বীর যোদ্ধার বীরগাথা -স্মরণ by কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাবুল ঢাকা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে হত্যাযজ্ঞের পর ছাব্বিশে মার্চ শহর জুড়ে লাশ আর লাশ। ২৭ মার্চ ঢাকা শহরে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কারফিউ তুলে নেওয়া হয়। প্রাণভয়ে লাখ লাখ লোক শহর ছেড়ে যায়। বাবুলরা চার ভাই-চার বোন। তারাও বাসে সপরিবারে চলে যায় গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার বানিয়ারা গ্রামে।
ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনের সময় ২০ জানুয়ারি ঢাকার রাজপথে ছাত্র আসাদ পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আমাদের বাবুল তখনো আসাদের পাশে। তার শার্টে, হাতে, রুমালে রক্ত লাগে শহীদ আসাদের। সেদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ। বাবুল বাসায় ফিরছে না। পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। বাবুল ফিরল ছয়টা বাজার কয়েক মিনিট আগে। বড় বোন রেবার কাছে আসাদের রক্তে ভেজা নিজের শার্ট আর রুমালটা দিয়ে বলল, ‘আপা, এই রক্ত বড় পবিত্র। এই শার্ট আর রুমালটা তুই রেখে দে। এ পবিত্র রক্তে আমি গোসল করেছি। কী গৌরবের এই মৃত্যু। আজীবন সবাই তাদের স্মরণ করবে। তারা বেঁচে থাকবে চিরদিন।’
একাত্তরের ২৫ মার্চের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যা আর নির্যাতন প্রচণ্ড দ্রোহী করে তোলে বাবুলকে। কৈশোর থেকে যে ছেলের প্রবল বাসনা দেশের জন্য কিছু করার, এবার যেন সে সুযোগ এল। বাবুল তৈরি হয় যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। মা মানেন না। বাবুল পড়ে যায় কঠিন পরীক্ষায়। একদিকে মা অপরদিকে মাতৃভূমি। বাবুল বলে, ‘মা, তোমার তো আরও তিনটি ছেলে আছে। আমাকে তুমি দেশের জন্য ত্যাগ করতে পারো না? মা নিশ্চুপ। বাবুলও হাল ছাড়ে না। একদিন অবসরে বাবুল মাকে গল্প শোনায়—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে জার্মানিতে রেডিওর মাধ্যমে দেশের সবল, সক্ষম যুবকদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। দলে দলে যুবকেরা রিক্রুটিং সেন্টারে ভিড় জমাতে থাকে। এক বিধবা মা তার একমাত্র ছেলেকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে পাঠান। রিক্রুটমেন্টের সময় জিজ্ঞাসা করা হতো সংসারে তাদের কে কে আছে। জবাবে সবাই বলত, বাবা-মা, ভাই-বোন ইত্যাদি আছে। এ ছেলে বলল, সংসারে শুধু তার মা আছেন। তখন কর্তৃপক্ষ তাকে এই বলে ফেরত পাঠায় যে মাকে দেখাশোনা করাই তার প্রধান দায়িত্ব। বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তানের জন্য সেনাবাহিনী নয়। ভগ্নহূদয়ে ছেলেটি বাসায় ফেরে। দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন মা। সেনাবাহিনীতে টিকতে না পারার কারণ ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন মা। ছেলের অভিমানী উত্তর, তার জন্য তুমিই দায়ী...। মা নিষ্পলক দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে মৌনভাবে সব শুনলেন। ধীরে পায়ে ছেলের সামনে থেকে চলে গেলেন পাশের ঘরে। নিজের মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে গুলি করলেন।
মাকে গল্পটি শুনিয়ে বাবুল প্রশ্ন করে, ‘মা, তুমি ওই রকম মা হতে পারো না? মা এ পাগল ছেলেকে নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। বাবুলের লক্ষ্য স্থির। কদিন পর কাউকে কিছু না জানিয়ে যুদ্ধে চলে যাচ্ছিল বাবুল। ধরা পড়ে যায় মায়ের কাছে। বাবুল মাকে বোঝায়—মা, তুমি তো সবই দেখছ। পাকিস্তানিদের বর্বরতা, অত্যাচার, নারীদের ওপর নির্যাতন। এটা কি সহ্য করা যায়? তোমার তো চার মেয়ে। তাদের ওপর নির্যাতন হলে তুমি কী করতে? আমি তো সেই প্রতিশোধই নিতে যাচ্ছি। ছেলের কথা শুনে মায়ের কপোল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে। জবাবহীন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। বাবুল চলে যায়। আর পেছনে তাকায় না। পেছনে ফিরলেই মা। মা মানেই অন্তহীন মায়া। মায়ের মায়ার শক্ত আঁটুনি তাকে অতিক্রম করতেই হবে, লাখো মায়ের মাতৃভূমি যে তাকে ডাকছে।
বাবুল উপস্থিত হয় দুই নম্বর সেক্টরের সদর দপ্তর মেলঘরে। সেখানে জুন মাসের মাঝামাঝি নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে আরও অনেকের সঙ্গে। প্রশিক্ষণ শেষে ৯ অক্টোবর আমাদের বাবুল অর্থাত্ সেকেন্ড লে. খন্দকার আজিজুল ইসলাম এবং তার আরেক কোর্সমেট সেকেন্ড লে. শাহরিয়ার হুদার পোস্টিং হয় নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। একদমই নতুন এ ব্যাটালিয়ন। চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি পুরোনো সৈনিক, ইপিআর, আনসার, মুজাহিদ আর গণযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত হয় ৯ অক্টোবর। অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আইনউদ্দিন।
২২ অক্টোবর নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কসবার পুরান বাজারে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থান আক্রমণ করে। কে ফোর্স কমান্ডার লে. কর্নেল খালেদ মোশাররফ সে আক্রমণ পর্যবেক্ষণকালে কপালে শত্রুর আর্টিলারি স্প্লিন্টারে আহত হলে মেজর আবদুস সালেক চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার নিযুক্ত হন।
কসবা এবং ইমামবাড়ী রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পূর্বদিকে সীমান্তের কাছাকাছি চন্দ্রপুর। দুর্ভেদ্য পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থান। ভারতীয় চার কোর কমান্ডার লে. জেনারেল সগত সিং, ২৩ মাউন্টেন ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আর ডি হীরা এবং ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার তুলি মেজর সালেক এবং মেজর আইনউদ্দিনকে নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দিয়ে চন্দ্রপুর দখল করার নির্দেশ দেন। মেজর সালেক ও মেজর আইনউদ্দিন তীব্র আপত্তি জানান। তাঁরা বলেন, ব্যাটালিয়নটি সবে গঠিত হয়েছে। যোদ্ধারা একে অপরকে এখনো চেনে না। তাছাড়া ব্যাটালিয়নের কাঠামোর আওতায় ছেলেরা যুদ্ধ তেমন করেনি। এমন শক্ত প্রতিরক্ষার ওপর আক্রমণ হবে আত্মঘাতী। তাঁরা কিছুদিন সময় চান। ব্রিগেডিয়ার তুলি বলেন, ‘তোমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছো বলছো, কিন্তু তোমরা তো কনভেনশনাল যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত নও।’ মর্যাদা রক্ষার বাগ্যুদ্ধে শেষে রাজি হন মেজর সালেক ও মেজর আইনউদ্দিন। মেজর আইনউদ্দিন ব্রিগেডিয়ার তুলিকে বলেন, ‘আপনি জীবনে কয়টা যুদ্ধ করেছেন? আমি আপনার চেয়ে বেশি যুদ্ধ করেছি।’ সামরিক প্রথার বাইরে কিছু রূঢ় কথা শোনালেন মেজর সালেকও। কল্পনাপ্রসূত ও অবাস্তব এ আক্রমণ পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পরে ব্রিগেডিয়ার তুলিকে কোর্ট মার্শাল করে চাকরিচ্যুত করা হয়। সেকেন্ড লে. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বীর বিক্রম ২২ নভেম্বরের এ যুদ্ধে অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করে শাহাদাতবরণ করেন। তাঁর কোম্পানির সৈন্যরা শেষ তাঁকে শত্রুর বাংকারের ওপর হাতাহাতি যুদ্ধ করতে দেখেছে।
আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু বাবুলের মতো দেশের জন্য নিজেকে উত্সর্গ করার সৌভাগ্য হয় কজনের?
ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনের সময় ২০ জানুয়ারি ঢাকার রাজপথে ছাত্র আসাদ পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আমাদের বাবুল তখনো আসাদের পাশে। তার শার্টে, হাতে, রুমালে রক্ত লাগে শহীদ আসাদের। সেদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ। বাবুল বাসায় ফিরছে না। পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। বাবুল ফিরল ছয়টা বাজার কয়েক মিনিট আগে। বড় বোন রেবার কাছে আসাদের রক্তে ভেজা নিজের শার্ট আর রুমালটা দিয়ে বলল, ‘আপা, এই রক্ত বড় পবিত্র। এই শার্ট আর রুমালটা তুই রেখে দে। এ পবিত্র রক্তে আমি গোসল করেছি। কী গৌরবের এই মৃত্যু। আজীবন সবাই তাদের স্মরণ করবে। তারা বেঁচে থাকবে চিরদিন।’
একাত্তরের ২৫ মার্চের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যা আর নির্যাতন প্রচণ্ড দ্রোহী করে তোলে বাবুলকে। কৈশোর থেকে যে ছেলের প্রবল বাসনা দেশের জন্য কিছু করার, এবার যেন সে সুযোগ এল। বাবুল তৈরি হয় যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। মা মানেন না। বাবুল পড়ে যায় কঠিন পরীক্ষায়। একদিকে মা অপরদিকে মাতৃভূমি। বাবুল বলে, ‘মা, তোমার তো আরও তিনটি ছেলে আছে। আমাকে তুমি দেশের জন্য ত্যাগ করতে পারো না? মা নিশ্চুপ। বাবুলও হাল ছাড়ে না। একদিন অবসরে বাবুল মাকে গল্প শোনায়—দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে জার্মানিতে রেডিওর মাধ্যমে দেশের সবল, সক্ষম যুবকদের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। দলে দলে যুবকেরা রিক্রুটিং সেন্টারে ভিড় জমাতে থাকে। এক বিধবা মা তার একমাত্র ছেলেকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে পাঠান। রিক্রুটমেন্টের সময় জিজ্ঞাসা করা হতো সংসারে তাদের কে কে আছে। জবাবে সবাই বলত, বাবা-মা, ভাই-বোন ইত্যাদি আছে। এ ছেলে বলল, সংসারে শুধু তার মা আছেন। তখন কর্তৃপক্ষ তাকে এই বলে ফেরত পাঠায় যে মাকে দেখাশোনা করাই তার প্রধান দায়িত্ব। বিধবা মায়ের একমাত্র সন্তানের জন্য সেনাবাহিনী নয়। ভগ্নহূদয়ে ছেলেটি বাসায় ফেরে। দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন মা। সেনাবাহিনীতে টিকতে না পারার কারণ ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন মা। ছেলের অভিমানী উত্তর, তার জন্য তুমিই দায়ী...। মা নিষ্পলক দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে মৌনভাবে সব শুনলেন। ধীরে পায়ে ছেলের সামনে থেকে চলে গেলেন পাশের ঘরে। নিজের মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে গুলি করলেন।
মাকে গল্পটি শুনিয়ে বাবুল প্রশ্ন করে, ‘মা, তুমি ওই রকম মা হতে পারো না? মা এ পাগল ছেলেকে নিয়ে ধন্দে পড়ে যান। বাবুলের লক্ষ্য স্থির। কদিন পর কাউকে কিছু না জানিয়ে যুদ্ধে চলে যাচ্ছিল বাবুল। ধরা পড়ে যায় মায়ের কাছে। বাবুল মাকে বোঝায়—মা, তুমি তো সবই দেখছ। পাকিস্তানিদের বর্বরতা, অত্যাচার, নারীদের ওপর নির্যাতন। এটা কি সহ্য করা যায়? তোমার তো চার মেয়ে। তাদের ওপর নির্যাতন হলে তুমি কী করতে? আমি তো সেই প্রতিশোধই নিতে যাচ্ছি। ছেলের কথা শুনে মায়ের কপোল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে। জবাবহীন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। বাবুল চলে যায়। আর পেছনে তাকায় না। পেছনে ফিরলেই মা। মা মানেই অন্তহীন মায়া। মায়ের মায়ার শক্ত আঁটুনি তাকে অতিক্রম করতেই হবে, লাখো মায়ের মাতৃভূমি যে তাকে ডাকছে।
বাবুল উপস্থিত হয় দুই নম্বর সেক্টরের সদর দপ্তর মেলঘরে। সেখানে জুন মাসের মাঝামাঝি নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে আরও অনেকের সঙ্গে। প্রশিক্ষণ শেষে ৯ অক্টোবর আমাদের বাবুল অর্থাত্ সেকেন্ড লে. খন্দকার আজিজুল ইসলাম এবং তার আরেক কোর্সমেট সেকেন্ড লে. শাহরিয়ার হুদার পোস্টিং হয় নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। একদমই নতুন এ ব্যাটালিয়ন। চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি পুরোনো সৈনিক, ইপিআর, আনসার, মুজাহিদ আর গণযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত হয় ৯ অক্টোবর। অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আইনউদ্দিন।
২২ অক্টোবর নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কসবার পুরান বাজারে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থান আক্রমণ করে। কে ফোর্স কমান্ডার লে. কর্নেল খালেদ মোশাররফ সে আক্রমণ পর্যবেক্ষণকালে কপালে শত্রুর আর্টিলারি স্প্লিন্টারে আহত হলে মেজর আবদুস সালেক চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার নিযুক্ত হন।
কসবা এবং ইমামবাড়ী রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পূর্বদিকে সীমান্তের কাছাকাছি চন্দ্রপুর। দুর্ভেদ্য পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থান। ভারতীয় চার কোর কমান্ডার লে. জেনারেল সগত সিং, ২৩ মাউন্টেন ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আর ডি হীরা এবং ৭৩ মাউন্টেন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার তুলি মেজর সালেক এবং মেজর আইনউদ্দিনকে নবম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দিয়ে চন্দ্রপুর দখল করার নির্দেশ দেন। মেজর সালেক ও মেজর আইনউদ্দিন তীব্র আপত্তি জানান। তাঁরা বলেন, ব্যাটালিয়নটি সবে গঠিত হয়েছে। যোদ্ধারা একে অপরকে এখনো চেনে না। তাছাড়া ব্যাটালিয়নের কাঠামোর আওতায় ছেলেরা যুদ্ধ তেমন করেনি। এমন শক্ত প্রতিরক্ষার ওপর আক্রমণ হবে আত্মঘাতী। তাঁরা কিছুদিন সময় চান। ব্রিগেডিয়ার তুলি বলেন, ‘তোমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছো বলছো, কিন্তু তোমরা তো কনভেনশনাল যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত নও।’ মর্যাদা রক্ষার বাগ্যুদ্ধে শেষে রাজি হন মেজর সালেক ও মেজর আইনউদ্দিন। মেজর আইনউদ্দিন ব্রিগেডিয়ার তুলিকে বলেন, ‘আপনি জীবনে কয়টা যুদ্ধ করেছেন? আমি আপনার চেয়ে বেশি যুদ্ধ করেছি।’ সামরিক প্রথার বাইরে কিছু রূঢ় কথা শোনালেন মেজর সালেকও। কল্পনাপ্রসূত ও অবাস্তব এ আক্রমণ পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পরে ব্রিগেডিয়ার তুলিকে কোর্ট মার্শাল করে চাকরিচ্যুত করা হয়। সেকেন্ড লে. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বীর বিক্রম ২২ নভেম্বরের এ যুদ্ধে অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করে শাহাদাতবরণ করেন। তাঁর কোম্পানির সৈন্যরা শেষ তাঁকে শত্রুর বাংকারের ওপর হাতাহাতি যুদ্ধ করতে দেখেছে।
আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু বাবুলের মতো দেশের জন্য নিজেকে উত্সর্গ করার সৌভাগ্য হয় কজনের?
No comments