মা কবরে, বাবা জেলহাজতে: ৪ শিশু সন্তানের মানবেতর জীবনযাপন

এক মাস হলো মা কবরে গেছেন। ৪ দিন আগে পুলিশ বাবাকে ধরে নিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। এখন আমার মাও নেই, বাবাও নেই। আমরা ৪ ভাইবোন কি করে বাঁচবো। কে আমাদের খাওন দিবে? কি করে আমরা লেখাপড়া শিখবো? মা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি ও আমার ছোট বোনের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এক মাস বয়সী ছোট ২টি বোন আনিশা ও তানিশা মায়ের দুধ খাবার জন্য সারাদিন কান্নাকাটি করে, মাকে আর ফিরে পাবো না। আপনারা আমার বাবাকে পুলিশের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনে দেন। এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিল কোটালীপাড়া উপজেলার চিত্রাপাড়া গ্রামের ১৩ বছরের সাজ্জাদ মিয়া সে এমএম খান উচ্চ বিদ্যালযের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং জামাল মিয়ার ছেলে। বুধবার সরজমিন চিত্রাপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, জামাল মিয়ার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী সাথী বেগম একমাস আগে হৃদরোগে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সুস্থ হয়ে দুইটি যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। বাড়ি ফেরার পরে সাথী বেগম আবার অসুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান। দিনমজুর জামাল মিয়া স্ত্রীর রেখা যাওয়া চার সন্তানের লালন পালন করে আসছিলেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে এবং পরের দিন গোপালগঞ্জ আদালতে পাঠিয়ে দেন। গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। মা ও বাবার অবর্তমানে সাজ্জাদ (১৩), ফারিয়া (৭) ও এক মাস বয়সী আনিশা ও তানিশাকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন- জামাল মিয়া ঢাকার তেজগাঁও থানায় শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
mzamin

No comments

Powered by Blogger.