মশা নিধন সারাবছরঃ উত্তর সিটির ১০ বছরের বিশেষ পরিকল্পনা by মশিউর রহমান খান
ডেঙ্গু
ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে শহরের প্রতিটি অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে
১০ বছর মেয়াদী এক বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন
(ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কলকাতার পৌর সংস্থার ডেপুটি মেয়রের
সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পরই ডিএনসিসি মেয়র
আতিকুল ইসলাম কলকাতার মতো তিন স্তরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের
উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী ঢেলে
সাজাতে ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে ডিএনসিসি
সূত্রে জানা গেছে। ভিডিও কনফারেন্সে কলকাতার ডেপুটি মেয়র ডেঙ্গু প্রতিরোধে
২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ১০ বছরে তা অনেকটা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে
জানান। তাই ডিএনসিসি মেয়র এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে মনোযোগ
দিতে চান বলে জানা গেছে। ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী
সারাবছরই সব অলিগলি ও ফাঁকা কিংবা জনবহুল সব স্থানে নিয়মিতই পরিচালিত হবে
মশক নিধন কর্মসূচী। শহরের প্রতিটি অলিগলি প্রতিনিয়তই পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে
করা হবে ঝকঝকে তকতকে। শহরের কোথাও কোন ময়লা আবর্জনা পচা কোন বস্তুই জমে
থাকতে দেয়া হবে না। ডেঙ্গুও চিকুনগুনিয়া, টাইফয়েড থেকে শুরু করে পানিবাহিত
ধূলিবাহিত বা ময়লা আবর্জনা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ সৃষ্টির কারণে কোন ধরনের
ছোঁয়াছে রোগ যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য নেয়া হবে নানা ব্যবস্থা। অতি
গুরুত্বের সঙ্গে এসব কার্যক্রম অতি গুরুত্বের সঙ্গে কঠোর হস্তে তা
মনিটরিংয়ের জন্য থাকবে বিশেষ জনবল। প্রতি ওয়ার্ডে গঠন করা হবে বিশেষ মশক
নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি। যাদের কাজ নিয়ন্ত্রণে কাজ
করবে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পরিকল্পনায় ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়াসহ সব প্রকার মশার হাত থেকে নাগরিকদের সুরক্ষায় ও কোনক্রমেই যেন মশাবাহিত রোগদ্বারা নাগরিকদের আক্রান্ত হতে না হয় তার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে শুরু করে মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত সব পর্যায়ের জনবল কাঠামোই পরিবর্তন করা হবে বলে জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মোঃ আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মশক নিধন কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে ও কিভাবে ডেঙ্গু মশাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে কলকাতা পৌর সংস্থা তা সরজমিনে দেখতে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে অতি দ্রুতই একটি কমিটিকে কলকাতা পাঠানো হবে। কমিটিতে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মশখ নিধন সংক্রান্ত কমিটির সদস্যরা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে। এই কমিটি সরজমিনে পরিদর্শন শেষে তারা তাদের লিখিত মতামত প্রদান করবেন মেয়রের কাছে। মেয়র তাদের মতামত ও রাজধানী থেকে মশা নিধনে ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে কিভাবে শতভাগ বাস্তবায়ন করা যায় তা বিশেষভাবে বিবেচনা করবে। মশার সঙ্গে যেহেতু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ সংযোগ রয়েছে তাই ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ একই সঙ্গে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে ডিএনসিসিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে গড়ে মাত্র ৫ জন কর্মী কাজ করে। এসব কর্মী রাস্তায় হেঁটে হেঁটে সকালে ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকায় মশার ওষুধ ছিঁটানোর কাজ করে। তবে কোন কোন এলাকায় মশক নিধনের কর্মীরা বছরেও একবার যান না বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে যা বহু পুরনো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মশক নিধন কর্মীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এখন থেকে হেঁটে হেঁটে মশার ওষুধ ছিঁটানোর পরিবর্তে প্রাথমিকভাবে মোটরসাইকেলে করে মশার ওষুধ ছিঁটাবেন। এতে করে অতি অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ স্থানে মশার ওষুধ ছিঁটানো সম্ভব হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি মশক নিধন কর্মীর সঙ্গে একটি করে ট্র্যাকার লাগানো হবে। ফলে মশক নিধনের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে কি না তা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই মনিটরিং করা হবে। ফলে কোন এলাকায় না গিয়ে কোন মশক নিধন কর্মী বসে থাকতে পারবেন না। এছাড়া নতুন পরিকল্পনায় মশক নিধনের বর্তমান ওষুধ পরিবর্তন করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আইসিসিডিআরবি বা জাতীয় উদরাময় কেন্দ্রের মতো গ্রহণযোগ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মশার ওষুধ পরীক্ষার মাধ্যমে দেয়া সনদ প্রাপ্তি সাপেক্ষেই এসব ওষুধ মশা মারতে ব্যবহার করা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্ষাকাল বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয় সারাবছরই মশক নিধন কর্মীদের নিয়মিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সমাজের সুশীলদের নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে। উক্ত কমিটিতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের পদধারী নেতা, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার প্রধানরা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সরকারী উর্ধতন আমলা ও সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে রাখা হবে। কমিটিতে সাত সদস্যের একটি বোর্ড থাকবে। এর মধ্যে অন্তত ৪ সদস্য মশক নিধন কর্মী এলাকায় সঠিকভাবে সময়মতো কাজ করেছে তা নিশ্চিত করার পর স্বাক্ষর প্রদান করলেই উক্ত মশক নিধন কর্মীর বেতন প্রদান করবে সিটি কর্পোরেশন।
এর বাইরে সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট কর্মীরা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না বা কোন ওয়ার্ডের কোন স্থানে মশার উৎপত্তিস্থল রয়েছে বা ঠিকমতো মশা নিধন হচ্ছে কি না তাও সরজমিনে প্রতিদিনই পরিদর্শন করবে। একইসঙ্গে উক্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যেই তাদের বিস্তারিত রিপোর্ট সিটি কর্পোরেশনের কাছে জমা দেবেন। উক্ত রিপোর্ট দেখেই স্বাস্থ্য শাখা বিস্তারিত বিষয় বিবেচনায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। একইসঙ্গে মশক নিধনে বা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার অবহেলা করলে বা কোন বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে মেয়রের কাছে পরামর্শ গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য শাখা। এর বাইরে কেন্দ্রীয়ভাবে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি তাদের ওয়ার্ডে বিভিন্ন সময় নতুন কোন পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হলে বিভিন্ন সুপারিশ করবে। যা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় কমিটির।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য চলমান জনবল সঙ্কট পুরোপুরি দূর করা হবে। বর্তমানে ওয়ার্ড প্রতি পাঁচজন মশক নিধন কর্মীর পরিবর্তে দ্বিগুণ তিনগুণ বা কোন কোন ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের আয়তন ও চাহিদা বুঝে পাঁচগুণ পর্যন্ত জনবল বাড়ানো হবে। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনের অর্গানোগ্রাম বদলাতে সরকারের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে। এছাড়া মশক নিধন কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, আবাসস্থল নির্মাণ, বেতন ভাতাসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করবে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। ১০ বছর মেয়াদী এ পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকারের সর্বোচ্চ সহায়তায় সিটি কর্পোরেশন কিভাবে অতি দ্রুতই তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে তার জন্য মেয়র সরকারের সব স্তরে এর অতি প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে আলোচনা সভা করবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নগরকে শতভাগ পরিচ্ছন্ন রাখতে ময়লার ট্রাককে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে। একইসাথে প্রতিটি ট্রাকে একটি করে ট্র্যাকার লাগানো হবে। নগর ভবন থেকে পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম সকাল-বিকেল ও রাতে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এমনকি মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিটি ওয়ার্ড অফিস ও তাদের সুপারভাইজারদের শতভাগ ডিজিটাল হাজিরার আওতায় আনারও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেখানেই ময়লা আবর্জনা সেখানেই সঙ্গে সঙ্গেই কিভাবে পরিষ্কার করা যায় তার জন্য বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি জনবল প্রয়োজন হবে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী অতি দ্রুততার সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে ম্যাকানিক্যাল পদ্ধতিতে নিয়ে যাওয়া হবে। ক্রমান্বয়ে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে কম সময়ে ও কম খরচে বাস্তবায়ন করতে হাতের শলার ঝাড়ুর পরিবর্তে মেশিনের ঝাড়ু আনা হবে। এসব মেশিনে শলা লাগানো থাকবে বলে কম সময়েই রাস্তা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে মেশিন দিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করলে জনবল কম লাগার পাশপাশি অর্থিকভাবেও সাশ্রয় হবে। এছাড়া উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চলমান ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা রোড সুইপারের সংখ্যা অতি দ্রুততার সঙ্গে কিভাবে বাড়ানো যায় তার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে ড্রেন পরিষ্কারের জন্য উন্নতমানের যন্ত্র সংযোজন করা হবে। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে আবর্জনা সংগ্রহ করতে ও নির্দিষ্ট স্থানে তা জমা করতে উন্নতমানের ভ্যাহিকেল আনা হবে। এসব ভ্যাহিকেল দিয়ে কোন প্রকার দুর্গন্ধ ছড়াবে না। একইসঙ্গে ময়লাকে সম্পদে রূপান্তর করতে নেয়া হবে নানা বিশেষ উদ্যোগ। ডিএনসিসির মতে, কোন বর্জ্যইে আর যেন পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি না হয় তাই এসব বর্জ্য উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয়ে কাজে লাগিয়ে সম্পদে পরিণত করা হবে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিধনের মাধ্যমে চলা কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় পরিবেশবিদ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন দেশের এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের সবসময়ই পরামর্শ নেয়া হবে। সময়োপযোগী করতে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পরিদর্শনের জন্য দেশ-বিদেশে পাঠানো হবে। তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সফলভাবে প্রয়োগের মাধ্যমেই রাজধানী ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শঙ্কামুক্ত স্বাস্থ্যকর ঢাকা গড়তে কাজ করবে ডিএনসিসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়াসহ সব প্রকার মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে ও শহরের প্রতিটি অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ১০ বছর মেয়াদী এক বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। এ বিশেষ পরিকল্পনা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে ওয়ার্ড লেভেল, ব্যুরো লেভেল বা জোন এবং সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় লেভেল এই তিন স্তর থেকে মনিটরিং করা হবে। ২৪ ঘণ্টাই এর কার্যক্রম চলমান থাকবে। ঢাকা উত্তর সিটি মশকমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বর্তমানের তুলনায় জনবল বৃদ্ধি করা হবে। দৈনন্দিন কার্যক্রম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনার জন্য ক্রমান্বয়ে আমরা বর্তমানের ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে মেকানিক্যাল পদ্ধতিতে পরিচালিত করব। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আনা হবে উন্নতমানের পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি। আশা করি বর্তমান চলমান অনেক কিছুই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা কম সময়ে পাল্টে দিতে সক্ষম হব।
মেয়র বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে আমরা স্থানীয়দের অন্তর্ভুক্ত করে কাজ করব। স্থানীয়দের পরামর্শ গ্রহণ ও আমাদের কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কি না তার দায়িত্ব দেয়া হবে। তাদের দেয়া রিপোর্টরে মাধ্যমেই কেবল তাদের বেতন দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। হেঁটে হেঁটে মশা মারার পরিবর্তে কম সময়ে অধিক স্থানে ওষুধ ছিঁটাতে মোটরসাইকেলে ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতার তবে অতি দ্রুতই কিভাবে পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের সুফল মেলে তার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে ডিএনসিসি। ভিডিও কনফারেন্সে কলকাতা পৌর সংস্থার পরামর্শ ও মতামত অনুযায়ী কলকাতার মেয়র ডেঙ্গু প্রতিরোধে ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ১০ বছরে তা অনেকটা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে আমাদের মশক নিধনের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের বিশাল সম্পর্ক রয়েছে তাই আমরা মশক নিধনের পাশপাশি নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার ও মনিটরিংয়ের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে সুপারভাইজার নিয়োগ করব। যিনি প্রতিদিনই অফিসে এসে তার রিপোর্ট প্রদান করবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে তা সংরক্ষণের পর দৈনন্দিনই সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য শাখা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া রোড সুইপার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে নগরকে ঝকঝকে তকতকে রাখতে প্রয়োজনে বর্তমান সিটি কর্পোরেমনের অগ্রানোগ্রামও পরিবর্তন করা হবে। মূলথ আমরা চাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন যার মাধ্যমে চলমান ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া বা টাইফয়েডসহ কোন প্রকার মশাবাহিত রোগের প্রার্দুভাব না ঘটে। সারাবছরই মশক নিয়ে কার্যক্রম চলমান রাখতে চাই। সবার সহযোগিতা ও সচেতনা সৃষ্টির মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটিকে গড়তে চাই পরিবেশবান্ধব স্বাস্থ্যকর সুন্দর পরিচ্ছন্ন নগরী। এজন্য তিনি সবার আগে সকলের আগ্রহ সৃষ্টির মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিকল্পনায় ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়াসহ সব প্রকার মশার হাত থেকে নাগরিকদের সুরক্ষায় ও কোনক্রমেই যেন মশাবাহিত রোগদ্বারা নাগরিকদের আক্রান্ত হতে না হয় তার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে শুরু করে মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত সব পর্যায়ের জনবল কাঠামোই পরিবর্তন করা হবে বলে জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মোঃ আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মশক নিধন কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে ও কিভাবে ডেঙ্গু মশাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে কলকাতা পৌর সংস্থা তা সরজমিনে দেখতে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে অতি দ্রুতই একটি কমিটিকে কলকাতা পাঠানো হবে। কমিটিতে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মশখ নিধন সংক্রান্ত কমিটির সদস্যরা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে। এই কমিটি সরজমিনে পরিদর্শন শেষে তারা তাদের লিখিত মতামত প্রদান করবেন মেয়রের কাছে। মেয়র তাদের মতামত ও রাজধানী থেকে মশা নিধনে ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে কিভাবে শতভাগ বাস্তবায়ন করা যায় তা বিশেষভাবে বিবেচনা করবে। মশার সঙ্গে যেহেতু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ সংযোগ রয়েছে তাই ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ একই সঙ্গে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে ডিএনসিসিতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতি ওয়ার্ডে গড়ে মাত্র ৫ জন কর্মী কাজ করে। এসব কর্মী রাস্তায় হেঁটে হেঁটে সকালে ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকায় মশার ওষুধ ছিঁটানোর কাজ করে। তবে কোন কোন এলাকায় মশক নিধনের কর্মীরা বছরেও একবার যান না বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে যা বহু পুরনো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মশক নিধন কর্মীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এখন থেকে হেঁটে হেঁটে মশার ওষুধ ছিঁটানোর পরিবর্তে প্রাথমিকভাবে মোটরসাইকেলে করে মশার ওষুধ ছিঁটাবেন। এতে করে অতি অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ স্থানে মশার ওষুধ ছিঁটানো সম্ভব হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি মশক নিধন কর্মীর সঙ্গে একটি করে ট্র্যাকার লাগানো হবে। ফলে মশক নিধনের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে কি না তা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই মনিটরিং করা হবে। ফলে কোন এলাকায় না গিয়ে কোন মশক নিধন কর্মী বসে থাকতে পারবেন না। এছাড়া নতুন পরিকল্পনায় মশক নিধনের বর্তমান ওষুধ পরিবর্তন করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আইসিসিডিআরবি বা জাতীয় উদরাময় কেন্দ্রের মতো গ্রহণযোগ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মশার ওষুধ পরীক্ষার মাধ্যমে দেয়া সনদ প্রাপ্তি সাপেক্ষেই এসব ওষুধ মশা মারতে ব্যবহার করা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্ষাকাল বা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয় সারাবছরই মশক নিধন কর্মীদের নিয়মিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সমাজের সুশীলদের নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে। উক্ত কমিটিতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের পদধারী নেতা, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার প্রধানরা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সরকারী উর্ধতন আমলা ও সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে রাখা হবে। কমিটিতে সাত সদস্যের একটি বোর্ড থাকবে। এর মধ্যে অন্তত ৪ সদস্য মশক নিধন কর্মী এলাকায় সঠিকভাবে সময়মতো কাজ করেছে তা নিশ্চিত করার পর স্বাক্ষর প্রদান করলেই উক্ত মশক নিধন কর্মীর বেতন প্রদান করবে সিটি কর্পোরেশন।
এর বাইরে সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট কর্মীরা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না বা কোন ওয়ার্ডের কোন স্থানে মশার উৎপত্তিস্থল রয়েছে বা ঠিকমতো মশা নিধন হচ্ছে কি না তাও সরজমিনে প্রতিদিনই পরিদর্শন করবে। একইসঙ্গে উক্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যেই তাদের বিস্তারিত রিপোর্ট সিটি কর্পোরেশনের কাছে জমা দেবেন। উক্ত রিপোর্ট দেখেই স্বাস্থ্য শাখা বিস্তারিত বিষয় বিবেচনায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। একইসঙ্গে মশক নিধনে বা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার অবহেলা করলে বা কোন বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে মেয়রের কাছে পরামর্শ গ্রহণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য শাখা। এর বাইরে কেন্দ্রীয়ভাবে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি তাদের ওয়ার্ডে বিভিন্ন সময় নতুন কোন পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হলে বিভিন্ন সুপারিশ করবে। যা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় কমিটির।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য চলমান জনবল সঙ্কট পুরোপুরি দূর করা হবে। বর্তমানে ওয়ার্ড প্রতি পাঁচজন মশক নিধন কর্মীর পরিবর্তে দ্বিগুণ তিনগুণ বা কোন কোন ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের আয়তন ও চাহিদা বুঝে পাঁচগুণ পর্যন্ত জনবল বাড়ানো হবে। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনের অর্গানোগ্রাম বদলাতে সরকারের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে। এছাড়া মশক নিধন কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, আবাসস্থল নির্মাণ, বেতন ভাতাসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করবে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। ১০ বছর মেয়াদী এ পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকারের সর্বোচ্চ সহায়তায় সিটি কর্পোরেশন কিভাবে অতি দ্রুতই তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে তার জন্য মেয়র সরকারের সব স্তরে এর অতি প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে আলোচনা সভা করবে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নগরকে শতভাগ পরিচ্ছন্ন রাখতে ময়লার ট্রাককে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে। একইসাথে প্রতিটি ট্রাকে একটি করে ট্র্যাকার লাগানো হবে। নগর ভবন থেকে পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম সকাল-বিকেল ও রাতে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এমনকি মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতিটি ওয়ার্ড অফিস ও তাদের সুপারভাইজারদের শতভাগ ডিজিটাল হাজিরার আওতায় আনারও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যেখানেই ময়লা আবর্জনা সেখানেই সঙ্গে সঙ্গেই কিভাবে পরিষ্কার করা যায় তার জন্য বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি জনবল প্রয়োজন হবে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী অতি দ্রুততার সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে ম্যাকানিক্যাল পদ্ধতিতে নিয়ে যাওয়া হবে। ক্রমান্বয়ে এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সঠিকভাবে কম সময়ে ও কম খরচে বাস্তবায়ন করতে হাতের শলার ঝাড়ুর পরিবর্তে মেশিনের ঝাড়ু আনা হবে। এসব মেশিনে শলা লাগানো থাকবে বলে কম সময়েই রাস্তা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে মেশিন দিয়ে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করলে জনবল কম লাগার পাশপাশি অর্থিকভাবেও সাশ্রয় হবে। এছাড়া উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে চলমান ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা রোড সুইপারের সংখ্যা অতি দ্রুততার সঙ্গে কিভাবে বাড়ানো যায় তার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে ড্রেন পরিষ্কারের জন্য উন্নতমানের যন্ত্র সংযোজন করা হবে। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে আবর্জনা সংগ্রহ করতে ও নির্দিষ্ট স্থানে তা জমা করতে উন্নতমানের ভ্যাহিকেল আনা হবে। এসব ভ্যাহিকেল দিয়ে কোন প্রকার দুর্গন্ধ ছড়াবে না। একইসঙ্গে ময়লাকে সম্পদে রূপান্তর করতে নেয়া হবে নানা বিশেষ উদ্যোগ। ডিএনসিসির মতে, কোন বর্জ্যইে আর যেন পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি না হয় তাই এসব বর্জ্য উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয়ে কাজে লাগিয়ে সম্পদে পরিণত করা হবে। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিধনের মাধ্যমে চলা কার্যক্রম রাষ্ট্রীয় পরিবেশবিদ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন দেশের এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের সবসময়ই পরামর্শ নেয়া হবে। সময়োপযোগী করতে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও পরিদর্শনের জন্য দেশ-বিদেশে পাঠানো হবে। তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সফলভাবে প্রয়োগের মাধ্যমেই রাজধানী ঢাকাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শঙ্কামুক্ত স্বাস্থ্যকর ঢাকা গড়তে কাজ করবে ডিএনসিসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়াসহ সব প্রকার মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে ও শহরের প্রতিটি অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ১০ বছর মেয়াদী এক বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। এ বিশেষ পরিকল্পনা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। তৃণমূল পর্যায়ে ওয়ার্ড লেভেল, ব্যুরো লেভেল বা জোন এবং সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় লেভেল এই তিন স্তর থেকে মনিটরিং করা হবে। ২৪ ঘণ্টাই এর কার্যক্রম চলমান থাকবে। ঢাকা উত্তর সিটি মশকমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বর্তমানের তুলনায় জনবল বৃদ্ধি করা হবে। দৈনন্দিন কার্যক্রম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনার জন্য ক্রমান্বয়ে আমরা বর্তমানের ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে মেকানিক্যাল পদ্ধতিতে পরিচালিত করব। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আনা হবে উন্নতমানের পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি। আশা করি বর্তমান চলমান অনেক কিছুই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা কম সময়ে পাল্টে দিতে সক্ষম হব।
মেয়র বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে আমরা স্থানীয়দের অন্তর্ভুক্ত করে কাজ করব। স্থানীয়দের পরামর্শ গ্রহণ ও আমাদের কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে কি না তার দায়িত্ব দেয়া হবে। তাদের দেয়া রিপোর্টরে মাধ্যমেই কেবল তাদের বেতন দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। হেঁটে হেঁটে মশা মারার পরিবর্তে কম সময়ে অধিক স্থানে ওষুধ ছিঁটাতে মোটরসাইকেলে ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতার তবে অতি দ্রুতই কিভাবে পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের সুফল মেলে তার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে ডিএনসিসি। ভিডিও কনফারেন্সে কলকাতা পৌর সংস্থার পরামর্শ ও মতামত অনুযায়ী কলকাতার মেয়র ডেঙ্গু প্রতিরোধে ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ১০ বছরে তা অনেকটা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। তবে আমাদের মশক নিধনের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের বিশাল সম্পর্ক রয়েছে তাই আমরা মশক নিধনের পাশপাশি নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার ও মনিটরিংয়ের জন্য প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে সুপারভাইজার নিয়োগ করব। যিনি প্রতিদিনই অফিসে এসে তার রিপোর্ট প্রদান করবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে তা সংরক্ষণের পর দৈনন্দিনই সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য শাখা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া রোড সুইপার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে নগরকে ঝকঝকে তকতকে রাখতে প্রয়োজনে বর্তমান সিটি কর্পোরেমনের অগ্রানোগ্রামও পরিবর্তন করা হবে। মূলথ আমরা চাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন যার মাধ্যমে চলমান ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া বা টাইফয়েডসহ কোন প্রকার মশাবাহিত রোগের প্রার্দুভাব না ঘটে। সারাবছরই মশক নিয়ে কার্যক্রম চলমান রাখতে চাই। সবার সহযোগিতা ও সচেতনা সৃষ্টির মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটিকে গড়তে চাই পরিবেশবান্ধব স্বাস্থ্যকর সুন্দর পরিচ্ছন্ন নগরী। এজন্য তিনি সবার আগে সকলের আগ্রহ সৃষ্টির মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
No comments