আগামীর পৃথিবীরা, এ বছরের সাই-ফাই by রফিকুর রশীদ
সাই-ফাই
লেখক ডেমিয়েন জি ওয়াল্টারের ব্লগ অবলম্বনে মোহাম্মদ আরজু আমাদের জীবনের
কেন্দ থেকে টিভিকে সরিয়ে ইন্টারনেট সেই জায়গা নিচ্ছে, একই সঙ্গে আমাদের নয়া
পপ কালচার হয়ে উঠেছে সায়েন্স ফিকশন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে যারা
অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং নাওয়া-খাওয়া ভুলে জ্ঞানার্জনে আগ্রহী, তাদের যাপিত
পৃথিবী খুবই আজব ও জটিল। সাই-ফাইগুলোতে আমরা এমন সব রূপক খুঁজে পাই, যা এই
ইন্টারনেটনিবাসীদের সম্পর্কে কথা বলতে ভাষা খুঁজে পেতে আমাদের সাহায্য করে।
তরুণরা নির্বোধ নয়, দি হাঙ্গার গেমস : ক্যাচিং ফায়ারের মতো সাই-ফাই
অ্যাডভেঞ্চার চলচ্চিত্র আজ সিনেমা হলগুলোকে মেরে খাচ্ছে। টিনেজারদের
সুড়সুড়িই এর সম্বল নয়। এই সাফল্যের কারণ হচ্ছে, এমন কাহিনীর মধ্যেই একটা
প্রজন্ম আজ বড় হয়ে উঠছে, পুঁজিবাদের চূড়ান্ত পর্বে এমন কাহিনীর মধ্যে একটা
প্রজন্ম আজ নিজেদের অভিজ্ঞতা উচ্চারণ করছে।
সাই-ফাই কাহিনীগুলো খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে, মৌলিকভাবেই বদলে যাচ্ছে। তবে সাই-ফাইর সাবেকি লেখক ও সমালোচকদের জায়গা থেকে এটা বোঝা যাবে না। কারণ, তারা নিজেরা এই বদল টের করতে পারেননি। পারেননি যে তার সর্বশেষ নজির হচ্ছে, ২০১৩ সালের আর্থার সি ক্লার্ক পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকা। ওই তালিকায় থাকা লেখকদের সবাই-ই ছিলেন বৃদ্ধ, শ্বেতাঙ্গ এবং পুরুষ। অতীতাচারী সব কাহিনীর বই। পুরস্কার কর্তৃপক্ষের পছন্দ দেখে মনে হয়, সায়েন্স ফিকশন এককালে কি বস্তু ছিল- সেই সংজ্ঞা দিতে চান তারা, কিন্তু সায়েন্স ফিকশন এখন কি হয়ে উঠছে- সেই ব্যাপারে তারা অন্ধ। তবে এই অন্ধত্ব টের করেছেন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ লেখকদের একজন। অ্যাডাম রবার্টস। তার লেখালেখি নিয়ে একটি বিদ্যায়াতনিক সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হয়, তার কাজগুলো কিভাবে ভবিষ্যতের অংশ হয়ে উঠছে বলে তিনি মনে করে। রবার্টসের জবাব; ক্রমবর্ধমানভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার পথে রয়েছে, শ্বেতাঙ্গ-পুরুষসুলভ অভিজ্ঞতার বাইরে দুনিয়ার আরও ভিন্ন-বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য দেশের কণ্ঠস্বরের সামনে হারিয়ে যাচ্ছে।
এই ভিন্ন-বিচিত্র কণ্ঠস্বরের দু-একটা আজ হাজির করছি, যেগুলোর কথা এই ২০১৪ সালজুড়ে আপনি শুনবেন। জনপ্রিয় হবে এই সাই-ফাইগুলো, বেশ আলোচিত হবে। এমন লেখকদের একজন হচ্ছে ইজরাইলে জন্ম নেয়া লাভি তিশার। খুবই সাম্প্রদায়িক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তবে এরপর বাস করেছেন বর্ণবাদমুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং পৃথিবীর অস্থিরতা ছেড়ে এশিয়ার শান্ত দেশ লাওসে। আধুনিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে কুণ্ঠিত না হওয়া লেখক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। তার যুগসৃষ্টিকারী সায়েন্স ফিকশন ওসামা গত ২০১২ সালে ওয়ার্ল্ড ফ্যান্টাসি অ্যাওয়ার্ড পায়। সাই-ফাই ওসামার জনপ্রিয়তা ও এই পুরস্কারের কারণ তার ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণ। বিতর্কিত বটে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমরা যেভাবে সন্ত্রাসবাদকে মিথ্যে পরিণত করি, তার বিশ্লেষণ তিনি উপন্যাসে করেছেন, নিজস্ব উপায়ে। যেখানে দেখা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা এর পরে কোনো এক সময়ে এক ভিন্ন পৃথিবীর জন্ম, যে পৃথিবী আমাদের মতো নয়। যেখানে পশ্চিম আর প্রাচ্যের মুসলিমের মধ্যে সমস্যা নেই। যেখানে ওসামা এই ওসামা নন, বরং এক এন্টিহিরো। তার অপর বই দি ভায়োলেন্ট সেঞ্চুরি তিশারের কটুভাষী ও বিদ্রুপাত্মক সায়েন্স-ফিকশনের উদাহরণ, যা ব্রিটেনের সুপারহিরোদের ইতিহাস ঘিরে লেখা হয়েছে। বিকল্প ইতিহাস। তিশারের আর সব কাজের মতোই এই বইটির কাহিনীও দুই সে াতে বয়ে চলেছে, একদিকে গ্রিক সংস্কৃতির প্রতি লেখকের নিজস্ব মুগ্ধতা অন্যদিকে গুরুভার মূল সুর। এই শৈলী খুব উপযোগী সেই সব ইন্টারনেটনিবাসী পাঠকের জন্য, যাদের নিজস্ব আগ্রহের জায়গাগুলোও নানা সে াত বয়।
লেখিকা হেলেন ওয়েকারের দি গোলেম অ্যান্ড দি জিন্নি গত বছরজুড়ে আস্তে আস্তে পাঠকপ্রিয়তা পাচ্ছে, তুষের আগুনের মতো, আমি নিশ্চিত এটা এ বছর বোমার বিস্ফোরিত হবে পাঠক সমাজে। নিউইয়র্কে অভিবাসী অভিজ্ঞতার কাহিনী। আমাদের সময়ের নীতিগর্ভ রূপক কাহিনী। একটা শব্দও অপচয় করেননি লেখিকা, বেদরকারি বলে মনে হবে এমন একটাও অনুচ্ছেদ নেই, নতুন কোনো মুগ্ধতা তৈরি করে না- এমন একটাও পরিচ্ছেদ নেই। ইয়াহুদী রূপকথার অলৌকিক নারী- গোলেম আর এক জাদুবন্দি জিনের কাহিনী। উনিশ শতকের নিউইয়র্কের পটভূমিতে লেখা সাই-ফাই।
অপর লেখিকা অ্যান লেকি। তার সাই-ফাই অ্যানসিলিয়ারি জাস্টিস এ বছর বেশ সাড়া জাগাবে। একদিকে এর লেখার শৈলী হচ্ছে মঞ্চায়নযোগ্য বিরাট উপন্যাসের মতো, অন্যদিকে এটি পূর্ণতা পেয়েছে ধীরলয়ের গদ্যভাষায়। উপন্যাসের কেন্দ ীয় চরিত্র- অ্যালিয়েন এক প্রাণীর চেতনা ও বিবেকের জগতে অনুসন্ধান চালাবার চেষ্টা করেছেন অ্যান। প্রথমে একটি নভোযানের আত্মা হিসেবে থাকে ব্রেক নামের অ্যালিয়েন। পরে তার ভূমিকা কমে এক ধরনের ব্যক্তিসত্তায় নেমে আসে।
আমেরিকান লেখকদের মধ্যে গত একদশক জুড়ে আজব সব সায়েন্স ফিকশন নিয়ে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন জেফ ভ্যান্ডারমার। এ বছরও তার বইগুলো জনপ্রিয় থাকবে। এ বছর আসছে নতুন একটি উপন্যাসও। ভেনিস আন্ডারগ্রাউন্ড ও শ্রেকের চমতকার বিচিত্র উপন্যাস রয়েছে তার। দুই বছর আগে জেফ জানিয়েছিলেন, নতুন উপন্যাসের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন তিনি- যা তার নিজের কল্পনারও দূরতম সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ফেব্র“য়ারিতে বইটি বাজারে আসছে। নাম অ্যানিহিলেশন : দি ফার্স্ট অফ দি সাউদার্ন রিচ ট্রিলজি।
সাই-ফাই কাহিনীগুলো খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে, মৌলিকভাবেই বদলে যাচ্ছে। তবে সাই-ফাইর সাবেকি লেখক ও সমালোচকদের জায়গা থেকে এটা বোঝা যাবে না। কারণ, তারা নিজেরা এই বদল টের করতে পারেননি। পারেননি যে তার সর্বশেষ নজির হচ্ছে, ২০১৩ সালের আর্থার সি ক্লার্ক পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকা। ওই তালিকায় থাকা লেখকদের সবাই-ই ছিলেন বৃদ্ধ, শ্বেতাঙ্গ এবং পুরুষ। অতীতাচারী সব কাহিনীর বই। পুরস্কার কর্তৃপক্ষের পছন্দ দেখে মনে হয়, সায়েন্স ফিকশন এককালে কি বস্তু ছিল- সেই সংজ্ঞা দিতে চান তারা, কিন্তু সায়েন্স ফিকশন এখন কি হয়ে উঠছে- সেই ব্যাপারে তারা অন্ধ। তবে এই অন্ধত্ব টের করেছেন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ লেখকদের একজন। অ্যাডাম রবার্টস। তার লেখালেখি নিয়ে একটি বিদ্যায়াতনিক সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হয়, তার কাজগুলো কিভাবে ভবিষ্যতের অংশ হয়ে উঠছে বলে তিনি মনে করে। রবার্টসের জবাব; ক্রমবর্ধমানভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার পথে রয়েছে, শ্বেতাঙ্গ-পুরুষসুলভ অভিজ্ঞতার বাইরে দুনিয়ার আরও ভিন্ন-বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য দেশের কণ্ঠস্বরের সামনে হারিয়ে যাচ্ছে।
এই ভিন্ন-বিচিত্র কণ্ঠস্বরের দু-একটা আজ হাজির করছি, যেগুলোর কথা এই ২০১৪ সালজুড়ে আপনি শুনবেন। জনপ্রিয় হবে এই সাই-ফাইগুলো, বেশ আলোচিত হবে। এমন লেখকদের একজন হচ্ছে ইজরাইলে জন্ম নেয়া লাভি তিশার। খুবই সাম্প্রদায়িক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তবে এরপর বাস করেছেন বর্ণবাদমুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং পৃথিবীর অস্থিরতা ছেড়ে এশিয়ার শান্ত দেশ লাওসে। আধুনিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে কুণ্ঠিত না হওয়া লেখক হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। তার যুগসৃষ্টিকারী সায়েন্স ফিকশন ওসামা গত ২০১২ সালে ওয়ার্ল্ড ফ্যান্টাসি অ্যাওয়ার্ড পায়। সাই-ফাই ওসামার জনপ্রিয়তা ও এই পুরস্কারের কারণ তার ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণ। বিতর্কিত বটে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমরা যেভাবে সন্ত্রাসবাদকে মিথ্যে পরিণত করি, তার বিশ্লেষণ তিনি উপন্যাসে করেছেন, নিজস্ব উপায়ে। যেখানে দেখা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা এর পরে কোনো এক সময়ে এক ভিন্ন পৃথিবীর জন্ম, যে পৃথিবী আমাদের মতো নয়। যেখানে পশ্চিম আর প্রাচ্যের মুসলিমের মধ্যে সমস্যা নেই। যেখানে ওসামা এই ওসামা নন, বরং এক এন্টিহিরো। তার অপর বই দি ভায়োলেন্ট সেঞ্চুরি তিশারের কটুভাষী ও বিদ্রুপাত্মক সায়েন্স-ফিকশনের উদাহরণ, যা ব্রিটেনের সুপারহিরোদের ইতিহাস ঘিরে লেখা হয়েছে। বিকল্প ইতিহাস। তিশারের আর সব কাজের মতোই এই বইটির কাহিনীও দুই সে াতে বয়ে চলেছে, একদিকে গ্রিক সংস্কৃতির প্রতি লেখকের নিজস্ব মুগ্ধতা অন্যদিকে গুরুভার মূল সুর। এই শৈলী খুব উপযোগী সেই সব ইন্টারনেটনিবাসী পাঠকের জন্য, যাদের নিজস্ব আগ্রহের জায়গাগুলোও নানা সে াত বয়।
লেখিকা হেলেন ওয়েকারের দি গোলেম অ্যান্ড দি জিন্নি গত বছরজুড়ে আস্তে আস্তে পাঠকপ্রিয়তা পাচ্ছে, তুষের আগুনের মতো, আমি নিশ্চিত এটা এ বছর বোমার বিস্ফোরিত হবে পাঠক সমাজে। নিউইয়র্কে অভিবাসী অভিজ্ঞতার কাহিনী। আমাদের সময়ের নীতিগর্ভ রূপক কাহিনী। একটা শব্দও অপচয় করেননি লেখিকা, বেদরকারি বলে মনে হবে এমন একটাও অনুচ্ছেদ নেই, নতুন কোনো মুগ্ধতা তৈরি করে না- এমন একটাও পরিচ্ছেদ নেই। ইয়াহুদী রূপকথার অলৌকিক নারী- গোলেম আর এক জাদুবন্দি জিনের কাহিনী। উনিশ শতকের নিউইয়র্কের পটভূমিতে লেখা সাই-ফাই।
অপর লেখিকা অ্যান লেকি। তার সাই-ফাই অ্যানসিলিয়ারি জাস্টিস এ বছর বেশ সাড়া জাগাবে। একদিকে এর লেখার শৈলী হচ্ছে মঞ্চায়নযোগ্য বিরাট উপন্যাসের মতো, অন্যদিকে এটি পূর্ণতা পেয়েছে ধীরলয়ের গদ্যভাষায়। উপন্যাসের কেন্দ ীয় চরিত্র- অ্যালিয়েন এক প্রাণীর চেতনা ও বিবেকের জগতে অনুসন্ধান চালাবার চেষ্টা করেছেন অ্যান। প্রথমে একটি নভোযানের আত্মা হিসেবে থাকে ব্রেক নামের অ্যালিয়েন। পরে তার ভূমিকা কমে এক ধরনের ব্যক্তিসত্তায় নেমে আসে।
আমেরিকান লেখকদের মধ্যে গত একদশক জুড়ে আজব সব সায়েন্স ফিকশন নিয়ে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন জেফ ভ্যান্ডারমার। এ বছরও তার বইগুলো জনপ্রিয় থাকবে। এ বছর আসছে নতুন একটি উপন্যাসও। ভেনিস আন্ডারগ্রাউন্ড ও শ্রেকের চমতকার বিচিত্র উপন্যাস রয়েছে তার। দুই বছর আগে জেফ জানিয়েছিলেন, নতুন উপন্যাসের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন তিনি- যা তার নিজের কল্পনারও দূরতম সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ফেব্র“য়ারিতে বইটি বাজারে আসছে। নাম অ্যানিহিলেশন : দি ফার্স্ট অফ দি সাউদার্ন রিচ ট্রিলজি।
No comments