এখনো কোনো কু পায়নি পুলিশ
ব্লগার
অভিজিৎ রায় হত্যা ঘটনার এখনো কোনো কু পায়নি পুলিশ। কয়েকটি বিষয় সামনে নিয়ে
তদন্ত শুরু করলেও কারা, কেন তাকে হত্যা করেছে সে ব্যাপারে এখনো অন্ধকারে
পুলিশ। তবে পরিবার ও অভিজিতের বন্ধুমহলের অভিযোগের ভিত্তিতে জঙ্গি সদস্যের
দিকে বেশি নজর দিচ্ছে পুলিশ। নিহতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
পদার্থবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক অজয় রায় সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশের সামনে
সব ঘটনা ঘটেছে। কিছুই করতে পারেনি পুলিশ। আশা করব হত্যাকারীদের শনাক্ত করে
গ্রেফতার করতে সমর্থ হবে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, আসামিদের শনাক্ত করে
গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ দিকে অভিজিতের স্ত্রী আহত রাফিদা আহমেদ
বন্যার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল পর্যন্ত বন্যার শয্যাপাশে তার বাবার পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।
অভিজিৎ হত্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া
দেখা গেছে। সেখানে সবারই একই প্রশ্ন ছিল ‘পুলিশের সামনে কিভাবে এ
হত্যাকাণ্ড সম্ভব হলো। শুধু হত্যাকাণ্ডই নয়, ঘাতকেরা অভিজিৎ ও তার স্ত্রীকে
কুপিয়ে পুলিশ ও বহু মানুষের সামনে দিয়ে কিভাবে চলে যেতে পারল’। তবে এ
প্রশ্নের সন্তোষজনক কোনো উত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। অভিজিৎ হত্যার ঘটনায়
জাতীয়দাবাদী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার রাতে বইমেলা থেকে
ফেরার পথে সস্ত্রীক হামলার শিকার হন অভিজিৎ।
পুলিশের রমনা জোনের সিনিয়র এসি শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, কারা এ হত্যার সাথে জড়িত সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, সিআইডি ও র্যাব সদস্যরাও অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। অভিজিৎকে অনেক আগে থেকেই হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল। দেশে ফেরার পর তাকে সেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছিল কি না জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, অভিজিৎকে হুমকি দেয়া হচ্ছে; এমন কোনো বিষয় পুলিশকে অভিহিত করেননি তিনি। যার কারণে পুলিশ আগে থেকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানত না। তিনি বলেন, অভিজিৎ হত্যা মামলা তদন্তে এফবিআই সহযোগিতা করতে চেয়েছে। তাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে এফবিআইর সদস্যরা বাংলাদেশে আসবেন বলেও পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বয়স কম হলেও ঘাতকরা ছিল পেশাদার। কিলিং মিশনে দু’জন অংশ নিলেও ঘটনাস্থলের চারপাশে তাদের আরো সদস্য ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ না হলে আশপাশে থাকা সদস্যরা এগিয়ে আসতো। এসব বিষয় সামনে নিয়ে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে।
অধ্যাপক অজয় রায় গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ হয়তো আমার ছেলেকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারত না। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘাতকদের ধরতে তো পারত। অথচ সেটাও করেনি। তাদের চোখের সামনে অভিজিৎকে হত্যা করা হলো। এ ব্যাপারে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। তবে এইটুকু আশা করব পুলিশ যেন প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারে।
স্কয়ার হসপিটালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বন্যার মাথায় কয়েকটি আঘাত রয়েছে। এ ছাড়া তার হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বন্যার কাছে তার বাবার পরিবারের কেউ এখনো আসেননি।
বন্যার মেয়ে তৃষার ফেসবুক স্ট্যাটাস : ‘আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি বাবা’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাফিদা আহমেদ বন্যার মেয়ে তৃষা। ফেসবুকে নিজের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে তৃষা বলেছেন, ‘তিনি আমাকে যা শিখিয়ে গেছেন, যে ভালোবাসা দিয়ে গেছেন, তা আমি সবসময় মনে রাখব। আমি তোমাকে খুবই ভালোবাসি বাবা। প্রতিটি জিনিসের জন্যই তোমাকে ধন্যবাদ।’
এ হত্যাকাণ্ডের পর নিজের মানসিক অবস্থার বিষয়ে তৃষা ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাসে লিখেছেন, যদি বলি এই ঘটনায় আমি আতঙ্কিত বা মর্মাহত, তাহলে কম বলা হবে। পরিস্থিতি ‘যত খারাপ হোক না কেন’ পৃথিবীকে ‘ভালো’ জায়গায় পরিণত করতে ‘যুক্তির লড়াই’ শেষ হয়ে যাবে না। নিজের জীবনে অভিজিৎ রায়ের অবদানের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তৃষা লিখেছেন, আমার বয়স যখন ছয় বছর, তখন আমার মায়ের সাথে সম্পর্কের শুরু তার (অভিজিতের)। এর পরের ১২ বছরে ক্রমে তিনি আমার বন্ধুতে, আমার নায়কে, আমার আদর্শে, বিশ্বস্ত নির্ভরতায়, আমার নাচের সঙ্গীতে এবং আমার বাবায় পরিণত হন। তৃষা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরো লিখেছেন, তিনি আমাকে কখনোই প্রচলিত শান্তশিষ্ট অথবা বিনয়ী হতে বলেননি। তিনি আমাকে শিতি, উদ্যোগী এবং সাহসী হতে শিখিয়েছেন। তৃষা লিখেছেন, তার বাবা এবং মা এবারের বইমেলায় কয়েকটি বই প্রকাশের জন্য গত সপ্তাহে বাংলাদেশে আসেন। বন্যার প্রথম ঘরের সন্তান তৃষা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার একটি স্কুলে পড়াশোনা করছেন তৃষা।
ছাত্রদলের প্রতিবাদ : এ দিকে লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এ প্রতিবাদ জানান। গত বৃহস্পতিবার বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে খুন হন অভিজিৎ রায়।
নেতৃদ্বয় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জনাকীর্ণ স্থানে পুলিশের সামনেই এভাবে খুন করে পালিয়ে যাওয়ায় জনগণ আজ ভীত ও সন্ত্রস্ত। তারা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে আহ্বান জানান এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন।
হত্যার নিন্দা : ব্লগার ও প্রকৌশলী ড. অভিজিৎ রায়কে হত্যা ও স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে কুপিয়ে জখম করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। সমিতি এক বিবৃতিতে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
পুলিশের রমনা জোনের সিনিয়র এসি শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, কারা এ হত্যার সাথে জড়িত সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি, সিআইডি ও র্যাব সদস্যরাও অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। অভিজিৎকে অনেক আগে থেকেই হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল। দেশে ফেরার পর তাকে সেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছিল কি না জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, অভিজিৎকে হুমকি দেয়া হচ্ছে; এমন কোনো বিষয় পুলিশকে অভিহিত করেননি তিনি। যার কারণে পুলিশ আগে থেকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানত না। তিনি বলেন, অভিজিৎ হত্যা মামলা তদন্তে এফবিআই সহযোগিতা করতে চেয়েছে। তাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে এফবিআইর সদস্যরা বাংলাদেশে আসবেন বলেও পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বয়স কম হলেও ঘাতকরা ছিল পেশাদার। কিলিং মিশনে দু’জন অংশ নিলেও ঘটনাস্থলের চারপাশে তাদের আরো সদস্য ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ না হলে আশপাশে থাকা সদস্যরা এগিয়ে আসতো। এসব বিষয় সামনে নিয়ে ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে।
অধ্যাপক অজয় রায় গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ হয়তো আমার ছেলেকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারত না। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘাতকদের ধরতে তো পারত। অথচ সেটাও করেনি। তাদের চোখের সামনে অভিজিৎকে হত্যা করা হলো। এ ব্যাপারে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। তবে এইটুকু আশা করব পুলিশ যেন প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে পারে।
স্কয়ার হসপিটালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বন্যার মাথায় কয়েকটি আঘাত রয়েছে। এ ছাড়া তার হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বন্যার কাছে তার বাবার পরিবারের কেউ এখনো আসেননি।
বন্যার মেয়ে তৃষার ফেসবুক স্ট্যাটাস : ‘আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি বাবা’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাফিদা আহমেদ বন্যার মেয়ে তৃষা। ফেসবুকে নিজের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে তৃষা বলেছেন, ‘তিনি আমাকে যা শিখিয়ে গেছেন, যে ভালোবাসা দিয়ে গেছেন, তা আমি সবসময় মনে রাখব। আমি তোমাকে খুবই ভালোবাসি বাবা। প্রতিটি জিনিসের জন্যই তোমাকে ধন্যবাদ।’
এ হত্যাকাণ্ডের পর নিজের মানসিক অবস্থার বিষয়ে তৃষা ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাসে লিখেছেন, যদি বলি এই ঘটনায় আমি আতঙ্কিত বা মর্মাহত, তাহলে কম বলা হবে। পরিস্থিতি ‘যত খারাপ হোক না কেন’ পৃথিবীকে ‘ভালো’ জায়গায় পরিণত করতে ‘যুক্তির লড়াই’ শেষ হয়ে যাবে না। নিজের জীবনে অভিজিৎ রায়ের অবদানের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তৃষা লিখেছেন, আমার বয়স যখন ছয় বছর, তখন আমার মায়ের সাথে সম্পর্কের শুরু তার (অভিজিতের)। এর পরের ১২ বছরে ক্রমে তিনি আমার বন্ধুতে, আমার নায়কে, আমার আদর্শে, বিশ্বস্ত নির্ভরতায়, আমার নাচের সঙ্গীতে এবং আমার বাবায় পরিণত হন। তৃষা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরো লিখেছেন, তিনি আমাকে কখনোই প্রচলিত শান্তশিষ্ট অথবা বিনয়ী হতে বলেননি। তিনি আমাকে শিতি, উদ্যোগী এবং সাহসী হতে শিখিয়েছেন। তৃষা লিখেছেন, তার বাবা এবং মা এবারের বইমেলায় কয়েকটি বই প্রকাশের জন্য গত সপ্তাহে বাংলাদেশে আসেন। বন্যার প্রথম ঘরের সন্তান তৃষা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার একটি স্কুলে পড়াশোনা করছেন তৃষা।
ছাত্রদলের প্রতিবাদ : এ দিকে লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গতকাল এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এ প্রতিবাদ জানান। গত বৃহস্পতিবার বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে খুন হন অভিজিৎ রায়।
নেতৃদ্বয় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জনাকীর্ণ স্থানে পুলিশের সামনেই এভাবে খুন করে পালিয়ে যাওয়ায় জনগণ আজ ভীত ও সন্ত্রস্ত। তারা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে আহ্বান জানান এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন।
হত্যার নিন্দা : ব্লগার ও প্রকৌশলী ড. অভিজিৎ রায়কে হত্যা ও স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে কুপিয়ে জখম করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। সমিতি এক বিবৃতিতে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
No comments