সুফল পাবে কি সাধারন মানুষ by রাশেদ মেহেদী
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর কমানো হলেও সাধারণ মানুষ সুফল পাচ্ছেন না। সর্বশেষ পরিবহনের টায়ার-টিউবসহ যন্ত্রাংশের ওপর কর কমানোর ফলে সাধারণ মানুষ সুফল পাবে কি-না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজস্ব বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদসহ সাধারণ মানুষ। তারা বলেন, পরিবহন খাতও জিম্মি হয়ে আছে পরিবহন মালিক, আমদানিকারক, খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রেতা এবং শক্তিশালী চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের হাতে।
রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সমকালকে বলেন, এর আগেও জনগণের সুবিধার কথা ভেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর কমানো হয়েছে; কিন্তু সাধারণ মানুষ সুফল পায়নি। এর কারণ, যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে কর কমানো হয়, তার আমদানি কিংবা উৎপাদন এবং বিপণনের নিয়ন্ত্রণ হাতেগোনা কয়েকজনের হাতে থাকে। এ কারণে কর কমলেও তারা দাম কমান না। বাজার ব্যবস্থায় এ ধরনের কতিপয় ব্যক্তি-গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকলে সাধারণ মানুষ সুবিধা পাবে না। অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সমকালকে বলেন, সরকার জনস্বার্থে কোনো পদক্ষেপ নিলে তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ সহায়তা না করলে সরকারি উদ্যোগের সুফল জনগণের কাছে পেঁৗছবে না।
মে মাসে চলতি বছর প্রথম দফা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর পরিবহন মালিকরা বাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে জ্বালানির বাড়তি মূল্যসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিও বিবেচনায় আনার দাবি জানান। পরে ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে টায়ার-টিউবসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫
শতাংশ করা হলে পরিবহন মালিকরা তখন থেকেই এ কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। গত সেপ্টেম্বরে চলতি বছর দ্বিতীয় দফা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর পরিবহন মালিকদের বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি এবং বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের
ওপর থেকে বর্ধিত কর প্রত্যাহারের জন্য সরকারকে লিখিত প্রস্তাব দেয়। সে সময় এ দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, যন্ত্রাংশের কর কমানো হলে সে দফায় ভাড়া না বাড়ালেও চলবে। পরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় পরিবহন সংগঠনগুলোর লিখিত প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। শেষ পর্যন্ত এনবিআর টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সবার প্রত্যাশা, জ্বালানির মূল্য বাড়লেও পরিবহন ভাড়ায় এর প্রভাব পড়বে না; কিন্তু যন্ত্রাংশের কর হার কমলেও পরিবহন মালিকরা বিভিন্ন খাতে পরিচালন ব্যয় বেশি দেখিয়ে আবারও বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, আমরা এর আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জনগণের স্বার্থের কথা ভেবে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ওপর থেকে কর কমানো হলেও জনগণ সুফল পায়নি। দাম কমেনি। এর কারণ হলো, বিভিন্ন পণ্য এবং খাতে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন কতিপয় ব্যক্তি। হাতেগোনা চার-পাঁচ ব্যক্তি যখন কোনো পণ্য আমদানি কিংবা উৎপাদন এবং বিপণন নিয়ন্ত্রণ করেন, তখন তারা খুব শক্ত অবস্থানে থাকেন। কর কমালেও তারা দাম কমান না। নিয়ন্ত্রণ যেহেতু তাদের হাতে, তাই সবাইকে তাদের নির্ধারিত দামেই কিনতে হয়; কিন্তু বাজার যদি সত্যিকার অর্থে প্রতিযোগিতামূলক হতো তাহলে কর কমালে সাধারণ মানুষ সুফল পেতেন। তিনি বলেন, পাঁচ-দশজন মিলে সিন্ডিকেট তৈরি করতে পারেন খুব সহজেই; কিন্তু ১০০ জন মিলে এটা করা খুব কঠিন।
এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সমকালকে বলেন, সরকার জনস্বার্থে কোনো পদক্ষেপ নিলে তা বাস্তবায়নে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। না হলে সরকার কোনো ভালো পদক্ষেপ নিলেও তার সুফল সাধারণ মানুষ পাবেন না। আমাদের এখানে সহযোগিতার মনোভাবের অভাব আছে_ এটা দূর করতে হবে। এ ছাড়া সরকারকে যথাযথ তদারকও করতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে কর কমানো হলে তার সুফল জনগণ পাচ্ছে কি-না তা সরকারকে দেখতে হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষকেও কোনো কিছুর সুযোগ না নিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে হবে।
এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, যখন জ্বালানির মূল্য বাড়ে তখন এর একটা প্রভাব অনেক কিছুর ওপর পড়ে; কিন্তু কর কমালে দাম কমবে_ এটা এক কথায় বলা যায় না। কারণ কর কমল; কিন্তু পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে পারে, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হলে টাকায় জিনিসপত্রের দাম বেশি পড়তে পারে। এ কারণে এক বাক্যে বলার সুযোগ নেই, কর কমলেই দাম কমবে।
'কর কমার কথা সাধারণ মানুষ জানেন না, বাড়ার কথা জানেন' : মুশফিক আহমেদ সজল পেশায় ব্যাংকার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো তখন সরকার বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে, অর্থমন্ত্রী নিজে সাক্ষাৎকার দিয়ে ফলাও করে প্রচার করলেন। অথচ টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের দাম কমানো হয়েছে, সেটি অর্থমন্ত্রী বলেননি। সব প্রচারমাধ্যমেও আসেনি। সরকারের এ অবস্থানই প্রমাণ করে দাম বাড়ানো এবং কর কমানো দুটিই করা হয় বড় বড় ব্যবসায়ীর স্বার্থে, জনস্বার্থে নয়। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র পার্থ মনে করেন, কোনো কিছুর কর কমলেও ব্যবসায়ীরা তার সুযোগ নেন কর কম দিয়ে এবং দাম না কমিয়ে। আবার বাড়লে রাতারাতি দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করেন। দু'ক্ষেত্রেই লাভের হিসাবটা তাদেরই থাকে। কারণ সরকারও চালান বড় বড় ব্যবসায়ীর পৃষ্ঠপোষকরাই। মহাখালীতে বাসের অপেক্ষায় থাকা স্কুলশিক্ষিকা রেহনুমা আক্তার বলেন, এটা একটা অসহ্য যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে। দু'মাস পরপর বাস ভাড়ার এ নজির মনে হয় দুনিয়ার আর কোনো দেশে নেই। একটা জিনিস বুঝি না, দু'মাস পরপর ভাড়া বাড়ালে মানুষ বিরক্ত হবে, সরকারের প্রতি বিরূপ হবে, এটা কি সরকারের কেউ বোঝেন না? পোশাক শ্রমিক সুরাইয়া বেগম বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়ে ১০ বছরে একবার আর জিনিসের দাম, বাসের ভাড়া বাড়ে মাসে মাসে_ এটা কেমন বিচার?
সরকার নির্ধারিত ভাড়ার হার পরিবহন মালিকরা কখনও মানেন না : জ্বালানির দাম বাড়ানো হলেই পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যায় রাতারাতি। এক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্তেরও অপেক্ষা করেন না বাস মালিক-শ্রমিকরা। এবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে চলাচলরত সিএনজিচালিত বাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত তিনদিন ধরে পাঁচ থেকে দশ টাকা বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস, কাউন্টার সার্ভিস প্রভৃতি নামে আদায় করা হয় বাড়তি ভাড়া। বর্তমানে সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া সাত টাকা হলেও রাজধানীতে চলাচল করা কনক পরিবহনে সর্বনিম্ন ভাড়া নেওয়া হয় ১২ টাকা। ঢাকা পরিবহন, আজমেরী পরিবহন, বেলাল পরিবহন, তরঙ্গ প্লাসসহ কোনো কাউন্টার সার্ভিসের বাসেই ১৫ টাকার নিচে ভাড়া নেই।
মে মাসে চলতি বছর প্রথম দফা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর পরিবহন মালিকরা বাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে জ্বালানির বাড়তি মূল্যসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিও বিবেচনায় আনার দাবি জানান। পরে ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে টায়ার-টিউবসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫
শতাংশ করা হলে পরিবহন মালিকরা তখন থেকেই এ কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। গত সেপ্টেম্বরে চলতি বছর দ্বিতীয় দফা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর পরিবহন মালিকদের বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি এবং বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের
ওপর থেকে বর্ধিত কর প্রত্যাহারের জন্য সরকারকে লিখিত প্রস্তাব দেয়। সে সময় এ দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, যন্ত্রাংশের কর কমানো হলে সে দফায় ভাড়া না বাড়ালেও চলবে। পরে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় পরিবহন সংগঠনগুলোর লিখিত প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। শেষ পর্যন্ত এনবিআর টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সবার প্রত্যাশা, জ্বালানির মূল্য বাড়লেও পরিবহন ভাড়ায় এর প্রভাব পড়বে না; কিন্তু যন্ত্রাংশের কর হার কমলেও পরিবহন মালিকরা বিভিন্ন খাতে পরিচালন ব্যয় বেশি দেখিয়ে আবারও বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, আমরা এর আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জনগণের স্বার্থের কথা ভেবে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের ওপর থেকে কর কমানো হলেও জনগণ সুফল পায়নি। দাম কমেনি। এর কারণ হলো, বিভিন্ন পণ্য এবং খাতে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন কতিপয় ব্যক্তি। হাতেগোনা চার-পাঁচ ব্যক্তি যখন কোনো পণ্য আমদানি কিংবা উৎপাদন এবং বিপণন নিয়ন্ত্রণ করেন, তখন তারা খুব শক্ত অবস্থানে থাকেন। কর কমালেও তারা দাম কমান না। নিয়ন্ত্রণ যেহেতু তাদের হাতে, তাই সবাইকে তাদের নির্ধারিত দামেই কিনতে হয়; কিন্তু বাজার যদি সত্যিকার অর্থে প্রতিযোগিতামূলক হতো তাহলে কর কমালে সাধারণ মানুষ সুফল পেতেন। তিনি বলেন, পাঁচ-দশজন মিলে সিন্ডিকেট তৈরি করতে পারেন খুব সহজেই; কিন্তু ১০০ জন মিলে এটা করা খুব কঠিন।
এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ সমকালকে বলেন, সরকার জনস্বার্থে কোনো পদক্ষেপ নিলে তা বাস্তবায়নে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। না হলে সরকার কোনো ভালো পদক্ষেপ নিলেও তার সুফল সাধারণ মানুষ পাবেন না। আমাদের এখানে সহযোগিতার মনোভাবের অভাব আছে_ এটা দূর করতে হবে। এ ছাড়া সরকারকে যথাযথ তদারকও করতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে কর কমানো হলে তার সুফল জনগণ পাচ্ছে কি-না তা সরকারকে দেখতে হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষকেও কোনো কিছুর সুযোগ না নিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে হবে।
এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, যখন জ্বালানির মূল্য বাড়ে তখন এর একটা প্রভাব অনেক কিছুর ওপর পড়ে; কিন্তু কর কমালে দাম কমবে_ এটা এক কথায় বলা যায় না। কারণ কর কমল; কিন্তু পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে পারে, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হলে টাকায় জিনিসপত্রের দাম বেশি পড়তে পারে। এ কারণে এক বাক্যে বলার সুযোগ নেই, কর কমলেই দাম কমবে।
'কর কমার কথা সাধারণ মানুষ জানেন না, বাড়ার কথা জানেন' : মুশফিক আহমেদ সজল পেশায় ব্যাংকার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো তখন সরকার বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে, অর্থমন্ত্রী নিজে সাক্ষাৎকার দিয়ে ফলাও করে প্রচার করলেন। অথচ টায়ার, টিউবসহ যন্ত্রাংশের দাম কমানো হয়েছে, সেটি অর্থমন্ত্রী বলেননি। সব প্রচারমাধ্যমেও আসেনি। সরকারের এ অবস্থানই প্রমাণ করে দাম বাড়ানো এবং কর কমানো দুটিই করা হয় বড় বড় ব্যবসায়ীর স্বার্থে, জনস্বার্থে নয়। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র পার্থ মনে করেন, কোনো কিছুর কর কমলেও ব্যবসায়ীরা তার সুযোগ নেন কর কম দিয়ে এবং দাম না কমিয়ে। আবার বাড়লে রাতারাতি দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করেন। দু'ক্ষেত্রেই লাভের হিসাবটা তাদেরই থাকে। কারণ সরকারও চালান বড় বড় ব্যবসায়ীর পৃষ্ঠপোষকরাই। মহাখালীতে বাসের অপেক্ষায় থাকা স্কুলশিক্ষিকা রেহনুমা আক্তার বলেন, এটা একটা অসহ্য যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে। দু'মাস পরপর বাস ভাড়ার এ নজির মনে হয় দুনিয়ার আর কোনো দেশে নেই। একটা জিনিস বুঝি না, দু'মাস পরপর ভাড়া বাড়ালে মানুষ বিরক্ত হবে, সরকারের প্রতি বিরূপ হবে, এটা কি সরকারের কেউ বোঝেন না? পোশাক শ্রমিক সুরাইয়া বেগম বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়ে ১০ বছরে একবার আর জিনিসের দাম, বাসের ভাড়া বাড়ে মাসে মাসে_ এটা কেমন বিচার?
সরকার নির্ধারিত ভাড়ার হার পরিবহন মালিকরা কখনও মানেন না : জ্বালানির দাম বাড়ানো হলেই পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যায় রাতারাতি। এক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্তেরও অপেক্ষা করেন না বাস মালিক-শ্রমিকরা। এবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে চলাচলরত সিএনজিচালিত বাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত তিনদিন ধরে পাঁচ থেকে দশ টাকা বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস, কাউন্টার সার্ভিস প্রভৃতি নামে আদায় করা হয় বাড়তি ভাড়া। বর্তমানে সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া সাত টাকা হলেও রাজধানীতে চলাচল করা কনক পরিবহনে সর্বনিম্ন ভাড়া নেওয়া হয় ১২ টাকা। ঢাকা পরিবহন, আজমেরী পরিবহন, বেলাল পরিবহন, তরঙ্গ প্লাসসহ কোনো কাউন্টার সার্ভিসের বাসেই ১৫ টাকার নিচে ভাড়া নেই।
No comments