পোশাকশিল্পে অর্ডার আসছে না, চরম আশঙ্কা by এমএম মাসুদ
রাজনৈতিক
অস্থিরতায় দেশের তৈরী পোশাক শিল্প কারখানায় চরম শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
দেশের এ বৃহৎ রপ্তানি খাত বড় ধরনের ইমেজ সঙ্কটের মুখে পড়েছে। ক্রেতাদের
অর্ডার পাচ্ছে না শিল্পমালিকরা। বর্তমানে যেসব অর্ডার আছে তা দিয়ে আগামী
জুন পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে অনেকেরই আলোচ্য সময়ের আগেই অর্ডার ফুরিয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই ২ কোটি ৩২ লাখ ৩৩ হাজার ১৯০ ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। শুধু
রপ্তানি অর্ডার বাতিল হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮,১৪৮ ডলারের। লোকসানে পড়ে
ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার চিন্তা-ভাবনা করছেন ব্যবসায়ীরা। পোশাক মালিকদের সংগঠন
বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক
অস্থিরতার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ইমেজ সঙ্কট দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। পোশাক
রপ্তানির আদেশও দিচ্ছে না। ফলে শিল্পটির অস্তিত্ব দিন দিন হুমকির মুখে
পড়ছে। তারা জানান, ক্রেতারা এখন দেশের বাইরে ডাকে। কিন্তু দেশের বাইরে তো
আর স্যাম্পল নিয়ে যাওয়া যায় না। ফলে বর্তমান যেসব অর্ডার আছে তা দিয়ে আগামী
জুন পর্যন্ত চলবে। এছাড়া কারও কারও এর আগেই শেষ হতে পারে। ফলে অর্ডার না
আসলে অনেক কারখানা এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে বলে পোশাক মালিকরা জানান।
অন্যদিকে পণ্যের আগের দামের চেয়ে ছাড় দিতে হচ্ছে।
বিজিএমইএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক ৮০ শতাংশ ক্রেতাই এ দেশ ভ্রমণ থেকে বিরত রয়েছেন। অর্ডার নিতে উদ্যোক্তাদের নিজ দেশে বা অন্য কোন দেশে যেতে হয়েছে বৈঠক করতে। এতে অনেকে ছাড় দিয়ে অর্ডার পেয়েছেন সামান্য, কাউকে আবার ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, বায়ারস ফোরামের সঙ্গে কয়েকদিন আগে আমরা বৈঠক করি। ইউরোপ ও আমেরিকার ৯টি শীর্ষস্থানীয় বায়ার আমাদেরকে জানিয়েছেন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কাছে তারা সাময়িকভাবে অন্যত্র অর্ডার শিফট করছে। তারাও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। তিনি বলেন, একই কারণে অনেক বায়ার অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ হংকং, চীন, থাইল্যান্ডের মতো তৃতীয় দেশে গিয়ে অর্ডার আনতে বলছে।
বিজিএমইএতে এ পর্যন্ত ক্ষতির হিসাব পাঠিয়েছে ৩৫টি কারখানা। ৩৫টি কারখানার ২ কোটি ৩২ লাখ ৩৩ হাজার ১৯০ ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোশাক মালিকরা। এর মধ্যে শুধু রপ্তানি অর্ডার বাতিল হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮,১৪৮ ডলারের। প্রধান প্রধান কারখানাগুলো হচ্ছে ম্যাগপাই নিটওয়্যার, ম্যাগপাই কম্পোজিট, ক্রিয়েটিভ উলওয়্যার, বেঙ্গল পোশাক ও আর্ভা টেক্সটাইল, হাই-ফ্যাশন কম্পোজিট, জেটএসবি গার্মেন্টস লি., করিম টেক্সটাইল লি., ফ্রেন্ডস স্টাইলওয়ার লি., সাসকোটেক্স (বিডি) লি. ও জুলফিকার ফ্যাশন লি.।
বিজিএমইএ তথ্যমতে, গত ১৪ থেকে ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত অবরোধে ৩৫টি কারখানার ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৩৩,১৯০ ডলার। টাকার অঙ্কে ১৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮,১৪৮ ডলারের, ডিসকাউন্ট বা মূল্য ছাড় দিতে হয়েছে ৬ লাখ ১৬,৭৬৯ ডলার, বিমানে পণ্য পাঠানোর কারণে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ৯১ লাখ ৪,০১১ ডলার, দেরিতে পণ্য পাঠানোর কারণে ক্ষতি হয় ৬০ লাখ ১৯,০৪৮ ডলার আর ভাঙচুরে ক্ষতি হয় ৪২ লাখ ১৫,২১৪ ডলার। এছাড়া হিসাবের বাইরে আরও রয়েছে বলে সংগঠনটি জানায়।
আজিম বলেন, তার ঘনিষ্ঠজনের কারখানার অর্ডার বিদেশে গিয়ে আনতে হয়েছে। এতে দেখা যায়, কথা ছিল আড়াই লাখ পিস শার্টের অর্ডার করা হবে। শেষ মুহূর্তে বায়ার দেড় লাখ পিসের অর্ডার দিয়েছে।
বিজিএমইএ’র তথ্যমতে, পোশাকখাতের প্রতিদিনের উৎপাদন মূল্য প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা। যদি কোন কারণে দিনের অর্ধবেলার উৎপাদন বিঘ্নিত হয় এতে ক্ষতি হয় ২১৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালে পোশাকখাতের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্জন করতে হলে প্রয়োজন দৈনিক ৯০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করা। গড়ে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ১১ শতাংশে রাখা দরকার। এসব দিক হিসাব করলে দেখা যায়, গত ৫০ দিনের অবরোধে শুধু পোশাকখাতেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২১ হাজার কোটি টাকা।
এ বিষয়ে শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, চলমান অবরোধে এ যাবত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। কারণ ক্রেতারা আসতে পারছে না। ক্রেতারা যখন স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশে যাতায়াত করবেন তখন বলা যাবে দেশ স্বাভাবিক। এখন আমাদের ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে তিনি জানান। এতে করে চলতি অর্থবছরে পোশাক শিল্প রপ্তানির যে ২৭ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিকেএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রানা প্লাজার ট্রাজেডির পর আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ এলায়ান্সের সার্টিফিকেট পেয়েছি। তাই মনে করছিলাম এ বছর আগের বছরের তুলনায় বেশি দামে অর্ডার পাব। এখন বেশি দামতো দূরের কথা আগের দামই ধরে রাখতে পারছি না। আগে অর্ডার নিয়েছিলাম এক ডলার ৮০ সেন্ট করে আর এবার আশা করেছিলাম তা অন্তত ডলার পাব। কিন্তু এবার পিস প্রতি ১০ সেন্ট করে ছাড় দিতে হয়েছে।
অর্ডার বাতিল হওয়া বিষয়ে হাতেম বলেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্রেতারা শঙ্কিত যে আমরা সময়মত শিপমেন্ট দিতে পারবো কিনা। তাই তারা অর্ডার বাতিল করেছেন। যা আমাদের পোশাক শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি।
এদিকে বিকেএমইএ জানায়, গত ২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে বর্তমান রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা কারখানাগুলোতে ফায়ার সেফটি, বিল্ডিং সেফটি এবং কমপ্লায়েন্সসহ সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ইতিমধ্যেই একটা অবস্থান তৈরি করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পোশাকখাতকে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা-পরবর্তী ধাক্কা সামাল দিতে না দিতেই নতুন মজুরি বাস্তবায়ন এবং বিদেশি ক্রেতাদের কারখানা পরিদর্শনের বিষয়টি গোদের ওপর বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আগামী কয়েক মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১ অঙ্কে নেমে আসবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প কোন কারণে অস্থিত্ব হারালে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে গ্রাম থেকে আসা ৩২ লাখ নারী শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে, যার ভার গ্রহণের সামর্থ্য এ অর্থনীতির নেই। এতে আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে।
শ্রমিক নেতারা জানান, এমনিতেই শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। এর মাধ্যে যদি পোশাকের অর্ডার কমে যায় তাহলে আমাদের পথে নামতে হবে। গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে। ঢাকা শহরে থাকা মুশকিল হবে বলে জানান তারা।
বিজিএমইএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক ৮০ শতাংশ ক্রেতাই এ দেশ ভ্রমণ থেকে বিরত রয়েছেন। অর্ডার নিতে উদ্যোক্তাদের নিজ দেশে বা অন্য কোন দেশে যেতে হয়েছে বৈঠক করতে। এতে অনেকে ছাড় দিয়ে অর্ডার পেয়েছেন সামান্য, কাউকে আবার ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, বায়ারস ফোরামের সঙ্গে কয়েকদিন আগে আমরা বৈঠক করি। ইউরোপ ও আমেরিকার ৯টি শীর্ষস্থানীয় বায়ার আমাদেরকে জানিয়েছেন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কাছে তারা সাময়িকভাবে অন্যত্র অর্ডার শিফট করছে। তারাও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। তিনি বলেন, একই কারণে অনেক বায়ার অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া কেউ কেউ হংকং, চীন, থাইল্যান্ডের মতো তৃতীয় দেশে গিয়ে অর্ডার আনতে বলছে।
বিজিএমইএতে এ পর্যন্ত ক্ষতির হিসাব পাঠিয়েছে ৩৫টি কারখানা। ৩৫টি কারখানার ২ কোটি ৩২ লাখ ৩৩ হাজার ১৯০ ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোশাক মালিকরা। এর মধ্যে শুধু রপ্তানি অর্ডার বাতিল হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮,১৪৮ ডলারের। প্রধান প্রধান কারখানাগুলো হচ্ছে ম্যাগপাই নিটওয়্যার, ম্যাগপাই কম্পোজিট, ক্রিয়েটিভ উলওয়্যার, বেঙ্গল পোশাক ও আর্ভা টেক্সটাইল, হাই-ফ্যাশন কম্পোজিট, জেটএসবি গার্মেন্টস লি., করিম টেক্সটাইল লি., ফ্রেন্ডস স্টাইলওয়ার লি., সাসকোটেক্স (বিডি) লি. ও জুলফিকার ফ্যাশন লি.।
বিজিএমইএ তথ্যমতে, গত ১৪ থেকে ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত অবরোধে ৩৫টি কারখানার ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৩৩,১৯০ ডলার। টাকার অঙ্কে ১৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮,১৪৮ ডলারের, ডিসকাউন্ট বা মূল্য ছাড় দিতে হয়েছে ৬ লাখ ১৬,৭৬৯ ডলার, বিমানে পণ্য পাঠানোর কারণে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ৯১ লাখ ৪,০১১ ডলার, দেরিতে পণ্য পাঠানোর কারণে ক্ষতি হয় ৬০ লাখ ১৯,০৪৮ ডলার আর ভাঙচুরে ক্ষতি হয় ৪২ লাখ ১৫,২১৪ ডলার। এছাড়া হিসাবের বাইরে আরও রয়েছে বলে সংগঠনটি জানায়।
আজিম বলেন, তার ঘনিষ্ঠজনের কারখানার অর্ডার বিদেশে গিয়ে আনতে হয়েছে। এতে দেখা যায়, কথা ছিল আড়াই লাখ পিস শার্টের অর্ডার করা হবে। শেষ মুহূর্তে বায়ার দেড় লাখ পিসের অর্ডার দিয়েছে।
বিজিএমইএ’র তথ্যমতে, পোশাকখাতের প্রতিদিনের উৎপাদন মূল্য প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা। যদি কোন কারণে দিনের অর্ধবেলার উৎপাদন বিঘ্নিত হয় এতে ক্ষতি হয় ২১৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালে পোশাকখাতের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্জন করতে হলে প্রয়োজন দৈনিক ৯০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করা। গড়ে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ১১ শতাংশে রাখা দরকার। এসব দিক হিসাব করলে দেখা যায়, গত ৫০ দিনের অবরোধে শুধু পোশাকখাতেই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২১ হাজার কোটি টাকা।
এ বিষয়ে শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, চলমান অবরোধে এ যাবত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। কারণ ক্রেতারা আসতে পারছে না। ক্রেতারা যখন স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশে যাতায়াত করবেন তখন বলা যাবে দেশ স্বাভাবিক। এখন আমাদের ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে তিনি জানান। এতে করে চলতি অর্থবছরে পোশাক শিল্প রপ্তানির যে ২৭ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিকেএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রানা প্লাজার ট্রাজেডির পর আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ এলায়ান্সের সার্টিফিকেট পেয়েছি। তাই মনে করছিলাম এ বছর আগের বছরের তুলনায় বেশি দামে অর্ডার পাব। এখন বেশি দামতো দূরের কথা আগের দামই ধরে রাখতে পারছি না। আগে অর্ডার নিয়েছিলাম এক ডলার ৮০ সেন্ট করে আর এবার আশা করেছিলাম তা অন্তত ডলার পাব। কিন্তু এবার পিস প্রতি ১০ সেন্ট করে ছাড় দিতে হয়েছে।
অর্ডার বাতিল হওয়া বিষয়ে হাতেম বলেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্রেতারা শঙ্কিত যে আমরা সময়মত শিপমেন্ট দিতে পারবো কিনা। তাই তারা অর্ডার বাতিল করেছেন। যা আমাদের পোশাক শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি।
এদিকে বিকেএমইএ জানায়, গত ২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে বর্তমান রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা কারখানাগুলোতে ফায়ার সেফটি, বিল্ডিং সেফটি এবং কমপ্লায়েন্সসহ সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ইতিমধ্যেই একটা অবস্থান তৈরি করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পোশাকখাতকে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা-পরবর্তী ধাক্কা সামাল দিতে না দিতেই নতুন মজুরি বাস্তবায়ন এবং বিদেশি ক্রেতাদের কারখানা পরিদর্শনের বিষয়টি গোদের ওপর বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আগামী কয়েক মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১ অঙ্কে নেমে আসবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প কোন কারণে অস্থিত্ব হারালে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে গ্রাম থেকে আসা ৩২ লাখ নারী শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে, যার ভার গ্রহণের সামর্থ্য এ অর্থনীতির নেই। এতে আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে।
শ্রমিক নেতারা জানান, এমনিতেই শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে। এর মাধ্যে যদি পোশাকের অর্ডার কমে যায় তাহলে আমাদের পথে নামতে হবে। গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে। ঢাকা শহরে থাকা মুশকিল হবে বলে জানান তারা।
No comments