চট্টগ্রামের ছয় বিদ্যুৎকেন্দ্র-ক্ষমতা ৭৫২ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে ১০৫ by রাশেদুল তুষার,

ট্টগ্রামে গ্যাসনির্ভর সরকারি-বেসরকারি ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৭৫২ মেগাওয়াট। অথচ তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার এ কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া গেছে ১০৫ মেগাওয়াট, যা মোট উৎপাদন ক্ষমতার ১৪ শতাংশ। এ সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ১৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চাহিদার বিপরীতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) থেকে পাওয়া গেছে মাত্র ৩৭ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ শুধু গ্যাসের অভাবেই চট্টগ্রামের গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৬৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বঞ্চিত হচ্ছে জাতীয় গ্রিড, যা আবার দেশের গ্যাসনির্ভর মোট উৎপাদন ক্ষমতার সাড়ে ১২ শতাংশ।


প্রসঙ্গত, দেশের গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট।গ্যাস সংকটের কারণে স্টিল, রি-রোলিং মিল, সিমেন্ট কারখানাসহ ভারী শিল্পকারখানায় স্ট্যাগারিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ নগরবাসীকে পড়তে হচ্ছে লোডশেডিংয়ের বিড়ম্বনায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণও বেড়েছে। গতকাল রাতে চট্টগ্রামে প্রায় ২২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস সংকটের কারণে ৪২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রাউজান তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটই বন্ধ রয়েছে। একই কারণে ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার শিকলবাহা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গ্যাসের চাপ কম থাকায় প্রায় এক মাস বন্ধ রাখার পর গত সপ্তাহে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার শিকলবাহা পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে। এ কেন্দ্র থেকে মাত্র ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে কেন্দ্রটির ব্যবস্থাপক ভূবন বিজয় দত্ত গতকাল কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন।
এর আগে চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) চালুর কারণে চট্টগ্রামের সব বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল কেজিডিসিএলের পক্ষ থেকে। শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ও মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কোনোমতে এই নির্দেশনা এড়ানো গেলেও যেকোনো মুহূর্তে আবারও গ্যাস বন্ধের আশঙ্কা করছে পিডিবি কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে রাউজান বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী বিমল কুমার হালদার গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গ্যাসের অপ্রতুলতার কারণে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার জন্য বলেছিল। এ ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হয়। কিন্তু এরপর থেকে গ্যাসের চাপ আরো কমতে থাকে। ফলে আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করেছি। তবে এভাবে বারবার বিকল্প পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ইউনিটগুলো চালাতে গেলে ভারী যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।'
শিকলবাহা ৫৫ মেগাওয়াট রেন্টালের মালিকানা প্রতিষ্ঠান এনার্জিস পাওয়ার করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাবেদ হোসেন গ্যাস অপ্রতুলতার কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমরা অনেক দিন ধরেই গ্যাস নিয়ে চাপে আছি। পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় কখনই পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছি না।'

No comments

Powered by Blogger.