তিনি একা by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
তার
আশপাশে তখন অনেক মানুষ। কেউ প্রয়োজনে, কেউবা অপ্রয়োজনে। কেউই কাছ-ছাড়া হতে
চান না। থাকতে চান কাছে কাছেই। কিন্তু আজ তিনি বড় একা। কেউ নেই তার পাশে।
কেমন আছেন খোঁজ নিতে চান না কেউই। ভাল নেই তিনি। দিন কাটছে হাসপাতালের বেডে
শুয়ে। তাও কারাবন্দি হিসেবে। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক
চৌধুরী। সাময়িকভাবে পদহারা। তাই বোধহয় সঙ্গীহারাও।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই যেন আরিফুল হক চৌধুরীর দুঃসময়ের শুরু। তখন মেয়র পদে থাকলেও চলে গিয়েছিলেন আত্মগোপনে। খুব ঘনিষ্ঠজন ছাড়া কেউ তার সাক্ষাৎ পাননি। অবশ্য তখন থেকে সাক্ষাৎপ্রার্থীর সংখ্যাও কমে যেতে থাকে। ‘ডুবন্ত নৌকা’য় পা দিয়ে কে আর ‘ডুবতে’ চায়। কমতে শুরু করে মেয়র আরিফের শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যা। সিলেট নগরীর কুমারপাড়াস্থ যে বাসা গমগম করতো ‘শুভার্থী’দের পদভারে, ক্রমেই সেখান থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে তাদের পদচিহ্নগুলো।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর ২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর হবিগঞ্জ আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেকে আইনের হাতে সমর্পণ করেন আরিফুল হক চৌধুরী। জামিন শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। শুরু হয় আরিফের বন্দিজীবন। হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ৩১শে ডিসেম্বর গভীর রাতে তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় আড়াই মাস হাসপাতালের ১০০১ নম্বর ভিআইপি কেবিনে থাকার পর গত ৭ই মার্চ তাকে আবার পাঠানো হয় কারাগারে। তবে এ যাত্রায় আর তাকে হবিগঞ্জ ফিরিয়ে আনা হয়নি। বন্দি হন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে, ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে একই সেলে। পরিবারের অভিযোগ, পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে জোর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এমন অভিযোগে ২৩শে মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন আরিফুল হক চৌধুরী। এমন অবস্থায় আরিফুল হকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ২৮শে মার্চ বিকালে তাকে কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রথমে হাসপাতালের ১০৫ নম্বর ভিআইপি কেবিনে ভর্তি করা হলেও এখন আছেন ৪৭ নম্বর জেনারেল কেবিনে।
আরিফুল হক চৌধুরী মামলায় জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সরে পড়তে থাকেন। এমনকি তার পারিষদের সদস্যরাও তার পক্ষে জোর গলায় কথা বলেননি। ‘পক্ষকালব্যাপী’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও তা ছিল অনেকটা দায়সারা। ‘গণস্বাক্ষর’ ‘কর্মবিরতি’র মতো ঢিলেঢালা কর্মসূচির মাধ্যমেই তার পারিষদ তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। আর আরিফ যখন কারাগারে, তখন তো তাকে ভুলে কাউন্সিলররা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তার রেখে যাওয়া চেয়ারের দখলের লড়াইয়ে। মেয়র প্যানেলের দুই সদস্যের পক্ষ হয়ে তারা ভাগ হয়ে পড়েন দুই দলে। সে লড়াই এখন হাইকোর্টে মীমাংসার অপেক্ষায়।
আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র থাকাকালে তার চারপাশে লোকজনের অভাব ছিল না। কাজে-অকাজে ছিলেন। তার কাছাকাছি থাকা মুখগুলোর অনেকগুলোই সিলেটের চেনাজানা মুখ। ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট, ইশতিয়াক সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক চৌধুরী, জুরেজ আবদুল্লাহ গুলজার, মঈন উদ্দিন সুহেল। ছিলেন আরও অনেকে। তালিকায় আছে অসংখ্য নাম। কথা হয়, বিএনপি নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী ও জুরেজ আবদুল্লাহ গুলজারের সঙ্গে। তারা দুজনই হাল নাগাদ তথ্য দিলেন। বললেন, ‘যতদূর পারি চেষ্টা করি আরিফ ভাইয়ের খবর রাখতে।’
আরিফুল হক চৌধুরীর শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইটও বললেন তিনিও নিয়মিত খবর রাখছেন আরিফুল হক চৌধুরীর। হাসপাতালেও বেশ কয়েকবার দেখতে গেছেন তাকে। মিজান আজিজ মানবজমিনকে তথ্য দেন, শুরু থেকেই হাসপাতালে আছেন আরিফুল হক। তবে মাঝে ফিরে গিয়ে ২১ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন আরিফুল এ খবর নেই তার কাছে। আরিফ প্রসঙ্গে অবশ্য তিনি ফোনে আর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। সামনাসামনি কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে মিজান আজিজ বলেন, ‘আপনার ফোনও রেকর্ড হয় আমার ফোনও রেকর্ড হয়।’ মিজান আজিজের মতো সতর্কতার সুর শোনা যায় আরিফের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরও অনেকের কণ্ঠেও। তবে তারা প্রত্যেকেই বলছেন নিজেদের জন্য নয় তারা সতর্ক মেয়র আরিফের জন্যই।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই যেন আরিফুল হক চৌধুরীর দুঃসময়ের শুরু। তখন মেয়র পদে থাকলেও চলে গিয়েছিলেন আত্মগোপনে। খুব ঘনিষ্ঠজন ছাড়া কেউ তার সাক্ষাৎ পাননি। অবশ্য তখন থেকে সাক্ষাৎপ্রার্থীর সংখ্যাও কমে যেতে থাকে। ‘ডুবন্ত নৌকা’য় পা দিয়ে কে আর ‘ডুবতে’ চায়। কমতে শুরু করে মেয়র আরিফের শুভাকাঙ্ক্ষীর সংখ্যা। সিলেট নগরীর কুমারপাড়াস্থ যে বাসা গমগম করতো ‘শুভার্থী’দের পদভারে, ক্রমেই সেখান থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে তাদের পদচিহ্নগুলো।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর ২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর হবিগঞ্জ আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেকে আইনের হাতে সমর্পণ করেন আরিফুল হক চৌধুরী। জামিন শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। শুরু হয় আরিফের বন্দিজীবন। হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ৩১শে ডিসেম্বর গভীর রাতে তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় আড়াই মাস হাসপাতালের ১০০১ নম্বর ভিআইপি কেবিনে থাকার পর গত ৭ই মার্চ তাকে আবার পাঠানো হয় কারাগারে। তবে এ যাত্রায় আর তাকে হবিগঞ্জ ফিরিয়ে আনা হয়নি। বন্দি হন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে, ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে একই সেলে। পরিবারের অভিযোগ, পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে জোর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এমন অভিযোগে ২৩শে মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন আরিফুল হক চৌধুরী। এমন অবস্থায় আরিফুল হকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ২৮শে মার্চ বিকালে তাকে কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রথমে হাসপাতালের ১০৫ নম্বর ভিআইপি কেবিনে ভর্তি করা হলেও এখন আছেন ৪৭ নম্বর জেনারেল কেবিনে।
আরিফুল হক চৌধুরী মামলায় জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা সরে পড়তে থাকেন। এমনকি তার পারিষদের সদস্যরাও তার পক্ষে জোর গলায় কথা বলেননি। ‘পক্ষকালব্যাপী’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও তা ছিল অনেকটা দায়সারা। ‘গণস্বাক্ষর’ ‘কর্মবিরতি’র মতো ঢিলেঢালা কর্মসূচির মাধ্যমেই তার পারিষদ তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। আর আরিফ যখন কারাগারে, তখন তো তাকে ভুলে কাউন্সিলররা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তার রেখে যাওয়া চেয়ারের দখলের লড়াইয়ে। মেয়র প্যানেলের দুই সদস্যের পক্ষ হয়ে তারা ভাগ হয়ে পড়েন দুই দলে। সে লড়াই এখন হাইকোর্টে মীমাংসার অপেক্ষায়।
আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র থাকাকালে তার চারপাশে লোকজনের অভাব ছিল না। কাজে-অকাজে ছিলেন। তার কাছাকাছি থাকা মুখগুলোর অনেকগুলোই সিলেটের চেনাজানা মুখ। ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইট, ইশতিয়াক সিদ্দিকী, মাহবুবুল হক চৌধুরী, জুরেজ আবদুল্লাহ গুলজার, মঈন উদ্দিন সুহেল। ছিলেন আরও অনেকে। তালিকায় আছে অসংখ্য নাম। কথা হয়, বিএনপি নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী ও জুরেজ আবদুল্লাহ গুলজারের সঙ্গে। তারা দুজনই হাল নাগাদ তথ্য দিলেন। বললেন, ‘যতদূর পারি চেষ্টা করি আরিফ ভাইয়ের খবর রাখতে।’
আরিফুল হক চৌধুরীর শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী সুইটও বললেন তিনিও নিয়মিত খবর রাখছেন আরিফুল হক চৌধুরীর। হাসপাতালেও বেশ কয়েকবার দেখতে গেছেন তাকে। মিজান আজিজ মানবজমিনকে তথ্য দেন, শুরু থেকেই হাসপাতালে আছেন আরিফুল হক। তবে মাঝে ফিরে গিয়ে ২১ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন আরিফুল এ খবর নেই তার কাছে। আরিফ প্রসঙ্গে অবশ্য তিনি ফোনে আর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। সামনাসামনি কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে মিজান আজিজ বলেন, ‘আপনার ফোনও রেকর্ড হয় আমার ফোনও রেকর্ড হয়।’ মিজান আজিজের মতো সতর্কতার সুর শোনা যায় আরিফের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরও অনেকের কণ্ঠেও। তবে তারা প্রত্যেকেই বলছেন নিজেদের জন্য নয় তারা সতর্ক মেয়র আরিফের জন্যই।
No comments