বিসিবি সভাপতির ‘সালতামামি’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটা ধারণা প্রায় প্রতিষ্ঠিতই হয়ে যাচ্ছিল—আ হ ম মোস্তফা কামালের সংবাদ সম্মেলন মানেই সাংবাদিক বনাম বোর্ড সভাপতির কথার যুদ্ধ। সাংবাদিকদের কোনো না কোনো প্রশ্নের হয়তো একটা বক্র উত্তর দিয়ে বসবেন, সংবাদ সম্মেলনের পরিবেশ যাতে তিক্ত ও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে।
এই প্রথম সেটা হলো না। বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল সম্ভবত গত এক বছরের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা দেখালেন কাল। বিসিবি সভাপতির পদে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কিত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন যে হয়নি তা নয়, কিন্তু মোস্তফা কামাল যেন বদলে যাওয়া এক ব্যাটসম্যান! ছক্কা হাঁকাতে কোনো বেপরোয়া শট নয়, কোনো ক্যাচও তাই উঠল না শেরাটন হোটেলের বলরুমে।
মোস্তফা কামাল যখন বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব নেন, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছিল। কিন্তু এই এক বছরে সেসব প্রতিশ্রুতির কটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন তিনি? সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা করারই দরকার হয়নি, কারণ, বোর্ড সভাপতি আগেই বলে দিয়েছেন, ‘আমি এখানে কোনো বিবৃতি দিতে আসিনি। আমার সাফল্য-ব্যর্থতা আপনারাই ভালো মূল্যায়ন করবেন। তবে ক্রিকেট দেশের সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা। এক বছর আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা সেসব পূরণ করার দিকেই এগোচ্ছি।’
মোস্তফা কামাল যেসব প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ করতে পারেননি, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের মধ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়া। দায়িত্ব নেওয়ার পরপর খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন, এটা করবেনই। অথচ এক বছরেও পূরণ হয়নি সেই প্রতিশ্রুতি! কাল এই ব্যর্থতা স্বীকার করেই আরও একবার আশার বাণী শোনালেন সভাপতি, ‘গঠনতন্ত্র তৈরি হয়ে গেছে। আশা করি আগামী ২৪ অক্টোবর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় এটা অনুমোদিত হবে। এরপর সরকারের অনুমোদনেরও দরকার আছে। সেটা হয়ে গেলেই আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে। এটার জন্য আমরা আলাদা বাজেটও বরাদ্দ রেখেছি।’
ক্রিকেটের উন্নয়নে এখন যেসব কাজ চলছে, তার সবই চলবে। সঙ্গে নতুন কিছু পরিকল্পনার কথাও জানালেন মোস্তফা কামাল। স্কুলছাত্রদের খেলায় উৎসাহ দিতে এ বছরের মধ্যেই দেশের ১৫ থেকে ২০টি জেলা স্কুল মাঠে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বসানো হবে। এটিতে ভালো ফল হলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব স্কুলেই বসানো হবে টার্ফ। বোর্ডের উদ্যোগে ঢাকার ক্লাবগুলোর অনুশীলন-সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মোস্তফা কামাল মহিলা ক্রিকেটারদেরও দিলেন সুখবর, ‘একটা স্টেডিয়াম আমরা শুধু মেয়েদের খেলার জন্য দিয়ে দেব। এ বছরের মধ্যেই মেয়েদের জন্য বিদেশি কোচও আনা হবে।’ এ ছাড়া ক্রিকেট বোর্ডের অর্থায়নে কক্সবাজারে বিসিবির নিজস্ব স্টেডিয়াম তৈরির কাজও আগামী এক বছরের মধ্যে শুরু হবে বলে আশাবাদী বোর্ড সভাপতি। নতুন পরিকল্পনার মধ্যে আরও আছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মতো ‘এ’ দল এবং একাডেমি দলের ক্রিকেটারদের মাসিক বেতনের আওতায় আনা ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুসরণে জাতীয় দল, ‘এ’ দল এবং একাডেমি দলের মধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা।
বিসিবির সভাপতি হিসেবে গত এক বছরে মোস্তফা কামাল সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন সম্ভবত দল গঠনে হস্তক্ষেপের কারণে। এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও তিনি বলেছেন, ‘কোনো নির্বাচকই বলতে পারবেন না যে আমি এই খেলোয়াড়টাকে বাদ দিয়ে ওই খেলোয়াড়টাকে নিতে বলেছি। তবে হ্যাঁ, যে দলটা ঘোষিত হয়, সেটাতে যেহেতু আমার স্বাক্ষর থাকে, দলটা কী রকম হলো, কারা দলে এল সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। কখনো কোনো ব্যাপারে আমার বক্তব্য থাকলে সেটা আমি নির্বাচকদের জানাই, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করি। সেদিক দিয়ে পরোক্ষভাবে হয়তো একটা ভূমিকা থাকে আমার। তবে দল নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কখনোই করি না।’
ওয়ার্কিং কমিটি অকর্মণ্য হয়ে পড়া এবং অলিখিতভাবে টেকনিক্যাল কমিটিরই সর্বময় ক্ষমতার আধার হয়ে ওঠা, বিশ্বকাপের স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম—সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠেছে এসব নিয়েও। বোর্ড সভাপতি হিসেবে বিতর্কিত প্রশ্নের যে রকম উত্তর দেওয়া উচিত, তা-ই দিলেন মোস্তফা কামাল। সংবাদ সম্মেলন যেহেতু সমস্যা সমাধানের জায়গা নয়, উত্তপ্ত প্রশ্নের জবাবে পাল্টা উত্তাপ ছড়িয়ে খামাখা নতুন সমস্যার জন্ম দেওয়া কেন?
এটাও হয়তো মোস্তফা কামালের একটা সাফল্য যে, হঠাৎ আসা বাউন্সারে হুক-পুলের চেষ্টা না করে সংযমী থাকলেন। নইলে বর্ষপূর্তির সংবাদ সম্মেলন থেকে ক্যাচ অবশ্যই উঠত। তবে শেরাটনের বলরুমে নয়, ক্যাচটা হয়তো উড়ে যেত বিসিবি অফিসের করিডরে।
এই প্রথম সেটা হলো না। বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল সম্ভবত গত এক বছরের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা দেখালেন কাল। বিসিবি সভাপতির পদে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কিত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন যে হয়নি তা নয়, কিন্তু মোস্তফা কামাল যেন বদলে যাওয়া এক ব্যাটসম্যান! ছক্কা হাঁকাতে কোনো বেপরোয়া শট নয়, কোনো ক্যাচও তাই উঠল না শেরাটন হোটেলের বলরুমে।
মোস্তফা কামাল যখন বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব নেন, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছিল। কিন্তু এই এক বছরে সেসব প্রতিশ্রুতির কটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন তিনি? সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা করারই দরকার হয়নি, কারণ, বোর্ড সভাপতি আগেই বলে দিয়েছেন, ‘আমি এখানে কোনো বিবৃতি দিতে আসিনি। আমার সাফল্য-ব্যর্থতা আপনারাই ভালো মূল্যায়ন করবেন। তবে ক্রিকেট দেশের সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা। এক বছর আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমরা সেসব পূরণ করার দিকেই এগোচ্ছি।’
মোস্তফা কামাল যেসব প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ করতে পারেননি, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের মধ্য দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়া। দায়িত্ব নেওয়ার পরপর খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন, এটা করবেনই। অথচ এক বছরেও পূরণ হয়নি সেই প্রতিশ্রুতি! কাল এই ব্যর্থতা স্বীকার করেই আরও একবার আশার বাণী শোনালেন সভাপতি, ‘গঠনতন্ত্র তৈরি হয়ে গেছে। আশা করি আগামী ২৪ অক্টোবর বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় এটা অনুমোদিত হবে। এরপর সরকারের অনুমোদনেরও দরকার আছে। সেটা হয়ে গেলেই আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে। এটার জন্য আমরা আলাদা বাজেটও বরাদ্দ রেখেছি।’
ক্রিকেটের উন্নয়নে এখন যেসব কাজ চলছে, তার সবই চলবে। সঙ্গে নতুন কিছু পরিকল্পনার কথাও জানালেন মোস্তফা কামাল। স্কুলছাত্রদের খেলায় উৎসাহ দিতে এ বছরের মধ্যেই দেশের ১৫ থেকে ২০টি জেলা স্কুল মাঠে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বসানো হবে। এটিতে ভালো ফল হলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব স্কুলেই বসানো হবে টার্ফ। বোর্ডের উদ্যোগে ঢাকার ক্লাবগুলোর অনুশীলন-সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মোস্তফা কামাল মহিলা ক্রিকেটারদেরও দিলেন সুখবর, ‘একটা স্টেডিয়াম আমরা শুধু মেয়েদের খেলার জন্য দিয়ে দেব। এ বছরের মধ্যেই মেয়েদের জন্য বিদেশি কোচও আনা হবে।’ এ ছাড়া ক্রিকেট বোর্ডের অর্থায়নে কক্সবাজারে বিসিবির নিজস্ব স্টেডিয়াম তৈরির কাজও আগামী এক বছরের মধ্যে শুরু হবে বলে আশাবাদী বোর্ড সভাপতি। নতুন পরিকল্পনার মধ্যে আরও আছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মতো ‘এ’ দল এবং একাডেমি দলের ক্রিকেটারদের মাসিক বেতনের আওতায় আনা ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুসরণে জাতীয় দল, ‘এ’ দল এবং একাডেমি দলের মধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা।
বিসিবির সভাপতি হিসেবে গত এক বছরে মোস্তফা কামাল সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন সম্ভবত দল গঠনে হস্তক্ষেপের কারণে। এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও তিনি বলেছেন, ‘কোনো নির্বাচকই বলতে পারবেন না যে আমি এই খেলোয়াড়টাকে বাদ দিয়ে ওই খেলোয়াড়টাকে নিতে বলেছি। তবে হ্যাঁ, যে দলটা ঘোষিত হয়, সেটাতে যেহেতু আমার স্বাক্ষর থাকে, দলটা কী রকম হলো, কারা দলে এল সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। কখনো কোনো ব্যাপারে আমার বক্তব্য থাকলে সেটা আমি নির্বাচকদের জানাই, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করি। সেদিক দিয়ে পরোক্ষভাবে হয়তো একটা ভূমিকা থাকে আমার। তবে দল নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কখনোই করি না।’
ওয়ার্কিং কমিটি অকর্মণ্য হয়ে পড়া এবং অলিখিতভাবে টেকনিক্যাল কমিটিরই সর্বময় ক্ষমতার আধার হয়ে ওঠা, বিশ্বকাপের স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম—সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠেছে এসব নিয়েও। বোর্ড সভাপতি হিসেবে বিতর্কিত প্রশ্নের যে রকম উত্তর দেওয়া উচিত, তা-ই দিলেন মোস্তফা কামাল। সংবাদ সম্মেলন যেহেতু সমস্যা সমাধানের জায়গা নয়, উত্তপ্ত প্রশ্নের জবাবে পাল্টা উত্তাপ ছড়িয়ে খামাখা নতুন সমস্যার জন্ম দেওয়া কেন?
এটাও হয়তো মোস্তফা কামালের একটা সাফল্য যে, হঠাৎ আসা বাউন্সারে হুক-পুলের চেষ্টা না করে সংযমী থাকলেন। নইলে বর্ষপূর্তির সংবাদ সম্মেলন থেকে ক্যাচ অবশ্যই উঠত। তবে শেরাটনের বলরুমে নয়, ক্যাচটা হয়তো উড়ে যেত বিসিবি অফিসের করিডরে।
No comments