আফগানিস্তানে শান্তির পথ কোথায়? by কামরান ইউসুফ
গত ২৭ শে জুন বৃহস্পতিবার
সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে পাকিস্তান সফর করেন আফগান
প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। ২০১৫ সালের পর এটাই তার প্রথম পাকিস্তান সফর। এবং
এমন সময় তিনি এই সফরে গেলেন যখন আফগানিস্তানে ১৮ বছরের যুদ্ধের ইতি টানার
জন্য রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছে। পাকিস্তান তাদের পশ্চিমের
প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের যে চেষ্টা করছে, ঘানির সফরকে তারই অংশ
হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক প্রায়ই অবিশ্বাস ও দোষারোপের
কারণে বিঘ্নিত হয়ে আসছে। আফগান প্রেসিডেন্ট এর আগে পাকিস্তানের আহ্বানে
সাড়া না দিলেও এবার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন তিনি।
ঘানি ও ইমরানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরুর বিষয়ে আলোচনার পর যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। রাজনৈতিক স্বার্থে প্রতিযোগিতা বাদ দিয়ে দুই নেতা এখানে তাদের ‘ভবিষ্যৎমুখী ভিশন’ গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
এই সফরের মধ্য দিয়ে হয়তে সঙ্ঘাতমূলক অবস্থার অবসান ঘটেছে কিন্তু বড় প্রশ্নটা এখানে রয়েই গেছে: এই ইতিবাচক অর্জনটা কি দুই দেশ ধরে রাখতে পারবে? অতীতে আমরা দেখেছি, এই ধরনের সুসম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ঘানি প্রথমবার যখন পাকিস্তান সফর করেন, তখন যথেষ্ট আশাবাদ তৈরি হয়েছিল যে তার শাসনামলে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন আসবে।
পূর্বসূরী হামিদ কারজাইয়ের পথ অনুসরণ না করে ঘানি সে সময় রাওয়ালপিন্ডিও সফর করেছিলেন। তখন বিষয়টা এমন ছিল যে, অগ্রাধিকার রক্ষার জন্য ঘানি এমনকি তার ভারত সফর স্থগিত পর্যন্ত করেছিলেন, যে সফরে নয়াদিল্লীর সাথে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল। কারজাইয়ের মতো ঘানিও পরে তার সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান তালেবানদের সমর্থন দেয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বারবার বলেছেন যে, তার দেশের অস্থিরতার সমাধান আফগানিস্তানের ভেতরে নেই, রয়েছে পাকিস্তানের কাছে। এর মাধ্যমে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার অভিযোগে পরোক্ষভাবে ইসলামাবাদকে দোষারোপ করেন তিনি।
পাক-আফগান সম্পর্কের অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা হলো আস্থার ঘাটতি। আফগানিস্তান এখনও সন্দেহ করে যে পাকিস্তান এখনও তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের মাধ্যমে সেখানে তারা তাদের অনুগত একটা সরকার বসাতে চায়। ইসলামাবাদ অবশ্য বহুবার তাদের এই ভুল ধারণা নিরসনের চেষ্টা করেছে। আরেকটি যে পাকিস্তান-বিরোধী মনোভাব আফগানিস্তানের তরুণদের মধ্যে বাসা বেঁধেছে, সেটা হলো আফগানিস্তানের আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ি হলো পাকিস্তান। এটা অনেকটাই উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর মতো, কারণ বহু তরুণ আফগান বেড়েই উঠেছে আফগানিস্তানে, কারণ ১৯৭৯ সালের যুদ্ধ এড়ানোর জন্য তাদের বাবা মায়েরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল।
কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতির পেছনে অন্যান্য কারণও রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে সব ক্রস-বর্ডার হামলা চালাচ্ছে, তাদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান। পাকিস্তানে সমস্যা তৈরির জন্য আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটি (এনডিএস) যে ভারতের র’এর সাথে কাজ করছে, এটা উল্লেখ করতে ইসলামাবাদ কখনও দ্বিধা করেনি।
এটা স্পষ্ট যে, দুই দেশের মধ্যে যে সব ইস্যু রয়েছে, একটি মাত্র সফরের মাধ্যমে সেগুলোর সমাধান হবে না। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো পাক-আফগান সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে ইসলামাবাদ আর নয়াদিল্লির সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন আর ইসলামাবাদের উদ্বেগের কারণ হলো তাদের প্রতিবেশী দেশে নয়াদিল্লীর প্রভাব বাড়তে থাকলে তাদের কৌশলগত স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। এর অর্থ হলো পাকিস্তান আর ভারত পরস্পরের কাছাকাছি হলেই কেবল আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের ব্যাপারে অগ্রগতি হবে, ঘানির সাম্প্রতিক সফরে আসলে ততটা পরিবর্তন হবে না।
ঘানি ও ইমরানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরুর বিষয়ে আলোচনার পর যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। রাজনৈতিক স্বার্থে প্রতিযোগিতা বাদ দিয়ে দুই নেতা এখানে তাদের ‘ভবিষ্যৎমুখী ভিশন’ গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
এই সফরের মধ্য দিয়ে হয়তে সঙ্ঘাতমূলক অবস্থার অবসান ঘটেছে কিন্তু বড় প্রশ্নটা এখানে রয়েই গেছে: এই ইতিবাচক অর্জনটা কি দুই দেশ ধরে রাখতে পারবে? অতীতে আমরা দেখেছি, এই ধরনের সুসম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ঘানি প্রথমবার যখন পাকিস্তান সফর করেন, তখন যথেষ্ট আশাবাদ তৈরি হয়েছিল যে তার শাসনামলে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে গুণগত পরিবর্তন আসবে।
পূর্বসূরী হামিদ কারজাইয়ের পথ অনুসরণ না করে ঘানি সে সময় রাওয়ালপিন্ডিও সফর করেছিলেন। তখন বিষয়টা এমন ছিল যে, অগ্রাধিকার রক্ষার জন্য ঘানি এমনকি তার ভারত সফর স্থগিত পর্যন্ত করেছিলেন, যে সফরে নয়াদিল্লীর সাথে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল। কারজাইয়ের মতো ঘানিও পরে তার সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান তালেবানদের সমর্থন দেয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বারবার বলেছেন যে, তার দেশের অস্থিরতার সমাধান আফগানিস্তানের ভেতরে নেই, রয়েছে পাকিস্তানের কাছে। এর মাধ্যমে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার অভিযোগে পরোক্ষভাবে ইসলামাবাদকে দোষারোপ করেন তিনি।
পাক-আফগান সম্পর্কের অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা হলো আস্থার ঘাটতি। আফগানিস্তান এখনও সন্দেহ করে যে পাকিস্তান এখনও তালেবানদের নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তাদের মাধ্যমে সেখানে তারা তাদের অনুগত একটা সরকার বসাতে চায়। ইসলামাবাদ অবশ্য বহুবার তাদের এই ভুল ধারণা নিরসনের চেষ্টা করেছে। আরেকটি যে পাকিস্তান-বিরোধী মনোভাব আফগানিস্তানের তরুণদের মধ্যে বাসা বেঁধেছে, সেটা হলো আফগানিস্তানের আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ি হলো পাকিস্তান। এটা অনেকটাই উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর মতো, কারণ বহু তরুণ আফগান বেড়েই উঠেছে আফগানিস্তানে, কারণ ১৯৭৯ সালের যুদ্ধ এড়ানোর জন্য তাদের বাবা মায়েরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল।
কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতির পেছনে অন্যান্য কারণও রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে সব ক্রস-বর্ডার হামলা চালাচ্ছে, তাদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান। পাকিস্তানে সমস্যা তৈরির জন্য আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটি (এনডিএস) যে ভারতের র’এর সাথে কাজ করছে, এটা উল্লেখ করতে ইসলামাবাদ কখনও দ্বিধা করেনি।
এটা স্পষ্ট যে, দুই দেশের মধ্যে যে সব ইস্যু রয়েছে, একটি মাত্র সফরের মাধ্যমে সেগুলোর সমাধান হবে না। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো পাক-আফগান সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে ইসলামাবাদ আর নয়াদিল্লির সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ। আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন আর ইসলামাবাদের উদ্বেগের কারণ হলো তাদের প্রতিবেশী দেশে নয়াদিল্লীর প্রভাব বাড়তে থাকলে তাদের কৌশলগত স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। এর অর্থ হলো পাকিস্তান আর ভারত পরস্পরের কাছাকাছি হলেই কেবল আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের ব্যাপারে অগ্রগতি হবে, ঘানির সাম্প্রতিক সফরে আসলে ততটা পরিবর্তন হবে না।
No comments