বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে ১৬ শতাংশ
আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ কম বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ফাও) ওয়েব সাইডে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে অক্টোবরে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে প্রায় চার শতাংশ। অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে প্রায় চার শতাংশ বেড়েছে পণ্যের দাম। ফাও’র প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে গড়ে খাদ্যমূল্য সূচক ওঠে ১৬২ পয়েন্টে। এক মাসের ব্যবধানে খাদ্য মূল্য শতাংশ হিসাবে তিন দশমিক নয় শতাংশ বেড়েছে। মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে রয়েছে চিনির মূল্য। এছাড়া ভেজিটেবল অয়েল ও দুগ্ধজাত পণ্যের দামও বেড়েছে। ওই প্রতিবেদনে দানাদার জাতীয় খাদ্য মূল্য এক মাসের ব্যবধানে এক দশমিক সাত শতাংশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এই মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে ভুট্টা এবং গমের মূল্য। বিশ্ববাজারে সম্প্রতি এ দুটি পণ্যের দাম বেশি বেড়েছে। শীতের কারণে উৎপাদনজনিত ক্ষতি হয়েছে গমের। এ জন্য দামও বেড়েছে। এদিকে দাম কমে যাওয়ায় আমেরিকার কৃষকরা বিক্রি বন্ধ রেখেছে ভুট্টার। আমেরিকা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ভুট্টা রফতানিকারক ও উৎপাদনকারী দেশ। তবে একই সময়ে চালের মূল্য কমেছে। ফাও’র প্রতিবেদনে ভেজিটেবল অয়েল প্রসঙ্গে বলা হয়, এক মাসের ব্যবধানে অক্টোবরে এ পণ্যের দাম ৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, গত তিন মাস পামঅয়েলের দাম কমেছে। তবে এই মাসে মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে তা ঊর্ধ্বগতিমুখীর দিকে যাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়া থাকার কারণে ব্রাজিলে সয়াবিন তেল উৎপাদন কমেছে। ফলে বিশ্ববাজারে এর সরবরাহও কমেছে। মূল্য বৃদ্ধির দিক থেকে এ পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এদিকে দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্য সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসাবে বলা হয় নিউজিল্যান্ড গত মে ও জুন মাসে দুগ্ধ উৎপাদন কম হয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে।
প্রতিবেদনে চিনির মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে বলা হয়, গত এক মাসের ব্যবধানে এ পণ্যটি বিশ্ববাজারে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় বেশি। ব্রাজিলে বৈরী আবহাওয়া থাকার কারণে চিনির উৎপাদনকারী এই দেশটি কম উৎপাদন করছে। এছাড়া ভারতে চিনি উৎপাদনকারীর কাঁচামাল উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে। আর থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিলিপাইন মূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে কাজ করেছে। বাংলাদেশের বাজার পরিস্থিতি : এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব দেশের বাজারেও পড়তে শুরু করেছে। সম্প্রতি এক সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের লিটারে এক টাকা, আদার কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আলুর কেজিতে ৩ টাকা পেঁয়াজের কেজিতে ৫ টাকা ও রসুনের কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। এক কেজি রসুন ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় ওঠেছে। ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। একই ভাবে এক লিটার সয়াবিন ৭৪ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চিনির মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
No comments