ভালোবাসার হালচাল : কিছু ভাবনা by ফাতিমা রেহানা
ভালোবাসা হচ্ছে সৃষ্টির সেরাজীব মানুষের এক অমূল্য অনুভূতি। একের জন্য অপরের প্রীতি, প্রিয়জনের জন্য প্রেম, আপন মানুষের জন্য সহানুভূতিÑ এসব কিছুই ভালোবাসার আওতায় পড়ে। বয়োজ্যেষ্ঠের প্রতি শ্রদ্ধা আর কনিষ্ঠের প্রতি স্নেহ মূলত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সেই ভালোবাসা মনকে উদার, হৃদয়কে সংবেদনশীল ও মানবিক অনুভূতির মানকে উন্নত করার কথা। বাস্তবে এর বিপরীত চিত্রে অতি আবেগ, যৌবনের মোহ ও অনেক ক্ষেত্রেই উচ্ছৃঙ্খলতাই হচ্ছে দৃষ্টিগোচর। এর কারণ, ‘ভালোবাসা’কে অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ ও হালকা অর্থে ব্যবহার করায় এর ভালো দিক হারিয়ে গেছে অনেকটাই।
ভালোবাসার অভাবে জীবন হয়ে ওঠে রুক্ষ্ম মরুভূমির ধু-ধু বালুকা প্রান্তরের মতো। অথচ ভালোবাসাকে আমরা সঙ্কীর্ণ করে নিজেদের সঙ্কীর্ণতারই পরিচয় দিচ্ছি। ভালোবাসার মতো একটা সুমহৎ গুণ মানবিকতার প্রকাশ ও বিকাশ ঘটায়। অথচ আধুনিকতা ও প্রগতির নামে সে ভালোবাসা হালকা প্রেমের অর্থহীন হুজুগে পর্যবসিত হয়েছে। আমরা ভুলে যাচ্ছি, ভালোবাসা নিছক আবেগ ও উত্তেজনা কিংবা যৌনতা এবং অশ্লীলতার বিষয় নয়। সত্যিকার বা বৃহত্তর অর্থে ‘ভালোবাসা’ কথাটার প্রয়োগ না হওয়ায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে অশান্তি। অশোভন কার্যকলাপও বেড়েছে।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘তুমি যে দিবস রজনী শুধু ভালোবাসা ভালোবাসা করো,/সখী, ভালোবাসা কারে কয়,/ সে কি কেবলি যাতনাময়?’ সত্যিই ভালোবাসার নামে অনেকেই তারুণ্যের তাড়নায় আবেগে নিমজ্জিত হয়েছে এবং অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণে তাদের জন্য, কথিত ভালোবাসা বয়ে এনেছে যাতনা। এর পরিণামে প্রতিনিয়ত চলছে প্রেমসংশ্লিষ্ট হনন কিংবা আত্মহনন। অল্প বয়সের অধিক উচ্ছ্বাসে প্রেমের জোয়ার ভাসিয়ে নিচ্ছে সম্ভাবনাময় বহু জীবন। ভালোবাসার অগভীর উপলব্ধি অনেককেই টেনে নিচ্ছে পতন ও পরাজয়ের গভীরে। তখন সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে ওঠে হতাশা ও বিষণœতা। প্রেমের নামে মেকি ভালোবাসার ফাঁদে জড়িয়ে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক জীবন। অসময়ে নিঃশেষ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের মেধা-প্রতিভা-সম্ভাবনা। এ অবস্থায় ব্যক্তির বিপর্যয়, পরিবারে অশান্তি, সমাজে উচ্ছৃঙ্খলতা পরিণতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভালোবাসাকে বলা হয় মর্ত্যরে জন্য স্বর্গের উপহার। সেই ভালোবাসার মোড়কে ও ভোগবাদী পশ্চিমা জগতের প্রভাবে অনেক ক্ষেত্রে অনৈতিকতার সর্বনাশা খেলা চলছে। পাপাচার কখনো প্রকৃত প্রেম হতে পারে না। ভালোবাসা সব ক্ষেত্রে Platonic Love খড়াব না হলেও তা পাশবিক নয়, মানবিক প্রবৃত্তিই জাগায়।
সম্ভবত আশির দশকে আমাদের দেশে ‘ভালোবাসা দিবস’ উদযাপন শুরু হয়। এটা বাংলাদেশের ঐতিহ্য নয়; বরং পাশ্চাত্যের একটি উৎসব। প্রচলিত বিশ্বব্যবস্থায় আমরা পশ্চিমা জগৎকে অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছি। আর ‘ভালোবাসা দিবস’ পালনে তারা বাধ্য না করলেও আমরা তা করছি মূলত ফ্যাশন ও অনুকরণপ্রিয়তার কারণে। ইংরেজিতে দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইলস ডে’ বলা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন খ্রিষ্ট ধর্মের একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। দিবসটির প্রচলন সম্পর্কে একাধিক কাহিনীর কথা জানা যায়। একটি কাহিনীর সারার্থ, ঐশী বা আধ্যাত্মিক প্রেমই ভালোবাসা দিবসের উৎস। এখন এ দিবসের মধ্যে এর বিপরীত চিত্রই ফুটে ওঠে প্রকটভাবে।
বলাইবাহুল্য, আধ্যাত্মিক প্রেম হলো ভালোবাসার সর্বোচ্চ স্তর। মহান স্রষ্টা তাঁর অপার ভালোবাসায় আমাদের সৃজন করেছেন। তাঁর নির্দেশিত পন্থায় তাঁকে ভালোবেসেই এর প্রতিদান দিতে হয়। আধুনিক যুগে এর বিপরীত মেরুতে নেহাত জৈবিক উদ্যমতার মধ্যে অনেকে ভালোবাসার অমর্যাদা করছেন। অপর দিকে Consumerism-এর এ যুগে ভালোবাসা দিবসের স্লোগান তুলে একশ্রেণীর ব্যবসায়ী রকমারি পণ্যে মুনাফা লোটায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
ভালোবাসা মানবজীবনের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। এটা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর বিষয় নয়। সন্তানের জন্য মা-বাবা, ভাইবোন পরস্পরের জন্য, কিংবা পরিবারের একে অন্যের জন্য, বন্ধু-বন্ধুর জন্য, এক কথায়, মানুষ তার প্রিয়জনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভালোবাসাবোধ করে থাকেন। ভালোবাসা জীবনব্যাপী বিস্তৃত। বিবাহ-পূর্ব অবাধ মেলামেশা অথবা বিবাহ-পরবর্তী পরকীয়াকে যারা ভালোবাসা মনে করেন, তারা হয় অজ্ঞ না হয় জেনে বুঝে ভুল করছেন। ভালোবাসাই মানবতার মূলকথা। পারিবারিক বন্ধনের পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতি এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিও কিন্তু ব্যাপক অর্থে, ভালোবাসাই। এটা বিশেষ কোনো দিবসের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। ভালোবাসার মতো একটি অনন্য মানবিক বৈশিষ্ট্য সেরেফ আনুষ্ঠানিকতা কিংবা লোকদেখানোর ব্যাপার হতে পারে না। নির্দিষ্ট কিছু বস্তু, প্রতীক, পোশাক ও কথার মাধ্যমে ভালোবাসাকে শুধু সীমিতই করা যায়, কিন্তু এর যথার্থবোধ ও অনুভূতি অনেক গভীর ও ব্যাপক তাৎপর্যের বিষয়।
ভালোবাসার একটি কবিতায় বলা হয়েছে, I feel it in my fingers/ I feel it in my toes/ Love in all around me/ And so the feeling grows (আমার হাত-পায়ের আঙুলেও ভালোবাসা অনুভব করি। ভালোবাসা আমার চার পাশে। এ কারণে এর অনুভূতি বেড়ে যায়) এরপর রয়েছে, It’s written on the mind/It’s every where I go/ So if you really love me/ come on and let it show, (এটা বাতাসে লেখা রয়েছে/ যেখানেই যাই, সেখানেই/ তাই, যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসো, এসে তা দেখাও)
এখানে দেখা যাচ্ছে, ভালোবাসার সর্বব্যাপী উপস্থিতির চিরন্তন সত্যকে হঠাৎ ব্যক্তিবিশেষের মঝে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এতে প্রেম বা ভালোবাসার তাৎপর্য হয়ে পড়েছে অত্যন্ত সীমিত ও সঙ্কীর্ণ। এমনই আবেগপ্রবণ একজন ভালোবাসাকে চা পানের সাথেও তুলনা করতে দ্বিধা করেনি। তার ভাষায়Ñ Tea for cup and cup for tea/ I for you and you for me.
সমাজে এখন নাকি প্রেমের জোয়ার ও পীরিতির তুফান। ‘ভালোবাসা বলতে তরুণ-তরুণীরা আজকাল কী ভ্রান্তির ঘোরে আছে, তার কিঞ্চিৎ নমুনা এই ছড়াটিÑ প্রেম করতে কী কী লাগে/ আমি ভালো জানি,/ মুখে লাগে চাপার জোর/ পকেট ভরা মানি/ পাঁচজনের পাঁচটা সিম/ মোবাইল ফোনে ভরা/ টেনশনে থাকি সদা/ কখন খাই ধরা।
আসুন, আমরা মনকে বড় ও দৃষ্টিকে প্রসারিত করি। ভালোবাসাকে গ্রহণ করি এর সামগ্রিক তাৎপর্যে আর প্রকৃত চেতনায়। আমাদের চারপাশে আজ যে প্রেমহীন, প্রীতিহীন বৈরী পরিবেশ, তাতে বলতেই হয়Ñ ‘মানুষ মানুষের জন্য,/ জীবন জীবনের জন্য,/ একটু ভালোবাসা কি মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু।’
ভালোবাসার অভাবে জীবন হয়ে ওঠে রুক্ষ্ম মরুভূমির ধু-ধু বালুকা প্রান্তরের মতো। অথচ ভালোবাসাকে আমরা সঙ্কীর্ণ করে নিজেদের সঙ্কীর্ণতারই পরিচয় দিচ্ছি। ভালোবাসার মতো একটা সুমহৎ গুণ মানবিকতার প্রকাশ ও বিকাশ ঘটায়। অথচ আধুনিকতা ও প্রগতির নামে সে ভালোবাসা হালকা প্রেমের অর্থহীন হুজুগে পর্যবসিত হয়েছে। আমরা ভুলে যাচ্ছি, ভালোবাসা নিছক আবেগ ও উত্তেজনা কিংবা যৌনতা এবং অশ্লীলতার বিষয় নয়। সত্যিকার বা বৃহত্তর অর্থে ‘ভালোবাসা’ কথাটার প্রয়োগ না হওয়ায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে নানা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে অশান্তি। অশোভন কার্যকলাপও বেড়েছে।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘তুমি যে দিবস রজনী শুধু ভালোবাসা ভালোবাসা করো,/সখী, ভালোবাসা কারে কয়,/ সে কি কেবলি যাতনাময়?’ সত্যিই ভালোবাসার নামে অনেকেই তারুণ্যের তাড়নায় আবেগে নিমজ্জিত হয়েছে এবং অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণে তাদের জন্য, কথিত ভালোবাসা বয়ে এনেছে যাতনা। এর পরিণামে প্রতিনিয়ত চলছে প্রেমসংশ্লিষ্ট হনন কিংবা আত্মহনন। অল্প বয়সের অধিক উচ্ছ্বাসে প্রেমের জোয়ার ভাসিয়ে নিচ্ছে সম্ভাবনাময় বহু জীবন। ভালোবাসার অগভীর উপলব্ধি অনেককেই টেনে নিচ্ছে পতন ও পরাজয়ের গভীরে। তখন সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে ওঠে হতাশা ও বিষণœতা। প্রেমের নামে মেকি ভালোবাসার ফাঁদে জড়িয়ে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক জীবন। অসময়ে নিঃশেষ হচ্ছে অসংখ্য মানুষের মেধা-প্রতিভা-সম্ভাবনা। এ অবস্থায় ব্যক্তির বিপর্যয়, পরিবারে অশান্তি, সমাজে উচ্ছৃঙ্খলতা পরিণতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভালোবাসাকে বলা হয় মর্ত্যরে জন্য স্বর্গের উপহার। সেই ভালোবাসার মোড়কে ও ভোগবাদী পশ্চিমা জগতের প্রভাবে অনেক ক্ষেত্রে অনৈতিকতার সর্বনাশা খেলা চলছে। পাপাচার কখনো প্রকৃত প্রেম হতে পারে না। ভালোবাসা সব ক্ষেত্রে Platonic Love খড়াব না হলেও তা পাশবিক নয়, মানবিক প্রবৃত্তিই জাগায়।
সম্ভবত আশির দশকে আমাদের দেশে ‘ভালোবাসা দিবস’ উদযাপন শুরু হয়। এটা বাংলাদেশের ঐতিহ্য নয়; বরং পাশ্চাত্যের একটি উৎসব। প্রচলিত বিশ্বব্যবস্থায় আমরা পশ্চিমা জগৎকে অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছি। আর ‘ভালোবাসা দিবস’ পালনে তারা বাধ্য না করলেও আমরা তা করছি মূলত ফ্যাশন ও অনুকরণপ্রিয়তার কারণে। ইংরেজিতে দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইলস ডে’ বলা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন খ্রিষ্ট ধর্মের একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। দিবসটির প্রচলন সম্পর্কে একাধিক কাহিনীর কথা জানা যায়। একটি কাহিনীর সারার্থ, ঐশী বা আধ্যাত্মিক প্রেমই ভালোবাসা দিবসের উৎস। এখন এ দিবসের মধ্যে এর বিপরীত চিত্রই ফুটে ওঠে প্রকটভাবে।
বলাইবাহুল্য, আধ্যাত্মিক প্রেম হলো ভালোবাসার সর্বোচ্চ স্তর। মহান স্রষ্টা তাঁর অপার ভালোবাসায় আমাদের সৃজন করেছেন। তাঁর নির্দেশিত পন্থায় তাঁকে ভালোবেসেই এর প্রতিদান দিতে হয়। আধুনিক যুগে এর বিপরীত মেরুতে নেহাত জৈবিক উদ্যমতার মধ্যে অনেকে ভালোবাসার অমর্যাদা করছেন। অপর দিকে Consumerism-এর এ যুগে ভালোবাসা দিবসের স্লোগান তুলে একশ্রেণীর ব্যবসায়ী রকমারি পণ্যে মুনাফা লোটায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
ভালোবাসা মানবজীবনের সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। এটা শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর বিষয় নয়। সন্তানের জন্য মা-বাবা, ভাইবোন পরস্পরের জন্য, কিংবা পরিবারের একে অন্যের জন্য, বন্ধু-বন্ধুর জন্য, এক কথায়, মানুষ তার প্রিয়জনের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভালোবাসাবোধ করে থাকেন। ভালোবাসা জীবনব্যাপী বিস্তৃত। বিবাহ-পূর্ব অবাধ মেলামেশা অথবা বিবাহ-পরবর্তী পরকীয়াকে যারা ভালোবাসা মনে করেন, তারা হয় অজ্ঞ না হয় জেনে বুঝে ভুল করছেন। ভালোবাসাই মানবতার মূলকথা। পারিবারিক বন্ধনের পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতি এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিও কিন্তু ব্যাপক অর্থে, ভালোবাসাই। এটা বিশেষ কোনো দিবসের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়। ভালোবাসার মতো একটি অনন্য মানবিক বৈশিষ্ট্য সেরেফ আনুষ্ঠানিকতা কিংবা লোকদেখানোর ব্যাপার হতে পারে না। নির্দিষ্ট কিছু বস্তু, প্রতীক, পোশাক ও কথার মাধ্যমে ভালোবাসাকে শুধু সীমিতই করা যায়, কিন্তু এর যথার্থবোধ ও অনুভূতি অনেক গভীর ও ব্যাপক তাৎপর্যের বিষয়।
ভালোবাসার একটি কবিতায় বলা হয়েছে, I feel it in my fingers/ I feel it in my toes/ Love in all around me/ And so the feeling grows (আমার হাত-পায়ের আঙুলেও ভালোবাসা অনুভব করি। ভালোবাসা আমার চার পাশে। এ কারণে এর অনুভূতি বেড়ে যায়) এরপর রয়েছে, It’s written on the mind/It’s every where I go/ So if you really love me/ come on and let it show, (এটা বাতাসে লেখা রয়েছে/ যেখানেই যাই, সেখানেই/ তাই, যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসো, এসে তা দেখাও)
এখানে দেখা যাচ্ছে, ভালোবাসার সর্বব্যাপী উপস্থিতির চিরন্তন সত্যকে হঠাৎ ব্যক্তিবিশেষের মঝে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এতে প্রেম বা ভালোবাসার তাৎপর্য হয়ে পড়েছে অত্যন্ত সীমিত ও সঙ্কীর্ণ। এমনই আবেগপ্রবণ একজন ভালোবাসাকে চা পানের সাথেও তুলনা করতে দ্বিধা করেনি। তার ভাষায়Ñ Tea for cup and cup for tea/ I for you and you for me.
সমাজে এখন নাকি প্রেমের জোয়ার ও পীরিতির তুফান। ‘ভালোবাসা বলতে তরুণ-তরুণীরা আজকাল কী ভ্রান্তির ঘোরে আছে, তার কিঞ্চিৎ নমুনা এই ছড়াটিÑ প্রেম করতে কী কী লাগে/ আমি ভালো জানি,/ মুখে লাগে চাপার জোর/ পকেট ভরা মানি/ পাঁচজনের পাঁচটা সিম/ মোবাইল ফোনে ভরা/ টেনশনে থাকি সদা/ কখন খাই ধরা।
আসুন, আমরা মনকে বড় ও দৃষ্টিকে প্রসারিত করি। ভালোবাসাকে গ্রহণ করি এর সামগ্রিক তাৎপর্যে আর প্রকৃত চেতনায়। আমাদের চারপাশে আজ যে প্রেমহীন, প্রীতিহীন বৈরী পরিবেশ, তাতে বলতেই হয়Ñ ‘মানুষ মানুষের জন্য,/ জীবন জীবনের জন্য,/ একটু ভালোবাসা কি মানুষ পেতে পারে না, ও বন্ধু।’
No comments