পত্রিকার মতো পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও কি প্রকাশ্যে বিক্রি হবে? by মাহবুব নাহিদ
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhIMoU1ApuLxMljkBLPwStUOjs_WwTzLgetjdrxoWmJJY0Aqhmnmj7H8hGvINIM7C6B9zZ2rqOV6mcxFR3HVrMTEDTs4Z7Z70dErVGpQpq0boooltm2fSj_eSLTmiemY_N6P4UHS-BCtXw/s400/86.jpg)
প্রশ্নপত্র
ফাঁস এখন অতি পরিচিত একটি শব্দ। এই শব্দের সঙ্গে পরিচিত নয়, এমন কাউকে এখন
খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি ছোট ছোট শিশুরাও বলে দিতে পারবে- প্রশ্ন ফাঁস
বিষয়টা কী? আমাদের দেশে এখন আদর্শলিপি পড়ানোর মতোই প্রশ্নপত্র ফাঁসের
বিষয়টি শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা আমাদের দেশে বহু আগেই পণ্য হয়ে গেছে। এখন
পরীক্ষার প্রশ্নপত্রকে পণ্য বানানোর যথাসম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। পরীক্ষার
প্রশ্নপত্র এখন নিলামে ওঠার দ্বারপ্রান্তে। দেশে এমন দিন এলে অবাক হব না-
যখন দেখব, পত্রিকার মতো ক্যানভাস করে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বিক্রি করা
হচ্ছে। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন আমাদের দেশে নতুন নয়। এটি বংশপরম্পরায় চলে
আসছে। বলা হচ্ছে, দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে আমরা উন্নত হচ্ছি, নতুন নতুন
প্রযুক্তি শিখছি।
এখন ভালো কাজগুলোর প্রযুক্তি যদি উন্নত হয়, তবে খারাপ
কাজগুলোর প্রযুক্তি কেন উন্নত হবে না? আগে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের কেউ
কেউ চিরকুট কিংবা বই নিয়ে যেত, যাকে আমরা নকল করা বলে জানতাম। আগেকার দিনে
অনেক অভিভাবক পরীক্ষাকেন্দ্রের জানালার পাশে বই নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। যখন
যে প্রশ্নের উত্তর দরকার হয়, তা বলে দেয়ার জন্য। অথবা কোনো অভিভাবক পরিচিত
শিক্ষকের কাছে অনুরোধ রাখত যাতে পরীক্ষার হলে তার সন্তানকে একটু ছাড় দেয়া
হয়। বর্তমানে পরীক্ষায় নকল হয় না বললেই চলে। তবে পরীক্ষায় অসদুপায় ঠিকই রয়ে
গেছে, শুধু ধরনটার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর পরীক্ষার হলে চিরকুট নিয়ে যেতে
হয় না। কারণ এখন পরীক্ষার প্রশ্ন আগে থেকেই জানা থাকে। যেহেতু টেকনোলজির
যুগ, তাই জানালার পাশে দাঁড়িয়ে প্রশ্নের উত্তরও বলে দিতে হয় না। এখন
হেডফোনে ডিভাইস লাগিয়ে রাখা হয়। এর মাধ্যমে পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দেয়া
হয়। আর হ্যাঁ, অভিভাবকরা এখনও তদবির করে। আগে তদবির করত পরীক্ষার হলে কম
কড়াকড়ি আরোপের জন্য আর এখন করছে সরাসরি প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার জন্য। এই
যদি হয় অবস্থা, তাহলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত বাবা-মায়ের উচিত,
সন্তানকে আদর্শলিপি পড়ানো বাদ দেয়া। কারণ তাতে লেখা থাকে- ‘অ’ তে অসৎ সঙ্গ
ত্যাগ কর। তা যদি করতে হয়, তাহলে তো নিজের প্রশ্নচোর বাবা-মাকে আগে ত্যাগ
করতে হবে! অভিভাবকবৃন্দ, আপনাদের বিবেকে কি একটুও নাড়া দেয় না? কীভাবে
নিজের সন্তানকে এ কুকর্ম শেখাচ্ছেন!
স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
No comments