প্রার্থী নিয়ে নানা সমীকরণ বিএনপিতে- নতুন প্ল্যাটফরম ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’ by কাফি কামাল

ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর সমর্থন নিয়ে নানা সমীকরণ চলছে বিএনপিতে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি। এদিকে বিএনপিপন্থি বিশিষ্ট নাগরিকদের সংগঠন ‘শত নাগরিক’-এর উদ্যোগে বিএনপির নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’ নামে নতুন প্ল্যাটফর্ম। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা এই ব্যানারেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। ওদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। বারবার নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়া এবং ঢাকা সিটিকে দ্বিখণ্ডিত করার ঘটনায় কিছুটা হতাশাও ছিল তার। সরকার তিন সিটি নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার পর ঢাকা উত্তর থেকে ভোটযুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ঢাকা উত্তরে তিনিই ছিলেন বিএনপির মূল এবং একক প্রার্থী। যে কারণে অন্য কেউ ওই এলাকা থেকে মনোনয়নপত্র পর্যন্ত নেননি। বরং ঢাকা দক্ষিণ নিয়ে জটিলতার মধ্যে ছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের প্রার্থী বাছাইয়ের দিন পাল্টে গেছে পরিবেশ। ছোট্ট একটি ভুলের কারণে বাতিল হয়ে গেছে মিন্টুর মনোনয়নপত্র। তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনের আগেই বড় একটি ধাক্কা খেয়েছে বিএনপি। এ ভুল নিয়ে রীতিমতো বিব্রতকর এক পরিস্থিতি পড়েছেন বিরোধী জোটের সবাই। তবে মিন্টুর মনোনয়ন নিয়ে হাল ছাড়ছে না বিএনপি। এখন আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র নিয়ে আপিলের নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে দলটির নেতারা। তারা মনে করেন, প্রার্থীর সমর্থনকারী নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হওয়ায় কমিশন মিন্টুর মনোনয়ন বাতিল করলেও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিলের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির সমর্থন প্রত্যাশী চারজনের মধ্যে তিনজনই বাছাইপর্ব উতরে যান। বিরোধী জোটের জন্য স্বস্তির বিষয় হচ্ছে দক্ষিণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ তিনপ্রার্থীই বাছাইপর্বে টিকে গেছেন। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া নাসিরউদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে কারাগারে থাকায় সেটা সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলছে না। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা ও ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষে কাজ করা বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আলাপে এমন তথ্য জানা গেছে। এ ব্যাপারে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ মানবজমিনকে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপের সময় তারা আমাদের ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনকে তারা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং প্রশাসন তাদের কতটুকু সহযোগিতা করছে তা ওপর নির্ভর করবে সবকিছু। যদিও এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আবদুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল জটিলতার ব্যাপারে তিনি বলেন, নির্বাচনকে অর্থবহ ও প্রতিযোগিতামূলক করতে চাইলে কমিশনকে তার প্রমাণ নিতে হবে। তুচ্ছ একটি কারণে একজন হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হবে। মিন্টু আপিল করেছেন, আশা করছি তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হবে। আর যদি সেটা না হয় তবে সরকার যে প্রার্থিতা থেকে বঞ্চিত করছে তা দেশবাসী দেখতে পাবে। হান্নান শাহ বলেন, ঢাকা উত্তরে মিন্টুই সবচেয়ে আলোচিত এবং শক্তিশালী প্রার্থী। আপিল নিষ্পত্তির পরপরই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তার মনোনয়নপত্র যদি বৈধ না হয় তবে আমাদের তাৎক্ষনিকভাবে বিকল্প সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
নতুন ব্যানার ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’
এদিকে জাতীয়তাবাদী ঘরানার বিশিষ্ট নাগরিকদের সংগঠন ‘শত নাগরিক’-এর ব্যানারেই নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছিল বিএনপি। দলের নেতারা জানিয়েছিলেন, শত নাগরিক সমর্থিত প্রার্থীই পাবে তাদের সমর্থন। তবে ‘শত নাগরিক’-এর নেতৃত্ব নিয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থি পেশাজীবী সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ’-এর নেতাদের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী ঘরানার সকল পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’- শীর্ষক নতুন প্ল্যাটফর্ম। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা এ ব্যানারেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। নতুন এ প্ল্যাটফর্ম গঠনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শত নাগরিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন শিক্ষক প্রধান একটি সংগঠন। অন্যদিকে সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনগুলো ‘স্বল্প পরিসরের’ একটি সংগঠনের নেতৃত্বে কাজ করার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক জটিলতা রয়েছে। এছাড়া বিএনপির নেতৃত্বাধীন আন্দোলন সংগ্রামে পেশাজীবীদের যে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তার প্রেক্ষিতে শত নাগরিকের নেতৃত্বে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছিলেন না। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রথম দিকে শত নাগরিক-এর সঙ্গে থাকলেও পরে সরে যান। এমন পরিস্থিতি সবার সমন্বয়ে একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম গঠনের নির্দেশনা দেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও নতুন প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্ব দেবেন প্রফেসর এমাজউদ্দীনই। এ ব্যাপারে এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচন পরিচালনার মতো সাংগঠনিক কাঠামো শত নাগরিকের নেই। এ জন্য নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে এমাজউদ্দীন আহমেদ নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠনের বিষয়টি জানিয়ে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সবার সমন্বয়ে ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’ প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে। এটারও নেতৃত্ব আমিই দেবে।
নির্বাচন পরিচালনায় দ্বিমুখী তৎপরতা
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপিপন্থি বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’-এর পাশাপাশি দলের নেতারাও নেপথ্যে নির্বাচন পরিচালনায় অংশ নেবেন। ‘বাসযোগ্য ঢাকা চাই’ ব্যানারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তারা সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে তৎপরতা চালাবেন। সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণের দলীয় কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমেদ ও আবু সাঈদ খোকনসহ কয়েকজন। অন্যদিকে ঢাকা উত্তরের কমিটিতে নেতৃত্বে থাকবেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ কাইয়ুম ও এসএ খালেকসহ কয়েকজন। এদিকে মেয়র পদে সমর্থনের পাশাপাশি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করার বিষয়টিও। বিরোধী জোট নেতারা জানান, কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভাল করতে পারলে তার ইতিবাচক রেশ পড়বে মেয়র পদে। এছাড়া মেয়রের পাশাপাশি সর্বাধিক কাউন্সিলর পদে বিজয় পেলে মহানগর রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। ভবিষ্যৎ আন্দোলন সংগ্রামে তাদের সক্রিয় ভূমিকা আদায় করা যাবে। আর এ জন্যই ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটিতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থন চূড়ান্ত করতেও সংশ্লিষ্ট কিছু নেতা কাজ করছেন। তৃণমূল নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার বিচারে তারা দলের সমর্থন পাবেন। এছাড়া জোটের শরিকদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বিচার করে কাউন্সিলর পদে তাদের ছাড় দেয়া হবে।
উত্তরে বিকল্প কে: তাবিথ না মাহী
আপিলের ইতিবাচক নিষ্পত্তির মাধ্যমে আবদুল আউয়াল মিন্টুর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষিত হলে বিএনপি-সমর্থিত একক প্রার্থী হিসেবে তিনিই মাঠে থাকবেন সেটা নিশ্চিত। সেটা না হলে সমর্থন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে বিএনপিকে। সেক্ষেত্রে দলের একটি অংশ থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে বিকল্প হিসেবে প্রস্তাব এসেছে। তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে তাবিথ আউয়ালের সক্রিয় রাজনীতিতে অনভিজ্ঞতা ও পরিচয়হীনতা। কেবল বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা মিন্টুর ছেলে এবং একজন তরুণ ব্যবসায়ী হিসেবেই তাকে সমর্থন দিতে হবে। ওদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটে না থাকলেও সমমনা দল হিসেবে পরিচিত বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী ঢাকা উত্তর থেকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে টিকে আছেন। তিনি বিএনপির সাবেক মহাসচিব বর্তমানে বিকল্পধারার সভাপতি এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে। মাহী নিজেও বিএনপি-দলীয় এমপি ছিলেন। তাই এখন বিএনপির কেউ কেউ বিকল্পধারার মাহিকে বিকল্প হিসেবে দেখছেন। তারা যুক্তি দেখিয়ে বলছেন, মাহীকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেয়া হলে ব্যক্তিগত পরিচিতির কারণে আনিসুল হকের সঙ্গে সমানভাবে লড়তে পারবেন। এছাড়া মাহীকে সমর্থন দিলে সমমনা অন্য দলগুলোও সক্রিয়ভাবে বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি পথ তৈরি হবে।
দক্ষিণে প্রার্থী সমর্থন প্রায় চূড়ান্ত
এদিকে বিরোধী জোটের একাধিক নেতা জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের তিন বৈধ মেয়র প্রার্থীর মধ্য নিঃসন্দেহে সবার থেকে এগিয়ে থাকবেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। অবিভক্ত ডিসিসি’র সাবেক মেয়র, রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ আসনের একাধিকবারের এমপি হিসেবে অভিজ্ঞতা এবং সিনিয়র রাজনীতিক নেতা হিসেবে তিনি এখন পর্যন্ত প্রথম পছন্দ। তবে মহানগর বিএনপির রাজনীতি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণে তিনি শক্ত বিরোধিতার মধ্যে রয়েছেন। সাবেক মেয়র ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা নিজে নির্বাচন না করলেও তার বসবাস ঢাকা দক্ষিণে। এছাড়া সেখানে তার পছন্দের প্রার্থী সাবেক ডেপুটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়া অপেক্ষাকৃত তরুণ ও গ্রহণযোগ্য নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপনও বাছাইপর্ব ডিঙিয়েছেন। মির্জা আব্বাস মনোনয়নপত্র সংগ্রহের আগপর্যন্ত আবদুস সালাম এবং ড. রিপনই ছিলেন দক্ষিণের বিএনপি সমর্থক আলোচিত প্রার্থী। তবে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী সাঈদ খোকনের বিপরীতে ভোটের লড়াইয়ে তাদের সামর্থ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূলে। ফলে মহানগর কেন্দ্রিক রাজনীতির কোন্দলকে চাপা দিয়ে ঢাকা দক্ষিণে সমর্থন চূড়ান্তকরণেও রয়েছে জটিলতা। ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০ দল প্রার্থী সমর্থনের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করবে। তবে রাজনীতির বৃহত্তর স্বার্থে মির্জা আব্বাসের প্রতি সমর্থন চূড়ান্ত হলে অন্য দুইজনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেবে শীর্ষ নেতৃত্ব।
আতঙ্ক-আশঙ্কা
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে প্রথম থেকে চলমান আন্দোলন কর্মসূচিকে ব্যাহত করার সরকারি উদ্যোগ হিসেবে দেখেছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। গুরুত্বপূর্ণ তিন সিটিতে নির্বাচন দিয়ে সরকার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন ব্যাহত করতে চায় এমন আশঙ্কার মধ্যেও ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ দিতে না দেয়ার নীতিতে নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত আসে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। সেই সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির ব্যাপারে বিরোধী জোটের তরফে চলমান আন্দোলনের রুটিন কর্মসূচি হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরকে। সরকারের প্রতি নিজেদের ইতিবাচক বার্তা দিতে শত নাগরিক ও দলের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির কিছু দাবিও জানানো হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও প্রশাসনের তরফে তার সাড়া মেলেনি। এদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে গত তিন মাসে হরতাল-অবরোধে হামলাকার?ী ও অর্থ যোগানদাতাদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সাঁড়াশি অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এমপি। গতকাল রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে ‘প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে’ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে বিএনপিতে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও এ পরিবেশ নিয়েই উদ্বিগ্ন বিরোধী জোটের নেতারা। জোটের নেতাকর্মীদের নামে মামলা থাকায় তারা ভোটের গণসংযোগে নামতে পারবেন কিনা, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে পারবেন কিনা এ নিয়ে আশঙ্কা কমছে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, উচ্চ আদালত থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে তারা জামিন পাবেন কিনা এটাও ভাবাচ্ছে তাদের। ফলে গ্রেপ্তারি আতঙ্ক নিয়ে কতটুকু তারা সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেন তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

No comments

Powered by Blogger.