বিদেশ পাঠানোর নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণা by রুদ্র মিজান
বিদেশে
পাঠানোর নামে চক্রের ভয়ঙ্কর প্রতারণা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে এই
চক্রের সদস্য। বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এসব করে বেড়ালেও তাদের
নির্দিষ্ট কোনো অফিস নেই। নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশগামীদের আকৃষ্ট করে
তারা। এক পর্যায়ে বিদেশে পাঠানোর নামে সর্বস্ব লুটে নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রতারণা
করে চক্রটি। এক দেশের কথা বলে অন্য দেশে নিয়ে বন্দি রেখে করে নির্যাতন।
আদায় করা হয় মুক্তিপণ। এই চক্রের কয়েক জন সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে মহানগর
গোয়েন্দা পুলিশ।
যে কোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ইরাক, দুবাই, জর্ডান, লিবিয়া, ভিয়েতনাম, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত রয়েছে এই চক্রের জাল। এই চক্রের মূল হোতাদের একজন বাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের বিষ্ণুরামপুর মধ্যপাড়ার বিল্লাল হোসেন। এখন পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে এই চক্র। প্রত্যেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ছয় থেকে ১০ লাখ টাকা। এই চক্রের এজেন্ট হিসেবে যারা কাজ করে তাদের দেয়া হয় মোটা অঙ্কের কমিশন। মূলত এজেন্টের মাধ্যমেই প্রলোভনের প্রাথমিক জাল বিস্তার করা হয়। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে মাসের পর মাস দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ৫৩ বছর বয়সী জয়নাব খাতুন। তিনি সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও’র ০২/ক রোডের সাত নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল হাকিমের স্ত্রী।
স্বামীর উপার্জিত সর্বস্ব দিয়ে ছেলে ফারুক ইকবালকে বিদেশে পাঠান তিনি। আর এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। এখন ছেলেকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। টাকা গেছে, ছেলেও বন্দিদশায়। লিবিয়ার একটি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে ফারুক ইকবালকে। চুক্তি অনুসারে পুরো টাকা দেয়া হলেও অতিরিক্ত আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে এই চক্র। টাকার জন্য শুরু থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তাকে। বিদেশে বন্দিশালায় থেকে সেই কষ্টের কথাগুলো দেশে মাকে জানিয়েছেন ফারুক ইকবাল।
ছেলের কষ্টের কথা জেনে ফোনের এ প্রান্তে অজোরে কাঁদেন মা। বিল্লাল দাবি করেন আরও দুই লাখ টাকা। জয়নাব ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে বিল্লাল এড়িয়ে যান। এভাবেই দিন যায়, রাত কাটে। তিন মাস কেটে গেলেও ছেলেকে মুক্তি দেয় না চক্রটি। নানা বাহানা দিয়ে বারবার টাকা দাবি করে তারা।
জয়নাব খাতুন জানান, তার দুই ছেলের মধ্যে ছোট ফারুক ইকবাল। তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু লেখাপড়া আর হয়নি। দেশের বাইরে যেতে চান তিনি। বিষয়টি জানার পর তাদের পরিচিত বিল্লাল আগ্রহ দেখান। সহজ কথায় জানিয়ে দেন প্রায় সব দেশেই তাদের লোক আছে। ভিসা দেয়া এমনকি ভালো কাজ দেয়া তাদের জন্য কোনো বিষয় না। ইরাকে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ দেয়া হবে ফারুক ইকবালকে। মাস শেষে বেতন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। নিজ থেকেই আগ্রহ দেখিয়ে ফারুক ইকবালের পাসপোর্ট নিয়ে যান বিল্লাল।
পরবর্তীতে ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন জয়নাব খাতুন। গত ২রা এপ্রিল ১লাখ টাকা দেয়া হয় তাকে। ৪ঠা এপ্রিল বিদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ফারুক ইকবাল। তারপর এপ্রিল মাসের মধ্যেই ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দেয়া হয় বিল্লাল ও তার সহযোগী হালিমের কাছে। বিদেশে যাওয়ার তিন দিন পর মায়ের সঙ্গে কথা হয় ফারুক ইকবালের। ফারুক ইকবাল তখন দুবাইয়ে। ছয়দিন সেখানে একটি রুমে আটকে রাখা হয়েছিলো তাকে। সেখানে আরও অনেক লোক ছিলো। দুবাইয়ে আটকে রেখে প্রত্যেকের কাছ থাকা টাকা বা ডলার হাতিয়ে নেয় চক্রের সদস্যরা। তারপর জর্ডান, ইস্তাম্বুল হয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লিবিয়া। এয়ারপোর্টে নামার পরই এই চক্রের একজন গ্রহণ করে ফারুক ইকবালকে। ওই সময়ে জোর করেই তার পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস নিজেদের দখলে নিয়ে যায়।
তারপর থেকেই লিবিয়ার একটি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। বারবার দাবি করা হচ্ছে টাকা। অন্তত দুই লাখ টাকা না দিলে ছেলেকে ছাড়া হবে না। ইতিমধ্যে নিজের সর্বস্ব তুলে দিয়েছেন এই চক্রের হাতে। নতুন করে আরও দুই লাখ টাকা সংগ্রহের কথা ভাবতে গিয়ে হতাশ হয়ে যান মা জয়নাব খাতুন। থানা পুলিশ মুখো হলেও কোনো সমাধান হয়নি। কেউ তার ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। লিবিয়ায় বন্দি থাকা ফারুক ইকবালকে উদ্ধারে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে নিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায় করে এই চক্র। আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে ভিয়েতনাম, লিবিয়ায় এরকম ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সেইসঙ্গে জড়িতদের আটক করতেও তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। বিল্লাল হোসেন ছাড়াও এই চক্রের হোতাদের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে বাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের শফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের কাপাসিয়ার উজলি দিঘীর পাড়ের মোতাহার হোসেন, খিলক্ষেতের হালিম আহমেদ, খিলগাঁও’র হাবিব।
যে কোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ইরাক, দুবাই, জর্ডান, লিবিয়া, ভিয়েতনাম, লেবাননসহ বিভিন্ন দেশে বিস্তৃত রয়েছে এই চক্রের জাল। এই চক্রের মূল হোতাদের একজন বাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের বিষ্ণুরামপুর মধ্যপাড়ার বিল্লাল হোসেন। এখন পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে এই চক্র। প্রত্যেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ছয় থেকে ১০ লাখ টাকা। এই চক্রের এজেন্ট হিসেবে যারা কাজ করে তাদের দেয়া হয় মোটা অঙ্কের কমিশন। মূলত এজেন্টের মাধ্যমেই প্রলোভনের প্রাথমিক জাল বিস্তার করা হয়। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে মাসের পর মাস দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ৫৩ বছর বয়সী জয়নাব খাতুন। তিনি সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও’র ০২/ক রোডের সাত নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল হাকিমের স্ত্রী।
স্বামীর উপার্জিত সর্বস্ব দিয়ে ছেলে ফারুক ইকবালকে বিদেশে পাঠান তিনি। আর এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। এখন ছেলেকে ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। টাকা গেছে, ছেলেও বন্দিদশায়। লিবিয়ার একটি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে ফারুক ইকবালকে। চুক্তি অনুসারে পুরো টাকা দেয়া হলেও অতিরিক্ত আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে এই চক্র। টাকার জন্য শুরু থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তাকে। বিদেশে বন্দিশালায় থেকে সেই কষ্টের কথাগুলো দেশে মাকে জানিয়েছেন ফারুক ইকবাল।
ছেলের কষ্টের কথা জেনে ফোনের এ প্রান্তে অজোরে কাঁদেন মা। বিল্লাল দাবি করেন আরও দুই লাখ টাকা। জয়নাব ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে বিল্লাল এড়িয়ে যান। এভাবেই দিন যায়, রাত কাটে। তিন মাস কেটে গেলেও ছেলেকে মুক্তি দেয় না চক্রটি। নানা বাহানা দিয়ে বারবার টাকা দাবি করে তারা।
জয়নাব খাতুন জানান, তার দুই ছেলের মধ্যে ছোট ফারুক ইকবাল। তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু লেখাপড়া আর হয়নি। দেশের বাইরে যেতে চান তিনি। বিষয়টি জানার পর তাদের পরিচিত বিল্লাল আগ্রহ দেখান। সহজ কথায় জানিয়ে দেন প্রায় সব দেশেই তাদের লোক আছে। ভিসা দেয়া এমনকি ভালো কাজ দেয়া তাদের জন্য কোনো বিষয় না। ইরাকে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কাজ দেয়া হবে ফারুক ইকবালকে। মাস শেষে বেতন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। নিজ থেকেই আগ্রহ দেখিয়ে ফারুক ইকবালের পাসপোর্ট নিয়ে যান বিল্লাল।
পরবর্তীতে ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন জয়নাব খাতুন। গত ২রা এপ্রিল ১লাখ টাকা দেয়া হয় তাকে। ৪ঠা এপ্রিল বিদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ফারুক ইকবাল। তারপর এপ্রিল মাসের মধ্যেই ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দেয়া হয় বিল্লাল ও তার সহযোগী হালিমের কাছে। বিদেশে যাওয়ার তিন দিন পর মায়ের সঙ্গে কথা হয় ফারুক ইকবালের। ফারুক ইকবাল তখন দুবাইয়ে। ছয়দিন সেখানে একটি রুমে আটকে রাখা হয়েছিলো তাকে। সেখানে আরও অনেক লোক ছিলো। দুবাইয়ে আটকে রেখে প্রত্যেকের কাছ থাকা টাকা বা ডলার হাতিয়ে নেয় চক্রের সদস্যরা। তারপর জর্ডান, ইস্তাম্বুল হয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লিবিয়া। এয়ারপোর্টে নামার পরই এই চক্রের একজন গ্রহণ করে ফারুক ইকবালকে। ওই সময়ে জোর করেই তার পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস নিজেদের দখলে নিয়ে যায়।
তারপর থেকেই লিবিয়ার একটি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। বারবার দাবি করা হচ্ছে টাকা। অন্তত দুই লাখ টাকা না দিলে ছেলেকে ছাড়া হবে না। ইতিমধ্যে নিজের সর্বস্ব তুলে দিয়েছেন এই চক্রের হাতে। নতুন করে আরও দুই লাখ টাকা সংগ্রহের কথা ভাবতে গিয়ে হতাশ হয়ে যান মা জয়নাব খাতুন। থানা পুলিশ মুখো হলেও কোনো সমাধান হয়নি। কেউ তার ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। লিবিয়ায় বন্দি থাকা ফারুক ইকবালকে উদ্ধারে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে নিয়ে জিম্মি করে অর্থ আদায় করে এই চক্র। আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে ভিয়েতনাম, লিবিয়ায় এরকম ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। সেইসঙ্গে জড়িতদের আটক করতেও তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। বিল্লাল হোসেন ছাড়াও এই চক্রের হোতাদের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে বাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের শফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের কাপাসিয়ার উজলি দিঘীর পাড়ের মোতাহার হোসেন, খিলক্ষেতের হালিম আহমেদ, খিলগাঁও’র হাবিব।
No comments