পুঞ্জীভূত ঋণ ১৫৫ কোটি টাকা-রাজশাহীর হরিয়ান চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু by রফিকুল ইসলাম,

ব্যাহত লোকসানের ঘানি টেনে রাজশাহীর হরিয়ান চিনিকলের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বছর এই চিনিকলটিতে লোকসান হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এর আগের বছর হয়েছে ১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। তবে এবার আশার বাণী হলো, গত বছরের তুলনায় এ বছর আখ চাষের পরিমাণ বেড়েছে। এতে এ বছর চিনি উৎপাদনের পরিমাণও বাড়বে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেই হিসাবে লোকসানের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমবে।


আর সেই আশা নিয়েই গত শুক্রবার বিকেলে হিরয়ান চিনিকলের চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মাড়াই কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি করপোরেশন শিল্পের পরিচালক (উৎপদান ও প্রকৌশল) আমিনুল ইসলাম, হরিয়ান চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক আল আমীন, চিফ পার্সেল অফিসার ফরহাদ হোসেনসহ প্রমুখ।
চিনিকল সূত্রমতে, রাজশাহীর হরিয়ান চিনিকলের আওতায় এ বছর মোট ১৮ হাজার একর জমিতে প্রায় ২০ হাজার কৃষক আখ চাষ করেছেন। এসব কৃষককে গতবারের মতো এবার মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে আখ সরবরাহের জন্য প্রায় ৮০ হাজার পুর্জি (অনুমতি পত্র) বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া কৃষকদের আখ সরবরাহের পর পাওনা টাকা কখন পরিশোধ করা হবে, সেই তথ্য দেওয়া হবে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে।
চিনিকল সূত্র আরো জানায়, হরিয়ান চিনিকলে এ বছর আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯০ দিন। এ সময়ে এক লাখ ৫০ হাজার টন আখ মাড়াই হবে। এ থেকে ৭.২৫ শতাংশ রিকোভারি হার ধরে চিনি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৮৭৫ টন। এ বছর চিনির দাম বেশি থাকায় লোকসানের পরিমাণ অনেকটা কম হবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চিনিকল সূত্রমতে, রাজশাহী চিনিকলে আখ মাড়াই করে বিগত ১১টি মৌসুম ধরে টানা লোকসান গুনতে হয়েছে। এর আগে মাঝে একটি মৌসুম লাভের মুখ দেখলেও তার আগের কয়েক মৌসুমও ছিল একই অবস্থায়। যার কারণে বর্তমানে রাজশাহী চিনিকলের মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫৫ কোটি টাকা।
চিনিকল কর্তৃপক্ষের দাবি, উৎপাদন খরচের চেয়ে চিনির দাম কম হওয়ায়, প্রয়োজনীয় পরিমাণ আখ মিলে সরবরাহ না থাকায় এবং অপ্রয়োজনীয় জনবলের কারণে এই চিনিকলটি দীর্ঘদিন ধরেই লোকাসানের আবর্তে বন্দি হয়ে আছে। তবে এখন দুর্নীতির পরিমাণ অনেক কমে যাওয়ায় এবং এবার চিনির দাম বেশি থাকায় আগের চেয়ে লোকসানের পরিমাণ অনেক কমে হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

No comments

Powered by Blogger.