বারকি শ্রমিক ইব্রাহিম যেভাবে ইয়াবা ডিলার
এক
সময় বারকি শ্রমিক ছিল ইব্রাহিম। ‘নাও বাইতো’ ধলাই নদীতে। হাত দিয়ে পাথর
তুলতো কোয়ারিতে। আর সেই পাথর এনে বিক্রি করে যা আয় হতো তাই দিয়ে চলতো
সংসার। সেই ইব্রাহিমের এখন অনেক টাকা। আর এই টাকার উৎস হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা।
মাদক জগতে ছড়িয়ে পড়েছে ইব্রাহিমের নাম। সন্ধ্যা হলেই এজেন্টরা এসে তার
কাছ থেকে ইয়াবা নেয়।
গোটা উপজেলাজুড়ে বিক্রি করা হয় তার মাধ্যমে আসা ইয়াবা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না ইব্রাহিমের। কোম্পানীগঞ্জের পুলিশের এসআই বদিউজ্জামান কয়েক দিন ধরে তার ইয়াবা সাম্রাজ্যের অনুসন্ধান করেন। এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে তাকে নিজ আস্তানা থেকেই গ্রেপ্তার করেন। আর গ্রেপ্তারের পর ইব্রাহিমের ইয়াবা জগতের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে। পুলিশ ইব্রাহিমের আরেক সহযোগী বদরুলকেও গ্রেপ্তার করে। সঙ্গে উদ্ধার করা হয় ৩০০ পিস ইয়াবা। ইব্রাহিম গ্রেপ্তারের পর কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া ও আশপাশ এলাকায় ইয়াবার এজেন্টরা গাঢাকা দিয়েছে। ইব্রাহিমের পুরো নাম ইব্রাহিম খলিল। বয়স ৩৫ কিংবা ৩৬ বছর। বাড়ি সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার পাড়ুয়া বদিকোনা গ্রামে। পিতা নুরুল ইসলাম। কোম্পানীগঞ্জের মানুষ ইব্রাহিমকে এক নামেই চেনেন। ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সে। কিন্তু সব সময়ই ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গত ৩০শে জুলাই কোম্পানীগঞ্জের পুলিশ পাড়ুয়া এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ৪৩ পিস ইয়াবা সহ নিজাম নামের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তাকে গ্রেপ্তারের পরপরই পুলিশের কাছে ইব্রাহিমের ইয়াবা সাম্রাজ্যের নানা তথ্য চলে আসে। এসআই বদিউজ্জামান চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করতে অনুসন্ধান শুরু করেন। তিনি সিভিল ড্রেসে এলাকাও পরিদর্শন করেন। দেখেন, ইব্রাহিমের ইয়াবা বিক্রির ধরনও। পাড়ুয়া বদিকোনা গ্রামের নিজ বাড়িতেই ইয়াবা বিক্রির হাট বসিয়েছে ইব্রাহিম। সে মূলত একজন ইয়াবা ডিলার। তার কাছ থেকে কোম্পানীগঞ্জের অনেক এলাকার এজেন্টরা এসে ইয়াবা নিয়ে যায়। আর তার হাতে ইয়াবার চালান আসে সিলেট থেকে। মাঝে মধ্যে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকেও আসে ইয়াবার চালান। এসব চালান সে তার নিজ বাড়িতে রেখেই বিক্রি করতো। ইব্রাহিমের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানার পর শুক্রবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালায় তার বাড়িতে। এ সময় ইব্রাহিম বাড়িতে বসেই ইয়াবা বিক্রি করছিল। পাশাপাশি তার বাড়ির একটি কক্ষে ইয়াবা সেবনের জন্য মাদকসেবীরাও ছিল। এমন সময় পুলিশ অভিযান চালালে ইয়াবা বিক্রেতা ও সেবনকারীরা পালাতে থাকে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে থাকে ইব্রাহিম ও বদরুল। পুলিশ তাদের পিছু নেয়। অবশেষে অনেক ধস্তাধস্তির পর পুলিশ কুখ্যাত ইব্রাহিম ও তার অন্যতম সহযোগী বদরুলকে গ্রেপ্তার করে। বদরুলের বাড়িও একই গ্রামে। পরে তাদের কাছ থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ফেনসিডিলের চালানও আটক করে। কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই বদিউজ্জামান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করতে চাইলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পিছু ধাওয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সে ইয়াবা বিকিকিনির কথা স্বীকার করেছে। এদিকে ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সব সময় তৎপর। এ কারণে গত এক মাসের অভিযানে চিহ্নিত সহ অন্তত ২০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইব্রাহিমের মাদক ব্যবসার সময় বেশি দিন হয়নি। বছর দেড়েক থেকে সে ইয়াবা বিক্রি করছে। এবং ৬ মাসের মধ্যে সে ডিলার হয়ে যায়। এখন তার আস্তানায় যায় বড় বড় ইয়াবার চালান। এসব চালান সে বিক্রি করে এজেন্টদের মাধ্যমে। এ কারণে বদলে গেছে তার জীবনধারা। বেশিদিন আগের কথা নয়। ৪-৫ বছর আগের কথা। ওই সময় সরব ছিল কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারি। ওই কোয়ারিতে বারকি শ্রমিকের কাজ করতো ইব্রাহিম খলিল। পরবর্তীতে বারকি নৌকা কিনে পাথর বিকিকিনি করতো। পরবর্তীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে সে পাথর বিক্রির ধান্ধা বের করে। কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন ক্রাশার মিল থেকে সে বাকিতে পাথর কিনতো। আর সেই পাথর বিক্রি করতো গ্রাহকের কাছে। এভাবে কিছুদিন সে জীবিকা নির্বাহ করে। এক পর্যায়ে কয়েক জন ব্যবসায়ী প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এতে তার উপর ক্ষুব্ধ হন ব্যবসায়ীরা। প্রায় দুই বছর আগে ইব্রাহিম খলিল পাওনাদারদের চাপের মুখে এলাকা ছাড়ে। কিছু দিন বাইরে থাকে। এরপর গোপনে ফিরে এলাকায়। শুরু করে ইয়াবা বিক্রি। তখন তার ছিল টিনের চালার ঘর। অভাব অনটনের সংসার। কিন্তু ইয়াবা বিক্রি বদলে দেয় তাকে। ৬ মাস আগে দুই তলা ফাউন্ডেশনের বিল্ডিং তুলেন ইব্রাহিম। এর মধ্যে একটি রুম তিনি ইয়াবা বিক্রির ও সেবনের জন্য বরাদ্দ রাখেন। সখ্য ছিল থানা পুলিশের কয়েকজন নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে। এ কারণে মাত্র দেড় বছরেই ইয়াবা বিক্রি করে টাকার মালিক বনে যায় সে। ইব্রাহিমের সহযোগী বদরুলও এক সময় বন্ধু ইব্রাহিমের সঙ্গে নদীতে কাজ করতো। এরপর থেকে ইব্রাহিমের নানা অপকর্মের সহযোগীও সে। গ্রেপ্তারের সময়ও সে সঙ্গে ছিল ইব্রাহিমের।
গোটা উপজেলাজুড়ে বিক্রি করা হয় তার মাধ্যমে আসা ইয়াবা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না ইব্রাহিমের। কোম্পানীগঞ্জের পুলিশের এসআই বদিউজ্জামান কয়েক দিন ধরে তার ইয়াবা সাম্রাজ্যের অনুসন্ধান করেন। এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে তাকে নিজ আস্তানা থেকেই গ্রেপ্তার করেন। আর গ্রেপ্তারের পর ইব্রাহিমের ইয়াবা জগতের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসে। পুলিশ ইব্রাহিমের আরেক সহযোগী বদরুলকেও গ্রেপ্তার করে। সঙ্গে উদ্ধার করা হয় ৩০০ পিস ইয়াবা। ইব্রাহিম গ্রেপ্তারের পর কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া ও আশপাশ এলাকায় ইয়াবার এজেন্টরা গাঢাকা দিয়েছে। ইব্রাহিমের পুরো নাম ইব্রাহিম খলিল। বয়স ৩৫ কিংবা ৩৬ বছর। বাড়ি সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার পাড়ুয়া বদিকোনা গ্রামে। পিতা নুরুল ইসলাম। কোম্পানীগঞ্জের মানুষ ইব্রাহিমকে এক নামেই চেনেন। ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সে। কিন্তু সব সময়ই ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গত ৩০শে জুলাই কোম্পানীগঞ্জের পুলিশ পাড়ুয়া এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ৪৩ পিস ইয়াবা সহ নিজাম নামের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তাকে গ্রেপ্তারের পরপরই পুলিশের কাছে ইব্রাহিমের ইয়াবা সাম্রাজ্যের নানা তথ্য চলে আসে। এসআই বদিউজ্জামান চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করতে অনুসন্ধান শুরু করেন। তিনি সিভিল ড্রেসে এলাকাও পরিদর্শন করেন। দেখেন, ইব্রাহিমের ইয়াবা বিক্রির ধরনও। পাড়ুয়া বদিকোনা গ্রামের নিজ বাড়িতেই ইয়াবা বিক্রির হাট বসিয়েছে ইব্রাহিম। সে মূলত একজন ইয়াবা ডিলার। তার কাছ থেকে কোম্পানীগঞ্জের অনেক এলাকার এজেন্টরা এসে ইয়াবা নিয়ে যায়। আর তার হাতে ইয়াবার চালান আসে সিলেট থেকে। মাঝে মধ্যে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকেও আসে ইয়াবার চালান। এসব চালান সে তার নিজ বাড়িতে রেখেই বিক্রি করতো। ইব্রাহিমের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানার পর শুক্রবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালায় তার বাড়িতে। এ সময় ইব্রাহিম বাড়িতে বসেই ইয়াবা বিক্রি করছিল। পাশাপাশি তার বাড়ির একটি কক্ষে ইয়াবা সেবনের জন্য মাদকসেবীরাও ছিল। এমন সময় পুলিশ অভিযান চালালে ইয়াবা বিক্রেতা ও সেবনকারীরা পালাতে থাকে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে থাকে ইব্রাহিম ও বদরুল। পুলিশ তাদের পিছু নেয়। অবশেষে অনেক ধস্তাধস্তির পর পুলিশ কুখ্যাত ইব্রাহিম ও তার অন্যতম সহযোগী বদরুলকে গ্রেপ্তার করে। বদরুলের বাড়িও একই গ্রামে। পরে তাদের কাছ থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ফেনসিডিলের চালানও আটক করে। কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই বদিউজ্জামান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করতে চাইলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পিছু ধাওয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সে ইয়াবা বিকিকিনির কথা স্বীকার করেছে। এদিকে ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সব সময় তৎপর। এ কারণে গত এক মাসের অভিযানে চিহ্নিত সহ অন্তত ২০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইব্রাহিমের মাদক ব্যবসার সময় বেশি দিন হয়নি। বছর দেড়েক থেকে সে ইয়াবা বিক্রি করছে। এবং ৬ মাসের মধ্যে সে ডিলার হয়ে যায়। এখন তার আস্তানায় যায় বড় বড় ইয়াবার চালান। এসব চালান সে বিক্রি করে এজেন্টদের মাধ্যমে। এ কারণে বদলে গেছে তার জীবনধারা। বেশিদিন আগের কথা নয়। ৪-৫ বছর আগের কথা। ওই সময় সরব ছিল কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারি। ওই কোয়ারিতে বারকি শ্রমিকের কাজ করতো ইব্রাহিম খলিল। পরবর্তীতে বারকি নৌকা কিনে পাথর বিকিকিনি করতো। পরবর্তীতে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে সে পাথর বিক্রির ধান্ধা বের করে। কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন ক্রাশার মিল থেকে সে বাকিতে পাথর কিনতো। আর সেই পাথর বিক্রি করতো গ্রাহকের কাছে। এভাবে কিছুদিন সে জীবিকা নির্বাহ করে। এক পর্যায়ে কয়েক জন ব্যবসায়ী প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এতে তার উপর ক্ষুব্ধ হন ব্যবসায়ীরা। প্রায় দুই বছর আগে ইব্রাহিম খলিল পাওনাদারদের চাপের মুখে এলাকা ছাড়ে। কিছু দিন বাইরে থাকে। এরপর গোপনে ফিরে এলাকায়। শুরু করে ইয়াবা বিক্রি। তখন তার ছিল টিনের চালার ঘর। অভাব অনটনের সংসার। কিন্তু ইয়াবা বিক্রি বদলে দেয় তাকে। ৬ মাস আগে দুই তলা ফাউন্ডেশনের বিল্ডিং তুলেন ইব্রাহিম। এর মধ্যে একটি রুম তিনি ইয়াবা বিক্রির ও সেবনের জন্য বরাদ্দ রাখেন। সখ্য ছিল থানা পুলিশের কয়েকজন নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে। এ কারণে মাত্র দেড় বছরেই ইয়াবা বিক্রি করে টাকার মালিক বনে যায় সে। ইব্রাহিমের সহযোগী বদরুলও এক সময় বন্ধু ইব্রাহিমের সঙ্গে নদীতে কাজ করতো। এরপর থেকে ইব্রাহিমের নানা অপকর্মের সহযোগীও সে। গ্রেপ্তারের সময়ও সে সঙ্গে ছিল ইব্রাহিমের।
No comments