ওবামার স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন -রবার্ট ফিস্ক
তাঁর মধ্যপ্রাচ্য-নীতি ধসে পড়ছে। ইসরায়েলিরা নতুন বসতি স্থাপন বন্ধে তাঁর দাবিকে উপহাস করে আরব ভূমিতে তাদের নতুন কলোনি তৈরি অব্যাহত রেখেছে। তাঁর বিশেষ দূতকে খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে যে আরব-ইসরায়েল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ‘অনেক বছর’ সময় লাগবে। কিন্তু ওবামা চান ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের সঙ্গে শর্তহীন আলোচনায় যাক। জাতিসংঘের বিচারক গোল্ডস্টোন গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করায় আন্তর্জাতিকভাবে তা যাচাইয়ের যে সুযোগ এসেছে, সেখান থেকে সরে আসতে তিনি ফিলিস্তিনি নেতার ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন। নির্বাচনপূর্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তিনি আর্মেনীয়দেরও আহ্বান জানিয়েছেন শর্তারোপ না করে তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে। তাঁর সেনারা ইরাকে এখনো বিদ্রোহ মোকাবিলা করছে। আফগানিস্তানে ‘তাঁর’ যুদ্ধ কেমন করে জেতা যাবে, সে বিষয়েও তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছেন না। ইরানের কথা নাইবা তুললাম।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সবেমাত্র নোবেল পুরস্কার জিতলেন। মাত্র আট মাস দায়িত্ব পালন করেই। খবর শোনার পর তিনি ‘মহিমান্বিত’ বোধ করেছেন। তাঁর আসলে লজ্জাবোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু হয়তো দুর্বলতার জয় হয় নোবেল শান্তি পুরস্কারে। সিমন পেরেজও এটি জিতেছিলেন। তিনি ইসরায়েলে কোনো নির্বাচনে জেতেননি। ইয়াসির আরাফাত এ পুরস্কার জিতেছিলেন। দেখুন, তাঁর কী অবস্থা হলো। প্রথমবারের মতো নরওয়ের নোবেল কমিটি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে, এমন ক্ষীণ আশার বশবর্তী হয়ে এমন একজনকে শান্তি পুরস্কার দিল, যাঁর অর্জন একেবারে শূন্য।
ইসরায়েল কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের আরব ভূমিতে ইহুদি বসতি স্থাপন বন্ধের আহ্বানের পরোয়া করেনি। বিল ক্লিনটন এ দাবি জানিয়েছিলেন, অসলো চুক্তিতেও এটা লেখা আছে, ইসরায়েল অগ্রাহ্য করেছে। নয় বছর আগে জর্জ ডব্লিউ বুশ জেনিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ইসরায়েল তাকেও অগ্রাহ্য করেছে। ওবামা বসতি স্থাপনের পুরোপুরি অবসান চান। কিন্তু এক ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা বিষয়টা একদম বুঝতে পারেন না।’ বোঝা যায়, এটি আসলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুরই কথা। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিবারম্যানের কথায়, ‘যারা বলে যে আগামী কয়েক বছরে সবার অংশগ্রহণে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব, তারা বাস্তবতাটাই বুঝতে পারে না।’
আরবের শাসকগোষ্ঠী তাদের সোনার মিনারে বসে ভয়ে কাঁপছে। ২০০৫ সালে নিহত লেবাননের মহান সাংবাদিক সামির কাসির লিখেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অন্তহীন সমর্থনের নিশ্চয়তা, ইউরোপের থেকে নৈতিক দায়মুক্তির প্রতিশ্রুতি ও পশ্চিমা শক্তিদের সহায়তায় অর্জিত পারমাণবিক অস্ত্রাগার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনো সমালোচনা ছাড়াই এর উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে, ইসরায়েল আক্ষরিক অর্থেই যা খুশি তাই করতে পারে।’
গাজায় যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্তের প্রধানকে অমর্যাদা করে অন্য সময়ের মতো পার পেয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আর মার্কিনপন্থী দুর্বল ফিলিস্তিনি ‘প্রেসিডেন্ট’ মাহমুদ আব্বাসকে আরও অসম্মান করছে। আব্বাস নিজের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের চেয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাতেই বেশি আগ্রহী। ইসরায়েলের ঔপনিবেশিক বিস্তার বন্ধ না করা পর্যন্ত শান্তি আলোচনায় বসবেন না—এমন বক্তব্য থেকেও তিনি সরে এসেছেন। জর্ডানি ভাষ্যকার রামি খৌরি সম্প্রতি এককথায় আব্বাস সম্পর্কে বলেছেন ‘এক শূন্যগর্ভ মানুষের খোলস, রাজনৈতিকভাবে অক্ষম, কেউ তাঁর সঙ্গে নেই, কেউ তাঁকে শ্রদ্ধা করে না।’
ওবামা বারবার বলছেন, আফগানিস্তান যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে করতেই হতো। কিন্তু তিনি একবারও বলেন না যে, এ অঞ্চলে বুশের আক্রমণ হঠকারী। পাকিস্তানের যুদ্ধও এখন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। ওবামার মনোযোগ কি আল-কায়েদার ওপর কেন্দ্রীভূত করা উচিত? কোনোভাবেই তারা সেখানে জিততে পারবেন না। নব্য রক্ষণশীলেরা বলে, ‘সাম্রাজ্যের সমাধিক্ষেত্র’ এক সস্তা বুলি। হ্যাঁ, তাই। কিন্তু এটি বাস্তবও বটে।
সম্প্রতি আবারও ভারতীয় দূতাবাসে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। কেন করা হয়েছে, ওবামা কি কিছু ধারণা করতে পারেন? তিনি কি উপলব্ধি করতে পারেন যে কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে সমর্থন দান করায় ওয়াশিংটনের ওপর পাকিস্তান ক্ষিপ্ত। ভারতকে সমর্থনের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে রিচার্ড হলব্রুককে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে দূত নিযুক্ত করার মধ্য দিয়ে। কিন্তু কাশ্মীর প্রশ্নে তাঁকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ওবামা হয়তো চান, ভারত চীনের সাথে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করুক। ওবামাকে কাশ্মীর প্রশ্নে ন্যায়সংগত পদক্ষেপ নিতে সচেষ্ট করতে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দাদের সামনে তালেবানকে সহায়তা বৃদ্ধির পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। কাশ্মীর বিষয়ে কোনো সুবিচার না পেলে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা অথবা ভারতীয় দূতাবাস নিরাপদ থাকবে না।
জেনেভার পারমাণবিক আলোচনায় ইরানকে পর্যুদস্ত করার কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আবিষ্কার করলেন, ইরান আবার হম্বিতম্বি শুরু করেছে। সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা রেভল্যুশনারি গার্ড কমান্ডার হুমকি দিয়েছেন, ইসরায়েলের ‘হূিপণ্ড উড়িয়ে দেওয়া’ হবে যদি ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র ইরান আক্রমণ করে। কোনো বিপর্যয় ঘটলে ইরানিদের ভিন্নপথও খোলা থাকবে। আক্রমণ হলে তারা ইসরায়েলকে ঘাঁটাবে না। ইরাক ও আফগানিস্তানে কেবল মার্কিন সেনা, উপসাগরীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটি এবং হরমুজ জলপ্রবাহে তাদের যুদ্ধজাহাজকে তারা লক্ষ্যবস্তু বানাবে। আমেরিকানরা তখন বুঝবে, ইসরায়েলি প্রভুদের কাছে নতজানু হওয়ার মূল্য কী।
ইরান জানে, মধ্যপ্রাচ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ করার খায়েশ যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ওবামা তাই তাঁর জেনারেলদের ঘন ঘন তেল আবিব পাঠাচ্ছেন ইসরায়েলিদের বলতে, তারা যেন ইরানে আক্রমণ না করে। ওবামা কি ইরানের পাল্টা আক্রমণের ভয়ে ভীত? অথবা এর পারমাণবিক সামর্থ্যের? নাকি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সম্ভাব্য আগ্রাসনের জন্য শঙ্কিত?
কিন্তু দয়া করে ১০ ডিসেম্বর কোনো আক্রমণ করবেন না। ওবামা তখন অসলো যাবেন তাঁর শান্তি পুরস্কার পকেটস্থ করতে—যে পুরস্কার তিনি পেয়েছেন এমন কর্মের জন্য, যা এখনো তিনি অর্জন করেননি, আর এমন স্বপ্নের জন্য, যা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
ব্রিটেনের দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত।
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক ও মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সবেমাত্র নোবেল পুরস্কার জিতলেন। মাত্র আট মাস দায়িত্ব পালন করেই। খবর শোনার পর তিনি ‘মহিমান্বিত’ বোধ করেছেন। তাঁর আসলে লজ্জাবোধ করা উচিত ছিল। কিন্তু হয়তো দুর্বলতার জয় হয় নোবেল শান্তি পুরস্কারে। সিমন পেরেজও এটি জিতেছিলেন। তিনি ইসরায়েলে কোনো নির্বাচনে জেতেননি। ইয়াসির আরাফাত এ পুরস্কার জিতেছিলেন। দেখুন, তাঁর কী অবস্থা হলো। প্রথমবারের মতো নরওয়ের নোবেল কমিটি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে, এমন ক্ষীণ আশার বশবর্তী হয়ে এমন একজনকে শান্তি পুরস্কার দিল, যাঁর অর্জন একেবারে শূন্য।
ইসরায়েল কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের আরব ভূমিতে ইহুদি বসতি স্থাপন বন্ধের আহ্বানের পরোয়া করেনি। বিল ক্লিনটন এ দাবি জানিয়েছিলেন, অসলো চুক্তিতেও এটা লেখা আছে, ইসরায়েল অগ্রাহ্য করেছে। নয় বছর আগে জর্জ ডব্লিউ বুশ জেনিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ইসরায়েল তাকেও অগ্রাহ্য করেছে। ওবামা বসতি স্থাপনের পুরোপুরি অবসান চান। কিন্তু এক ইসরায়েলি মন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা বিষয়টা একদম বুঝতে পারেন না।’ বোঝা যায়, এটি আসলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুরই কথা। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিবারম্যানের কথায়, ‘যারা বলে যে আগামী কয়েক বছরে সবার অংশগ্রহণে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব, তারা বাস্তবতাটাই বুঝতে পারে না।’
আরবের শাসকগোষ্ঠী তাদের সোনার মিনারে বসে ভয়ে কাঁপছে। ২০০৫ সালে নিহত লেবাননের মহান সাংবাদিক সামির কাসির লিখেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অন্তহীন সমর্থনের নিশ্চয়তা, ইউরোপের থেকে নৈতিক দায়মুক্তির প্রতিশ্রুতি ও পশ্চিমা শক্তিদের সহায়তায় অর্জিত পারমাণবিক অস্ত্রাগার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনো সমালোচনা ছাড়াই এর উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে, ইসরায়েল আক্ষরিক অর্থেই যা খুশি তাই করতে পারে।’
গাজায় যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্তের প্রধানকে অমর্যাদা করে অন্য সময়ের মতো পার পেয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আর মার্কিনপন্থী দুর্বল ফিলিস্তিনি ‘প্রেসিডেন্ট’ মাহমুদ আব্বাসকে আরও অসম্মান করছে। আব্বাস নিজের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের চেয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাতেই বেশি আগ্রহী। ইসরায়েলের ঔপনিবেশিক বিস্তার বন্ধ না করা পর্যন্ত শান্তি আলোচনায় বসবেন না—এমন বক্তব্য থেকেও তিনি সরে এসেছেন। জর্ডানি ভাষ্যকার রামি খৌরি সম্প্রতি এককথায় আব্বাস সম্পর্কে বলেছেন ‘এক শূন্যগর্ভ মানুষের খোলস, রাজনৈতিকভাবে অক্ষম, কেউ তাঁর সঙ্গে নেই, কেউ তাঁকে শ্রদ্ধা করে না।’
ওবামা বারবার বলছেন, আফগানিস্তান যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে করতেই হতো। কিন্তু তিনি একবারও বলেন না যে, এ অঞ্চলে বুশের আক্রমণ হঠকারী। পাকিস্তানের যুদ্ধও এখন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। ওবামার মনোযোগ কি আল-কায়েদার ওপর কেন্দ্রীভূত করা উচিত? কোনোভাবেই তারা সেখানে জিততে পারবেন না। নব্য রক্ষণশীলেরা বলে, ‘সাম্রাজ্যের সমাধিক্ষেত্র’ এক সস্তা বুলি। হ্যাঁ, তাই। কিন্তু এটি বাস্তবও বটে।
সম্প্রতি আবারও ভারতীয় দূতাবাসে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। কেন করা হয়েছে, ওবামা কি কিছু ধারণা করতে পারেন? তিনি কি উপলব্ধি করতে পারেন যে কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে সমর্থন দান করায় ওয়াশিংটনের ওপর পাকিস্তান ক্ষিপ্ত। ভারতকে সমর্থনের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে রিচার্ড হলব্রুককে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে দূত নিযুক্ত করার মধ্য দিয়ে। কিন্তু কাশ্মীর প্রশ্নে তাঁকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ওবামা হয়তো চান, ভারত চীনের সাথে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করুক। ওবামাকে কাশ্মীর প্রশ্নে ন্যায়সংগত পদক্ষেপ নিতে সচেষ্ট করতে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দাদের সামনে তালেবানকে সহায়তা বৃদ্ধির পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই। কাশ্মীর বিষয়ে কোনো সুবিচার না পেলে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা অথবা ভারতীয় দূতাবাস নিরাপদ থাকবে না।
জেনেভার পারমাণবিক আলোচনায় ইরানকে পর্যুদস্ত করার কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আবিষ্কার করলেন, ইরান আবার হম্বিতম্বি শুরু করেছে। সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা রেভল্যুশনারি গার্ড কমান্ডার হুমকি দিয়েছেন, ইসরায়েলের ‘হূিপণ্ড উড়িয়ে দেওয়া’ হবে যদি ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র ইরান আক্রমণ করে। কোনো বিপর্যয় ঘটলে ইরানিদের ভিন্নপথও খোলা থাকবে। আক্রমণ হলে তারা ইসরায়েলকে ঘাঁটাবে না। ইরাক ও আফগানিস্তানে কেবল মার্কিন সেনা, উপসাগরীয় অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটি এবং হরমুজ জলপ্রবাহে তাদের যুদ্ধজাহাজকে তারা লক্ষ্যবস্তু বানাবে। আমেরিকানরা তখন বুঝবে, ইসরায়েলি প্রভুদের কাছে নতজানু হওয়ার মূল্য কী।
ইরান জানে, মধ্যপ্রাচ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ করার খায়েশ যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ওবামা তাই তাঁর জেনারেলদের ঘন ঘন তেল আবিব পাঠাচ্ছেন ইসরায়েলিদের বলতে, তারা যেন ইরানে আক্রমণ না করে। ওবামা কি ইরানের পাল্টা আক্রমণের ভয়ে ভীত? অথবা এর পারমাণবিক সামর্থ্যের? নাকি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সম্ভাব্য আগ্রাসনের জন্য শঙ্কিত?
কিন্তু দয়া করে ১০ ডিসেম্বর কোনো আক্রমণ করবেন না। ওবামা তখন অসলো যাবেন তাঁর শান্তি পুরস্কার পকেটস্থ করতে—যে পুরস্কার তিনি পেয়েছেন এমন কর্মের জন্য, যা এখনো তিনি অর্জন করেননি, আর এমন স্বপ্নের জন্য, যা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
ব্রিটেনের দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত।
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক ও মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ।
No comments