নারী যাত্রীদের অপহরণ করে যৌন নির্যাতন করতো ওরা
কাগজপত্রবিহীন
বাস সংগ্রহ করে তারা বিভিন্ন রুটে চালায়। চালকেরও কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স
নেই। বিভিন্ন স্টপেজে গ্রাম থেকে আসা অপেক্ষমাণ একা নারী যাত্রীদের টার্গেট
করতো। কৌশলে বাসের অন্য যাত্রীদের সঙ্গে ওই নারীদের বাসে তুলতো। একটা
নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার পর বিভিন্ন অজুহাতে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিতো।
আর টার্গেটকৃত নারীদের গন্তব্য পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসিয়ে রাখতো।
অন্য যাত্রীরা বাস থেকে নেমে গেলে ওই নারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করত।
শরীরে হাত দিয়ে নানাভাবে যৌন নির্যাতন ও হেনস্থা করত।
আবার কোনো কোনো নারীকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করত।
সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিত। আর লুটে নিত নারীদের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য সামগ্রী। এরপর নির্জন কোনো স্থানে ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দিয়ে চলে যেত। দিনের পর দিন এভাবেই অসহায় নারীদের সঙ্গে তারা এমন আচরণ করত। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (রাব-১) হাতে এই চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য বের হয়ে এসেছে। গতকাল কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম এসব কথা জানান।
র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে বাসের নারী যাত্রীদের অপহরণ ও শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের গোয়েন্দা টিম মাঠে নামে। শনিবার আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আরেক নারীকে অপহরণ চেষ্টাকালে হাতেনাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাসিরনগরের মনির মিয়ার ছেলে মো. খলিল মিয়া (৩৩), চাঁদপুরের শামসুল হকের ছেলে মেহেদি হাসান বাবু (২২) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সায়েদ আলীর ছেলে মো. রাকিব হোসেন (১৯)। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে খলিল মিয়া পেশায় একজন চালক।
সে এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসের চালক হিসাবে কাজ করছে। তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সে যে বাস চালায় সেটারও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এর আগে সে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাত। ২০১৬ সালে ঢাকায় এসে চালকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করে। পরে চালক হয়। মেহেদি হাসান বাবু ছয় বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছে। এর আগে চার বছর সে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া রুটে লেগুনা চালাত। চালকের সহকারী ইশারা দিয়ে টার্গেটকৃত নারী দেখালে সে ওই নারীর কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিত না। পরে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে গল্প গুজব করে সময় কাটাতো। যাতে সে কোন রুটে যাচ্ছে তা যেন না বুঝে। আর চালকের সহকারী হিসেবে কর্মরত রাকিব এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসে কাজ করছে। এর আগে সে বিভিন্ন চায়ের দোকানে কাজ করেছে। রাকিব মূলত কম বয়সী নারীদের টার্গেট করত। বাসে ওঠার সময় চালক ও সুপারভাইজারকে ইশারা করে বিষয়টি জানিয়ে দিত।
যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়
র্যাব-১ অধিনায়ক সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ভুক্তভোগী এক নারী দুই মাস আগে ঢাকায় এসেছে। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁ। ঘটনার দিন সে বাইপাইল থেকে নবীনগর যাওয়ার উদ্দেশ্য বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিল। এসময় আশুলিয়া ক্লাসিক নামের বাসের চালকের সহকারী রাকিব বাস থামিয়ে কোথায় যাবে জিজ্ঞাসা করে। এসময় ওই নারী জানায়, সে নবীনগর যাবে। পরে রাকিব তাকে ওই বাসে তুলে নেয়। ঢাকায় নতুন আসার কারণে রাস্তাঘাট না চেনায় ওই নারীও বাসে উঠে। পরে সে তার ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেয় বাসের সুপারভাইজর মেহেদির সঙ্গে। কিন্তু তার ভাই মেহেদিকে নবীনগর নামিয়ে দেয়ার কথা বললেও কৌশলে তারা বাস আব্দুল্লাহপুরের দিকে নিয়ে যায়। আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে বাসের কাগজপত্রে সমস্যা আছে বলে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। আর ওই নারীকে গন্তব্যে পৌছে দেয়ার কথা বলে নামতে দেয়নি। পরে বাসটি আবার রওনা হলে মেহেদি ও রাকিব ওই নারীর পাশে বসে খারাপ আচরণ করতে থাকে। খারাপ কাজ করার ইঙ্গিত দিয়ে তাকে ঝাপটে ধরে। তখন ওই নারী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকরা করতে থাকে। তার চিৎকারে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তারা বাস থামায়। এসময় তড়িঘড়ি করে ওই নারী নেমে যায়। কিন্তু তারা আবার ওই নারীকে জোর করে গাড়িতে তুলে। র্যাব সদস্যরা এই দৃশ্য দেখে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব অধিনায়ক আরো বলেন, এর আগেও এই আসামিরা অনেক নারী যাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেছে। গ্রাম থেকে আসা কম বয়সী নারীদের ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখাতো। লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা এসব ঘটনা কাউকে জানাতো না। এছাড়া তারা অনেক বাসের যাত্রীদের একা পেয়ে জোরপূর্বক টাকা-পয়সা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিত।
আবার কোনো কোনো নারীকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করত।
সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিত। আর লুটে নিত নারীদের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য সামগ্রী। এরপর নির্জন কোনো স্থানে ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দিয়ে চলে যেত। দিনের পর দিন এভাবেই অসহায় নারীদের সঙ্গে তারা এমন আচরণ করত। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (রাব-১) হাতে এই চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য বের হয়ে এসেছে। গতকাল কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম এসব কথা জানান।
র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে বাসের নারী যাত্রীদের অপহরণ ও শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের গোয়েন্দা টিম মাঠে নামে। শনিবার আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আরেক নারীকে অপহরণ চেষ্টাকালে হাতেনাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, ব্রাহ্মবাড়িয়ার নাসিরনগরের মনির মিয়ার ছেলে মো. খলিল মিয়া (৩৩), চাঁদপুরের শামসুল হকের ছেলে মেহেদি হাসান বাবু (২২) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সায়েদ আলীর ছেলে মো. রাকিব হোসেন (১৯)। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে খলিল মিয়া পেশায় একজন চালক।
সে এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসের চালক হিসাবে কাজ করছে। তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সে যে বাস চালায় সেটারও কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এর আগে সে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাত। ২০১৬ সালে ঢাকায় এসে চালকের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করে। পরে চালক হয়। মেহেদি হাসান বাবু ছয় বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছে। এর আগে চার বছর সে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া রুটে লেগুনা চালাত। চালকের সহকারী ইশারা দিয়ে টার্গেটকৃত নারী দেখালে সে ওই নারীর কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিত না। পরে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে গল্প গুজব করে সময় কাটাতো। যাতে সে কোন রুটে যাচ্ছে তা যেন না বুঝে। আর চালকের সহকারী হিসেবে কর্মরত রাকিব এক বছর ধরে আশুলিয়া ক্লাসিক বাসে কাজ করছে। এর আগে সে বিভিন্ন চায়ের দোকানে কাজ করেছে। রাকিব মূলত কম বয়সী নারীদের টার্গেট করত। বাসে ওঠার সময় চালক ও সুপারভাইজারকে ইশারা করে বিষয়টি জানিয়ে দিত।
যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়
র্যাব-১ অধিনায়ক সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ভুক্তভোগী এক নারী দুই মাস আগে ঢাকায় এসেছে। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁ। ঘটনার দিন সে বাইপাইল থেকে নবীনগর যাওয়ার উদ্দেশ্য বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিল। এসময় আশুলিয়া ক্লাসিক নামের বাসের চালকের সহকারী রাকিব বাস থামিয়ে কোথায় যাবে জিজ্ঞাসা করে। এসময় ওই নারী জানায়, সে নবীনগর যাবে। পরে রাকিব তাকে ওই বাসে তুলে নেয়। ঢাকায় নতুন আসার কারণে রাস্তাঘাট না চেনায় ওই নারীও বাসে উঠে। পরে সে তার ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেয় বাসের সুপারভাইজর মেহেদির সঙ্গে। কিন্তু তার ভাই মেহেদিকে নবীনগর নামিয়ে দেয়ার কথা বললেও কৌশলে তারা বাস আব্দুল্লাহপুরের দিকে নিয়ে যায়। আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে বাসের কাগজপত্রে সমস্যা আছে বলে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। আর ওই নারীকে গন্তব্যে পৌছে দেয়ার কথা বলে নামতে দেয়নি। পরে বাসটি আবার রওনা হলে মেহেদি ও রাকিব ওই নারীর পাশে বসে খারাপ আচরণ করতে থাকে। খারাপ কাজ করার ইঙ্গিত দিয়ে তাকে ঝাপটে ধরে। তখন ওই নারী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকরা করতে থাকে। তার চিৎকারে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তারা বাস থামায়। এসময় তড়িঘড়ি করে ওই নারী নেমে যায়। কিন্তু তারা আবার ওই নারীকে জোর করে গাড়িতে তুলে। র্যাব সদস্যরা এই দৃশ্য দেখে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব অধিনায়ক আরো বলেন, এর আগেও এই আসামিরা অনেক নারী যাত্রীকে যৌন নির্যাতন করেছে। গ্রাম থেকে আসা কম বয়সী নারীদের ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখাতো। লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীরা এসব ঘটনা কাউকে জানাতো না। এছাড়া তারা অনেক বাসের যাত্রীদের একা পেয়ে জোরপূর্বক টাকা-পয়সা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিত।
No comments