স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেন গাড়ির গ্যারেজ! by রাজবংশী রায়
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর চত্বরে ফেলে রাখা হয়েছে অর্ধশতাধিক গাড়ি। ইঞ্জিন বিকল দাবি করে
ফেলে রাখা ৫২টি গাড়ির প্রতিটির দাম ২০ লাখ থেকে দেড় কোটি টাকা। রোদে পুড়ে,
বৃষ্টিতে ভিজে কয়েকটি গাড়ি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। বেশিরভাগ ব্যবহার
অনুপযোগী। গাড়ি রাখার চিত্র দেখলে মনে হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেন গ্যারেজ!
বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এসব গাড়ি কেনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ
ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই)
গাড়ি নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলের ১৩ জেলায়
টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য গত বছর আটটি প্রাডো গাড়ি কেনা হলেও
সেগুলো কর্মকর্তারা ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক সমকালকে
বলেন, ফেলে রাখা গাড়িগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে। মেরামতযোগ্য গাড়িগুলো
মেরামত করে চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। অন্যগুলো নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা
করা হবে।অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ইঞ্জিনের সমস্যা বেশি,
এমন গাড়ির সংখ্যা খুব বেশি নয়। স্বল্প মেরামত করলেই অনেক গাড়ি সচল হবে।
সরকারিভাবে .মেরামত করতে দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। আবার
ব্যক্তিগতভাবে টাকা ব্যয় করে কেউ মেরামত করাতেও ইচ্ছুক নন। এ কারণে বিকল
হওয়া এসব গাড়ি মেরামত করা হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সমকালকে বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে ফেলে রাখা গাড়িগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।দেশে ১৯৭৯ সালে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ২০০৩ সালে ৬৪ জেলায় কর্মসূচির আওতায় ৩২ জন ডিস্ট্রিক্ট ইম্যুনাইজেশন মেডিকেল অফিসার (ডিআইএমও) নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের বছর কর্মসূচি দেখভাল করতে ডিআইএমওদের একটি করে গাড়ি দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে ডিআইএমও পদ বিলুপ্ত করে ডিস্ট্রিক্ট মেটারনাল চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড ইম্যুনাইজেশন অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই বছরই ডিআইএমওদের জন্য বরাদ্দ গাড়ি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ফেরত আনা হয়। এরপর পাঁচ বছর ধরে মহাখালীর প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) কার্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়িগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পাজেরো, এল ২০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মডেলের ২৭টি গাড়ি পড়ে রয়েছে।
প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, কিছুদিন আগে তিনি পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন। প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন, নিজের কাজ বুঝে নিচ্ছেন। গাড়িগুলো পড়ে থাকার বিষয়টি তার নজরে এসেছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি জেনেছেন মূলত ঝামেলা এড়াতেই এ গাড়িগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গাড়িগুলো নিলামে দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।একইভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চত্বরেও পাজেরো, প্রাডো থেকে শুরু করে বিভিন্ন মডেলের আরও ২৫টি গাড়ি পড়ে রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, এমআইএস, স্কুল হেলথ, এআরই, সিডিসিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে এ গাড়িগুলো কেনা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন কর্মকর্তা আলাউদ্দিন খান সমকালকে বলেন, অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার সিফায়েত উল্লাহ গাড়িগুলোর বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুই দফায় চিঠি দিয়েছিলেন। মেরামত ও নিলামে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে_ এমন আশঙ্কায় তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিলামে ওঠানোর আগে গাড়ির মূল্যায়ন করতে হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিআরটিএ ও এনবিআরের অনুমোদন নিতে হয়। এজন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এগোতে হয়। এছাড়া নিলামে বিক্রি করতে গেলে টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ গাড়িগুলো অকশনে বিক্রির উদ্যোগ নিচ্ছে না।সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য ১৩ উপকূলীয় জেলার জন্য গত বছর ৮টি প্রাডো গাড়ি কেনা হয়। টিকাদান কর্মসূচির কাজের পরিবর্তে সেগুলো এখন কর্মকর্তারা ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি দুটি গাড়ি উপকূলের দুই জেলায় পাঠানো হয়েছে। গাড়িগুলোর মধ্যে একটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও একটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ব্যবহার করছেন। তিনটি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। একটির হদিস নেই। প্রতিটি গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। জার্মানির প্রতিষ্ঠান এফডবি্লউর আর্থিক সহায়তায় এই গাড়ি কেনা হয়।কর্মকর্তাদের টিকাদান কর্মসূচির গাড়ির ব্যবহার প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, যে কর্মকর্তারা গাড়ি ব্যবহার করছেন তারা সবাই টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সমকালকে বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে ফেলে রাখা গাড়িগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।দেশে ১৯৭৯ সালে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ২০০৩ সালে ৬৪ জেলায় কর্মসূচির আওতায় ৩২ জন ডিস্ট্রিক্ট ইম্যুনাইজেশন মেডিকেল অফিসার (ডিআইএমও) নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের বছর কর্মসূচি দেখভাল করতে ডিআইএমওদের একটি করে গাড়ি দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে ডিআইএমও পদ বিলুপ্ত করে ডিস্ট্রিক্ট মেটারনাল চাইল্ড হেলথ অ্যান্ড ইম্যুনাইজেশন অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই বছরই ডিআইএমওদের জন্য বরাদ্দ গাড়ি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ফেরত আনা হয়। এরপর পাঁচ বছর ধরে মহাখালীর প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) কার্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়িগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে পাজেরো, এল ২০০ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মডেলের ২৭টি গাড়ি পড়ে রয়েছে।
প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (পিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, কিছুদিন আগে তিনি পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন। প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন, নিজের কাজ বুঝে নিচ্ছেন। গাড়িগুলো পড়ে থাকার বিষয়টি তার নজরে এসেছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি জেনেছেন মূলত ঝামেলা এড়াতেই এ গাড়িগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গাড়িগুলো নিলামে দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।একইভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চত্বরেও পাজেরো, প্রাডো থেকে শুরু করে বিভিন্ন মডেলের আরও ২৫টি গাড়ি পড়ে রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, এমআইএস, স্কুল হেলথ, এআরই, সিডিসিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে এ গাড়িগুলো কেনা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন কর্মকর্তা আলাউদ্দিন খান সমকালকে বলেন, অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার সিফায়েত উল্লাহ গাড়িগুলোর বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুই দফায় চিঠি দিয়েছিলেন। মেরামত ও নিলামে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে_ এমন আশঙ্কায় তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিলামে ওঠানোর আগে গাড়ির মূল্যায়ন করতে হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিআরটিএ ও এনবিআরের অনুমোদন নিতে হয়। এজন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এগোতে হয়। এছাড়া নিলামে বিক্রি করতে গেলে টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ গাড়িগুলো অকশনে বিক্রির উদ্যোগ নিচ্ছে না।সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য ১৩ উপকূলীয় জেলার জন্য গত বছর ৮টি প্রাডো গাড়ি কেনা হয়। টিকাদান কর্মসূচির কাজের পরিবর্তে সেগুলো এখন কর্মকর্তারা ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি দুটি গাড়ি উপকূলের দুই জেলায় পাঠানো হয়েছে। গাড়িগুলোর মধ্যে একটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও একটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ব্যবহার করছেন। তিনটি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। একটির হদিস নেই। প্রতিটি গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। জার্মানির প্রতিষ্ঠান এফডবি্লউর আর্থিক সহায়তায় এই গাড়ি কেনা হয়।কর্মকর্তাদের টিকাদান কর্মসূচির গাড়ির ব্যবহার প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, যে কর্মকর্তারা গাড়ি ব্যবহার করছেন তারা সবাই টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
No comments