নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হত্যাকাণ্ড-মন্ত্রীর ভাই, এপিএসসহ ১৪ জনের নামে মামলা by হায়দার আলী ও সুমন বর্মণ
নরসিংদী পৌরসভার মেয়র লোকমান হোসেন হত্যার ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজুর ছোট ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টায় মামলাটি হয়। দুই শতাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে মেয়রের ছোট ভাই মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। থানায় মামলা দায়েরের সময় উপস্থিত ছিলেন লোকমানের ছোট ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এস এম কাইয়ুম প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, লোকমান হোসেন পর পর দুইবার বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দুইবার স্বর্ণপদক পান। তাঁর রাজনৈতিক উত্থান দেখে কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় তাঁরা লোকমানকে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দেন।
আরজিতে বাদী বলেন, 'আসন্ন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সামনে রেখে আমার ভাই লোকমান হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। পক্ষান্তরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু নিজে ওই পদে প্রার্থীর জন্য প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি জনসমর্থন না পেয়ে এবং প্রতিপক্ষের জনসমর্থনে ঈর্ষান্বিত হয়ে লোকমানকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।' বাদী বলেন, 'এমনকি আবদুল মতিন সরকার ও তারেক আহমেদ বিগত পৌরসভা নির্বাচনে আমার ভাইয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এরপর তাঁরাও লোকমানকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।' বাদী আরো বলেন, 'লোকমান ভাই আমার সঙ্গে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও এসব হুমকির কথা বলেছেন।'
এজাহারে বলা হয়, 'উপরোক্ত শত্রুতার জের ধরেই মন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মতিন সরকার, মোবারক হোসেন মোবা, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, নরসিংদী সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন খান ওরফে মঈন, হিরন মিয়া, নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও বিএনপি নেতা তারেক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মাসুদুর রহমান মুরাদ ও কবির সরকার লোকমান হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাঁদের নির্দেশ পেয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় আশরাফ হোসেন সরকার ওরফে আশরাফুল সরকার, মিঞা মো. মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুনসহ অজ্ঞাতপরিচয় সাত থেকে আটজন।'
ঘটনার বিবরণ দিয়ে এজাহারে বলা হয়, লোকমান হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ওই সময় আনুমানিক রাত ৮টার দিকে আশরাফ হোসেন সরকার ওরফে আশরাফুল সরকার, মিঞা মো. মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুনসহ অজ্ঞাতপরিচয় সাত থেকে আটজন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসে। উপস্থিত লোকজনের সামনে আশরাফুল সরকার আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে লোকমান হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। লোকমান বুকের উপরিভাগে গুলিবিদ্ধ হন। মিয়া মো. মঞ্জুর লোকমানের পেটের বাঁ পাশের নাভির নিচে গুলি ছোড়ে। এ ছাড়া আমির হোসেন আমুর ছোড়া গুলি তাঁর বাঁ হাতে বিদ্ধ হয়। মামুনের ছোড়া গুলি পেটের বাঁ পাশে বিদ্ধ হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির গুলি নাভির নিচে লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়া পড়েন। এ সময় উপস্থিত ও আশপাশের লোকজন সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করলে ঘাতকরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিক মেয়র লোকমান হোসেনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বাদী বলেন, 'সংবাদ পেয়ে আমি লোকজনসহ দ্রুত হাসপাতালে যাই। আমার ভাইকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যখন নিচ্ছিলাম, তখন তিনি আমার কাছে ঘটনার বিবরণ দেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১১টায় তাঁর মৃত্যু হয়।' বৈদ্যুতিক আলোতে আশপাশের লোকজন এবং দলীয় কার্যালয়ের লোকজন ঘটনা দেখে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস এস এম কাইয়ুম সরকার বলেন, 'অধিক জনপ্রিয়তার কারণেই আজ আমাদের নেতা লোকমান ভাইকে খুন হতে হলো।' তাঁর অভিযোগ, সাংগঠনিক বিরোধের জের ধরেই ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও তাঁর ছোট ভাই বাচ্চুসহ অন্যরা পরিকল্পিতভাবে লোকমানকে হত্যা করেছে।
এজাহারে মন্ত্রীর নাম না থাকা প্রসঙ্গে কাইয়ুম বলেন, 'তাঁর ছোট ভাইয়ের নামে মামলা করা হয়েছে। কান টানলেই মাথা আসবে। তাঁর মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখলেই প্রকৃত আসামিরা বেরিয়ে আসবে।' জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম বলেন, 'জনতার লোকমানকে যারা খুন করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই। প্রধানমন্ত্রী হত্যাকারীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন পুলিশ তার কাজের মধ্যে নেত্রীর কথার প্রমাণ রাখবে_এটাই আমার আশা।'
মামলায় মন্ত্রীর ভাইকে অভিযুক্ত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল রাত পৌনে ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ব্যাপারে কথা বলতে দলের আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধ রয়েছে। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে গতকাল রাত ১৩টায় মন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার দিন লোকমান হত্যার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা এ ঘটনার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দায়ী করে বিক্ষোভ করে। দলীয় কোন্দলের কারণেই লোকমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা দাবি করে। তারা নরসিংদী সার্কিট হাউস ও মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ছাত্তারের বাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ করে।
পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক শামীম নেওয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে, এ প্রশ্ন নরসিংদীবাসীর কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। এখন জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় বিচারের ব্যবস্থা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।' মাহমুদুল হক বলেন, 'নির্মম হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ফাঁসি হলেই আমাদের পরিবার এবং নরসিংদীবাসী কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পাবে। ভাইয়ের শোকে বৃদ্ধ মা এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।'
আরজিতে বাদী বলেন, 'আসন্ন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সামনে রেখে আমার ভাই লোকমান হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। পক্ষান্তরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু নিজে ওই পদে প্রার্থীর জন্য প্রচারকাজ চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি জনসমর্থন না পেয়ে এবং প্রতিপক্ষের জনসমর্থনে ঈর্ষান্বিত হয়ে লোকমানকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।' বাদী বলেন, 'এমনকি আবদুল মতিন সরকার ও তারেক আহমেদ বিগত পৌরসভা নির্বাচনে আমার ভাইয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এরপর তাঁরাও লোকমানকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।' বাদী আরো বলেন, 'লোকমান ভাই আমার সঙ্গে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও এসব হুমকির কথা বলেছেন।'
এজাহারে বলা হয়, 'উপরোক্ত শত্রুতার জের ধরেই মন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মতিন সরকার, মোবারক হোসেন মোবা, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, নরসিংদী সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন খান ওরফে মঈন, হিরন মিয়া, নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও বিএনপি নেতা তারেক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মাসুদুর রহমান মুরাদ ও কবির সরকার লোকমান হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাঁদের নির্দেশ পেয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় আশরাফ হোসেন সরকার ওরফে আশরাফুল সরকার, মিঞা মো. মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুনসহ অজ্ঞাতপরিচয় সাত থেকে আটজন।'
ঘটনার বিবরণ দিয়ে এজাহারে বলা হয়, লোকমান হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা করছিলেন। ওই সময় আনুমানিক রাত ৮টার দিকে আশরাফ হোসেন সরকার ওরফে আশরাফুল সরকার, মিঞা মো. মঞ্জুর, আমির হোসেন ওরফে আমু, মামুনসহ অজ্ঞাতপরিচয় সাত থেকে আটজন সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসে। উপস্থিত লোকজনের সামনে আশরাফুল সরকার আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে লোকমান হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। লোকমান বুকের উপরিভাগে গুলিবিদ্ধ হন। মিয়া মো. মঞ্জুর লোকমানের পেটের বাঁ পাশের নাভির নিচে গুলি ছোড়ে। এ ছাড়া আমির হোসেন আমুর ছোড়া গুলি তাঁর বাঁ হাতে বিদ্ধ হয়। মামুনের ছোড়া গুলি পেটের বাঁ পাশে বিদ্ধ হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির গুলি নাভির নিচে লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়া পড়েন। এ সময় উপস্থিত ও আশপাশের লোকজন সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করলে ঘাতকরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। উপস্থিত লোকজন তাৎক্ষণিক মেয়র লোকমান হোসেনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বাদী বলেন, 'সংবাদ পেয়ে আমি লোকজনসহ দ্রুত হাসপাতালে যাই। আমার ভাইকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যখন নিচ্ছিলাম, তখন তিনি আমার কাছে ঘটনার বিবরণ দেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১১টায় তাঁর মৃত্যু হয়।' বৈদ্যুতিক আলোতে আশপাশের লোকজন এবং দলীয় কার্যালয়ের লোকজন ঘটনা দেখে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস এস এম কাইয়ুম সরকার বলেন, 'অধিক জনপ্রিয়তার কারণেই আজ আমাদের নেতা লোকমান ভাইকে খুন হতে হলো।' তাঁর অভিযোগ, সাংগঠনিক বিরোধের জের ধরেই ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ও তাঁর ছোট ভাই বাচ্চুসহ অন্যরা পরিকল্পিতভাবে লোকমানকে হত্যা করেছে।
এজাহারে মন্ত্রীর নাম না থাকা প্রসঙ্গে কাইয়ুম বলেন, 'তাঁর ছোট ভাইয়ের নামে মামলা করা হয়েছে। কান টানলেই মাথা আসবে। তাঁর মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখলেই প্রকৃত আসামিরা বেরিয়ে আসবে।' জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম বলেন, 'জনতার লোকমানকে যারা খুন করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই। প্রধানমন্ত্রী হত্যাকারীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন পুলিশ তার কাজের মধ্যে নেত্রীর কথার প্রমাণ রাখবে_এটাই আমার আশা।'
মামলায় মন্ত্রীর ভাইকে অভিযুক্ত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গতকাল রাত পৌনে ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ব্যাপারে কথা বলতে দলের আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধ রয়েছে। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে গতকাল রাত ১৩টায় মন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার দিন লোকমান হত্যার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা এ ঘটনার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দায়ী করে বিক্ষোভ করে। দলীয় কোন্দলের কারণেই লোকমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা দাবি করে। তারা নরসিংদী সার্কিট হাউস ও মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজি ছাত্তারের বাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ করে।
পৌর মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক শামীম নেওয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে, এ প্রশ্ন নরসিংদীবাসীর কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। এখন জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় বিচারের ব্যবস্থা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।' মাহমুদুল হক বলেন, 'নির্মম হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ফাঁসি হলেই আমাদের পরিবার এবং নরসিংদীবাসী কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পাবে। ভাইয়ের শোকে বৃদ্ধ মা এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।'
No comments