বারকাতই ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন: অর্থমন্ত্রী
এক
গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তম কেলেঙ্কারির পাশাপাশি
চাতুর্যের আশ্রয়ও নিয়েছে জনতা ব্যাংক। ঋণ কম দেখাতে ব্যাংক তাদের নিরীক্ষিত
বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব প্রতিষ্ঠানকে তিনটি পৃথক গ্রুপ বলে উল্লেখ করেছে।
নিয়মনীতি ভেঙে এক গ্রাহককে বেশি ঋণ দেওয়ার তথ্য লুকাতেই এই চাতুরীর আশ্রয়
নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেওয়া প্রতিবেদনেও ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণকে
তিনটি পৃথক গ্রুপ হিসেবে দেখিয়েছে জনতা ব্যাংক। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো
প্রশ্ন তোলেনি খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকও। ব্যাংকটির নিরীক্ষিত বার্ষিক
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে
প্রথম আলো। তবে পাওনা বাড়তে থাকায় ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ এখন ২২
প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণকে একক গ্রুপের সংশ্লিষ্ট
প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে–বেনামে অনেকে
থাকলেও প্রকৃত সুবিধাভোগী ইউনুস (বাদল) একাই। আর তাঁর গ্রুপের নাম
এননটেক্স। আর এই ঋণ কেলেঙ্কারির শুরু ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল
বারকাতের সময়ে। গতকাল সোমবার প্রথম আলোয় ‘একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম
কেলেঙ্কারি’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে আরও
অনুসন্ধান শেষে রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের নতুন এই কেলেঙ্কারির তথ্য
পাওয়া যায়। এ নিয়ে গতকাল কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেছেন, জনতা ব্যাংক একসময় সেরা ব্যাংক ছিল। কিন্তু আবুল বারকাতই
ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন।
ব্যাংকের কারসাজি
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ গত সপ্তাহে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, নথিপত্রে অনেকের নাম আছে। এ কারণে এক গ্রুপ হিসেবে সব ঋণকে বিবেচনা করা হয়নি। তবে মো. ইউনুস (বাদল) নিজেও গত বুধবার প্রথম আলো কার্যালয়ে এসে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁরই। এসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় জনতা ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) নুরুল আলমের সঙ্গে। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণ বিভাগ থেকে যেভাবে তথ্য আসে, আমরা ঠিক সেভাবেই প্রতিবেদন করে থাকি। একইভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও প্রতিবেদন দিয়ে থাকে জনতা ব্যাংক।’ ব্যাংকটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালে গ্যালাক্সি গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ছিল ৬৭৬ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের প্রতিবেদনেও বলা হয় এই গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। তবে ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, এননটেক্স গ্রুপের ঋণ ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ঋণ অনেক বেড়ে যাওয়ায় ওই বছরের নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জ্যাকার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩৭৭ কোটি টাকা, এননটেক্স গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা ও এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের তিন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৪১৫ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে তিন বছরের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান। গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন কী হবে, তা পর্ষদ দেখে না। কেন একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণকে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের নামে দেখানো হলো, তা জানি না। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এটি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’ ওয়াহিদ-উজ-জামান আরও বলেন, ‘নতুন করে বড় কোনো ঋণ আমার সময়ে সৃষ্টি হয়নি। সব ঋণগুলো যে একজনের, অনেক তাগাদা দিয়ে শেষ পর্যায়ে তা পর্ষদে আনতে পেরেছিলাম। এটা এত দিন গোপন করার চেষ্টা হয়েছিল।’
নীতিমালায় যা আছে
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলো কোন কোন ঋণকে একক গ্রুপ হিসেবে ধরবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে ২০১৪ সালেই। এরপর থেকে ঋণ কমাতে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ সৃষ্টির সুযোগ নেই। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা নীতিমালায় বলা আছে, কোনো কোম্পানির মোট আয় বা ব্যয়ের ৫০ ভাগ বা তার বেশি যদি একক কোম্পানির সঙ্গে হয়, তাহলে উভয় সত্তাকে গোষ্ঠী বা গ্রুপ বিবেচনা করতে পারে। সে ক্ষেত্রেও উভয় কোম্পানিতে দেওয়া ঋণসীমা একক সর্বোচ্চ গ্রাহকের আওতাভুক্ত হবে। এ ছাড়া রপ্তানি খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে কোনো এক সময়ে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ঋণ মূলধনের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দেওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রেও ফান্ডেড দায় মূলধনের ১৫ শতাংশের বেশি হবে না। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুসারে ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে একক গ্রাহক ঋণসীমা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে ফান্ডেড দায় বলতে ঋণগ্রহীতাকে দেওয়া তহবিল এবং নন-ফান্ডেড দায় বলতে ঋণপত্র, গ্যারান্টি, স্বীকৃতি বা কমিটমেন্টের মাধ্যমে তহবিল সহায়তাকে বোঝানো হয়েছে। তবে এসব লঙ্ঘন করেই এননটেক্স সংশ্লিষ্ট ২২ প্রতিষ্ঠানের ঋণ কম দেখাতে পৃথক পৃথক গ্রুপ সৃষ্টি করা হয়।
আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ
একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারির বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়া শীর্ষ ১০ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। ঢাকার সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে গতকাল এই অনুষ্ঠান হয়, যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। এরপর প্রশ্ন করা হলে প্রথম আলোকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আবুল বারকাত (জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান) এত টাকা দিয়েছেন, আমি তো জানিই না। আমি জানি যে তাঁর সময়ে বড় বড় বেনামি ঋণ দেওয়া হয়েছে। ৩০০ কোটি, ৪০০ কোটি টাকা এবং খারাপ উদাহরণও তৈরি হয়েছে।’ একক ব্যক্তিকে এত টাকা ঋণ দিয়ে জনতা ব্যাংক নিজে শুধু বিপদে পড়েনি, ওই ব্যক্তিকেও বিপদে ফেলেছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কই, আবুল বারকাতকে তো দেখলাম ডিফেন্ড করেছেন।’ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি হঠাৎ অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘কোন ব্যাংক?’ অর্থমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘জনতা। বারকাত এটাকে শেষ করে দিয়েছে। অথচ এটা ছিল দেশের একটা সেরা ব্যাংক।’ সৈয়দ আবুল হোসেন তখন অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনিই তো তাঁকে (আবুল বারকাত) নিয়োগ দিয়েছিলেন।’ অর্থমন্ত্রী তখন বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই দিয়েছিলাম।’ এ বিষয়ে এখন কী করা হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো আসলে অনেক জটিল।’
ব্যাংকের কারসাজি
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ গত সপ্তাহে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, নথিপত্রে অনেকের নাম আছে। এ কারণে এক গ্রুপ হিসেবে সব ঋণকে বিবেচনা করা হয়নি। তবে মো. ইউনুস (বাদল) নিজেও গত বুধবার প্রথম আলো কার্যালয়ে এসে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁরই। এসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় জনতা ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) নুরুল আলমের সঙ্গে। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণ বিভাগ থেকে যেভাবে তথ্য আসে, আমরা ঠিক সেভাবেই প্রতিবেদন করে থাকি। একইভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও প্রতিবেদন দিয়ে থাকে জনতা ব্যাংক।’ ব্যাংকটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালে গ্যালাক্সি গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ছিল ৬৭৬ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের প্রতিবেদনেও বলা হয় এই গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। তবে ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, এননটেক্স গ্রুপের ঋণ ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ঋণ অনেক বেড়ে যাওয়ায় ওই বছরের নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জ্যাকার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৩৭৭ কোটি টাকা, এননটেক্স গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা ও এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের তিন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ৪১৫ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে তিন বছরের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান। গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন কী হবে, তা পর্ষদ দেখে না। কেন একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণকে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের নামে দেখানো হলো, তা জানি না। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এটি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’ ওয়াহিদ-উজ-জামান আরও বলেন, ‘নতুন করে বড় কোনো ঋণ আমার সময়ে সৃষ্টি হয়নি। সব ঋণগুলো যে একজনের, অনেক তাগাদা দিয়ে শেষ পর্যায়ে তা পর্ষদে আনতে পেরেছিলাম। এটা এত দিন গোপন করার চেষ্টা হয়েছিল।’
নীতিমালায় যা আছে
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলো কোন কোন ঋণকে একক গ্রুপ হিসেবে ধরবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে ২০১৪ সালেই। এরপর থেকে ঋণ কমাতে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ সৃষ্টির সুযোগ নেই। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা নীতিমালায় বলা আছে, কোনো কোম্পানির মোট আয় বা ব্যয়ের ৫০ ভাগ বা তার বেশি যদি একক কোম্পানির সঙ্গে হয়, তাহলে উভয় সত্তাকে গোষ্ঠী বা গ্রুপ বিবেচনা করতে পারে। সে ক্ষেত্রেও উভয় কোম্পানিতে দেওয়া ঋণসীমা একক সর্বোচ্চ গ্রাহকের আওতাভুক্ত হবে। এ ছাড়া রপ্তানি খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে কোনো এক সময়ে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ঋণ মূলধনের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দেওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রেও ফান্ডেড দায় মূলধনের ১৫ শতাংশের বেশি হবে না। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ অনুসারে ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে একক গ্রাহক ঋণসীমা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে ফান্ডেড দায় বলতে ঋণগ্রহীতাকে দেওয়া তহবিল এবং নন-ফান্ডেড দায় বলতে ঋণপত্র, গ্যারান্টি, স্বীকৃতি বা কমিটমেন্টের মাধ্যমে তহবিল সহায়তাকে বোঝানো হয়েছে। তবে এসব লঙ্ঘন করেই এননটেক্স সংশ্লিষ্ট ২২ প্রতিষ্ঠানের ঋণ কম দেখাতে পৃথক পৃথক গ্রুপ সৃষ্টি করা হয়।
আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ
একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারির বিষয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নেওয়া শীর্ষ ১০ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। ঢাকার সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে গতকাল এই অনুষ্ঠান হয়, যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। এরপর প্রশ্ন করা হলে প্রথম আলোকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আবুল বারকাত (জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান) এত টাকা দিয়েছেন, আমি তো জানিই না। আমি জানি যে তাঁর সময়ে বড় বড় বেনামি ঋণ দেওয়া হয়েছে। ৩০০ কোটি, ৪০০ কোটি টাকা এবং খারাপ উদাহরণও তৈরি হয়েছে।’ একক ব্যক্তিকে এত টাকা ঋণ দিয়ে জনতা ব্যাংক নিজে শুধু বিপদে পড়েনি, ওই ব্যক্তিকেও বিপদে ফেলেছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কই, আবুল বারকাতকে তো দেখলাম ডিফেন্ড করেছেন।’ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি হঠাৎ অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘কোন ব্যাংক?’ অর্থমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘জনতা। বারকাত এটাকে শেষ করে দিয়েছে। অথচ এটা ছিল দেশের একটা সেরা ব্যাংক।’ সৈয়দ আবুল হোসেন তখন অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনিই তো তাঁকে (আবুল বারকাত) নিয়োগ দিয়েছিলেন।’ অর্থমন্ত্রী তখন বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই দিয়েছিলাম।’ এ বিষয়ে এখন কী করা হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো আসলে অনেক জটিল।’
No comments