সেলসম্যান থেকে প্রধানমন্ত্রী
ইতালির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বারলুসকোনি যুগের অবসান হলো। বারবার হঠকারী পদক্ষেপ গ্রহণ, একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ও যৌন কেলেংকারির দুর্নাম কাঁধে নিয়েও দেশটির ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইতালিতে সর্বাধিক তিন দফায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাদ নিয়েছেন বারলুসকোনি। বেনিত্তো মুসোলিনি ও জিওভানি্ন জিওলিত্তির পর তাঁর মেয়াদকালই সবচেয়ে দীর্ঘ ছিল।
প্রথম দফায় ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত, দ্বিতীয় দফায় ২০০১ থেকে ২০০৬ এবং গত শনিবার পদত্যাগের আগে ২০০৮ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন দেশটির অন্যতম শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও 'মিডিয়া মোগল' বারলুসকোনি। ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপ মতে চলতি বছর বিশ্বের ১১৮তম ধনী ব্যক্তি তিনি।
১৭ বছর ধরে ইতালির রাজনীতিতে ছড়ি ঘোরানো বারলুসকোনির বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২৩টি অভিযোগের তদন্ত চলছে, যার বেশির ভাগই দুর্নীতিসংক্রান্ত। এত কিছুর পরও গত চার দশকে ইতালির রাজনীতিতে বারলুসকোনির প্রভাব দিন দিন বেড়েছে বৈ কমেনি।
বারলুসকোনির জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, মিলানে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান বারলুসকোনির বাবা ছিলেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। ১৯৬১ সালে মিলান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন বারলুসকোনি। বয়স যখন মাত্র ২০ পেরিয়েছে, সে সময় বাবার সহযোগিতায় ব্যাংকঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন বারলুসকোনি। এর পর একে একে তিনটি টেলিভিশন চ্যানেল, বিশ্বখ্যাত ফুটবল দল এসি মিলান ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাসহ কয়েকটি পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের মালিক হন তিনি।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বারলুসকোনি। সে সময় ইতালির রাজনীতির ধরন বদলানোর পাশাপাশি তাঁর নৈতিক অবনতিও হচ্ছিল সমান তালে। কমিউনিজমবিরোধী মনোভাব জোরদার হতে শুরু করে। রাজনীতির এই পট পরিবর্তন বারলুসকোনিকে রাজনীতিতে শক্ত ভিতে দাঁড় করাতে সাহায্য করে।
জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়ে বারলুসকোনি নতুন একটি রাজনৈতিক দলের নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু করেন। মধ্য-ডানপন্থী নেটওয়ার্কটির নাম ছিল 'ফোরজা ইতালিয়া', ইংরেজিতে_গো ইতালি! আনুষ্ঠানিকভাবে ফোরজা ইতালিয়ার গোড়াপত্তনের তিন মাস পরেই ১৯৯৪ সালের মার্চের পার্লামেন্ট নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারা। বারলুসকোনি প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ৯ মাসের মাথায় তাঁর জোট সরকারের পতন ঘটে। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মধ্য-বামপন্থী প্রার্থী রোমানো প্রোদির কাছে পরাজিত হন বারলুসকোনি। পরে ২০০১ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মধ্য-বামপন্থী প্রার্থী ফ্রাঞ্চেসকো রুতেলি্লকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসেন মধ্য-ডানপন্থী বারলুসকোনি। ২০০৬ সালের নির্বাচনে রোমানো প্রোদির কাছে খুব অল্প ব্যবধানে হেরে যান তিনি। তবে দুই বছরের মাথায় প্রোদি সরকারের পতন হলে ২০০৮ সালের ৮ মে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন বারলুসকোনি।
এ বছরই ফোরজা ইতালিয়ার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে বারলুসকোনির রাজনৈতিক দল দি পিপলস অব ফ্রিডম (পিডিএল) আত্মপ্রকাশ করে।
বারলুসকোনির এই বর্ণাঢ্য জীবন প্রসঙ্গে অধ্যাপক জিওভানি্ন সারতোরি বলেন, 'তিনি অসাধারণ একজন চতুর ও ধনাঢ্য ব্যক্তি।' সেলসম্যান হিসেবে জীবন শুরু করা বারলুসকোনি রাজনৈতিক জীবনেও নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে সফল হয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। সারতোরি বলেন, 'তাঁর শুরু শূন্য থেকে। রাজনীতিতে কোনো সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা তাঁর নেই। অথচ সেই সমস্যাকে তাঁর নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারেন তিনি। যে ঘটনা তাঁর কাজে লাগবে না তাকে কিভাবে নিষ্ক্রিয় করা যায়, তা তিনি জানেন। এমনকি, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটকে তিনি এমনভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছেন, যাতে মনে হয় তিনি এ জন্য অনেক কিছু করেছেন এবং এর জন্য তিনি দায়ী নন।' সূত্র : বিবিসি, উইকিপিডিয়া।
১৭ বছর ধরে ইতালির রাজনীতিতে ছড়ি ঘোরানো বারলুসকোনির বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২৩টি অভিযোগের তদন্ত চলছে, যার বেশির ভাগই দুর্নীতিসংক্রান্ত। এত কিছুর পরও গত চার দশকে ইতালির রাজনীতিতে বারলুসকোনির প্রভাব দিন দিন বেড়েছে বৈ কমেনি।
বারলুসকোনির জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, মিলানে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান বারলুসকোনির বাবা ছিলেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। ১৯৬১ সালে মিলান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন বারলুসকোনি। বয়স যখন মাত্র ২০ পেরিয়েছে, সে সময় বাবার সহযোগিতায় ব্যাংকঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন বারলুসকোনি। এর পর একে একে তিনটি টেলিভিশন চ্যানেল, বিশ্বখ্যাত ফুটবল দল এসি মিলান ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাসহ কয়েকটি পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের মালিক হন তিনি।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বারলুসকোনি। সে সময় ইতালির রাজনীতির ধরন বদলানোর পাশাপাশি তাঁর নৈতিক অবনতিও হচ্ছিল সমান তালে। কমিউনিজমবিরোধী মনোভাব জোরদার হতে শুরু করে। রাজনীতির এই পট পরিবর্তন বারলুসকোনিকে রাজনীতিতে শক্ত ভিতে দাঁড় করাতে সাহায্য করে।
জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়ে বারলুসকোনি নতুন একটি রাজনৈতিক দলের নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু করেন। মধ্য-ডানপন্থী নেটওয়ার্কটির নাম ছিল 'ফোরজা ইতালিয়া', ইংরেজিতে_গো ইতালি! আনুষ্ঠানিকভাবে ফোরজা ইতালিয়ার গোড়াপত্তনের তিন মাস পরেই ১৯৯৪ সালের মার্চের পার্লামেন্ট নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারা। বারলুসকোনি প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ৯ মাসের মাথায় তাঁর জোট সরকারের পতন ঘটে। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে মধ্য-বামপন্থী প্রার্থী রোমানো প্রোদির কাছে পরাজিত হন বারলুসকোনি। পরে ২০০১ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মধ্য-বামপন্থী প্রার্থী ফ্রাঞ্চেসকো রুতেলি্লকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসেন মধ্য-ডানপন্থী বারলুসকোনি। ২০০৬ সালের নির্বাচনে রোমানো প্রোদির কাছে খুব অল্প ব্যবধানে হেরে যান তিনি। তবে দুই বছরের মাথায় প্রোদি সরকারের পতন হলে ২০০৮ সালের ৮ মে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন বারলুসকোনি।
এ বছরই ফোরজা ইতালিয়ার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে বারলুসকোনির রাজনৈতিক দল দি পিপলস অব ফ্রিডম (পিডিএল) আত্মপ্রকাশ করে।
বারলুসকোনির এই বর্ণাঢ্য জীবন প্রসঙ্গে অধ্যাপক জিওভানি্ন সারতোরি বলেন, 'তিনি অসাধারণ একজন চতুর ও ধনাঢ্য ব্যক্তি।' সেলসম্যান হিসেবে জীবন শুরু করা বারলুসকোনি রাজনৈতিক জীবনেও নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে সফল হয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। সারতোরি বলেন, 'তাঁর শুরু শূন্য থেকে। রাজনীতিতে কোনো সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা তাঁর নেই। অথচ সেই সমস্যাকে তাঁর নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারেন তিনি। যে ঘটনা তাঁর কাজে লাগবে না তাকে কিভাবে নিষ্ক্রিয় করা যায়, তা তিনি জানেন। এমনকি, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটকে তিনি এমনভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছেন, যাতে মনে হয় তিনি এ জন্য অনেক কিছু করেছেন এবং এর জন্য তিনি দায়ী নন।' সূত্র : বিবিসি, উইকিপিডিয়া।
No comments