রাজনীতি-অন্তর্বিবাদে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ by পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য

ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার কোন্দলের মধ্য দিয়ে। দুই নেতাই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আর তাই নিজেদের দাপটের প্রমাণ রাখতে রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে পিছিয়ে না থাকলেও মহানগরী কমিটির কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন যুগ্ম সম্পাদক ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।


শুধু ঢাকা মহানগরী নয়, সারা দেশেই এমন হাল ক্ষমতাসীন দলের। প্রান্ত থেকে কেন্দ্র_সবখানেই কোন্দল, গৃহবিবাদ। নেতৃত্বের এ বিভাজনে বিপর্যস্ত দল। যেসব জেলা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই, সেসব জেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠানের কোনো উদ্যোগ নেই। কেন্দ্রের যথাযথ তদারকি ও দিকনির্দেশনার অভাবে সাংগঠনিক স্থবিরতা কাটাতে পারছে না শাসকদল। কোন্দল নিরসনে সুনির্দিষ্ট অনেক কর্মপরিকল্পনা
নেওয়া হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন নেই। এর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের অনীহাই দায়ী বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
যাঁদের ওপর মূল দায়িত্ব্ব তাঁরা মনোযোগী না হলে কী করার আছে : এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দলকে সাংগঠনিকভাবে মজবুত করতে দলীয় ফোরামে অনেক সিদ্ধান্ত নিলেও সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাঁদের ওপর, তাঁদের অনীহার কারণে পরিকল্পনার পর্যায়েই থেকে যায়। যাঁদের ওপর সংগঠনের মূল দায়িত্ব্ব, তাঁরাই যদি মনোযোগী না হন তাহলে কী করার আছে?'
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই। ওই কাউন্সিলে অনেক নবীন নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করার ক্ষেত্রে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি তাঁরা। অথচ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষপর্যায়ে।
দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রবল। সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে_এমন কথা দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই। তবে সারা দেশে ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় সন্মেলন শুরু হয়েছে। এরপর ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও মহানগরী কমিটির সম্মেলন হবে।
এত বড় দলে কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকবেই : দলের বিভিন্ন ইউনিটে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে বলে স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ কালের কণ্ঠকে জানান, আওয়ামী লীগের মতো এত বড় দলে কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকবে_এটাই স্বাভাবিক। তিনি আরো জানান, ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের সন্মেলন শুরু হয়ে গেছে। ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সন্মেলন শেষ হলে দলের ভেতরকার দ্বন্দ্ব কমে আসবে।
আওয়ামী লীগের সব বিষয়ে সবাই তাকিয়ে থাকে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে। সব ভার তাঁর ওপর। এ ছাড়া দলের আরেক বড় সমস্যা হলো তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দলীয় সংসদ সদস্যদের দূরত্ব। এ নিয়ে খোদ দলীয় সভানেত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় অভিযোগ দিলেও শুধু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া যাবে না_এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ ছাড়া আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি রয়েছে 'সংস্কারপন্থীদের' সঙ্গে অন্যদের দূরত্ব।
দ্বন্দ্ব নিরসনে উদ্যোগ নেই : ঢাকা মহানগরী কমিটি চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে। এ দ্বন্দ্ব নিরসনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি কেন্দ্র থেকে। প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মহানগরীর যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, হাজি সেলিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন। নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ঘোষণা দিয়েও তা শুরু করতে পারেনি মহানগরী কমিটি। মহানগরী আওয়ামী লীগের মূল দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের আগ্রহের অভাবে এটা শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অ্যাডভোকেট কামরুল।
হারুন-সুজা বিরোধ খুলনা জেলায় : নেতাদের কোন্দলে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ স্পষ্টতই দুই ভাগে বিভক্ত। বিরোধ রয়েছে জেলা কমিটির সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মধ্যে। সাংগঠনিক দিক দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে সুজার প্রভাব অনেক বেশি। একমাত্র দীঘলিয়া উপজেলা কমিটি হারুনুর রশিদের নিয়ন্ত্রণে। দীঘলিয়া-তেরখাদা-রূপসা নিয়ে খুলনা-৪ আসন। ১৯৯০ ও ১৯৯৬ সালে এখান থেকে নির্বাচিত হন সুজা। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে পলাতক থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোল্লা জালালউদ্দিন দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি হারুনের অনুসারী। সুজা ওই এলাকায় সাংগঠনিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলেই মোল্লা জালালের অনুসারীরা পাল্টা কর্মসূচি দেয়।
ঠাণ্ডা লড়াই তালুকদার খালেক ও মিজানের মধ্যে : খুলনা মহানগরী আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের মধ্যে প্রকাশ্য কোনো বিরোধ না থাকলেও রয়েছে ঠাণ্ডা লড়াই। জেলা ও মহানগরী পর্যায়ের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার তৎপরতা রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের।
সিলেটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি তিন বছরেও : সিলেট জেলা আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব দীর্ঘকালের। একসময় আবদুস সামাদ আজাদ ও দেওয়ান ফরিদ গাজীকে ঘিরে বিভক্ত ছিল আওয়ামী লীগ। পরে এই গ্রুপিং রূপ নেয় আবদুস সামাদ আজাদ ও সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে ঘিরে। স্পিকার মারা গেলে আওয়ামী লীগের বিভক্তি সামাদ-সুরঞ্জিত বলয়ে আবর্তিত হতে থাকে। কিন্তু বর্ষীয়ান নেতা আবদুস সামাদ আজাদ মারা যাওয়ার পর সিলেটে একধরনের নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দেয়। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন অর্থনীতিবিদ বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বর্তমানে তাঁকে ঘিরে আওয়ামী লীগে আলাদা বলয় তৈরি হলেও একটি বড় অংশ পরোক্ষভাবে তাঁর বিপক্ষে রয়েছে। প্রকাশ্য বিরোধ না থাকলেও ভেতরে ভেতরে গ্রুপিং রয়েছে।
ছয় বছর আগে জেলা ও মহানগর সম্মেলন হলেও আজও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। কমিটি গঠন নিয়ে মাঝেমধ্যেই রাজপথে নামেন নেতা-কর্মীরা; কিন্তু কমিটি আর হয় না। এ কারণে সংগঠনের কর্মকাণ্ডও স্থবির হয়ে পড়েছে। দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি দায়সারাভাবে পালন করা ছাড়া কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়েও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রকাশ ঘটেছে বারবার।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৫ সালের শেষদিকে। সম্মেলনে জেলা কমিটির সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রে দুটি করে তালিকা পাঠালে শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা না হওয়ায় কমিটি পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। তিন বছর মেয়াদের ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই।
সিটি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর সম্পর্ক শীতল। যদিও প্রকাশ্যে তাঁদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই বলে তাঁরা বোঝাতে চান। দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সঙ্গেও অর্থমন্ত্রীর দূরত্ব রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সম্পর্ক তেমন গাঢ় নয়।
মহিউদ্দিন-নুরুল ইসলাম বিরোধ চট্টগ্রামে : বন্দরনগর চট্টগ্রামের মহানগর আওয়ামী লীগ স্পষ্টত দুই ধারায় বিভক্ত। নতুন মেরুকরণের পর আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন নগর কমিটির সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। অন্য পক্ষে আছেন নগর কমিটির সহসভাপতি সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম বিএসসি। মহিউদ্দিন চৌধুরীর গ্রুপে আছেন তাঁর একসময়ের প্রতিপক্ষ নগর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক ছাত্রনেতা আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। এ ছাড়া রয়েছেন নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানু। নুরুল ইসলাম বিএসসির গ্রুপে শামিল হয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন, কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম।
২০০৬ সালের জুনে সর্বশেষ সন্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো হয়নি। দুই গ্রুপই স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে যার যার মতো করে। তবে আফসারুল আমিন মন্ত্রী ও নুরুল ইসলাম চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কোতোয়ালির সংসদ সদস্য হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন।
ভাই-দাদু কোন্দল বরিশালে : বরিশালে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সিটি মেয়র অ্যাডভোকেট শওকত হোসেন হিরণের কবজায়। দলের প্রবীণ নেতারা রয়েছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর দিকে। অন্যদিকে নবীন এবং জাতীয় পার্টি থেকে আসা নেতাদের নেতৃত্বে আছেন হিরণ। এ দুই নেতার মর্জির বাইরে কারো কিছু করার নেই। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে 'ভাই' অর্থাৎ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর কথাই 'শেষ কথা' হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগে বিরোধ নেই। তবে মহানগর কমিটিতে রয়েছে অদৃশ্য কোন্দল।
বরিশালের রাজনীতির 'দাদু' হিসেবে পরিচিত হিরণ। তিনি মহানগরের বাইরে জেলা আওয়ামী লীগে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালানোয় তাঁর প্রতি ক্ষোভ রয়েছে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর। তবে প্রকাশ্যে কিছুই বলছেন না। পতাকার সুবাদে বরিশালে এখন হিরণ বেশি প্রভাবশালী। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর হাত ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এলেও সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে গাড়িতে পতাকা লাগিয়েছেন হিরণ। আর হাসানাত এখন পতাকাশূন্য। হাসানাতের অনুসারীরা হিরণের কাছ থেকে কোনো ধরনের সুবিধাই ভোগ করতে পারছে না। ফলে 'ভাই' আর 'দাদু'র মধ্যে দেখা দিয়েছে কোন্দল। তবে দুই নেতার কেউই দলীয় কোন্দলের বিষয়টি সরাসরি স্বীকার করেন না।
এক নেতা নির্ভর রাজশাহী আওয়ামী লীগ : রাজশাহীতে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি আবর্তিত একজন নেতাকে ঘিরেই। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান লিটন। ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর গত ৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এ কমিটি নিয়েই সৃষ্টি হয়েছে বিড়ম্বনা।
কাউন্সিলে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক সভাপতি এবং এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। কিন্তু অনুমোদিত কমিটিতে মেরাজউদ্দিন মোল্লাকে সভাপতি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলে তিনি কোনো পদপ্রত্যাশী ছিলেন না। নির্বাচিত সভাপতিকে বাদ দিয়ে অনির্বাচিত মেরাজউদ্দিন মোল্লাকে হঠাৎ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার ঘটনায় রাজশাহীতে দলের একটি বড় অংশের নেতা-কর্মীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রয়াত তিন ব্যক্তির নাম কমিটিতে : রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৭ নম্বর সহসভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে দলের প্রয়াত নেতা খ ম শফিকুল ইসলাম নফেলের। এ ছাড়া প্রয়াত মিজানুর রহমানকে ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রয়াত আবদুস সাত্তারকে শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দেওয়ার পাশাপাশি সংগঠনের বাইরে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।
কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হলেও তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক আড়াই বছর ধরে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক নিজের নির্বাচনী এলাকা আর ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সংগঠনের দিকে তাঁর কোনো খেয়াল নেই। দীর্ঘদিন ধরে কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নেই, এমনকি নেই কোনো দলীয় কার্যালয়ও।
তাজুল ইসলাস ফারুক ও ওমর ফারুক চৌধুরীর মধ্যে বিরোধ না থাকলেও ফারুকের সঙ্গে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সম্পর্ক বিরোধপূর্ণ।

No comments

Powered by Blogger.