রান্নাকে শিল্পের পর্যায়ে নিতে নারীর চাই একাগ্রতা ও সাহসিকতা by তাহমিনা সানি
তাহমিনা সানি |
রান্না
আমরা সবাই কম বেশি করে থাকি, কিন্তু ভালো রান্নার কথা এলে বিশিষ্ট
রন্ধনব্যক্তিত্ব ও গুণি মানুষ মেহেরুন নেসার কথাই অবধারিতভাবেই চলে আসে।
২০০৫ সাল থেকে টানা 'এটিএন বাংলায়' তার রান্নার অনুষ্ঠানগুলো বেশ
দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ম্যাগাজিন খুললেই পাওয়া যায় তার
দেয়া রেসিপিগুলো। আর তাতে কেবল আহারের বাহার নয়, ফুটে ওঠে স্বাদ, সাধ্য আর
পুষ্টির এক দারুণ সমন্বয়। সফল রন্ধনব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্প্রতি তিনি অর্জন
করেছে বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড। রান্না, পুষ্টি এবং একে কেন্দ্র করে নারীর এগিয়ে
চলা এসব নিয়েই কথা হলো তার সঙ্গে।
'আসলে রান্না তো বটেই- ভালো রান্না সম্পর্কে জানার একটা দারুণ সুযোগ হয়েছে আমার মায়ের কাছ থেকে। ছোট বেলায় মাকে দেখতাম একেবারে ভিনদেশি রান্না করতে। আব্বা পিএইচডি করার সুবাদে বিদেশ থেকে মাকে রান্নার একটা বই এনে দিয়েছিলেন। আর মহা উৎসাহে আমরা ভাইবোনরা মিলে মায়ের সঙ্গে রান্না রান্না খেলতাম। তখন মা ডাক রোস্ট, বিফ রোস্ট, স্মোকড ইলিশ, কাচ্চি বিরিয়ানি এসব করতেন। এভাবেই তার কাছ থেকে রান্না শেখা। পরে শ্বশুরবাড়িতে এলে আমি রান্নার প্রশংসা পেতে থাকি। ফলে আমার রান্নার উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। একপর্যায়ে আমি ভাবলাম, ভালো রান্না তো করতে পারছি, কিন্তু কম খরচে স্বাস্থ্যকর রান্না কী করে সবার কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। সেই সূত্রে টিভি চ্যানেলে রান্না শেখানোর একটা সুযোগ আমার হয়েছিল। সেখানেও যখন প্রশংসা পাচ্ছিলাম তখন মনে হলো কেন আমি পুষ্টিকর রান্নার ব্যাপারটা সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দিচ্ছি না? কেননা, আজকের যে প্রজন্ম, তারা যদি পুষ্টি ও মেধায় না বেড়ে ওঠে তাহলে কী করে দেশের উন্নয়ন হবে। আর এ জন্য একজন মাকেই অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে হয়। জানতে হয় কীভাবে ভিটামিন ও মিনারেলসের অপচয় না করে পরিবারের সবার জন্য খাদ্যেপুষ্টির সুষম সমন্বয় রক্ষা করা যায়।
একে একে অনেক নারী আমার কাছে রান্না শেখার জন্য আবদার করতে থাকে। তাই পরবর্তী সময়ে চিন্তা করলাম রান্না দিয়ে কিন্তু অনেকে আত্মনিভরশীল হতেই পারেন। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে যেখানে ইন্টারনেট সেবা এত প্রতুল সেখানে আগ্রহী নারীদের সুযোগ দেয়াই যায়। তাই গভর্নমেন্ট রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমি জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে কুকিং অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত করি। আমাদের মূলমন্ত্র ছিল- রান্না শিখুন, ঘরে বসেই আত্মনির্ভরশীল হোন। রান্না কোর্স শেষে ছোট্ট একটা ক্যাশ অ্যামাউন্ট দেয়া- যাতে করে তারা উদ্যোক্তার খাতায় সহজে নাম লেখাতে পারে। এরপর আমরা তাদের মনিটরিং করি যে, সত্যি তারা পারছে কিনা। প্রয়োজনে আরও সাহায্য তারা পায়। এভাবে বাংলাদেশের প্রচুর গরিব মেয়েদের রান্না শিখিয়েছি। তারা যখন আনন্দের সঙ্গে জানায় যে তারা এখন নিজেরাই আত্মনির্ভরশীল, নিজেরাই এখন রান্না করে অর্থোপার্জন করছে- তখন সত্যি আনন্দে মনটা ভরে ওঠে।
রান্না একটা শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে যদি আত্মনির্ভরশীলতা জায়গাটা তৈরি হয় তাহলে বাংলাদেশের অনেক মেয়েরা শত বাধা বিপত্তি পার করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। তবে একজন নারী যখন উদ্যোক্তা তখন অবধারিতভাবেই আরও প্রতিযোগী তৈরি হয়েই যায়। তবে এ ক্ষেত্রে নিজ প্রোডাক্টেও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও গুণগত মানের দিকে লক্ষ্য রেখে খাদ্য তৈরি করলে অবশ্যই সে উদ্যোক্তা ভালো সাড়াই পাবেন। তা ছাড়া এখন যে ভেজালের যুগ, এখানে ভালো খাবার পাওয়ার সুযোগ কোথায়? পুষ্টির কথা তো বাদই। তবে হ্যা। সততার সঙ্গে যদি কোনো নারী তার রান্নার প্রতি মনোযোগী হয়, আর রান্নাকে দারুণ একটা শিল্পের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় রাখে তবে তিনি সফল হবেনই। সঙ্গে থাকতে হবে একাগ্রতা ও সাহসিকতা। নারীরা এগিয়ে যাবেই।'
'আসলে রান্না তো বটেই- ভালো রান্না সম্পর্কে জানার একটা দারুণ সুযোগ হয়েছে আমার মায়ের কাছ থেকে। ছোট বেলায় মাকে দেখতাম একেবারে ভিনদেশি রান্না করতে। আব্বা পিএইচডি করার সুবাদে বিদেশ থেকে মাকে রান্নার একটা বই এনে দিয়েছিলেন। আর মহা উৎসাহে আমরা ভাইবোনরা মিলে মায়ের সঙ্গে রান্না রান্না খেলতাম। তখন মা ডাক রোস্ট, বিফ রোস্ট, স্মোকড ইলিশ, কাচ্চি বিরিয়ানি এসব করতেন। এভাবেই তার কাছ থেকে রান্না শেখা। পরে শ্বশুরবাড়িতে এলে আমি রান্নার প্রশংসা পেতে থাকি। ফলে আমার রান্নার উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। একপর্যায়ে আমি ভাবলাম, ভালো রান্না তো করতে পারছি, কিন্তু কম খরচে স্বাস্থ্যকর রান্না কী করে সবার কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। সেই সূত্রে টিভি চ্যানেলে রান্না শেখানোর একটা সুযোগ আমার হয়েছিল। সেখানেও যখন প্রশংসা পাচ্ছিলাম তখন মনে হলো কেন আমি পুষ্টিকর রান্নার ব্যাপারটা সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে দিচ্ছি না? কেননা, আজকের যে প্রজন্ম, তারা যদি পুষ্টি ও মেধায় না বেড়ে ওঠে তাহলে কী করে দেশের উন্নয়ন হবে। আর এ জন্য একজন মাকেই অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে হয়। জানতে হয় কীভাবে ভিটামিন ও মিনারেলসের অপচয় না করে পরিবারের সবার জন্য খাদ্যেপুষ্টির সুষম সমন্বয় রক্ষা করা যায়।
একে একে অনেক নারী আমার কাছে রান্না শেখার জন্য আবদার করতে থাকে। তাই পরবর্তী সময়ে চিন্তা করলাম রান্না দিয়ে কিন্তু অনেকে আত্মনিভরশীল হতেই পারেন। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে যেখানে ইন্টারনেট সেবা এত প্রতুল সেখানে আগ্রহী নারীদের সুযোগ দেয়াই যায়। তাই গভর্নমেন্ট রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আমি জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে কুকিং অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত করি। আমাদের মূলমন্ত্র ছিল- রান্না শিখুন, ঘরে বসেই আত্মনির্ভরশীল হোন। রান্না কোর্স শেষে ছোট্ট একটা ক্যাশ অ্যামাউন্ট দেয়া- যাতে করে তারা উদ্যোক্তার খাতায় সহজে নাম লেখাতে পারে। এরপর আমরা তাদের মনিটরিং করি যে, সত্যি তারা পারছে কিনা। প্রয়োজনে আরও সাহায্য তারা পায়। এভাবে বাংলাদেশের প্রচুর গরিব মেয়েদের রান্না শিখিয়েছি। তারা যখন আনন্দের সঙ্গে জানায় যে তারা এখন নিজেরাই আত্মনির্ভরশীল, নিজেরাই এখন রান্না করে অর্থোপার্জন করছে- তখন সত্যি আনন্দে মনটা ভরে ওঠে।
রান্না একটা শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে যদি আত্মনির্ভরশীলতা জায়গাটা তৈরি হয় তাহলে বাংলাদেশের অনেক মেয়েরা শত বাধা বিপত্তি পার করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। তবে একজন নারী যখন উদ্যোক্তা তখন অবধারিতভাবেই আরও প্রতিযোগী তৈরি হয়েই যায়। তবে এ ক্ষেত্রে নিজ প্রোডাক্টেও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও গুণগত মানের দিকে লক্ষ্য রেখে খাদ্য তৈরি করলে অবশ্যই সে উদ্যোক্তা ভালো সাড়াই পাবেন। তা ছাড়া এখন যে ভেজালের যুগ, এখানে ভালো খাবার পাওয়ার সুযোগ কোথায়? পুষ্টির কথা তো বাদই। তবে হ্যা। সততার সঙ্গে যদি কোনো নারী তার রান্নার প্রতি মনোযোগী হয়, আর রান্নাকে দারুণ একটা শিল্পের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় রাখে তবে তিনি সফল হবেনই। সঙ্গে থাকতে হবে একাগ্রতা ও সাহসিকতা। নারীরা এগিয়ে যাবেই।'
No comments