সহিংসতা বন্ধ ও সংলাপের সমান্তরাল দাবি
বিবদমান
সঙ্কট দূর করতে আবারও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের
প্রতিনিধিরা। জাতীয় সংলাপ উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের
প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, সংলাপ না চাইলে এর বিকল্প কি তাও বলতে
হবে। সংলাপ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড.
এটিএম শামসুল হুদাকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘উদ্বিগ্ন’ নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত
সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে চলমান পরিস্থিতিতে
নাগরিক সমাজের উদ্যোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন এটিএম শামসুল হুদা। তিনি
বলেন, নাগরিক সমাজ মনে করে সহিংসতা বন্ধ ও সংলাপ আয়োজন সমান্তরালে হতে হবে।
সংলাপ আয়োজনে যে কোন সহায়তা দিতে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা প্রস্তুত আছেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি
খান, এম হাফিজউদ্দিন খান, এ এস এম শাজাহান, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সিএম
শফি সামি, রাশেদা কে চৌধুরী, এমসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আফজাল
রহমান, সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড.
শাহদীন মালিক, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ,
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান মনসুর ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড.
বদিউল আলম মজুমদার। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ড. শামসুল হুদা
বলেন, যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন তাদের
কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি। এখানকার সবাই পেশাদার। কমিটির কোন নাম দেয়া হয়নি।
সদস্য সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেশের চলমান সঙ্কটে নাগরিক সমাজের পক্ষে
উদ্বেগ প্রকাশ করে এটিএম শামসুল হুদা বলেন, আজ (শুক্রবার) ৩৯ দিন চলছে
অবরোধের। প্রায় ৯০ জন নিহত হয়েছেন। আগুনে পুড়িয়ে মারা হৃদয়বিদারক, অমানবিক।
যারা বেঁচে যাচ্ছেন তারা কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন না। এ ধরনের
কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। মানুষ মারার আন্দোলন আমরা চাই না। দিনের পর দিন,
মাসের পর মাস এ পরিস্থিতি চলতে পারে না। সংলাপের মাধ্যমে সমাধান না করলে
বিকল্প কি আছে আমাদের বলতে হবে। আমাদের কথা পছন্দ না হলে আপনারা বলেন। তিনি
বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংসতা বন্ধ করে দেশে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে
হবে। তাহলেই সংলাপ শুরু করা যাবে। দুটো প্রক্রিয়া সমান্তরালে চলতে হবে। না
হলে দুই পক্ষের মধ্যে কোন আস্থার সৃষ্টি হবে না। নাগরিক সমাজের ভাবনা
দুটিই। এই সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করতে হবে এবং আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে
হবে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের অভিভাবক ও রক্ষক হিসেবে প্রেসিডেন্টকে নৈতিক
দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনকে
নাগরিক সমাজের দেয়া চিঠি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন,
চিঠির সঙ্গে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা নিয়ে কেউ সমালোচনা করেনি। অনেক
গণমাধ্যমে এটা প্রকাশ করা হয়নি। শুধু চিঠির সমালোচনা করা হয়েছে। সচেতন
নাগরিক সমাজ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এখানে কেউ সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না।
কোন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কেউ আসেনি। এ অবস্থায় তাদের ভূমিকা রাখা
প্রয়োজন।
সংলাপ আয়োজনে নাগরিক সমাজ কোন উদ্যোগ নেবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা কিভাবে আসবেন সেটা ওনাদের ঠিক করতে হবে। আমরা কিছু বলতে চাই না। তবে রাজনীতিবিদদের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। আমাদের সবার চিন্তাভাবনা আছে। সুযোগ সৃষ্টি হলে আমরা ভূমিকা রাখবো। কমিটির কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, কমিটির কাজ হচ্ছে মাঝেমধ্যে খোঁজ নেয়া। সংলাপের জন্য কোন পরামর্শ চাইলে আমরা পরামর্শ দেবো। আমরা জানান দিলাম যে কোন সহায়তার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। স্ব-উদ্যোগে কারও কাছে যাবো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটা টেকসই সমাধানে পৌঁছানো। দ্রুত কিছু আশা করছি না। আলোচনা শুরু হলে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তখন দেখবো আমরা কোন ভূমিকা রাখতে পারি কিনা।
নাগরিক সমাজের তৎপরতা নিয়ে সরকারের সমালোচনাকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে মনে হয় কাজ হচ্ছে। কারণ তারা আমাদের গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা উপেক্ষা করছে না। রাজনীতিবিদরা সংলাপ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলছেন। আমরা কেউ আশা করিনি প্রস্তাব দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সংলাপ করবেন। বরং এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা আশাবাদী এবং লক্ষ্য ছিল একটাই শান্তি ফিরিয়ে আনা।
৭ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার গোলটেবিল আলোচনার পর রাজনীতিবিদদের সরে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই সভা ছিল রাজনীতিবিদদের পূর্বনির্ধারিত। আমরা তাদের কথা শুনতে গিয়েছিলাম। সেখানে তারা কিছু প্রস্তাব রেখেছে। তা থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু আমরা গ্রহণ করেছি। তাদের সঙ্গে ঐকমত্য ছিলাম। পৃথকভাবে ওনারা ওনাদের কাজ করুক। বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে এমন বিভাজন হয়ে গেছে যেসব সেক্টরে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। ওনাদের বাদ দেয়ার এখতিয়ার বা অধিকার নাই। গোলটেবিল বৈঠকে আমরা আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম।
জামায়াতের সঙ্গে সংলাপ করবে কিনা সেটা সরকারের বিষয় উল্লেখ করে সাবেক সিইসি বলেন, সব সক্রিয় রাজনৈতিক দলকে সংলাপের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জামায়াতের সঙ্গে সরকার সংলাপ করবে কিনা সেটা তাদের বিষয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটো জোটের প্রতিনিধিত্ব করে, সেহেতু তাদের মধ্যে এটা ঠিক করে নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে মাঝেমধ্যে সমঝোতার জন্য লোকজন আসেন এটা শুভকর না। আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এটাই মঙ্গলজনক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, সি এম শফি সামি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আহসান মনসুর প্রমুখ।
এর আগে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি সংলাপের উদ্যোগ নিতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানায় নাগরিক সমাজ। এর আগে ৭ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের বক্তব্যের আলোকে ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সংলাপ আয়োজনে নাগরিক সমাজ কোন উদ্যোগ নেবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা কিভাবে আসবেন সেটা ওনাদের ঠিক করতে হবে। আমরা কিছু বলতে চাই না। তবে রাজনীতিবিদদের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। আমাদের সবার চিন্তাভাবনা আছে। সুযোগ সৃষ্টি হলে আমরা ভূমিকা রাখবো। কমিটির কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, কমিটির কাজ হচ্ছে মাঝেমধ্যে খোঁজ নেয়া। সংলাপের জন্য কোন পরামর্শ চাইলে আমরা পরামর্শ দেবো। আমরা জানান দিলাম যে কোন সহায়তার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। স্ব-উদ্যোগে কারও কাছে যাবো না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটা টেকসই সমাধানে পৌঁছানো। দ্রুত কিছু আশা করছি না। আলোচনা শুরু হলে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তখন দেখবো আমরা কোন ভূমিকা রাখতে পারি কিনা।
নাগরিক সমাজের তৎপরতা নিয়ে সরকারের সমালোচনাকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে মনে হয় কাজ হচ্ছে। কারণ তারা আমাদের গুরুত্ব দিচ্ছে। তারা উপেক্ষা করছে না। রাজনীতিবিদরা সংলাপ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলছেন। আমরা কেউ আশা করিনি প্রস্তাব দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা সংলাপ করবেন। বরং এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা আশাবাদী এবং লক্ষ্য ছিল একটাই শান্তি ফিরিয়ে আনা।
৭ই ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার গোলটেবিল আলোচনার পর রাজনীতিবিদদের সরে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই সভা ছিল রাজনীতিবিদদের পূর্বনির্ধারিত। আমরা তাদের কথা শুনতে গিয়েছিলাম। সেখানে তারা কিছু প্রস্তাব রেখেছে। তা থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু আমরা গ্রহণ করেছি। তাদের সঙ্গে ঐকমত্য ছিলাম। পৃথকভাবে ওনারা ওনাদের কাজ করুক। বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে এমন বিভাজন হয়ে গেছে যেসব সেক্টরে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। ওনাদের বাদ দেয়ার এখতিয়ার বা অধিকার নাই। গোলটেবিল বৈঠকে আমরা আমন্ত্রিত অতিথি ছিলাম।
জামায়াতের সঙ্গে সংলাপ করবে কিনা সেটা সরকারের বিষয় উল্লেখ করে সাবেক সিইসি বলেন, সব সক্রিয় রাজনৈতিক দলকে সংলাপের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। জামায়াতের সঙ্গে সরকার সংলাপ করবে কিনা সেটা তাদের বিষয়। যেহেতু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটো জোটের প্রতিনিধিত্ব করে, সেহেতু তাদের মধ্যে এটা ঠিক করে নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে মাঝেমধ্যে সমঝোতার জন্য লোকজন আসেন এটা শুভকর না। আমাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এটাই মঙ্গলজনক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, সি এম শফি সামি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আহসান মনসুর প্রমুখ।
এর আগে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি সংলাপের উদ্যোগ নিতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানায় নাগরিক সমাজ। এর আগে ৭ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের বক্তব্যের আলোকে ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
No comments