চাকার নিচে পিষ্ট দেবপাড়ার স্বপ্ন
কত
স্বপ্ন ছিল তার চোখে। একদিন বড় হবে। পিএইচডি করবে। রাজনীতিবিদ হয়ে মন্ত্রী
হবে। এরপর মানুষের সেবা করবে।- এমন স্বপ্নাতুর তরুণ ওয়াসিম আব্বাসের সেই
স্বপ্ন ঘাতক চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে গেল। বুঝ ধরাতে পারছেন না স্বজনরা।
কান্নার রোল পড়েছে নবীগঞ্জের গাছঘেরা শ্যামল গা দেবপাড়ার রুদ্র গ্রামে।
কাঁদছে গোটা দেবপাড়ার মানুষ।
নবীগঞ্জও কাঁদছে। শোকে কাতর সবাই। একটি স্বপ্নের এমন মৃত্যু কাঙ্ক্ষিত ছিল না কারো জন্য। এলাকার মানুষের কাছে প্রিয়জন ছিল ওয়াসিম। ছুটি পেলেই ছুটে আসতো দেবপাড়া। গ্রামের হাটবাজার, খেলার মাঠ মাতিয়ে রাখতো সে। এলাকার মানুষকে স্বপ্ন দেখাতো সব সময়। বদলে যাওয়া দেবপাড়ার নতুন সারথী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এ কারণে গতকাল ওয়াসিমের জানাজায় ছিল মানুষের ঢল। সবার চোখে ছিল শোকের জল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা যখন ওয়াসিমকে দেবপাড়ার রুদ্রগ্রামে শেষ বিদায় জানিয়ে আসে তখন বারবার পিছনে ফিরে তাকা‘য় ওয়াসিমের জন্য। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে তারা ওয়াসিমকে নিয়ে রুদ্রগ্রামে আড্ডায় মেতে উঠেছিল।
নিজের বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে এসে গোটা গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছে। দেবপাড়ায় বসে আড্ডা দিয়েছে। সেই ওয়াসিমকে আজ নিজ হাতেই চির বিদায় জানিয়ে এলেন বন্ধুরা। ওয়াসিমের সহপাঠী ও রুমমেট সোহান অঝোরে কাঁদছিলেন বন্ধুদের জন্য। গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ভাতিজার বিয়েতে অংশ নিতে কয়েক দিন আগেই ওয়াসিম চলে যায় রুদ্রগ্রামের বাড়িতে। যাওয়ার সময় সে সবাইকে দাওয়াত দিয়ে যায়। তার দাওয়াত পেয়ে আমরা ১০ বন্ধু মিলে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে দেবপাড়ার রুদ্রগ্রামে গিয়ে পৌঁছাই। বিশাল আয়োজন। বিয়েতে ওয়াসিম সহ আমরা সবাই মিলে হুই-হুল্লোড় করি। অনেক মজা করি। বিয়ে পর্ব শেষ হতে হতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। এরপর আমরা সবাই এক সঙ্গে রুদ্রদের বাড়িতে থেকে যাই। রাতেও আমরা দেবপাড়ায় এক সঙ্গে আড্ডা দেই। পরদিন ওয়াসিমের বাড়ি থেকেই আমরা ফিরছিলাম। আর ঘাতক বাস কেড়ে নিল ওয়াসিমকে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা ওয়াসিম আব্বাস। এই কক্ষে তার সঙ্গে বসবাস করেন সোহান। ওয়াসিমকে ছাড়া কক্ষে বাস করবেন কেমনে- প্রশ্ন করে সোহানের।
এই রুমে মশিউর নামে তাদের আরেক বন্ধু বসবাস করেন। সহপাঠীরা জানিয়েছেন- কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো টেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২০১৪ সালের শেষের দিকে সে ভর্তি হয়। এরপর সে হলের বাসিন্দা হয়। পড়ালেখায় মেধাবী ছিল বলে সব খানেই ছিল ফার্স্ট ক্লাস। অনার্স শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায়ও শেষ হয়েছে। এখন কেবল প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা বাকি ছিল। আগামী এক মাসের মধ্যে স্নাতকপর্ব শেষ হয়ে যেত। বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ছাত্র সমিতির ভিপি ছিলেন ওয়াসিম আব্বাস। গত নভেম্বরের দিকে সে ওই বিভাগের ভিপি নির্বাচিত হয়। এর বাইরে একাধিক সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সামাজিক সংগঠনের কর্মী ছিল। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিল। সব সময় হাসিখুশিতে থাকতো ওয়াসিম। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়ন রঞ্জন ঘুষ শুভ জানিয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সবখানেই তার বিচরণ ছিল। খেলার মাঠে ওয়াসিম ছিল সবার চেয়ে এগিয়ে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ হওয়া ফুটসাল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দল নেতা ওয়াসিমের টিম। ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার সহ সব আড্ডায় ওয়াসিম ছিল মধ্যমণি। সব সময় হাসিমুখে কথা বলতো।
কখনো তার আচরণে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হতেন না। এই নেতৃত্বের গুণাবলির কারণে ওয়াসিম ক্যাম্পাসে সবার পরিচিত ছিল। তিনি জানান- ওয়াসিমের মৃত্যুতে গোটা ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কাঁদছেন সবাই। ওয়াসিমের আরেক রুমমেট মশিউর রহমান আজাদ জানিয়েছেন- ওয়াসিম পিএইচডি করতে চেয়েছিল। এরপর রাজনীতি করে মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। মানুষের সেবা করার জন্যই সে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তিনি বলেন- ওয়াসিমকে আমরা কখনো কটু কথা বললে সে কিছু মনে করতো না। বরং আমাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে তার খেয়াল ছিল। নবীগঞ্জের দেবপাড়ার রুদ্র গ্রামের মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিন দম্পতির ছোট ছেলে।
মাহবুব আগে পল্লী বিদ্যুতের ইন্সপেক্টর ছিলেন। এখন দেবপাড়া বাজারে ব্যবসা করেন। আর মা ডা. মীনা পারভিন হেলথের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ওয়াসিমের বড় বোন পেশায় নার্স। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী সহ বসবাস করেন ঢাকাতে। বাড়িতে পিতা-মাতা একাই থাকেন। এ কারণে সময় হলেই ওয়াসিম পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যেতেন। ওয়াসিমের বন্ধু সোহান জানিয়েছেন- তার পিতার ইচ্ছা ছিল ছেলে ও মেয়েকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। কিন্তু মেয়েকে পারেননি। এ কারণে ওয়াসিমকে নিয়েই তাদের সব স্বপ্ন ছিল। আর ওয়াসিমও পিতা-মাতার স্বপ্ন পূরণে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করছিল। ওয়াসিমের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ইফতিজা তাবাস্সুম ইসলাম ও আশরাফি আশা জানিয়েছেন- ওয়াসিম ক্যাম্পাসের সবার কাছে পরিচিত ছিল। সে কখনো কাউকে আঘাত করেনি। বরং তাকে যারাই আঘাত দিয়েছে তাদের ভালোবেসেছে। পড়ালেখায় মেধাবী হওয়ার কারণে তাদের ডিপার্টমেন্টে ভিপি ছিল। তার মৃত্যু গোটা ক্যাম্পাসের শূন্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান তারা।
নবীগঞ্জও কাঁদছে। শোকে কাতর সবাই। একটি স্বপ্নের এমন মৃত্যু কাঙ্ক্ষিত ছিল না কারো জন্য। এলাকার মানুষের কাছে প্রিয়জন ছিল ওয়াসিম। ছুটি পেলেই ছুটে আসতো দেবপাড়া। গ্রামের হাটবাজার, খেলার মাঠ মাতিয়ে রাখতো সে। এলাকার মানুষকে স্বপ্ন দেখাতো সব সময়। বদলে যাওয়া দেবপাড়ার নতুন সারথী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এ কারণে গতকাল ওয়াসিমের জানাজায় ছিল মানুষের ঢল। সবার চোখে ছিল শোকের জল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা যখন ওয়াসিমকে দেবপাড়ার রুদ্রগ্রামে শেষ বিদায় জানিয়ে আসে তখন বারবার পিছনে ফিরে তাকা‘য় ওয়াসিমের জন্য। মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে তারা ওয়াসিমকে নিয়ে রুদ্রগ্রামে আড্ডায় মেতে উঠেছিল।
নিজের বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে এসে গোটা গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছে। দেবপাড়ায় বসে আড্ডা দিয়েছে। সেই ওয়াসিমকে আজ নিজ হাতেই চির বিদায় জানিয়ে এলেন বন্ধুরা। ওয়াসিমের সহপাঠী ও রুমমেট সোহান অঝোরে কাঁদছিলেন বন্ধুদের জন্য। গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ভাতিজার বিয়েতে অংশ নিতে কয়েক দিন আগেই ওয়াসিম চলে যায় রুদ্রগ্রামের বাড়িতে। যাওয়ার সময় সে সবাইকে দাওয়াত দিয়ে যায়। তার দাওয়াত পেয়ে আমরা ১০ বন্ধু মিলে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে দেবপাড়ার রুদ্রগ্রামে গিয়ে পৌঁছাই। বিশাল আয়োজন। বিয়েতে ওয়াসিম সহ আমরা সবাই মিলে হুই-হুল্লোড় করি। অনেক মজা করি। বিয়ে পর্ব শেষ হতে হতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। এরপর আমরা সবাই এক সঙ্গে রুদ্রদের বাড়িতে থেকে যাই। রাতেও আমরা দেবপাড়ায় এক সঙ্গে আড্ডা দেই। পরদিন ওয়াসিমের বাড়ি থেকেই আমরা ফিরছিলাম। আর ঘাতক বাস কেড়ে নিল ওয়াসিমকে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ হলের ৩০৭ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা ওয়াসিম আব্বাস। এই কক্ষে তার সঙ্গে বসবাস করেন সোহান। ওয়াসিমকে ছাড়া কক্ষে বাস করবেন কেমনে- প্রশ্ন করে সোহানের।
এই রুমে মশিউর নামে তাদের আরেক বন্ধু বসবাস করেন। সহপাঠীরা জানিয়েছেন- কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো টেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২০১৪ সালের শেষের দিকে সে ভর্তি হয়। এরপর সে হলের বাসিন্দা হয়। পড়ালেখায় মেধাবী ছিল বলে সব খানেই ছিল ফার্স্ট ক্লাস। অনার্স শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায়ও শেষ হয়েছে। এখন কেবল প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা বাকি ছিল। আগামী এক মাসের মধ্যে স্নাতকপর্ব শেষ হয়ে যেত। বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ছাত্র সমিতির ভিপি ছিলেন ওয়াসিম আব্বাস। গত নভেম্বরের দিকে সে ওই বিভাগের ভিপি নির্বাচিত হয়। এর বাইরে একাধিক সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সামাজিক সংগঠনের কর্মী ছিল। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিল। সব সময় হাসিখুশিতে থাকতো ওয়াসিম। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়ন রঞ্জন ঘুষ শুভ জানিয়েছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সবখানেই তার বিচরণ ছিল। খেলার মাঠে ওয়াসিম ছিল সবার চেয়ে এগিয়ে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ হওয়া ফুটসাল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দল নেতা ওয়াসিমের টিম। ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার সহ সব আড্ডায় ওয়াসিম ছিল মধ্যমণি। সব সময় হাসিমুখে কথা বলতো।
কখনো তার আচরণে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হতেন না। এই নেতৃত্বের গুণাবলির কারণে ওয়াসিম ক্যাম্পাসে সবার পরিচিত ছিল। তিনি জানান- ওয়াসিমের মৃত্যুতে গোটা ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কাঁদছেন সবাই। ওয়াসিমের আরেক রুমমেট মশিউর রহমান আজাদ জানিয়েছেন- ওয়াসিম পিএইচডি করতে চেয়েছিল। এরপর রাজনীতি করে মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। মানুষের সেবা করার জন্যই সে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তিনি বলেন- ওয়াসিমকে আমরা কখনো কটু কথা বললে সে কিছু মনে করতো না। বরং আমাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে তার খেয়াল ছিল। নবীগঞ্জের দেবপাড়ার রুদ্র গ্রামের মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিন দম্পতির ছোট ছেলে।
মাহবুব আগে পল্লী বিদ্যুতের ইন্সপেক্টর ছিলেন। এখন দেবপাড়া বাজারে ব্যবসা করেন। আর মা ডা. মীনা পারভিন হেলথের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ওয়াসিমের বড় বোন পেশায় নার্স। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী সহ বসবাস করেন ঢাকাতে। বাড়িতে পিতা-মাতা একাই থাকেন। এ কারণে সময় হলেই ওয়াসিম পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যেতেন। ওয়াসিমের বন্ধু সোহান জানিয়েছেন- তার পিতার ইচ্ছা ছিল ছেলে ও মেয়েকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। কিন্তু মেয়েকে পারেননি। এ কারণে ওয়াসিমকে নিয়েই তাদের সব স্বপ্ন ছিল। আর ওয়াসিমও পিতা-মাতার স্বপ্ন পূরণে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করছিল। ওয়াসিমের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ইফতিজা তাবাস্সুম ইসলাম ও আশরাফি আশা জানিয়েছেন- ওয়াসিম ক্যাম্পাসের সবার কাছে পরিচিত ছিল। সে কখনো কাউকে আঘাত করেনি। বরং তাকে যারাই আঘাত দিয়েছে তাদের ভালোবেসেছে। পড়ালেখায় মেধাবী হওয়ার কারণে তাদের ডিপার্টমেন্টে ভিপি ছিল। তার মৃত্যু গোটা ক্যাম্পাসের শূন্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান তারা।
No comments