পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে পাখিবাড়ির বাসিন্দাদের
মৌলভীবাজার
জেলার মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের পাশে রাজনগর উপজেলার গয়ঘর গ্রামের এক
বাঁশবাগানে নিরাপদ আশ্রয়ে বক-পাখিরা। ভোর বিহানে পাখির কলকাকলিতে ঘুম
ভাঙ্গার প্রচলিত পরিবেশ সব গ্রামে এখন আর নেই। বন-বাদাড় উজাড়, ঝোপঝাড় কমে
যাওয়াতে আমাদের জীব বৈচিত্র পাক-পাখালি প্রায়ই বিপন্ন। উড়ন্ত পাখির দুরন্ত
খেয়ালে এখনো কোথাও কোথাও পাখি বাসা বাঁধে, ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায়। এমন কি
কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায় পাখিরা মানুষের প্রতিবেশী হয়ে আছে।
পাখির এমন একটি নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মৌলভীবাজার কুলাউড়া সড়কের পাশে গয়ঘর গ্রামের মাসুক মিয়া ও তার প্রতিবেশী সন্তুষ দেবের বাড়ি। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই পাখির বিষ্ঠা আর গায়ের আষ্টে গন্ধ। বাঁশ বনের নিচে গিয়ে দেখা যায় পাখির বিষ্ঠায় কচুপাতা ও সবুজ ঘাস সাদা হয়ে রয়েছে।
বাড়ির গৃহিণী ফাতেমা বেগম বলেন, পাখিরা এখানে নিরাপদে আছে। তাই গন্ধ হলেও আমাদের ভলো লাগে। দিন রাত পাখিরা কিচিরমিচির করে। পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। আমাদের বাড়ি যেন পাখির মেলা। সকাল হলে পাখিরা উড়ে যায়। সন্ধ্যা হলে ফিরে আসতে থাকে। আমার প্রবাসী ছেলেরা প্রবাস থেকে ফোন করে পাখির খবরা-খবর নেয়।
বাড়ির মালিক মানিক মিয়া বলেন, প্রথম প্রথম পাখির গায়ের গন্ধ খারাপ লাগলেও এখন ভলো লাগে। পাখির কলকাকলিতে মন ভরে। কিছু পাখি সারাদিন বাসায় থাকে। প্রতিটি বাঁশে ছয় সাতটি করে পাখির বাসা রয়েছে। এর মধ্যে দু’দফা বাচ্চা দিয়েছে। পাখিরা প্রতিবেশীর মত সকালে আমাদের হাঁস মোরগের সাথে উঠানের মাটিতে চলাফেরা করে।
গত ৯ জুলাই পড়ন্ত বিকেলে পাখি বাড়ির পশ্চিমের বাঁশ বনের কাছে গেলে দেখা মিলে ঝাকে ঝাকে সাদা সাদা বক পাখির। বাঁশঝাড়ের সবুজ পাতার নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে পাখিরা। মাঝে মাঝে কালো রংয়ের পানকৌড়িরাও বাঁশঝাড়ের চূড়ায় বসছে। আষাঢ়ের মেঘ ভরা আকাশ থেকে নামছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির ফাঁকে রোদের ঝিলিকে সবুজ বাঁশঝাড় যেন ছোপ ছোপ সাদা রংয়ে লেপ্টে গেছে। বেলা যত পড়ছে পাখিরা কাছের মাঠ থেকে উড়া-উড়ি করে নীড়ে ফিরছে। আর বাসায় থাকা বাচ্চাদের কিচিমিচির বাড়ছে। কোনটি আবার ডানা ঝাপটিয়ে বাচ্চাদের মুখে খাবার দিচ্ছে।
পাশের বাড়ির সন্তুষ দেব বলেন, তিন বছর ধরে পাখিরা আশ্রয় নিয়েছে। যদিও গাছ-পালা তরুলতার ক্ষতি হয় তবুও আমরা পাখি তাড়াই না। আমাদের বাড়িতে সারাবছরই পাখি থাকে। তবে বৈশাখ মাস থেকে ঝাকে ঝাকে পাখিরা আসে। এ সময় পাখিরা বাসা বুনে বাচ্চা ফোটায়। বাচ্চারা উড়াল দেয়া শিখে ফেললে আশ্বিনে আস্তে আস্তে চলে যায়। বক ছাড়াও আছে পানকৌড়ি শালিক ঘুঘুসহ বিভিন্ন জাতের দেশীয় পাখি।
শিক্ষিকা তামান্না বেগম বলেন, আমরা পাখিদের বিরক্ত করি না। কেউ শিকার করতে আসলে বাড়ির সবাই মিলে বাধা দেন। শিকারির উৎপাত থাকলেও আমরা সেটা প্রশাসনকে জানিয়ে রেখেছি।
প্রাইভেট টিউশনি করতে আসা শিক্ষিকা শিখা রাণী ভট্টাচার্য বলেন, পাখি তার নিরাপদ আশ্রয় খুঁজেই বসবাস করতে থাকে। প্রতিদিন বিকেল বেলা এসে একবার পাখি দেখি। খুব ভালো লাগে, আনন্দ পাই। পথচারী সাজু মিয়া বলেন, আসা যাওয়ার পথে পাখি দেখে আনন্দ পাই।
প্রতিবেশী হাসনা বেগম বলছেন, রাস্তার পাশে বাড়ি থাকায় অনেক সময় কুলাউড়া, বড়লেখা থেকে শিকারীরা পাখি শিকার করতে আসে। তখন আমরা এলাকার লোকদের নিয়ে তাদের প্রতিরোধ করি। নিরাপদে আশ্রয় নেয়া পাখিদের মারতে দেই না। এসব পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। পাখির সাথেই আমাদের বসবাস।
পাখি বাড়ির মাসুক মিয়ার ছেলে গয়ঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র শিপু মিয়া বলছে, পাখির ছানা ধরার শখ থাকলেও বাড়িতে এতো পাখির ছানা আছে আমরা ধরি না। ছানাগুলো আমাদের কাছে আসলে আমরা বাঁশঝাড়ের বাসায় তুলে রাখি।
সারদিনের পর প্রকৃতির নিয়মে সন্ধ্যার ছায়া নেমে এলে পাখিরা বাশঁঝাড়ের সবুজ পাতার নিরাপদ আশ্রয়ে ঢুকে যায়। রাত হলে কিচির-মিচির অনেকটা থেমে যায়।
পাখি বাড়ি নিয়ে কথা হয় রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আছে। কোনো শিকারি পাখি শিকার করতে আসলে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
পাখির এমন একটি নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মৌলভীবাজার কুলাউড়া সড়কের পাশে গয়ঘর গ্রামের মাসুক মিয়া ও তার প্রতিবেশী সন্তুষ দেবের বাড়ি। বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই পাখির বিষ্ঠা আর গায়ের আষ্টে গন্ধ। বাঁশ বনের নিচে গিয়ে দেখা যায় পাখির বিষ্ঠায় কচুপাতা ও সবুজ ঘাস সাদা হয়ে রয়েছে।
বাড়ির গৃহিণী ফাতেমা বেগম বলেন, পাখিরা এখানে নিরাপদে আছে। তাই গন্ধ হলেও আমাদের ভলো লাগে। দিন রাত পাখিরা কিচিরমিচির করে। পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। আমাদের বাড়ি যেন পাখির মেলা। সকাল হলে পাখিরা উড়ে যায়। সন্ধ্যা হলে ফিরে আসতে থাকে। আমার প্রবাসী ছেলেরা প্রবাস থেকে ফোন করে পাখির খবরা-খবর নেয়।
বাড়ির মালিক মানিক মিয়া বলেন, প্রথম প্রথম পাখির গায়ের গন্ধ খারাপ লাগলেও এখন ভলো লাগে। পাখির কলকাকলিতে মন ভরে। কিছু পাখি সারাদিন বাসায় থাকে। প্রতিটি বাঁশে ছয় সাতটি করে পাখির বাসা রয়েছে। এর মধ্যে দু’দফা বাচ্চা দিয়েছে। পাখিরা প্রতিবেশীর মত সকালে আমাদের হাঁস মোরগের সাথে উঠানের মাটিতে চলাফেরা করে।
গত ৯ জুলাই পড়ন্ত বিকেলে পাখি বাড়ির পশ্চিমের বাঁশ বনের কাছে গেলে দেখা মিলে ঝাকে ঝাকে সাদা সাদা বক পাখির। বাঁশঝাড়ের সবুজ পাতার নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে পাখিরা। মাঝে মাঝে কালো রংয়ের পানকৌড়িরাও বাঁশঝাড়ের চূড়ায় বসছে। আষাঢ়ের মেঘ ভরা আকাশ থেকে নামছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির ফাঁকে রোদের ঝিলিকে সবুজ বাঁশঝাড় যেন ছোপ ছোপ সাদা রংয়ে লেপ্টে গেছে। বেলা যত পড়ছে পাখিরা কাছের মাঠ থেকে উড়া-উড়ি করে নীড়ে ফিরছে। আর বাসায় থাকা বাচ্চাদের কিচিমিচির বাড়ছে। কোনটি আবার ডানা ঝাপটিয়ে বাচ্চাদের মুখে খাবার দিচ্ছে।
পাশের বাড়ির সন্তুষ দেব বলেন, তিন বছর ধরে পাখিরা আশ্রয় নিয়েছে। যদিও গাছ-পালা তরুলতার ক্ষতি হয় তবুও আমরা পাখি তাড়াই না। আমাদের বাড়িতে সারাবছরই পাখি থাকে। তবে বৈশাখ মাস থেকে ঝাকে ঝাকে পাখিরা আসে। এ সময় পাখিরা বাসা বুনে বাচ্চা ফোটায়। বাচ্চারা উড়াল দেয়া শিখে ফেললে আশ্বিনে আস্তে আস্তে চলে যায়। বক ছাড়াও আছে পানকৌড়ি শালিক ঘুঘুসহ বিভিন্ন জাতের দেশীয় পাখি।
শিক্ষিকা তামান্না বেগম বলেন, আমরা পাখিদের বিরক্ত করি না। কেউ শিকার করতে আসলে বাড়ির সবাই মিলে বাধা দেন। শিকারির উৎপাত থাকলেও আমরা সেটা প্রশাসনকে জানিয়ে রেখেছি।
প্রাইভেট টিউশনি করতে আসা শিক্ষিকা শিখা রাণী ভট্টাচার্য বলেন, পাখি তার নিরাপদ আশ্রয় খুঁজেই বসবাস করতে থাকে। প্রতিদিন বিকেল বেলা এসে একবার পাখি দেখি। খুব ভালো লাগে, আনন্দ পাই। পথচারী সাজু মিয়া বলেন, আসা যাওয়ার পথে পাখি দেখে আনন্দ পাই।
প্রতিবেশী হাসনা বেগম বলছেন, রাস্তার পাশে বাড়ি থাকায় অনেক সময় কুলাউড়া, বড়লেখা থেকে শিকারীরা পাখি শিকার করতে আসে। তখন আমরা এলাকার লোকদের নিয়ে তাদের প্রতিরোধ করি। নিরাপদে আশ্রয় নেয়া পাখিদের মারতে দেই না। এসব পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। পাখির সাথেই আমাদের বসবাস।
পাখি বাড়ির মাসুক মিয়ার ছেলে গয়ঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র শিপু মিয়া বলছে, পাখির ছানা ধরার শখ থাকলেও বাড়িতে এতো পাখির ছানা আছে আমরা ধরি না। ছানাগুলো আমাদের কাছে আসলে আমরা বাঁশঝাড়ের বাসায় তুলে রাখি।
সারদিনের পর প্রকৃতির নিয়মে সন্ধ্যার ছায়া নেমে এলে পাখিরা বাশঁঝাড়ের সবুজ পাতার নিরাপদ আশ্রয়ে ঢুকে যায়। রাত হলে কিচির-মিচির অনেকটা থেমে যায়।
পাখি বাড়ি নিয়ে কথা হয় রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসী আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আছে। কোনো শিকারি পাখি শিকার করতে আসলে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
No comments