অনেকেই তার মধ্যে দেখতে পান ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া। ফলে তিনি সামনে এলে বদলে যেতে পারে ছবিটাই। এ অবস্থায় রাহুল তথা কংগ্রেসের আশ্রয় সেই গান্ধী পরিবারের প্রতি ভারতবাসীর দুর্বলতা। যাকে 'গান্ধী রাজবংশ' বলে কটাক্ষ করে আসছে বিজেপি। ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীপরবর্তী সময়ে এই প্রথম বড় ধরনের দুর্যোগের সম্মুখীন কংগ্রেস। কিন্তু ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন দলটির ইতিহাস বলছে, যখনই তাদের নৌকা ডুবুডুবু ঠিক তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা। এবারও এমন ছক কষছেন রাহুল। গান্ধী পরিবারের দুই তরুণ সদস্য প্রিয়াঙ্কা আর রাহুল যৌথ পরিচালনায় কংগ্রেসে তারুণ্যের হাওয়া লাগাবেন। আর দলের পুরনো প্রহরীদের ভারসাম্য রক্ষা করবেন সোনিয়া গান্ধী। সব মিলিয়ে প্রভাবশালী নেহরু-গান্ধী বংশের বংশধররা সবচেয়ে বড় যুদ্ধের সম্মুখীন। যেখানে সেনাপতির ভূমিকায় রাহুল গান্ধী। এই নির্বাচনী বৈতরণী তিনি কতটা সফলতার সঙ্গে পার হতে পারবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়। ইন্ডিয়া টুডে অবলম্বনে।
No comments